ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধ, এবং তাদের আসলে পরিচয় কি..?
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:৩৫:৩৮ রাত
ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে দেশগড়ার আগামীদিনের আদর্শিক নেতৃত্বকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে তাদের চেহারা জাতির সামনে উন্মোচিত হওয়াই উচিৎ।
আজ বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চল থেকে একটি খবরই আসছে প্রতিনিয়ত, তাহল ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধ, যদিও স্থানীয় মানুষ যুদ্ধতো দূরে থাক প্রতিপক্ষের কোন বাহিনীও দেখতে পাচ্ছেন না।
বড়জোর রাতের অন্ধকারে একটা বা দুটা গুলির শব্দ শুনছে আর সে গুলিতে অবশ্যই একজন নিরাপরাধ মানুষের জীবন যাচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন পরিকল্পিতভাবে ক্রসফায়ারের নামে নিরপরাধ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা হচ্ছে।
ফলে দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে পাশাপাশি নানান প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে যার মধ্যে অন্যতম কিছু প্রশ্ন হল..
১) ক্রসফায়ারের নামে যাদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে তাদের আসলে পরিচয় কি?
২) ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে যাদেরকে প্রকাশ্যে দিনের আলোতে বাড়িঘর অফিস আদালত বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ধরে নিয়ে রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হচ্ছে আসলে তাদের অপরাধ কি?
তারা যদি অপরাধী হয়েই থাকে তবে কেন তাদের জানাযায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামছে?
৩) এই প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র মধ্যম বয়সের (২৫-৪০) তরুন নেতাদেরকে কেন হত্যা করা হচ্ছে?
৪) সরকারকে এইভাবে দেশের উচ্চশিক্ষিত এবং ভবিষ্যত আধুনিক ও উন্নত দেশগঠনের কারিগরদেরকে হত্যার লাইসেন্স কে দিয়েছে..? বাংলাদেশের প্রচলিত আইন আদালত কি এই হত্যাকান্ডের বৈধতা দিয়েছে?
৫) জাতিকে মেধাবী ও আদর্শিক নেতৃত্বশুন্য করার এইরকম জাতি বিধ্বংশী হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে দেশের তথাকথিত মানবধিকার সংস্থা, সুসীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী শ্রেনী, বেশিরভাগ মিডিয়া এবং উচ্চ আদালত নীরব কেন..?
নাকি এদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই উৎসব চলছে?
যারা দেশকে ভালবাসেন, দেশের কল্যান চান এবং এই নারকীয় হত্যাকান্ডের স্বীকার আপনিও যাতে না হন তাদের সবার উচিৎ উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করা।
এবং এই রাস্ট্রীয় হত্যাকান্ড বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা।অচিরেই এই হত্যাকান্ড বন্ধ না হলে মনে রাখবেন আজ অমুক মায়ের বুক খালি হয়েছে, অমুক বোন বিধবা হয়েছে,
কাল অমুক সন্তান এতিম হয়েছে, কাল আপনার মাও সন্তান হারাতে পারে, আপনার স্ত্রীও বিধবা হতে পারে, আপনার সন্তানও এতিম হয়ে যেতে পারে এবং এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
সুতারাং এই নৃ:শংস হত্যাকান্ড বন্ধের জন্য প্রাথমিকভাবে যে কাজটি করা দরকার তাহলো যৌথ বাহিনী বা র্যাবের নামে যারা বাংলাদেশের যে প্রান্তেই এই হত্যাকান্ডে অংশ নিচ্ছে তাদের পরিচয় ছবিসহ জাতির সামনে তুলে ধরা।
এবং ব্যাপকভাবে প্রচার করা যাতে এদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে এবং খুনিদেরকে সবাই চিনতে পারে যাতে অন্যরা সতর্ক হতে পারে পাশাপাশি আন্তর্জাতীক মিডিয়াতে প্রচারের ব্যবস্থা করা।
এই কাজ গুলা করা প্রতিটি নাগরিকের জন্যই একান্ত জরুরী। আল্লাহ সবাইকে দেশ প্রেমের সাথে, ইমানের সাথে অবিচল থাকার তাওফিক্ব দিন।
হেফাজতে ইসলাম মাঠে না আসলে যেমন মতিজিলের গনহত্যা হতো না, তেমনি হেফাজতে ইসলাম না আসলে- হাসিনার ব্যাক আপ গ্রুপ নাস্তিক দের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ গভীর ঘুমেই থেকে জেতো।
আগে শুধু জামায়াত-শিবিরই ভিক্টিম ছিলো। আজ জারাই মুখ খুলবে- তারাই ভিক্টিম হবে। আর মুমিন হলে মুখ খুলতেই হবে- নতুবা আল্লাহ মালুম- জাতির কপালে কি আছে?
তাই আসুন সময় থাকতেই কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে ঐক্য গড়ে তুলে দেশ জাতি, এবং ইসলামকে রক্ষা করা ছাড়া এই জাতির মুসলিম উম্মাহর সামনে অন্য কোন পথ কোলা নেই।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৫ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মজার ব্যাপার হল, প্রতিটা বন্দুকযুদ্ধই হচ্ছে রাতের অন্ধকারে এবং এখানে কোন প্রত্যক্ষদর্শী থাকছে না। এভাবে প্রতিদিন পরিকল্পিতভাবে ক্রসফায়ারের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা হচ্ছে। এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র সুসংহত হচ্ছে!!
রাজাকার নিধনে নেমেছেন আমাদের রানীকার। ভালো কথা, কিন্তু এদেরকে বিচারের আওতায় এনে মারলে ভাল হত না? স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বানিয়ে পুরোদেশকে বিভক্ত করে ফায়দা তুলেছেন উনি এবং তামাশার নির্বাচন করে দেখিয়েছেন, এদেশের কোথাও কোথাও স্বাধীনতার পক্ষে ০% মানুষ, অনেক জায়গায় এই হারটি ১-৫%, ব্যাপক জালিয়াতির পরও খোদ ঢাকা শহরে ১৫%-এর নজির আছে। নজিরবিহীন নির্বাচন কমিশনের তথ্যটাও যদি সত্যি ধরে নেই তাহলেও স্বাধীনতার পক্ষে ৪০% মানুষ। আসলে কি তাই! আমি জানি এবং আরও দশজন লোক জানেন ৯৯.৯৯৯৯৯৯৯৯৯% মানুষ বাংলাদেশী বাঙালী। হাতে গোনা যে কয়জন আছে (এরা বিভিন্ন দলে মিশে আছে, জামায়াত ইসলামে বেশি আছে; আওমী লীগে কম আছে- কিন্তু আছে)এরা তো চিহ্নিত! এদের বিচার সম্পন্ন করা গেলে সংখ্যাটা ১০০% হয়ে যাবে। সেটা কি বর্তমান সরকার চায়? চাইলে রাতের আঁধারে মানুষ খুন করা বন্ধ করুন! দিনের আলোয় বিচার করুন- সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে এত দ্বিধা কেন?
মন্তব্য করতে লগইন করুন