শাহাদাতের তামান্না হৃদয়ে যাদের কিসের তাদের ভয় ! নেই কোন শক্তি পৃথিবীর বুকে ঠেকায় তাদের জয় !!
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:০০:২৯ বিকাল
সাইয়েদ কুতুবের অনেক ছবিই নেটে আছে।কোন ছবিতেই তাকে তেমন হাসিমুখে দেখা যায়না।তবে ফাঁসির কাষ্ঠে নেওয়ার পূর্বমুহূর্তে প্রিজন ভ্যানে উঠার সময় তার একটা হাস্যজ্জল ছবি আছে।
ছবিটা দেখলেই মনে হবে যেন তিনি বহু প্রতীক্ষিত কোন জিনিস লাভ করতে যাচ্ছেন।মিশরের প্রধান বিচারপতি আবদুল কাদের আওদাহ ফাঁসির রায় শুনে আনন্দে সেই কবিতা পাঠ করছিলেন যে কবিতা খোবায়েব (রাঃ) শাহাদাতের পূর্বে পাঠ করেছিলেন।
ফাঁসির রায় শুনে আবদুল কাদের মোল্লা প্রথমেই বলেছিলেন 'আলহামদুলিল্লাহ'।কাদের মোল্লার রায়ে মিডিয়া যতটা না খুশি হয়েছিল তার চেয়ে বেশী চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল রায় শুনে প্রশান্ত কাদের মোল্লাকে দেখে এবং শেষ সাক্ষাতের সময় কারাগারে শহীদ কাদের মোল্লার স্ত্রীর 'ভি' চিহ্ন প্রদর্শন দেখে।
শহীদ কামারুজ্জামানও হাসিমুখেই ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন! চূড়ান্ত রায়ের পর আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সাথে পরিবার দেখা করতে গেলে দূর থেকেই তার হাসির আওয়াজ শুনতে পান যেন ফাঁসির আদেশ নয় তিনি কোন বড় সুখবর পেয়েছেন।
যারা জাগতিক স্বার্থে দুনিয়াকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় তাদের কাছে এটা বিস্ময়ের ব্যাপারই বটে! কিন্তু যারা শুধুমাত্র ইসলামী আন্দোলন করার কারণে ফাঁসির কাষ্ঠের মুখোমুখি দাড়িয়ে তাদের কাছে এই মৃত্যুদণ্ড খুবই আনন্দের বিষয়।
এরকম যুগে যুগে লক্ষ লক্ষ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মৃত্যুদণ্ডকে হাসিমুখে বরণ করার বিস্ময়কর ইতিহাস রয়েছে যেগুলি ইসলাম বিদ্বেষীদের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলে।
মৃত্যুদণ্ড পেয়ে মানুষ কিভাবে খুশি হতে পারে এটা তাদের কাছে সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার। প্রসঙ্গক্রমে একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল।
এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরুধি আন্দোলনের অগ্রনায়েক ছিলেন উলামায়ে কেরাম।১৮৪৬ সালে ব্রিটিশ বিরুধি আন্দোলনের কারণে মাওলানা ইয়াহইয়া সাদেক পুরিসহ দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
রায় শুনে তাদের আনন্দ দেখে বিচারকেরা হতবাক হয়ে গিয়েছিল।এমনকি কারাগারে তাদের সামনে যখন ফাঁসির কাষ্ঠ প্রস্তুত করা হচ্ছিল তখনও তাদের বেশ উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল যা ব্রিটিশদের মনের জ্বালা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ক্ষোভের অনলে ক্ষতবিক্ষত ইংরেজ শাসকগণ তাদের এই অবস্থা দেখে ফাঁসি রায় পুনর্বিবেচনা করে তাদের বলেছিল, সুন হে বিদ্রোহী আসামীরা! তোমরা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে একে আল্লাহর শাহাদাত রূপে গণ্য করছ।
কিন্তু আমরা চাইনা তোমাদের সেই আশা এবং উচ্ছ্বাস আমাদের মাধ্যমে পূরণ হোক।তাই তোমাদের মৃত্যুদণ্ড রহিত করে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের রায় ঘোষণা করলাম।
জাতিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার এই লাইন গুলি তাদের জন্যই উহারা চাহুক দাসের জীবন,আমরা শহীদি দরজা চাই। নিত্য মৃত্যু-ভীত ওরা,মোরা মৃত্যু কোথায় খুঁজে বেড়াই।
শাহাদাতের তামান্না হৃদয়ে যাদের কিসের তাদের ভয় !
নেই কোন শক্তি পৃথিবীর বুকে ঠেকায় তাদের জয় !!
প্রতিটি মানুষকেই মৃত্যু বরণ করতেই হবে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জীবন দিয়েছে তারাতো জান্নাতি। তাদের আবার চিন্তা কিসের..?
বিষয়: বিবিধ
২৪৯৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবা্দ
নেই কোন শক্তি পৃথিবীর বুকে ঠেকায় তাদের জয় !!আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
নেই কোন শক্তি পৃথিবীর বুকে ঠেকায় তাদের জয় !!
মন্তব্য করতে লগইন করুন