শাপলা চত্বরকে রক্তের সাগরে পরিণত করা হয়েছে
লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ১৫ মে, ২০১৩, ১২:০৬:৫০ রাত
শাপলা চত্বরকে রক্তের সাগরে পরিণত করা হয়েছে -জজ গ্যালওয়ে এমপি...
বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলামের ওপর অমানবিক গণহত্যার প্রতিবাদে গত ১০ মে বিকালে পূর্ব লন্ডনের ঐতিহসাকি ওয়াটার লিলি মিলনায়তনে হেফজতে ইসলাম ইউকের অ্যান্ড আয়ারের উদ্যোগে বিশাল গণসমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিশাল গণসমাবেশে বিভিন্ন শহর থেকে ওলামায়ে কেরামরা যোগ দেন। একপর্যায়ে ওয়াটার লিলি সম্মেলন কেন্দ্রে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল গণসমাবেশে বিখ্যাত ব্রিটিশ পার্লামেন্টারিয়ান জজ গ্যালওয়ে এমপি তার বক্তব্যে বলেন,
শেখ হাসিনার হাত এখন নিরীহ জনগণের তাজা রক্তে রঞ্জিত। আওয়ামী লীগ আজ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এই রক্ত এক সাগর পানি দিয়ে ধৌত করা যাবে না। তিনি বলেন, হাসিনার বর্বরতা ইসরাইলি বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
ব্রিটিশ এমপি এ মির্মম জুলুমের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারের কাছে শক্ত আওয়াজ উত্থাপনের জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি এ ঘৃণ্য গণহত্যার আন্তর্জাতিক তদন্ত ও সঠিক বিচারকার্য দাবি করেন।
মিস্টার গ্যালওয়ে শাপলা চত্বর ও সাভারের হত্যাকান্ডের কারণে হাসিনার কমনওয়েলথের সদস্যপদ বাতিলের জোর দাবিও জানান। জর্জ গ্যালওয়ে হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের আহ্বায়ক মুফতি শাহ সদর উদ্দিনের নেতৃত্বে হেফাজতে আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগিতার ওয়াদা ব্যক্ত করেন।
বিশাল গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম ইউকে অ্যান্ড আয়ারের সভাপতি মাওলানা আবদুল কাদির সালেহ। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জর্জ গ্যালওয়ে এমপি,
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত আলেম হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের আহ্বায়ক ও জমিয়তে উলামা ইউরোপের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি শাহ সদর উদ্দিন,
কাউন্সিল অব মসক টাওয়ার হেমলেট্সের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা শামসুল হক, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ এমএ মালিক, সাবেক উপদেষ্টা মুখলিছুর রহমান চৌধুরী,
জমিয়েতে ওলামা ইউকের সভাপতি মাওলানা শাহ মুহাম্মদ আনাছ, সারে মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুর রব, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শেখ গোলাম আজগর।
মাওলানা সৈয়দ তামিম আহমদ ও হাফিজ মাওলানা শিব্বির আহমদের যৌথ পরিচালনায়
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেফাজকে ইসলাম নেতা মাওলানা ইমদাদুর রহমান মাদানী, মুফতি আবদুল মুনতাকিম, মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা শাহ মিজানুল হক, মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ, মুফতি মওছোফ আহমদ, মুফতি আজিমউদ্দিন, হাফিজ মাওলানা এনামুল হক, মাওলানা আহমদ মাদানী, হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথি, মাওলানা হিফজুল করিম মাশুক, মাওলানা তায়্যিদুল ইসলাম, মাওলানা আশফাকুর রহমান, ওলামা দল ইউকের সভাপতির মাওলানা শামিম।
হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল গণসমাবেশে ওলামায়ে কেরাম বলেন, শাপলা চত্বরে অবস্থানরত হেফাজতে ইসলামের মুসল্লীদের ওপর সরকারের যৌথবাহিনীর লোমহর্ষক সাঁড়াশি আক্রমণ ও গণহত্যা ২৫ মার্চের কাল রাতের পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
