এবার রাবার হ্যান্ড গ্রেনেড আনছে পুলিশ

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ২৭ মে, ২০১৩, ১২:১৪:০২ দুপুর

বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবিলায় এবার ব্যবহৃত হবে বিশেষ প্রযুক্তির রাবার হ্যান্ড গ্রেনেড। অতি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অধিকমাত্রায় কার্যকরী অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই গ্রেনেড এবারই প্রথম বাংলাদেশের রাজনৈতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অস্থিরতা দমনে ব্যবহার করবে পু...লিশ।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই গ্রেনেড ব্যবহার করছে সশস্ত্র বাহিনী। যুদ্ধাবস্থায় কার্যকরী এই রাবার গ্রেনেড এখন জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কাজে ব্যবহার্য সামগ্রী হিসেবে উঠে আসছে পুলিশের হাতে।

পুলিশও এটিকে আমদানি করছে ‘রায়ট কন্ট্রোল আইটেম’ নামে। একের পর এক উন্নত প্রযুক্তির পশ্চিমা নিষ্ঠুর সংস্কৃতির রায়ট কন্ট্রোল আইটেম ব্যবহারের মাধ্যমে বিরোধী দল দমনে সাফল্য আসায় পুলিশ ও সরকার এখন রাবার হ্যান্ড গ্রেনেড আমদানির প্রতি ঝুঁকেছে।

শিগগিরই এই গ্রেনেড পুলিশের হাতে পৌঁছবে। এছাড়াও আনা হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্রসহ অন্যান্য নিরাপত্তাসামগ্রী। এজন্য ব্যায় হবে মাত্র সামান্য কয়েক কোটি টাকা। যেখানে সরকারি দলের চোটকাট নেতাদের হাতেই কোটি কোটি টাকা।

বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিরোধী দল দমনে নিষ্ঠুর পন্থা অবলম্বন করে। লেলিয়ে দেয়া হয় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

তারাও অতিউৎসাহে বিরোধী দলের প্রতি নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণে মেতে উঠে একের পর এক ব্যবহৃত হতে থাকে নিষ্ঠুর প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র, সরঞ্জাম। এতে ধরাশায়ী হয়ে যায় নেতা-কর্মীরা

গত কয়েক মাস পূর্বে পুলিশ আমদানি করে মরিচের গুড়া মিশ্রিত ‘পিপার স্প্রে’।

এটি মানব শরীরের জন্য অতি মাত্রার ক্ষতিকর হওয়ায় বিতর্ক উঠে। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের পর সেটির ব্যবহার আপাতত করছে না পুলিশ। পিপার স্প্রে আমদানির সাথেই হাত ধরে আসে স্মোক গ্রেনেড, সাউন্ড হ্যান্ড গ্রেনেড, কালার স্মোক গ্রেনেড ইত্যাদি।

এগুলোর ব্যবহারেও পুলিশ সফলতা পায়। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের জন্য আনা হয় পিলেট। এই পিলেট মানব শরীরের যেখানটায় বিদ্ধ হবে সেখানটা চিরস্থায়ী কার্যকারিতা হারাবে, পঙ্গু বানাবে। কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে শতভাগ।

এই পিলেট এখন ব্যবহার করছে পুলিশ। চার লাখ পিস পিলেট ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশে। বিরোধীদলের রাজনৈতিক কর্মসূচি, আন্দোলন, সংগ্রাম, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ দমনে আমদানি করা সকল প্রকার অস্ত্রশস্ত্র, সরঞ্জাম আর সামগ্রী এখন শূন্যের পথে। এ অবস্থায় আনা হচ্ছে আরও আইটেম।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, রায়ট কন্ট্রোল আইটেম হিসেবে আনা হচ্ছে ৩ হাজার শর্টগান, ২ লাখ পিস পিলেট, গুলী, ৪ হাজার রাবার হ্যান্ড গ্রেনেড, ৩২ হাজার হেলমেট, ৩২ হাজার লেগ গার্ড, ১৫ হাজার ঢাল, ১৫ হাজার বুলেট প্রুফ জ্যাকেট।

এগুলো দু’মাসের মধ্যেই চীন থেকে পুলিশের হাতে এসে পৌঁছবে। জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কাজে ব্যবহার্যসামগ্রীর বাইরেও আনা হচ্ছে ২১৩টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৫৫৪টি মোটরসাইকেল ও ২১টি সিডান কার। দাঙ্গা দমন কাজে এগুলোও অস্ত্র-শস্ত্র আর ফোর্স নিয়ে ছুটবে গন্তব্যের পথে।

যানবাহন ক্রয় করার জন্য গত ২২ মে আন্তর্জাতিক দরপত্র গ্রহণ ও বাছাই করা হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই যোগ্য দরপত্রদাতাকে কার্যাদেশ দেয়া হবে বলে সূত্রটি জানায়। যানবাহনগুলো অস্ত্র-শস্ত্র-ফোর্স বহনের কাজে ব্যবহৃত হবে।

রাবার হ্যান্ড গ্রেনেড : যুদ্ধের ময়দানে শত্রু পক্ষের মোকাবিলায় পশ্চিমা দেশগুলোতে রাবার হ্যান্ডে গ্রেনেড ব্যবহার হয়ে আসছে ১৯৮০ সাল থেকে। আমেরিকা ছাড়াও এটি চীন তৈরি করে। সশস্ত্র বাহিনী এই গ্রেনেড দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করছে।

এটি ব্যবহারের কার্যকারিতা দেখেই পুলিশ আমদানির জন্য উৎসাহী হয়ে উঠে। সে পথ ধরেই বাংলাদেশে আসছে রাবার হ্যান্ডে গ্রেনেড। এই গ্রেনেড বিভিন্ন সাইজও প্রকৃতির। মডেলও ভিন্নতা রয়েছে।গ্রেনেড মুখের পিন খুলেই যথা নিয়মে এটি ছুড়ে মারতে হয়।

সময়মতো না হলেই ঘটবে বিপত্তি। ফলে ব্যবহারকারীকে এজন্য হতে হবে কৌশলী ও সাবধান। আমেরিকার ওয়ার্ডেন্স সাপ্লাই কোম্পানির ওয়েভ সাইটে দেখা যায়, রাবার হ্যান্ড গ্রেনেডের ভেতরে থাকে রাবার বাস, স্টার্টার, ব্রাস্টিং চার্জ, বিভিন্ন ধরনের পাউডার, ফিউজ বডি, সেপারেশন চার্জ, ক্লাস পাউডারসহ বিভিন্ন উপাদান।

এর উপরে থাকে রাবারের বডি। এটির বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠবে, আশপাশের ব্যক্তিরা রাবার বলের আঘাতপ্রাপ্ত হবে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটি তাৎক্ষণিকভাবে অবশ হয়ে পড়বে। এছাড়াও স্প্রিং বলও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেটির ক্ষতিকর দিক বেশি।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File