হে আমার প্রিয় জন্মভূমি স্বাধীন বাংলাদেশ..! এই বিজয় কার জন্য..? যে মাটিতে বীরপ্রতিকরা ও অসহায় অবহেলীত...!
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:২২:৩৯ বিকাল
যে দেশে গুনীজনের কদর তথা সম্মান করেনা সে দেশে গুনীজন সৃষ্টি হয়না।হে আমার প্রিয় জন্মভূমি স্বাধীন বাংলাদেশ..! এই বিজয় কার জন্য..? যে স্বাধীন মাটিতে বীরপ্রতিকরা ও অসহায় অবহেলীত।
বিজয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েও বঙ্গভবনে ঢুকতে দেয়া হয়নি একজন বীরপ্রতীককে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে।
বিগত ৩৫ বছর ধরে প্রায় প্রতিটি সরকারের আমলেই এই দিনটিতে বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন। এমনকি কল্যাণ পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেও গত আটবছরে যথারীতি বঙ্গভবনের দাওয়াতি থেকে কখনও তাকে কোন বাধার মুখে পড়তে হয়নি।
কিন্তু এবারের বিজয় দিবসের সংবর্ধনায় বঙ্গভবনের গেটে দ-ন্ডায়মান পুলিশ কর্মকর্তা জেনারেল ইবরাহিমকে জানায়, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের তালিকা অনুযায়ী বঙ্গভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষিত ব্যক্তিদের মধ্যে তার নাম নাকি এক নম্বরে রয়েছে।
অর্থাৎ বঙ্গভবনের নিরাপত্তার জন্য তিনি নাকি নাম্বার ওয়ান হুমকি! কল্যাণ পার্টির মতো দলের প্রধানও যদি নাম্বার ওয়ান বিপজ্জনক হয়, তাহলে বাকিরা তো দেখি মহা-ভয়াবহ..!
অথচ এই ঘটনায় দেশমাতার জন্য যুদ্ধ করা এই বীরপ্রতীক কতটা লজ্জিত বোধ করলো বলতে পারেন, ‘‘একজন বীরপ্রতীকের জন্য বিজয় দিবসের উপহার। বিজয় দিবসে একজন বীরপ্রতীককে অপমান করা কী জরুরি ছিল..?
প্রচন্ড- ক্ষোভে তিনি বলেন, আমার তিনটি পরিচয়। প্রথমত, আমি একজন বীরপ্রতীক। দ্বিতীয়ত, একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল। তৃতীয়ত, আমি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রধান।
জানি না, এই তিন পরিচয় বা বৈশিষ্ট্যের কোনটিকে আক্রমণ করতে গিয়ে তারা কোনটিকে অপমান করলো। আসলে জেনারেল ইবরাহিম তার তিনটি পরিচয়ের কথা বললেও চতুর্থ পরিচয়ের কথাটি কিন্তু বলেননি।
তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান। সরকারের কাছে এটাই হচ্ছে তার বড় পরিচয়। আর এটাই তাদের কাছে বড় অপমানের, বড় যন্ত্রণার..!
দুই. আসলে শুধুমাত্র জেনারেল ইবরাহিম একাই নন, কী মুক্তিযোদ্ধা, কী বীরপ্রতীক, আওয়ামী লীগ না করলে বাকি সবাই যেন আজ রাজাকার আর স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি।
তাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা বাণিজ্য চালায়, তাদের কাছে বীরপ্রতীকের সম্মানহানি তো ফ্যাসিবাদী আচরণেরই বহিঃপ্রকাশমাত্র। ঠিক আছে, রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কাউকে বঙ্গভবনে নিষিদ্ধ করলেন, কিন্তু দাওয়াত দিয়ে এভাবে অপমানটা করলেন কেন?
ইবরাহিম সাহেব দাবি করলেন, তার দলটি নিবন্ধিত ছিল। কিন্তু তিনি হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন যে, শুধু দল নিবন্ধিত হলেই চলবে না, দাওয়াতটিও নিবন্ধিত হতে হবে।
একটা ভুল তিনি করেছেন বটে, আওয়ামী লীগের ভজন ও গুণকীর্তনে পারদর্শিতা অর্জন না করেই উনি বঙ্গভবনে গেলেনই বা কেন? অথচ বঙ্গভবনের সেই সংবর্ধনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সরকারের সুবিধা ভোগ করা লোকজনের কোন কমতি ছিল না।
বঙ্গভবনের বিজয় দিবসের সংবর্ধনায় ছিলেন অনেক মুখচেনা স্বাধীনতা বিরোধীরাও। তাই একজন বীরপ্রতীককে ঢুকতে না দিয়ে বিজয়ের উৎসবটি কী গৌরবগাঁথার জন্ম দিলো তা বোধগম্য নয়।
আমরা চাইলেও তো এখন আর নতুন করে কোন বীরপ্রতীকের জন্ম দিতে পারবো না। যে দু’একজন ক্ষণজন্মা এখনও বেঁচে আছেন তাদেরকে এভাবে অসম্মান করাটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করার নামান্তর নয় কী..?
বিষয়: বিবিধ
১২৪০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বলা যায় না এতে অনেকেই খেতাব হারিয়েও ফেলতে পারে । যেমনটা হারিয়ে ফেলেছেন জিয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন