হাসিনা কি লেন্দুফ দর্জির ভূমিকায়..? দেশ আমাদের মাথা বেথা দিল্লির..!

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৫৮:০৪ সকাল

হাসিনাকে আরেকটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দিল্লির পরামর্শ ০২ জানুয়ারি,২০১৪ নিউজ ডেস্কআরটিএনএনঢাকা:

বাংলাদেশের একতরফা ভোট নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাথা ঘামানো ভারতের কাছে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নিরাপত্তা এবং কূটনীতিক দুদিক দিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ খারাপ হওয়ার বিষয়ে একটি রিপোর্ট রয়েছে বলে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা খবর ছেপেছে।

এতে বলা হয়েছে, ভারত মনে করে ৫ জানুয়ারির ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন সম্ভব হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এজন্য দেশটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আরেকটি সাধারণ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছে।

একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর জঙ্গিপনা পুরোপুরি শেষ করতে হলে জরুরি অবস্থা জারিই উপযোগী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা জারির পক্ষে রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

‘জঙ্গি জামাতকে সামলে হাসিনা ফের নির্বাচনে আসুন’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন হুবহু তুলে দেয়া হলো;আগামী ৫ তারিখ বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের পর নিরাপত্তা এবং কূটনীতি দু’দিক থেকেই পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে সুনির্দিষ্ট রিপোর্ট এসেছে নয়াদিল্লির কাছে।

জামাতে ইসলামির জঙ্গিপনা পুরোপুরি শেষ করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারি করা একটি উপযোগী পন্থা হিসেবে মনে করছে শেখ হাসিনা সরকার। তাদের দাবি, সে ক্ষেত্রে এক দিকে নির্বিঘ্নে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আবেগকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব হবে।

অন্য দিকে বিরোধীদের লাগাতার হরতাল-অবরোধ বন্ধ হওয়ায় জনজীবন স্বাভাবিক হবে। মানুষও স্বস্তি পাবেন। পশ্চিম বিশ্বের পক্ষেও বাংলাদেশ-বিরোধী অবস্থান নেওয়া সহজ হবে না।

কিন্তু ঢাকা এ কথা মনে করলেও এই পরিস্থিতি যে দীর্ঘদিন চলতে পারে না, সে কথাই বলা হচ্ছে রিপোর্টে। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গোটা লড়াইটাই একপেশে হয়ে গিয়েছে।

১৫৩টি আসনে ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে বসে রয়েছেন এক জন করে প্রার্থী। এর মধ্যে ১৩২ জনই শাসক আওয়ামি লিগের। বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া ‘কার্যত গৃহবন্দি’ বলে দাবি করেছে তাঁর দল।

বিএনপি-র অনেক নেতাই জেলে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে পশ্চিমি দুনিয়া। তাই এই দফায় সরকার গড়লেও খুব দ্রুত দেশে রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে আরও একটি সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ ঢাকাকে দিচ্ছে নয়াদিল্লি।

গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য ৫ তারিখের আগেই কোনও উচ্চপদস্থ কর্তাকে ঢাকায় পাঠানোর কথা ভাবছে নয়াদিল্লি।

সব মিলিয়ে তাই এক দিকে যেমন সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কোমর বাঁধা হচ্ছে, শরণার্থীদের প্রশ্নে কিছুটা মানবিকতার পথেই হাঁটার কথা ভাবা হচ্ছে, অন্য দিকে কূটনৈতিক স্তরে হাসিনা সরকারকেও বোঝানো হচ্ছে,

পরিস্থিতির রাশ ধরার জন্য সংবেদনশীল পদক্ষেপ করতে হবে। কেন না বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘতম সীমান্তের ভাগীদার ভারতের পক্ষেও অবস্থাটা আদৌ অনুকূল নয়।

বিষয়টির নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক দু’রকম দিকই রয়েছে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।সীমান্ত সিল করে দেওয়া অথবা শরণার্থীদের জন্য ব্যবস্থা করা আপৎকালীন তৎপরতা হতে পারে,

কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ভাবে এই চাপের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়াটা নয়াদিল্লির কাছে যেমন সহজ নয়, তেমনই কাম্যও নয়। পূর্ব উপকূলকে কাজে লাগিয়ে ভারতে জঙ্গি পাচার করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।

সুতরাং বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি ভাবে জঙ্গিপনার দিকে হাঁটুক, এটা কিছুতেই চায় না সাউথ ব্লক। আর তাই আমেরিকার সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ জানিয়েছেন, জামাতে ইসলামিকে কোনও ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই জামাতকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা প্রয়োজন।কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দীর্ঘ দৌত্যের পরেও যে আমেরিকা সুর নরম করেনি, তা এখন স্পষ্ট।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজেনা খোলাখুলিই জানিয়েছেন, নির্বাচন হওয়া উচিত অবাধ এবং নিরপেক্ষ। আসন্ন ভোট নিয়ে আওয়ামি লিগের ভূমিকায় যে আমেরিকা আদৌ সন্তুষ্ট নয়, সে কথাও বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমি দুনিয়া বলছে, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা।যে রিপোর্টটি সম্প্রতি সাউথ ব্লকে পৌঁছেছে, তাতে বলা হচ্ছে, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে তার সঙ্গে চূড়ান্ত অসহযোগিতার পথে হাঁটবে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। কোনও কারণে এই সরকার পড়ে গিয়ে জামাত সমর্থিত বিএনপি সরকার আসে, তা হলে বিপুল সংখ্যক অনুপ্রবেশকারী মোকাবিলার জন্য ভারতকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

তখন শুধুমাত্র হিন্দুরাই নন, অসংখ্য ধর্মনিরপেক্ষ মুসলমানও বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হবেন। আর তাঁদের সহজ গন্তব্য হবে ভারত।

চলতি পরিস্থিতির মোকাবিলায় হাসিনা সরকারকে জরুরি অবস্থা জারি করতে হতে পারে, এমন কথাই বলছে ওই রিপোর্ট। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সে দেশের সংবিধান অনুসারে ৪ মাস পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে সরকার।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ হিংসামুক্ত আবহাওয়ায় একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার অবকাশ পাবেন। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন, জিনিসের অগ্নিমূল্যও কমবে।

যুদ্ধাপরাধীদের একের পর এক ফাঁসি হলে হয়তো আবার উন্মত্ত হতে পারে জামাত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থাকে আরও কিছু দিন বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে সরকার। পশ্চিমের পক্ষেও বিরোধিতা করা কঠিন হবে।

কিন্তু এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলুক, ভারত তা চাইছে না। আর সে কথাটাই বোঝানোর কথা ভাবা হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারকে।

বিষয়: বিবিধ

১২০০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

158883
০৪ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশের এত ছবক শুনতে হয় বাইরের দেশের কাছ থেকে !

এই না হলে স্বাধীন , সার্বভৌম দেশ !

এর জন্যই কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম ?
158917
০৪ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৯
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মুক্তিযোদ্ধারাতো আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে।সমশ্যা হল আমরা দালালদের খপ্পরে পড়ে স্বাধীনতা বিক্রি করতে চলেছি। আপরাকে ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File