নিরস্ত্র জনগণের ওপর সরকারের এহেন পৈশাচিক হামলার ন্যক্কারজনক নজির ইতিহাসে বিরল। তাওহিদী জনতার ওপর রাতের আঁধারে পরিচালিত এ হামলার মাধ্যমে রক্তপিপাসু সরকার তাদের পতনকে নিশ্চিত করে তুলেছে। গণহত্যার এ দায় প্রধানমন্ত্রী কোনোভাবেই এড়াতে পাববেন না।
বিকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে বিশাল গণসমাবেশ চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এতে হাজারো মানুষের উপস্থিতি পুরো ওয়াটার লিলি এলাকা ওলামায়ে কেরামের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
লন্ডনের বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশপ্রেমিক সাধারণ মুসলমানরা সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন। সবার কথা একটাই বর্তমান সরকার হচ্ছে একটি জালিম সরকার। তারা রাজপথে গুলি চালিয়ে মানুষ খুন করছে।
আলতাব আলী পার্কে প্রতিবাদ সভা
এদিকে, গত ১০ মে লন্ডনে হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের উদ্যোগে এক বিশাল গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার তৌহিদী জনতা বাদ জুমা বিভিন্ন মসজিদ থেকে আলতাব আলী পার্কে এসে জমা হন।
হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের আহবায়ক ও জমিয়তে উলামা ইউরোপের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি শাহ সদর উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বক্তাগণ বলেন,
শাপলা চত্বরে অবস্থানরততাওহিদী জনতার ওপর রাতের আঁধারে পরিচালিত এ হামলার মাধ্যমে রক্তপিপাসু সরকার তাদের পতনকে নিশ্চিত করে তুলেছে। গণহত্যার এ দায় প্রধানমন্ত্রী কোনোভাবেই এড়াতে পাববেন না।
নেতৃবৃন্দ শাপলা চত্বরে পরিচালিত যৌথ বাহিনীর বর্বর অভিযানের নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন ও রাতের আঁধারে আলো নিভিয়ে পরিচালিত পুলিশ-র্যাব-বিজিবির সাঁড়াশি আক্রমণে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ, গুমকৃত লাশ ফেরত দেয়া ও এসব হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দ আওয়ামী-যুবলীগ ও সরকারের এজেন্টরা বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এলাকায় পবিত্র কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতে ইসলামের ওপর দোষ চাপনোর অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন,
হেফাজতে ইসলাম ও আল্লামা আহমদ শফীর নেতেৃত্বে চলমান অহিংস আন্দোলনের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযাগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। নেতৃবৃন্দ হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা জোনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার ও তার ওপর হত্যা মামলা দায়ের ও ৯ দিনের রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,
সরকার নিরীহ জনতার ওপর গণহত্যা চালিয়ে উল্টো আলেম-ওলামাদের ওপর মামলা করছে, যা সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। জমিয়তে উলামা ইউরোপের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদের পরিচালানায়
এতে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম ইউকে অ্যান্ড আয়ারের সভাপতি মাওলানা আবদুল কাদির সালেহ, জমিয়েতে ওলামা ইউকের সভাপতি মাওলানা শাহ মুহাম্মদ আনাছ, বিশিষ্ট সাংবাদিক কেএম আবু তাহের চৌধুরী,
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শেখ গোলাম আজগর, জমিয়েতে ওলামা ইউকের সহ-সভাপতি মুফতি আব্দুল মুনতাকিম, খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্যর সহ-সভাপতি মাওলানা ছাদিকুর রহমান,
জমিয়তে উলামা ইউকের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা সৈয়দ তামিম আহমদ, জমিয়তে উলামা ইউরোপের প্রচার সম্পাদক হাফিজ হুছাইন আহমদ, খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য নেতা মাওলানা তায়্যিদুল ইসলাম, মাওলানা জাবির আহমদ, মাওলানা আনিছুর রহমান ।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন