বাংলাদেশ কি গরিব দেশ..? এর জন্য দায় কে..? ৪৩ হাজার কোটি টাকা যে সব বাংলাদেশীরা সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছেন তারাকি জাতির সু সন্তান..?
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:৩৩:০৬ দুপুর
বাংলাদেশিদের ৪৩ হাজার কোটি টাকা ফেরত আসা অনেকটাই অনিশ্চয়তা পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে সুইস ব্যাংকে তিন দফা চিঠি দিলেও তারা কোন সাড়া দিচ্ছেন না। এমনকি তিনটি চিঠির কোনো উত্তরও পাঠায়নি সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) কর্তৃপক্ষ।
এরপরও বসে নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা চতুর্থবারের মতো আবারো চিঠি প্রস্তুত করছে। আগামী সপ্তাহেই তা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, বারবার চিঠি দেওয়ার পরও সুইস ব্যাংক বাংলাদেশিদের গচ্ছিত টাকা ফেরতের বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি। এমনকি তিনটি চিঠির কোনো উত্তরও পাঠায়নি সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান মোবাইলে বলেন, ‘আমরা তথ্য চেয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি এখনো।’
তিনি জানান, অবৈধভাবে টাকা পাচারের বিষয়ে বিশ্বের পাঁচটি দেশের সঙ্গে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে সুইস ব্যাংক নেই। ফলে টাকা ফেরত আনা বিষয়ে তাদের (সুইস ব্যাংকের) সহায়তা পাওয়া অনেকটাই কঠিন।
তবে এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হিসেবে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা আশা করছে বাংলাদেশ। তিনি জানান, টাকা জমা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডের আইনও বাধা।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক সূত্রের দাবি, আন্তর্জাতিকভাবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন বাস্তবায়নে কাজ করছে এগমন্ট গ্রুপ অব ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। ১৫১ সদস্যের এই এগমন্ট গ্রুপে রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
দুই বছর আগে এই গ্রুপের সদস্য হয়েছে বাংলাদেশও। এগমন্ট গ্রুপের আদর্শ ও কার্যপরিধি অনুযায়ী, এই গ্রুপের সদস্য দেশগুলো পরস্পরের তথ্য সংগ্রহ ও পারস্পারিক সহযোগিতায় অঙ্গীকারবদ্ধ।
এর আওতায় ইতিমধ্যে অনেক সদস্য দেশ তথ্যবিনিময় করছে। বাংলাদেশও তথ্য দিচ্ছে ও সহযোগিতা করছে। টাকা ফেরত প্রসঙ্গে সুইস ব্যাংকের ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রয়োগ হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ১০ মাসে সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরাবরে পরপর তিনটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে বাংলাদেশের যেসব নাগরিকের টাকা সুইস ব্যাংকে জমা রয়েছে তাদের তালিকা চেয়ে প্রথম চিঠি দেওয়া হয়।
এ চিঠির কোনো জবাব দেয়নি সুইস ব্যাংক। পাচার করা টাকার তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এমওইউ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দ্বিতীয় চিঠি দেওয়া হয়। সে চিঠিরও কোনো জবাব দেয়নি সুইস।
পরে বিশ্বখ্যাত এইচএসবিসির মাধ্যমে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকেও সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারের তথ্য প্রকাশ পেলে টাকা জমাদানকারীদের তালিকা চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু তৃতীয় চিঠিটিরও কোনো জবাব দেয়নি সুইস ব্যাংক। ফলে আবারো চতুর্থবারের মতো চিঠি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) না থাকায় পাচার হওয়া টাকা ও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি অর্থ ফেরত আনাও যাচ্ছে না।
ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৪-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সাল শেষ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্রা গচ্ছিত রয়েছে।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪৩ হাজার কোটি টাকা (এক ফ্রা ৮৫ টাকা হিসাবে)। ২০১৩ সালে এ অর্থের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার কোটি টাকা। ২০১২ সাল শেষে ছিল ১৯ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। তবে এই তালিকায় প্রকাশ হয়নি নাগরিকত্ব গোপন রেখে যারা সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছেন, তাদের নাম-ঠিকানা সর্ম্পকিত তথ্য।
আমরা বাংলাদেশী প্রবাশীরা বছরের পর বছর কত পরিশ্রম করেও নিজেদের নেই নিরাপত্তা নেই অর্থনৈতিক সাফল্যর সম্ভাবনা। অথচ আমাদেরই দূরনীতিবাজ চরিত্রহীন লম্পটেরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে জমাকরে দেশের ক্ষতি করেই চলেছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন