১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল, তাদেরকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা নতুন নয়।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:১৫:৩৮ বিকাল
আমাদের জাতির বির সৈনিকদের দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়কে কারা হাইজেক করে নিল..? তারাই আমাদের সব কিছু চুরি করেছে আমাদের বিজয় ও তারাই চুরি করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার
ঘোষনা দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল, তাদেরকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা নতুন নয়।
স্বয়ং চেতনাগুরু জাফর ইকবালও বলেন মুক্তিযুদ্ধ ছিল তের দিনের! বাকী সাড়ে আট মাসে পাকি তথা পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ন যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী বা ভারতের বাংলাদেশী সংগঠন আওয়ামী লীগের তেমন কোন ভুমিকাই ছিলনা
তাই সেই সাড়ে আট মাসকে এখন ছেঁটে বাদ দিতে
হবে, মুক্তিযুদ্ধকে এখন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলতে হবে।আর যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টিকেই বাদ দেয়া হচ্ছে- তাই কেবল মাত্র সত্য ধারণ করতে হবে 'চেতনা'। যারাই এই চেতনা বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবে, তারাই রাজাকার।
ভারত যখন মুক্তিযুদ্ধে যৌথ বাহিনীতে যুক্ত হয়, তখন প্রতিটি যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর সাথে ছিল বাংলাদেশী
মুক্তিযোদ্ধারা। উভয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে।
জেনারেল নাগরা যখন ঢাকায় ঢোকেন, তখনও তিনি টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা পর্যন্ত আসার জন্য সার্বিক সহযোগিতা নিয়েছেন কাদের সিদ্দির কাছ থেকে।
যেখানে ভারতীয় বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের না জানিয়ে একা একা যুদ্ধ করতে গেছে, সেখানেই তারা পাকিস্তানীদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে।
১৯৭১ সালে মিত্র বাহিনীর নেতৃত্বে যশোর দখলের পর
তারা পাকিস্তানীদের শক্তিশালী ঘাঁটি খুলনার দিকে অগ্রসর হবার সময়ও এমনটাই ঘটেছিল।
১০ ডিসেম্বর শিরোমণির অদূরে ফুলতলার ১৪ মাইল এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করে রাজপুত ব্যাটালিয়ন। ১৩ ডিসেম্বর বিকেল পর্যন্ত চলে লড়াই।
বিকেলের পর সারা রাত শিরোমণি থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাগুলির আওয়াজ না পেয়ে তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে বলে ধরে নেয় মিত্রবাহিনী।
১৪ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের না জানিয়ে খুলনার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন মেজর জ্ঞানি ও মেজর মাহেন্দ্র সিং।
তাঁদের সঙ্গে রাজপুত ব্যাটালিয়নের ২৮টি গাড়িতে ৩৫০ জনের মতো সৈন্য ছিল। কনভয়টি শিরোমণি এলাকায় এলে লুকিয়ে থাকা পাকিস্তানি বাহিনীর ট্যাংক হামলায় ২৬টি গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।
মেজর জ্ঞানিসহ প্রায় ২৫০ জন মিত্র সেনা নিহত হন। দুটি গাড়িতে করে প্রাণ নিয়ে ফুলতলা ঘাঁটিতে ফিরে যান মাহেন্দ্র সিং।
ওই ঘটনার পর রাজপুত ব্যাটালিয়নের প্রধান মেজর দলবীর সিং খুলনা অভিযানের জন্য মেজর মঞ্জুরকে অধিনায়কত্ব দেন।অবশেষে মেজর মঞ্জুরের নেতৃত্বেই খুলনায় পাকিস্তানীদের পতন হয় এবং ১৭ ডিসেম্বর তারা আত্মসর্মপন করে।
ভারতীয় এই ছবিটি ওদের রাষ্ট্রীয় দৈন্যই প্রকাশ করেছে। ওরা বাংলাদেশীদের বিজয়কে চুরি করে নিজেদের 'ভিজায় দিওয়াস' দাবী করছে (কী ভিজিয়ে দিয়েছে ওরাই জানে)
ওরা আমেরিকার পতাকা চুরি করে সেখানে ভারতের পতাকার ছবি লাগিয়েছে, ওরা পুলিৎজার পুরষ্কার পাওয়া আমেরিকান ফটোগ্রাফারের তোলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছবিকে চুরি করে ১৯৭১ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের ছবি বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
ওরা বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধজয়ের গৌরবগাঁথাকে নিজেদের বলে দাবী করছে। আর এই কাজে ওদেরকে সাহায্য করছে বাংলাদেশে থাকা ওদের কিছু সেবাদাস।
এই সেবাদাসদের চেনার সহজ উপায় বলে দিচ্ছি। এদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- এদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে চেতনা বড় এবং এদের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট হচ্ছে- এরা প্রায় সকল খ্যাতনামা বীরমুক্তিযোদ্ধাকে 'রাজাকার' ডাকার চেষ্টা করে।
কারণ, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার বানাতে না পারলে তো এদের প্রভূদের 'ভিজায় দিওয়াস'কে প্রতিষ্ঠিত করা যায় না।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন