বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে , আদালত গৃহযুদ্ধ থামাতে পারে না...!

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৭:২৪ রাত

যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রশ্নে নিউ ইয়র্ক টাইমসে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি নিবন্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে চিন্তার জগতে ঝড় উঠেছে। কারণ এতে দাবি করা হয়েছে যে, এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত যে,

রাজনীতিকে বাদ দিয়ে কেবল আদালত দিয়ে রাজনৈতিক সহিংসতামূলক কোন বিরোধ মেটানো যায় না। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থাবো এম্বেকি এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি’র লেখা ওই নিবন্ধটি বাংলাদেশের চিন্তাবিদ ও পর্যবেক্ষকদেরও ভাবিয়ে তুলেছে।

কারণ নিবন্ধটির যুক্তি কেবল হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে চলমান যুদ্ধাপরাধের বিচারই নয়, ন্যুরেমবার্গ মডেল অনুসরণকারী বিশ্বের সকল আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় দায়িত্বশীলতা ও কার্যকারিতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

১৯৭১ সালে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। এবং ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ ন্যুরেমবার্গ মডেলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন পাস করেছিল।

থাবো এম্বেকি ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সুদান ও দক্ষিণ সুদানে আফ্রিকান ইউনিয়নের দূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্যদিকে অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি উগান্ডার কাম্পালায় অবস্থিত মেকেরি ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল রিসার্চ-এর নির্বাহী পরিচালক।

তারা ওই নিবন্ধে যুক্তি দিয়েছেন যে, ‘রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার পরে চরম সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ সুদানের সংঘাত সর্বশেষ উদাহরণ। কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেয়ার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহিংসতাকারীদের দোষী সাব্যস্তের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। বাংলাদেশেও রাজনৈতিক সংস্কারে কারও মনোযোগ নেই বলে অনেকে মনে করেন।

লেখকদ্বয় মন্তব্য করেন যে, ঠাণ্ডা যুদ্ধের শেষে চরম সহিংসতা বন্ধে বিশ্ব নুরেমবার্গের বিচারকে মডেল হিসেবে নিয়েছিল। সে কারণেই গঠিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা।

কিন্তু এই সাধারণ বিবেচনাটি এখন নতুন করে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী মনে রেখে বেশ কিছু সংখ্যক দেশ, যারা আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত, তারা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এখন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে আফ্রিকান নেতাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে, কেন তারা সরে গেল তা নিয়ে। অথচ রাজনৈতিক কার্যকারণতাড়িত ব্যাপকভিত্তিক সহিংসতার বিচার করার যে সীমাবদ্ধতা সেটা আলোচনায় আসেনি।

অনেকের মতে বাংলাদেশে বিরোধী দল চলমান বিচার প্রক্রিয়ার ত্রুটি নিয়ে সন্দিহান থাকলেও তারা এবিষয়ে কোন স্পষ্ট বক্তব্য হাজির করতে পারেনি। এমনকি তারা এ বিষয়ে কোন আলোচনা করতেও নারাজ।

আদালত কেন উত্তর নয়, তার পক্ষে তারা লিখেছেন, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত ন্যুরেমবার্গ মডেলে গঠিত হয়েছিল। কিন্তু ব্যাপকভিত্তিক সহিংসতা কোন সাধারণ ফৌজদারি অপরাধ নয়।

এটা অনেক বেশি রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সহিংসতার একটি অধিক্ষেত্র রয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা ইস্যু দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে, যারা অপরাধ ঘটায় তারাই এটা তাড়া করে বেড়ায় না।

ঢাকার পর্যবেক্ষকরা বলেন, এই বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য প্রাসঙ্গিক। কারণ ক্ষমতাসীন দল এই বিচার প্রক্রিয়াকে দলীয় স্লোগানে পরিণত করেছে। জাহানারা ইমাম যখন ইস্যু করতে চেয়েছেন তখন দলটির সময় ছিল না।

এখন সময় হয়েছে। আবার বিরোধী দলে গেলে তারা বিপরীত আচরণ করবে। সুতরাং ফল দাঁড়াবে বাংলাদেশ এই ইস্যুতে ফুটতেই থাকবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নেলসন ম্যান্ডেলাকে ঢাকায় আনা হয়েছে কিন্তু তার শিক্ষা কেউ গ্রহণ করেনি। এমনকি মূল দলগুলো আলোচনাতেও আনেনি।

ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ১৯৪৯ সালে বিচার শেষ হওয়ার পর থেকে ন্যুরেমবার্গের স্পষ্টতম বিকল্প হচ্ছে জটিল একগুচ্ছ আলোচনা। এর নাম কনভেনশন ফর এ ডেমোক্রেটিক সাউথ আফ্রিকা সংক্ষেপে কোডেসা।

এটা ১৯৯০ দশকে বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়েছিল। কোডেসা আলোচনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ন্যাশনাল পার্টি, দি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন। তারা একটি সংবিধান প্রণয়নে সক্ষম হয়েছিল।

এর ফলে বর্ণবাদ পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার সূচনা করা সম্ভব হয়েছিল। কোডেসার শিক্ষা হচ্ছে এমন একটা সময় আসবে, যখন রাজনৈতিক সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার আগ পর্যন্ত অপরাধের দায়দায়িত্ব নির্ধারণের প্রশ্ন স্থগিত রাখা হবে।

বাংলাদেশ এর ফলাফল ভাবেনি। ১৯৭৫ সালের আগের বিচারের কথা এখন কেউ স্মরণে আনছে না। কারণ তারা পালাতে চাইছে। ওই স্মৃতিচারণ মানে অতীতের অক্ষমতা স্বীকার করা।

ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ন্যুরেমবার্গ অনেক বিরোধীয় যুক্তি সামনে এনেছে। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ইউরোপের ইতিহাসে মিত্র শক্তি সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী জাতিগত সংখ্যালঘু নিধনযজ্ঞ সম্পন্ন করেছে।

এটা করতে গিয়ে কেবল সীমান্তগুলোরই পুনর্বিন্যাস ঘটেনি। একই সঙ্গে লাখ লাখ মানুষকে জাতীয় সীমান্তগুলো পাড়ি দিতে হয়েছে। এই ঘটনার বড় নীতিগত অবস্থান হচ্ছে, যারা বেঁচে যাবে, সেই সার্ভাইভারদের জন্য অবশ্যই একটি নিরাপদ আবাস তৈরি করতে হবে।

সার্ভাইভার শব্দটি গণহত্যা পরবর্তী একটি উদ্ভাবন। এটা কেবলই অতীতের বা গতকালের ভুক্তভোগীদের জন্য প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এতে এই অনুমান ধরে নেয়া হয়েছে কোন একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ভুক্তভোগীদের স্বার্থকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।

ন্যুরেমবার্গ প্রক্রিয়ায় যে বিচার আমরা দেখেছি, তাতে ব্যাপকভাবে এটাই ধরে নেয়া হয়েছে যে, বিজয় শেষ হয়ে যাওয়ার পরে বিজয়ী এবং পরাজিত (কিংবা দুষ্কৃতকারী এবং ভুক্তভোগী) আর একত্রে বসবাস করবে না।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গদের একটি মাত্র দেশে বসবাস করার বাস্তবতা সামনে ছিল, যেভাবে রুয়ান্ডায় গণহত্যার পরে হুতু ও তুতসিদের একত্রে থাকতে হয়েছে।

বাংলাদেশ পর্যবেক্ষকরা স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তিকে একটি দেশেই টিকে থাকতে হবে। যেভাবে হুতু ও তুতসিদের একত্রে থাকতে হয়েছে।

ওই নিবন্ধে বলা আরো হয়েছে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কোডেসার আলোচনা উভয়পক্ষকে এই স্বীকারোক্তি দিতে হয়েছে যে, তাদের সামনে যে চটজলদি বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে কোন আসন্ন বিপ্লব (স্বাধীনতার আন্দোলন) নেই কিংবা (ক্ষমতাসীনদের জন্য) কোন সামরিক বিজয় নেই।

উভয় পক্ষকে দ্রুত বিবেচনায় নিতে হয়েছে যে, আপনি যদি আপনার প্রতিপক্ষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর হুমকি দেন, তাহলে সংস্কার প্রক্রিয়ায় তারা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে কোন উৎসাহ দেখাবে না।

তাই অপরাধী হিসেবে চিহ্নিতকরণ কিংবা অশুভ শক্তি হিসেবে পরস্পরকে চিহ্নিত করার ঝোঁক সামলিয়ে তারা আলোচনায় বসেছে। এই আলোচনার প্রক্রিয়াটি অবশ্যই বহু রক্তক্ষয়ী সংঘাত প্রত্যক্ষ করেছে।

যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয় নেতা ক্রিস হানির হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু চূড়ান্ত ফল এসেছে এই যে কথিত অপরাধীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি এবং তার পরিবর্তে তাদেরকে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

গতকাল যারা ছিলেন প্রাণঘাতী শত্রু, তারা বড় জোর প্রতিপক্ষ হতে পেরেছে। ১৯৯০ দশকের গোড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকায় যে ধরনের সহিংসতা ঘটেছে তার মধ্যে গভীর সামাজিক বিভক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল।

সেই একই কথা সত্য আজকের কেনিয়া, কঙ্গো, সুদান ও দক্ষিণ সুদানের চরম সহিংসতায়। ন্যুরেমবার্গ স্টাইলের বিচার এই বিভক্তিসমূহকে নিরাময় করতে পারে না। তাই আমাদের এমন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া দরকার, যেখানে কোন বিজয়ী পক্ষ থাকবে না, কোন পরাজিত পক্ষ থাকবে না। কেবল সার্ভাইভার থাকবে, প্রত্যেকের এই একটিই পরিচয়।

বাংলাদেশ পর্যবেক্ষকরা ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধের কথা বলেছেন। সিরীয় পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে ফরেন পলিসির এক নিবন্ধ বলেছে, বাংলাদেশ একটি সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মাঝামাঝি অবস্থান করছে। আর নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই নিবন্ধ বলেছে, ‘কোন গৃহযুদ্ধে কোন পক্ষই সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং সম্পূর্ণ নিরীহ হতে পারেন না।

এবং চরম সহিংসতা সাধারণত নীরবে নিভৃতে ঘটে থাকে। প্রায়ই এটা পরিণত হয় সহিংসতা সংঘটনের একটি চক্রে। ভুক্তভোগী এবং দুষ্কৃতকারী উভয় পক্ষ এক স্থান থেকে অন্য স্থান পরিবর্তন করে।

তাই প্রত্যেক পক্ষই সহিংসতার কারণ সম্পর্কে একটি নিজস্ব বিবরণ তৈরি করতে পারেন। তাই আদালত যা করছে তাকে যদি আমরা সাধারণভাবে নিপীড়িত বা ভুক্তভোগীদের বিচার বলি তাহলে একটি ঝুঁকি থেকে যায়। আর তা হলো গৃহযুদ্ধ অব্যাহত থাকা।

বাংলাদেশে ভুক্তভোগীদের বিচার চলছে বা চলবে কিনা কিংবা আরো জটিল প্রশ্ন আসবে কিনা সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট থাবো এম্বেকি এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহমুদ মামদানির লেখা ওই নিবন্ধটি বাংলাদেশকে পথ দেখাতে পারে।

কারণ তারা বলেছেন, উপনিবেশিকতাবাদী বেশির ভাগ সমাজ কোন না কোন পর্যায়ে গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে থাকে। বিতর্কটা হয়ে থাকে এমন সব কথা নিয়ে যে, ঔপনিবেশিক শাসনে দুষ্কর্মের সহযোগী কারা ছিল আর কারা ছিল না।

এই সব সমাজ আরও বেশি বিভক্ত হয়ে পড়ে এই সব বিতর্কের মধ্যে-যাতে প্রশ্ন ওঠে-কে জাতিকে ধারণ করে আর কারা করে না এবং নাগরিকত্ব লাভ করতে কে যোগ্য আর কে নয়। স্বীকার বা অস্বীকার যা-ই করা হোক না কেন, বাংলাদেশে এই লক্ষণগুলো পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে।

নিবন্ধটির শেষ কথা হলো এই যে, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও একটি গৃহযুদ্ধ ছিল। এর বিভিন্ন বিচ্যুতি রেখাগুলো স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে প্রায় এক শতাব্দী আগেই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিল। আমেরিকানরা নিশ্চয়ই মনে রাখবেন যে, দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব এতটা বিজ্ঞোচিত ছিল যে, তারা গৃহযুদ্ধ শেষে আদালতের বিচারের দ্বারস্থ হওয়াকে নাকচ করেছিলেন।

এর পরিবর্তে তারা পুনর্গঠনের বিকল্প বেছে নিয়েছিলেন।’

বাংলাদেশ স্পষ্টতই পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে না।

বিষয়: বিবিধ

১০১৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

176012
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৩১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য। এই বিষয়ে গতকাল ফরহাদ মাজহার এর একটি লিখা বের হয়েছে যুগান্তরে। আপনার বিশ্লেষনটিও পত্রিকারয় ছাপার উপযুক্ত।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৮
129584
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
176014
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৩৪
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : চমত্কার অনেক ধন্যবাদ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৯
129585
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File