সত্যিকারের সাহসী

লিখেছেন লিখেছেন ঈগল ০৩ জানুয়ারি, ২০১৫, ১২:০৯:০১ রাত

মুসলিম উম্মাহর গর্ব রিবয়ী ইবনে আমের (রা)। তিনি কতই না সাহসী ছিলেন। পড়ৃন তাঁর সাহসীকতার ঘটনা এবং নিজেকে যাচাই করুন।

মুসলিম সেনাপতি রুস্তমের আহ্বানে মুসলিম সেনাপতি রিবয়ী ইবনে আমেরকে (রাঃ) রুস্তমের দরবারে দূত হিসেবে প্রেরণ করলেন। মুসলিমদের দূত আসবে তাই রুস্তম তার দরবারকে জাঁকজমকভাবে সাজালেন। হয়ত তার উদ্দেশ্য থাকতে পারে দূতকে প্রভাবিত করা।

রিবয়ী ইবনে আমের (রাঃ) খুবই সাধারণ কিন্তু যোদ্ধার বেশে তাঁর ঘোড়া ছুটিয়ে দিলেন রুস্তমের দরবারের উদ্দেশ্যে। দুনিয়ার শানদার সেনাপতি রুস্তমের দরবারে যাবেন কিন্তু সাধারণ পোশাকে, কোন সাজসজ্জা ছাড়ায়! বর্তমানের মুসলিমরা এটা ভাবতেই পারেন না। মুসিলম ভায়েরা জেনে রাখুন, বর্তমান দুনিয়ার নিয়মের মত তখনও কিন্তু দূতরা বেশ জাঁকজমকের সাথেই প্রতাবশালী বাদশাহদের সাথে সাক্ষাৎ করত। কিন্তু ব্যতিক্রম সৃষ্টি করেছে মুসলিমরা। বাহ্যিক সাজসজ্জা নয় তারা প্রকাশ করেছে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা।সুবহানাল্লাহ, তখনকার মুসলিম সাধারণ হয়েও কতই না অসাধারণ ছিল!

রিবয়ী ইবনে আমের (রা) রুস্তুমের দরবারে প্রবেশ করবেন। বাধা দিল দ্বাররক্ষী। আপনার বল্লম, তরবারী এখানে রেখে এবং ঘোড়াটিকে আস্তাবলে রেখে তারপর ভিতরে প্রবেশ করুন। রিবয়ী জবাব দিলেন, আমি এখানে নিজ ইচ্ছে এখানে আসি নি। আপনার সেনাপতির আমন্ত্রণে এখানে এসেছি। অতএব আমার বল্লম, তরবারী আমার সাথেই থাকবে আর ঘোড়াটি আস্তাবলে নেয় এখানে বাঁধা থাকবে। যদি রাজি থাকেন বলুন নইলে আমি ফেরত যায়। আল্লাহু আকবার! এত সাহস তাহর অন্তরে আসলো কিভাবে! আসলে আল্লাহ পাক তাঁর অন্তরকে নূর দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছিলেন। তাইতো তাঁর এত সাহস এত তেজ।

সেনাপতি রুস্তুম কারারক্ষীকে ইঙ্গিত দিলেন, তাঁকে তার মত ছেড়ে দাও। ধীর পায়ে, ভয়হীন দৃঢ়পদে বল্লম দিয়ে মূল্যবান গালিচা খোঁচাতে খোঁচাতে রুস্তমের কাছাকাছি এগিয়ে গেলেন। আধুনিক মুসলিম ভাইদের কাছে প্রশ্ন, স্বাভাবিক দৃষ্টিতে এটা কি স্বাভাবিক মনে হয়? নাকি তখনকার নিয়মই ছিল রাজদরবার দূতদের জন্য মূল্যবান গালিচা বিছিয়ে দিবেন আর দূতরা সেই গালিচা বল্লম দিয়ে নষ্ট করবেন?

শুরু হলো একজন দূর এবং সেনাপতির কথোপকথন

রুস্তম- এদেশে তোমরা কেন এসেছ, কি চাই তোমাদের?

ইবনে আমের- আমরা আমাদের জন্য তোমার কাছে কিছুই চাই না। আমরা চাই মানুষদের মানুষের গোলামী থেকে মুক্ত করে আল্লাহমুখি করে দিতে আর দুনিয়ার সংকীর্ণতা থেকে প্রশস্ততার দিকে নিতে এবং বাতিল মতবাদের জুলুম থেকে ইসলামের সাম্যের পথ দেখাতে ৷যারা এ ব্যাপারে নাক গলাবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করবো যতদিন না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়।

রুস্তম- তোমাদের আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কী

ইবনে আমের- যুদ্ধে হয় আমরা শহীদ হয়ে জান্নাত লাভ করবো না হয় গাজী হয়ে সম্মাণিত হবে।

রুস্তম- ঠিক আছে তোমার কথা শুনলাম। ভেবে দেখার জন্য আমাদেরকে কিছু দিন সময় দাও।

ইবনে আমের- ঠিক আছে একদিন অথবা দুদিন সময় দেওয়া হলো।

রুস্তম- মাত্র একদিন অথবা দুদিন!

ইবনে আমের- আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম এই ক্ষেত্রে তিন দিনের সময় সীমা বেধে দিয়েছে।

রুস্তম- তুমি কি মুসলিমদের নেতা?

ইবনে আমের- না, তবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিদের্শের ক্ষেত্রে কে সেনাপতি আর কে সিপাহী এটা দেখা হয় না।

সুবহানাল্লাহ! কী নির্ভিক কণ্ঠস্বর! কি সাহস! কি তেজ! এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ঈমানী তেজের কারণে।

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা, সাধারণ পোশাকে রুস্তমের দরবারে যাওয়া, বল্লম দিয়ে কার্পেট নষ্ট করা, দরবারে প্রবেশের নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখানো ইত্যাদি বিষয়গুলিকে এখনকার মুসলিমদের কাছে হটকারী মনে হতে পারে। কিন্তু ব্যাপার মোটেই তা নয়। আল্লাহর তাওহীদ যাদের সামনে তারা কি করে পৌত্তলিকদের কাছে মাথা নোয়ামে? জান্নাতের জৌলুস যাদের সামনে তারা দুনিয়ার জৌলুসকে কেন প্রাধাণ্য দিবে? জাহান্নামের আগুন যাদের সামনে দৃশ্যমান তারা সাধারণ লেবাসেই সন্তুষ্ট থাকবে।


বিষয়: বিবিধ

১৬৫১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

298859
০৩ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৩০
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
298862
০৩ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:৫৬
udash kobi লিখেছেন : ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File