দুনিয়ার বুকে সর্ব প্রথম ইবাদতের জন্য তৈরী হয় কাবা ঘর
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৮ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৫৯:৩৪ দুপুর
বায়তুল্লাহ (কাবা ঘর) প্রথমে ফেরেশতাগণ নির্মাণ করেন। অতঃপর হযরত আদম (আঃ) পুনর্নিমাণ করেন জিব্রাইল (আঃ) এর ইঙ্গিত মতে। তারপর নূহ (আঃ) এর প্লাবনের সময় বায়তুল্লাহর প্রাচীর বিনষ্ট হ’লেও ভিত্তি আগের মতই থেকে যায়।
পরবর্তীতে আল্লাহর হুকুমে একই ভিত্তি–ভূমিতে ইবরাহীম তা পুনর্নির্মাণ করেন।এই নির্মাণকালে ইবরাহীম (আঃ) কেনান থেকে মক্কায় এসে বসবাস করেন।ঐ সময় মক্কায় বসতি গড়ে উঠেছিল এবং ইসমাইল তখন বড় হয়েছেন এবং পিতা–পুত্র মিলেই কাবাগৃহ নির্মাণ করেন।
আল্লাহর ইচ্ছায় তখন থেকে অদ্যাবধি কাবাগৃহে অবিরত ধারায় হজ্জ ও তাওয়াফ চালু আছে এবং হেরেম ও তার অধিবাসীগণ পূর্ণ শান্তি, নিরাপত্তা ও মর্যাদা সহকারে সেখানে বসবাস করে আসছেন। এ বিষয়ে কুরআনী বর্ণনা সমূহ নিম্নরূপ:
"আর যখন আমরা ইবরাহীমকে বায়তুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়ে বলেছিলাম যে, আমার সাথে কাউকে শরীক করো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখো তাওয়াফকারীদের জন্য, সালাতে দন্ডায়মানদের জন্য ও রুকূ–সিজদাকারীদের জন্য॥"(সূরা হজ্জ ২৬)
আল্লাহ আরো বলেন,
"আর তুমি মানুষের মধ্যে হজ্জের ঘোষণা জারি করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং (দীর্ঘ সফরের কারণে) সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূর–দূরান্ত হ’তে। যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থান পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং (কুরবানীর) নির্দিষ্ট দিনগুলিতে (১০, ১১ ও ১২ই যিলহাজ্জ) তাঁর দেওয়া চতুষ্পদ পশু সমূহ যবেহ করার সময় তাদের উপরে আল্লাহর নাম স্মরণ করে। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং আহার করাও অভাবী ও দুস্থদেরকে॥"(সূরা হজ্জ ২৭–২৮)
হযরত ইবরাহীম (আঃ) মাক্বামে ইবরাহীমে দাঁড়িয়ে এবং কোন কোন বর্ণনামতে আবু কুবায়েস পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে দুই কানে আঙ্গুল ভরে সর্বশক্তি দিয়ে উচ্চ কণ্ঠে চারদিকে ফিরে বারবার হজ্জের উক্ত ঘোষণা জারি করেন।
হযরত ইবনু আব্বাসের সূত্রে ইমাম বাগাভী বলেন , "ইবরাহীমের উক্ত ঘোষণা আল্লাহ পাক সাথে সাথে বিশ্বের সকল প্রান্তে মানুষের কানে কানে পৌঁছে দেন।"
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, "ইবরাহীমী আহ্বানের জওয়াবই হচ্ছে হাজীদের 'লাববায়েক আল্লা–হুম্মা লাববায়েক'
(হাযির, হে প্রভু আমি হাযির) বলার আসল ভিত্তি।"
সেদিন থেকে এযাবত্ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হ’তে মানুষ চলেছে কাবার পথে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ উটে, কেউ গাড়ীতে, কেউ বিমানে, কেউ জাহাজে ও কেউ অন্য কোনো পরিবহনে করে।
আবরাহার মত অনেকে চেষ্টা করেও এ স্রোত কখনো ঠেকাতে পারেনি। পারবেও না কোনদিন ইনশাআল্লাহ। দিন–রাত, শীত–গ্রীষ্ম উপেক্ষা করে সর্বদা চলছে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা–মারওয়ার সাঈ করতে।
আর হজ্জের পরে চলছে কুরবানী। এভাবে ইবরাহীম ও ইসমাইলের স্মৃতি চির অম্লান হয়ে আছে মানব ইতিহাসে যুগ যুগ ধরে।
এক কালের চাষাবাদহীন র্নিজন পাহাড়ী উপত্যকা ইবরাহীমের দো’আর বরকতে হয়ে উঠলো বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের সম্মিলনস্থল হিসাবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন