সাহসী কামারুজ্জামান ভাই এর কথা আর হযরত খোবায়েব(রাঃ) এর ঘটনা কি অপূর্ব মিল।
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৮ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:২৮:৪৯ বিকাল
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাহাবী হযরত খোবাইব (রাঃ) কে বিশ্বাকঘাতকতার মাধ্যমে আটক করে নিয়ে যায় কোরাইশ নেতৃবৃন্দরা। হযরত খোবাইব (রাঃ)কে শুলিতে চড়িয়ে হত্যার জন্য আরব নেতৃবৃন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে চারিদিকে দণ্ডায়মান।
তারা খোবাইব(রাঃ)কে হত্যার মাধ্যমে বদরের যুদ্ধে নিহত কুরাইশদের বদলা নিতে চায়। যখন তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন খোবায়েব (রাঃ) এর শেষ ইচ্ছা কি তা তারা জান্তে চায়। তাহার শেষ চাওয়া মোতাবেক তাঁকে দু’রাকাত নামায আদায়ের সুযোগ দিয়েছিল।
খোবাইব(রাঃ) কাবামূখী হয়ে দু’রাকাত সালাত আদায় করছেন। হায়! কতইনা সুন্দর ঐ দু’রাকাত সালাত। কিন্তু অতি দ্রুত শেষ হয়ে গেল মধুর দৃশ্যের সেই দুটি রাকাত। অতঃপর সে দেখল খোবাইব কুরাইশ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলছে, যদি তোমরা এই ধারণা না করতে যে, ‘মৃত্যুর ভয়ে আমি সালাত লম্বা করছি’ আল্লাহর শপথ তাহলে আমি নামায আরো দীর্ঘায়িত করতাম।
অতঃপর সাঈদ অত্যান্ত নিকট থেকে দেখতে পেল কুরাইশরা জীবন্ত বন্দী হযরত খোবাইব(রাঃ) এর দেহে শূঁচালো বর্শার শলা দিয়ে খুুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শরীর থেকে চামড়া মাংস খুলছে।
উপর্যুপুরি আঘাত করে একের পর এক দেহাংশ কেটে অঙ্গ বিকৃত করতে করতে বলছে, খোবায়েব, তুমি কি এ প্রস্তাব পছন্দ করবে যে,
মুহাম্মদ তোমার স্থলে হোক, বিনিময়ে তুমি মুক্ত হয়ে যাও? বিক্ষত সমস্ত শরীর টপ টপ করে রক্ত ঝরছে আর নেতিয়ে পড়া মৃত প্রায় দেহটি গর্জে উঠে বলেছেন। আল্লাহর কসম! আমি এ প্রস্তাব পছন্দ করিনা যে, আমি আমার পরিবার পরিজন ও সন্তানাদি নিয়ে নিরাপদে শান্তিতে থাকি আর মুহাম্মদ (সাঃ) কে একটি কাঁটার আঁচড় দেয়া হবে।
এই কথা বলার সাথে সাথেই উন্মুক্ত ময়দান থেকে হাঁক দেয়া হলো “তাকে হত্যা করে ফেলো, তাকে হত্যা করে ফেলো।”
খোবায়েব আকাশের পানে তাকিয়ে বলছে, “হে আল্লাহ, আপনি এদের সংখ্যা গণনা করে রাখুন, এদের শক্তি খর্ব করে দিন এবং এদের একজনকেও ছেড়ে দিবেন না।
একথা বলেই আল্লাহর প্রিয় নবীজির প্রিয় সাহাবী হযরত খোবাইব (রাঃ) শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করে শহীদ হয়ে গেলেন তখনও এত অসংখ্য তরবারীও বর্শাঘাত তার উপর চলছিল যা গণনা করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিলনা।
কামারুজ্জামান ভাই এর কথা গুলো স্বরণ করে দিল হযরত খোবাইব(রাঃ) এর শাহাদাতকে তিনি বললেন, আমি কোন সড়ক দুর্ঘটনায়ও তো মারা যেতে পারতাম। অসুস্থ হয়েও কত মানুষ মারা যায়। ওই সব মৃত্যুতে কোন সম্মান নেই। গৌরব নেই। তবে সরকারের সাজানো বিচারের এই রায়ে যদি আমার মৃত্যু হয় তা হবে শাহাদাতের মর্যাদার, গৌরবের মৃত্যু।
তিনি বলেন, দ্বীন কায়েম করতে হলে রক্ত দিতে হয়। ইসলামের ইতিহাসে তা বারবার প্রমাণ হয়েছে।আমিতো শহীদ হতে যাচ্ছি. ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। মুমিনের সারাজীবনের আকাংখাই তো এই শহীদি মরন।
তাহলেকি ওদেরকে আল্লাহ কবুলিয়াতের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে..? আল্লাহর কসম! হে আল্লাহ তোমার ইজ্জতের কসম আমাকেও এই গৌরবের মুত্যু দাও..!
বিষয়: বিবিধ
২০৪৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অন্যায়কারিরা সবসময় নিজেকে বিজয়ি মনে করে। কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে পরাজিত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন