সার্বভৌমত্ত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ! আওয়ামীলীগ, বি এন পি,ও জামায়াতে ইসলামী কোন পথে...?
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:১০:৪৯ রাত
সেকুলারিজমকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম করছে আওয়ামীলীগ, জাতিয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম করছে বি এন পি, পক্ষান্তরে জামায়াতে ইসলাম ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম করছে, নারী নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম নয়।
সেকুলারিজম, আল্লাহর উপর থেকে ঈমান ও আস্থা তুলে নেয়া আওয়ামীলীগের সংবিধানের বুনিয়াদ, আর জামায়াতের সংবিধানের বুনিয়াদ হচ্ছে আল্লাহর উপর ঈমান ও আস্থা তুলে নেয়া, সার্বভৌমত্ত্বের মালিক একমাত্র আল্লাহ।
এখানে দুইটা দুই রকম, শিরককে প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করেছে কুরাইশরা। আর রাছুল (স ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করেছেন, সেই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য অর্জনে সাময়িক চুক্তি করেছেন মুশরিকদের সাথে, তার অর্থ নয় রাছুল (স শিরক প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছেন।
ঠিক তেমনি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনে সাময়িক ভাবে নারী-নেতৃত্ব গ্রহণকারী দলের সাথে চুক্তি করেছে জামায়াত, তার অর্থ এই নয় জামায়াত নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করছে।
রাছুল (স অবস্থার বিবেচনায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মুশরিকদের সাথে চুক্তি করেছেন, জামায়াত তো মুশরিকদের দেয় চেয়ে কম মানের দলের সাথে চুক্তি করেছে। বি,এন,পি কে আপনি মুশরিক বলতে পারেন না।
সুতরাং, দুই হারাম ভিন্ন। একটা হচ্ছে ওই হারাম প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রানপন আন্দোলন যেটা আওয়ামীলীগ করছে, আর একটা হারাম হচ্ছে উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য গ্রহণ করা, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার জন্য বড় হারামের চেয়ে ছোট হারামকে সাময়িক সময়ের জন্য গ্রহণ যেটা জামায়াত করছে।
হ্যা, আপনি হয়তো বলতে পারেন এই হিকমত অবলম্বনের সেই রকম অবস্থা ও প্রয়োজনীতা কি জামায়াতের হয়েছে? এই ব্যাপারে আপনি ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন, কেননা, অবস্থা ও প্রয়োজনীতা একটি আপেক্ষিক ব্যাপার।
আপনার কাছে যা হিকমত অন্যের কাছে সেটা হিকমত না-ও হতে পারে। সেই ব্যাপারে আপনার দ্বিমতকে আমি সম্মান করি। অবস্থা, কৌশল, হিকমত বিবেচনায় সাহাবাদের মধ্যে-ও ভিন্ন মত হয়েছে, এবং প্রত্যেক মতা-মতকে স্কলাররা সম্মান করেন।
কিন্তু আপনি ঢালাওভাবে এটা বলতে পারেন না যে, জামায়াত এই হিকমত অবলম্বন করেছে বলে ইসলামের বাহিরে চলে গেছে বা কাফের দল হয়ে গেছে বা নারী-নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করছে।
রাছুল (স বলেছেন, "যুদ্ধ হচ্ছে কৌশল" . জামায়াত যদি নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করতো, তাহলে বি,এন,পি বা আওয়ামীলীগে যোগ দিত, জামায়াত বলে ভিন্ন দলের কোনো প্রয়োজন ছিলো না।
তাছাড়া, জামায়াতের আমীর থেকে সকল দায়িত্বশীল নির্ধারণের প্রক্রিয়া দেখে বিচার করুন, নেতার বউ, বা নেতার মেয়ে বা নেতার ছেলে হিসেবে পদ পায় না, বরং কোরআন ও সুন্নাহর জ্ঞানের আলোকে যেমন রাছুল (স ইমাম নির্ধারণের উপদেশ দিয়েছেন, জামায়াত সেই অনুযায়ী দায়িত্বশীল নির্ধারণ করেন।
আপনাদেরকে অনুরোধ করবো, জামায়াতকে ফেরেস্তা ভাববেন না, তারা-ও রক্তে মাংশে গড়া মানুষ। এই একই সমাজের ফিতনা ফাসাদের মধ্যে তাঁরা বড় হয়েছেন, সুতরাং তাদের অনেক ব্যক্তির চরিত্রের মধ্যে-ও এই সব খারাপ গুনের কিছু পাবেন, এটা-ই স্বাভাবিক।
তবে সেই ব্যক্তি বিশেষের আচরণ দিয়ে দলের আদর্শকে বিচার করা ভুল হবে। রাছুল (স এর সাহাবীদের মধ্যে-ও মুনাফিক ছিলো, সায়্যিদিনা আয়েশার সিদ্দিকার (রা বিরুদ্ধে কু-রটনা রটিয়েছে এমন মানুষ-ও ছিলো, রাছুল (স এর মক্কা আক্রমনের আগাম পরিকল্পনাকে মুশরিকদের জানিয়ে দিয়েছে এমন ছিলো, মুসলিম হত্যা করেছে এমন ছিলো, কিন্তু ওই ব্যক্তি বিশেষের আচরণ দিয়ে ইসলামকে যেমন বিবেচনা করা ভুল হবে।
আমি মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেখানে ঈমান নিয়ে টিকে থাকা দায়, সেখানে জামায়াতের এইটা ভুল, ঐটা ভুল এমন সমালোচনায় সময় নষ্ট না করে বরং তাদের এই বিপদের দিনে তাদের পাশে দাড়ানো, তাদেরকে সমর্থন করা এবং সময় সুযোগ বুঝে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে তাদের ভুলগুলো শুধরে দেয়া হবে জ্ঞানীর লক্ষণ।
আর বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর বিচারে জামায়াত ১০০% পারফেক্ট না হলে-ও অন্যান্য কাফের ফাসেক যালেম রাজনৈতিক দলের চেয়ে জামায়াতকে পছন্দ করা-ই হবে মুসলিমের দায়িত্ব।
কেননা, আপনার মতে জামায়াত খারাপ হলে-ও বা তাদের মধ্যে কিছু মানুষের মুনকার থাকলে-ও অন্তত্ব এইটুকু স্বীকার করুন আওয়ামীলীগ, বি,এন,পি ও জাতীয় পার্টিদের মধ্যে মুনকার হাজার গুন বেশি।
কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে কমেন্ট বা সমালোচনা করা সকলের উচিৎ। আল্লাহ আমাদের দেশটাকে ইসলামের তথা কুরআন সুন্নাহর উপর প্রতিষ্ঠা করুন এবং এতে সকল মুসলিম নাগরিক দেরকে সমপ্রীক্ত হওয়ার তাওফিক দিন।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যুক্তিময় সাবলীল উপস্হাপনায় সহমত পোষণ ও অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন