পেশওয়ার স্কুল এন্ড কলেজে আক্রমন‌‌‍‍; কিছু অপ্রিয় সত্য

লিখেছেন লিখেছেন ঈগল ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:৪৯:২৬ রাত



পাক তালেবান (নাকি অন্য কেউ?) পেশওয়ারে সেনাবাহী নিয়ন্ত্রিত একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক শিশৃুকে (তারা আসলেই কি শিশু?) হত্যা করেছে। এই হামলা কিছুটা বর্বর।

কিছুটা এই কারণে যে, আমরা যদি পৃথিবীর ইতিহাসের যুদ্ধ নীতি এবং প্রতিশোধের পন্থা ইত্যাদি পর্যালোচনা করি তাহলে এই হামলাকে অতটা হাইলাইট করার কোন কারণ দেখি না। এটা হয়ে আসছে আদি কাল থেকেই। এখানে সাধারণত বাছ-বিচার করা হয় না কে শিশু আর কে নারী। আধুনিক প্র্যাকটিক্যাল (থিওরী নয়) যুদ্ধ নীতিতেও কে শিশু, বৃদ্ধ ও নারী তার বিবেচনা করা হয় না। তবে ইসলাম এর ব্যতিক্রম। যুদ্ধাবস্থা এলাগুলোর নারী শিশুদের নিরাপত্তা দিতে ইসলাম সচেষ্ট। তবে ব্যতিক্রমও আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে নারী শিশুদের হত্যা করা বৈধ হয়ে যায়! পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে এর সিন্ধান্ত দিবেন সম্মাণিত ইসলামিক স্কলারগণ।


তারপরও প্রত্যেক বিবেকবান মানুষ, যারা পৃথিবীকে শান্তির বলয়ে দেখতে চানা তারা শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা করতে বাধ্য। নিন্দা তারা করেনও।

তারপরও কথা থাকে, একজন সন্ত্রাসীর ছোট শিশুকে যখন পাক আর্মিরা হত্যা করে, কিংবা আনওয়ার আল আওলাকির মত ইসলামিক স্কলারের ষোল বছর বয়সী ছেলেকে আমেরিকা হত্যা করে তখন কিন্তু শান্তিবাদীদের একটি বিরাট অংশ নিশ্চুপ থাকতে পছন্দ করে। শান্তিবাদীদের কেন এই দ্বৈত নীতি?

শিশুরা তো নিষ্পাপ। শিশুটি গরীব হোক, ধনী হোক, জারজ হোক, কোন ক্ষমতাসীনের শিশু হোক। শিশু শিশুই। কোন বিরাট এক স্বার্থের কারণে শান্তিবাদীরা দূর্বল শিশুদের হত্যার ক্ষেত্রে নীরব।

এবার আসা যাক পেশওয়ার হামলার ব্যাপারেঃ-

প্রথমত- স্কুলে হামলা হয়েছে এটা মিথ্যা। হামলা হয়েছে স্কুল এন্ড কলেজে।

দ্বিতীয়ত- শতাধিক শিশু নিহত হয়েছে এটা মিথ্যা। শিশু বলতে আপনার মানসপটে যা ভেসে আসে সেইরকম একজনও নিহত হন নি। উপরুন্ত অনেকের বয়স ১৮ +।

তৃতীয়ত- শতাধিক নয় বরং সংখ্যাটা হবে দুই শতাধিক, যার মধে কয়েক ডজন আছে সেনা কর্মকর্তা ও একজন কর্নেল।

চতুর্থত- নিহতরা অধিকাংশ আর্মিদের সন্তান।




হামলার উল্টোপিঠেঃ-

স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, কয়েকমাস আগে পাক আর্মি কর্তৃক তালেবান বিরোধী হামলায় প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন। দুঃজনক এবং ন্যক্করজনকও বটে, নিহতদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। ধিক্কার জনক ব্যাপার হচ্ছে, তালেবান বিরোধী হামলার খবর মিডিয়াতে আসলেও হাইলাইট আকারে আসেনি। সব চেয়ে ধিক্কার জনক ব্যাপার হচ্ছে, এখন যতটা নিন্দার ঝড় বইছে তখন এক পার্সেন্টও নিন্দার ঝড় উঠেনি। একই ঘটনা ঘটেছিল লাল আক্রমনের ক্ষেত্রে। এটা কেন? তারা তালেবানদের সন্তান বলে? ধিক্কার জানাই এই ধরনের মানবতাবোধকে।

পাক আর্মি অফিসারদের ১৮+ তরুণরা মাসুম ও শিশু!!!

কিন্তু সোয়াত ও ওয়াজিরিস্তানের সত্যিকারের মাসুম বাচ্চারা তবে সন্ত্রাসী কেন--???

আমার অনুমানঃ-

আর্মি নিয়ন্ত্রীত ঐ স্কুল এন্ড কলেজটিতে নিন্দীয় হামলায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের ব্যাপারে আমার একটি অনুমান আছে। ধারণা করছি, ঐ হামলাকরীরা হয়ত মানসিকভাবে ঠিক ছিল না। তারা ছিল প্রতিশোধের নেশায় নিজেদের প্রতি নিয়ন্ত্রণহীন। কারণ, অনুমান করছি তারা হয়ত প্রিয়জন হারানোর বেদনায় নীল হয়েছিল। একসময় প্রতিশোধের নেশায় স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে অন্যের প্ররোচনায় তারা এই ন্যক্কর জনক হামলার কাজটি করেছে।

পরিশেষে-

আমরা যুদ্ধ নয় শান্তিপূর্ণ একটি পৃথিবী চাই। অহেতুক সকল হত্যাকান্ডের আমরা বিরোধী। পেশওয়ার আক্রমনের যেসব নিরপরাধ তরুন নিহত হয়েছে তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করছি। সেই যাথে যারা এই আক্রমনের সাথে জরিত তাদের বলছি, প্লিজ- কারা হত্যার যোগ্য অপরাধী বিষয়টা মাথায় রাখবেন। কারণ, অহেতুক হত্যাকান্ড পৃথিবীকে অশান্ত করে তুলবে।

বিষয়: বিবিধ

১৬৪৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

295596
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পাঠানদের নিয়ে একটি মজার কেীতুক আছে
এক পাঠান এক বাঙ্গালি কে দাওয়াত দিয়েছে সেই বাঙ্গালি তাকে কথা দিলেও আরেক পাঠান এর আরো ভালা খানার দাওয়াত পেয়ে তার সাথে চলে গিয়েছে। তখন প্রথম পাঠান তার বন্দুক নিয়ে ছুটল সেই বেঈমান মেহমান কে খতম করতে! এদিকে দ্বিতিয় পাঠান এর বাসায় সেই খবর পেয়ে নিরিহ বাঙ্গালির অবস্থা খারাপ! তা দেখে সেই পাঠান তাকে সান্তনা দিয়ে বলল "দোস্ত তুমি চিন্তা করোনা। সে যদি তোমাকে খতম করে তবে আমি ওয়াদা করছি তার দশ মেহমান আমি খতম করে দেব!!!"।

যদি সেই ছাত্ররা বয়স আঠারর বেশিও হয়। যদি তারা সবাই সামরিক অফিসারদের সন্তান ও হয় তাহলেও কি কোনভা্বেই এই হত্যাকান্ড কে সমর্থন করা যায়?
তাদের পিতারা যদি অত্যাচারিও হয় তাদের উপর প্রতিশোধ নেওয়া কি কোন ভাবেই জায়েজ হয়?
ভেবে দেখুন!!
295609
১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০১:২৩
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আপনি লিখেছেন ”আমার অনুমানঃ-

আর্মি নিয়ন্ত্রীত ঐ স্কুল এন্ড কলেজটিতে নিন্দীয় হামলায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের ব্যাপারে আমার একটি অনুমান আছে। ধারণা করছি, ঐ হামলাকরীরা হয়ত মানসিকভাবে ঠিক ছিল না। তারা ছিল প্রতিশোধের নেশায় নিজেদের প্রতিনিয়ন্ত্রণহীন। কারণ, অনুমান করছি তারা হয়ত প্রিয়জন হারানোর বেদনায় নীল হয়েছিল। একসময় প্রতিশোধের নেশায় স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে অন্যের প্ররোচনায় তারা এই ন্যক্কর জনক হামলার কাজটি করেছে। “

আমার অভিমত :


১। ইসলাম প্রতিশোধপ্রবণ হওয়ার শিক্ষা দেয় কি ?

২। ইসলাম প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়টাকে ইতিবাচক হিসেবে নিতে শিক্ষা দেয় কি ? না নেতিবাচকভাবে ?

৩। ইসলাম শব্দের অর্থ কি ? ইসলাম শব্দের অর্থ যদি আত্মসমর্পণ করাও হয়, তাহলে যার উপর আত্মসম্পর্ণ করার কথা বলা হয় তিনি কি ইসলাম পছন্দ লোকদের এমন প্রতিশোধপরায়ণ হতে বলেছেন না তার বার্তাবাহককে বলেছেন ?



আপনি একটা পোস্ট লিখে আমার পরিচয় জানতে চেয়েছিলেন । আমি আমার পরিচয় দিয়েছি ।

দেখুন, প্রতিশোধ নিয়ে কেহ মহৎ হতে পারে না ।

আমার এক ভাই মারা যাওয়ার কারণ আমি দেড় বছর পর জানতে পারি । আমি এই ব্যাপারটা বাড়িতে বলি । আমার এই কথা শুনে আমার বাবা বলেন আমি জানতাম । আমরা অবাক হলাম ।

ব্যাপারটা আমি ফেসবুকের গ্রপ Justice For Dr. Shamarukh Mahjabin এ তুলে ধরেছিলাম আর একটা স্যাটাসেও তুলে ধরেছিলাম । আমি বলেছিলাম :
” ফেসবুক অনেক সময় সত্য কথাকে প্রকাশ করে দেয় । আমার এক ভাই ছিল ডাক্তার । এফসিপিএস ফাস্ট পার্ট শেষ করেছিলো আটাশ বছর বয়সে । বিএসএস পরীক্ষার মৌখিক অংশটা সে দিয়ে যেতে পারেনি । কারণ তার কয়েক দিন আগে সে মারা যায় কক্সবাজারে ।

তার মৃত্যুর সময় ও মৃত্যুর কারণ বন্ধুদের কাছ হতে যা আমরা জেনেছিলাম তা পরে আমার অনুসন্ধানে ভুল প্রমাণিত হয় ।

তার মৃত্যুর কারণ ফেসবুকে জানলাম প্রায় দেড় বছর পর । কিন্তু যখন জানলাম তখন আমাদের কিছুই করার ছিল না ।

আমি আমার ফেসবুকের তরুণ বন্ধুদের অনুরোদ করছি :

১. বন্ধুদের সাথে চলাফেরা করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন ।
২. বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা হলো সবচেয়ে কাছের বন্ধু । তাদের সাথে সব বিষয় শেয়ার করুন ।
৩. অন্য ধর্মের লোক এবং অসম্ভব আদর্শ ধারণকারী লোকদের হতে দুরে থাকুন । কারণ তাদের সাথে সামান্য মত-পার্থক্যই আপনার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে ।
৪. আপনি আপনার বিপরীত লিঙ্গের ফ্রেন্ডদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন । তারা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে । উপরন্তু এধরণের সম্পর্কের কোন দায়িত্ববোধ নেই এবং বৈধতার দিক থেকেও দুর্বল । ”





আপনাকে বলছি :
১। আমরা মুসলিম । ইসলাম ধর্মের লোকদের সংখ্যা পৃথিবীতে ক্রমবর্ধমান । এক সময় ইসলাম ধর্মের লোকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে । অমুসলিমরা আমাদের সব কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গিকে নিরীক্ষণের দৃষ্টিতে দেখে । তাদের কিছু অংশ সন্দেহ ও প্রতিপক্ষ ভেবে সব কিছু বিচার করে ।

২। আমরা সব কিছুই শান্তিপূর্ণপন্হায় করতে পারি । শান্তিপূর্ণপন্হায় যা কিছু করা হোক না কেন তাতে সবারই সমর্থন থাকে ।

৩। বাংলাদেশে ইসলাম অশান্তির মাধ্যমে আসেনি । শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলাম এসেছে । ১৩০৩ সালে শাহজালাল রহ অত্যাচারীদের অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন দুর করার জন্য বাংলাদেশের এক কোনায় এসেছিলেন । .. তার পরের ইতিহাস আমাদের জানা । আমরা কি এসব ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবো না ।


আমার মন্তব্যটা যদি ভাল না লাগে দয়া করে মুছে দিবেন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File