আসুন হাতে একটু সময় নিয়ে জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ট সন্তান শেখ মুজিবরের শাসন আমলের কিছু অংশ বিশেষ দেখে নি..!॥
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৯ জুন, ২০১৪, ১০:৪৩:৩৯ রাত
আসুন হাজারো ব্যস্থতার মাঝেও হাতে একটু সময় নিয়ে শেখ মুজিবরের শাসন আমলের ক্ষুদ্র কিছু অংশ বিশেষ দেখে নিই।যা নতুন প্রন্মের কেউ এসব ব্যপারে কিছুই জানে না।ইতিহাস কথা বলে এবং ইতিহাস জানা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।
১৯৭৩ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের কিছু খবরের শিরোনাম ছিলঃ- “ঝিনাইদহে এক সপ্তাহে আটটি গুপ্তহত্যা” (০১/০৭/
৭৩) “ঢাকা-আরিচা সড়ক : সূর্য ডুবিলেই ডাকাতের ভয়” (০২/০৭/ ৭৩)
একদিকে মানুষ অনাহারে দিন যাপন করিতেছে, অপরদিকে সরকারি গুদামের গম কালোবাজারে বিক্রয়
হইতেছে” (ইত্তেফাক এপ্রিল ৭,১৯৭৩)
“এখানে ওখানে ডোবায় পুকুরে লাশ।” (সোনার বাংলা এপ্রিল ১৫,১৯৭৩) “চালের অভাব পেটের জ্বালায়
ছেলেমেয়ে বিক্রি, হবিগঞ্জেহাহাকার, অনাহারে এ পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু” (গণকন্ঠমে ৩,১৯৭৩)
“কোন এলাকায় মানুষ আটা গুলিয়া ও শাক- পাতাসিদ্ধ করিয়া জঠর জ্বালা নিবারণ করিতেছে” (ইত্তেফাক মে ৩,১৯৭৩) “অনাহারে দশজনের মৃত্যু, বিভিন্নস্থানে আর্ত মানবতার হাহাকার, শুধু একটি ধ্বনি ভাত দাও” (গণকন্ঠ
মে ১০,১৯৭৩)
“লতাপতা, গাছের শিকড়, বাঁশ ও
বেতের কচি ডগা, শামুক, ব্যাঙ এর ছাতা, কচু- ঘেচু
পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্যে পরিণত,
গ্রামাঞ্চলে লেংটা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি” (ইত্তফাক মে ১০,১৯৭৩)
“পটুয়াখালীর চিঠি, অনাহারে একজনের মৃত্যু, সংসার
চালাতে না পেরে আত্মহত্যা” (গণকনঠ মে ১০, ১৯৭৩)
“ওরা খাদ্যভাবে জর্জরিত, বস্ত্রাভাবে বাহির হইতে পারে না” (ইত্তেফাক মে ৩০,১৯৭৩) “আত্মহত্যা ও ইজ্জত বিক্রির
করুণ কাহিনী” (গণকন্ঠজুন ১,১৯৭৩)
“স্বাধীন বাংলার আরেক রূপ, জামাই বেড়াতে এলে অর্ধ-উলঙ্গ শ্বাশুরী দরজা বন্ধ করে দেয়” (সোনার বাংলা জুলাই ১৫,১৯৭৩)
“বরিশালে থানা অস্ত্রশালা লুট, ৪ ব্যক্তি নিহত” (৪/০৭/ ৭৩) “পুলিশ ফাঁড়ি আক্রান্ত, সমুদয়অস্ত্রশস্ত্র লুট” (১২/০৭/ ৭৩) “লৌহজং থানা ও ব্যাঙ্কলুট” (২৮/০৭/৭৩)
“দুর্বৃত্তের ফ্রি স্টাইল” (০১/০৮/৭৩) “পুলিশ ফাঁড়ি ও বাজার লুট, লঞ্চ ও ট্রেনে ডাকাতি” (৩/০৮/ ৭৩)
“এবার পাইকারীহারে ছিনতাই, সন্ধা হইলেই শ্মশান” (১১/০৮/ ৭৩)
“চট্টগ্রামে ব্যাংক ডাকাতি লালদীঘিতে গ্রেনেড চার্জে ১৮ জন আহত, পাথরঘাটায় রেঞ্জার অফিসের অস্ত্র লুট” (১৫/০৮/ ৭৩)
“খুন ডাকাতি রাহাজানি, নোয়াখালীর নিত্যকার ঘটনা,
জনমনে ভীতি” (১৬/০৮/৭৩) “২০মাসে জামালপুরে ১৬১৮টি ডাকাতি ও হত্যাকান্ড” (১৭/১১/ ৭৩)
“আরও একটি পুলিশক্যাম্প লুট, সুবেদরসহ ৩ জন পুলিশ অপহৃত” (১৩/০৭/ ৭৩)
“যশোরে বাজার লুট দুর্বৃত্তেরগুলী তে ২০ জন আহত” (১৮/০৪/ ৭৪) “রাজশাহীতে ব্যাংক লুট” (২১/৪/ ৭৪)
মুজিব আমলের পত্রিকা গুলো পড়লে চোখে পড়বে এরূপ
হাজার হাজার ঘটনা ও বহু হাজার বিয়োগান্ত খবর।
পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসে দুর্বৃত্তরা যত না ঘটনা ঘটেছে মুজিবের ৪ বছরে তার চেয়ে বহু গুণ বেশী ঘটেছে। বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে “ভিক্ষার ঝুলী” এ খেতাব জুটিনি, কিন্তু মুজিব সেটি অর্জন করেছে।
অথচ কিছু কাল আগেও গ্রামবাংলার অধিকাংশ মানুষের গৃহে কাঠের দরজা- জানালা ছিল না। ঘরের দরজায় চট বা চাটাই টানিয়ে অধিকাংশ মানুষ পরিবার
পরিজন নিয়ে নিরাপদে রাত কাটাতো।
কিন্তু মুজিব শুধু খাদ্যই নয়, সে নিরাপত্তাটুকুও কেড়ে নেয়। নিরাপত্তার খোঁজে তাদেরকে ঘর ছেড়ে বন-জঙ্গলে আশ্রয় খুঁজতে হয়। থানা পুলিশ কি নিরাপত্তা দিবে ?
তারা নিজেরাই সেদিন ভুগেছিল চরম নিরাপত্তাহীনতায়। দুর্বত্তদের হাতে তখন বহু থানা লুট হয়েছিল। আজ আবার কি আমাদের কে সে দিনের দিকেই ফিরে যেতে হবে কিনা এখনই তা চিন্তা করা প্রয়োজন।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন