গাজা আক্রমনে ইসরাঈলের বর্বরতা অবশ্যই নিন্দা করব কিন্তু হামাসের উচিত নয় ইসরাঈলে রকেট হামলা করা
লিখেছেন লিখেছেন ঈগল ১২ জুলাই, ২০১৪, ০৩:১০:৩৩ দুপুর
আবার গাজায় হামলা! আক্রান্ত মুসলিম। নির্বিকার আরবের গাধারা। যুদ্ধ বিরতির লক্ষ্যে কাজ শুরু করে গণতান্ত্রিক (ইসলামিক ও আনইসলামিক) নেতারা। মোটাদাগে এই হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের প্রায় ৬ দশকের ভাগ্য।
ইয়াসির আরাফাত! কেউ বলে কিংবদন্তী কেউ বলে বিশ্বাসঘাতক। নতুন হিরোহয়ে উঠলো হামাস, ধীরে ধীরে সেটারও পতন। ফিলিস্তিনি জনগণের ভাগ্য সহসা মুক্তির নয়।
হামাসের ব্যাপারে বলা হচ্ছে, তারা নাকি ইসরাঈলে সর্বত্র হামাল চালাতে সক্ষম! সম্ভবত এটা ইহুদী মিডিয়ার প্রপাগান্ডা। সত্য হলে, এই কয়েক দিনে আমরা হয়ত তার কিছুটা নমুনা পেতাম।
তবে, আরব গাধাদের একটি কারণে ধন্যবাদ দিতেই হয়। ঐ গাধারা যদি হামাসকে সক্ষম করে তোলে তাহলে হামাসকে নিন্দা করার মত গণতান্ত্রিক (ইসলামি ও আনইসলামিক) নেতাদের অভাব হবে না। হামাসের এই অক্ষমতার কারণেই হয়ত মানুষেরা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি কিছুটা সহানুভুতি দেখায়।
এটাই বাস্তব। দূর্বলদের প্রতি সাধারণ জনগণ ও অপেক্ষাকৃত দূর্বল রাষ্ট্রসমূহ সহানুভুতি দেখায়। কিন্তু এই দূর্বলরাই যখন কোন আদর্শকে ধারণ করে জেগে উঠে তখন সেই আদর্শের বিরোধীতা করাকে ধ্যান জ্ঞান করে থাকে বিশ্ব মোড়লসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। এদের কাতারে এসে যোগ হয় মুসলিম নামধারী গণতান্ত্রিক ও রাজতান্ত্রিক নেতারা।
সম্ভবত হামাসের সামনে কোন আদর্শ নাই। দীর্ঘ সময় টিকে থাকার লড়াইয়ে তারা খেই হারিয়ে ফেলেছে। যদি ফিলিস্তিন স্বাধীন হয় তাহলে তার কর্মপন্থা কি হবে, এটা নিয়ে তারা এখনও দ্বিধাগ্রস্ত।
তাদের এই দ্বিধাগ্রস্থাতা, যুদ্ধনীতিকে বিসর্জন দিয়ে দুই-তিন বছর পর পর ইসরাঈলে হামলা অতঃপর যুদ্ধ বিরতিা। সেই যুদ্ধ বিরতিকে মেনে নেওয়া হামাসের দূরাবস্থারই প্রমাণ করে।
হামাস যদি সত্যিকারের যোদ্ধা হত, তারা যদি সত্যিই ইসলামিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধ করত, তাহলে তারা তথকথিত মুসলিম গণতান্ত্রিক নেতাদের নিন্দাকে পরোয়া না করে অব্যাহতভাবে গেরিলা হামলা চালিয়ে ইসরাঈলকে সমস্যায় ফেলতে সক্ষম হত। নামকাওয়াস্তে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রটিকে টিকে থাকার চাইতে, লড়াই করে উৎখাত করা বা উৎখাত হওয়াই ভালো।
যদিও মুসলিম গণতান্ত্রিক নেতারা নিন্দা করে 'গাজা আক্রমনে ইসরাঈলের বর্বরতা অবশ্যই নিন্দা করব কিন্তু হামাসের উচিত নয় ইসরাঈলে রকেট হামলা করা' কিংবা চাপ সৃষ্টি করে ইসরাঈলের সাথে আপোষ করার জন্য।
বিষয়: বিবিধ
১২৯৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মুসলিম বিশ্বে এরকম কিছু নেতা থাকার দরকার ছিল । যারা মুসলমানদের প্রতি সমব্যথী এবং ইহুদীদের প্রতি কঠোর মনোভাব সম্পন্ন হত ।
যদি মিশরে ড. মুরসির সরকার স্থিতিশীলতার সাথে ঠিকে থাকতো তবে নিশ্চয়ই অন্তত একজন মুসলিম নেতা পাওয়া যেত যিনি বিশ্বাঘাতক ইয়াহুদীদের হুঙ্কার দিতেন।
আর সন্ত্রাসীর ব্যাপারটা এখন মানুষ আর খায়না। আপনারা যারা মুসুওয়ান আছেন (মুসলমান নয়) তারা এক সময় ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকে হারাম হারাম ঘোষণা দিতেই ব্যস্ত ছিলেন। ছি!নামা দেখা হারাম, নাটক দেখা হারাম, ভিসিআর দেখা হারাম, টিভি দেখা হারাম!!! এসব ফতওয়ার সুদুর প্রসারী প্রভাব আজ কি তা কি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে? বাগ্যিস ইন্টারনেটের সুযোগ সুবিধা খুব সহজেই আপনাদের প্রয়োজনীয়তা মিঠাতে কম্বলচারী হয়ে গেছে। না হয় এ বিষয়টাতেই আপনাদের তরফ থেকে ফতওয়ার বণ্যায় সয়লাভ হয়ে যেত।
মিডিয়াকে হারাম ঘোষণা দিয়ে আপনাদের অতীত আকাবেররা সাধারণ মুসলমানদেরকে এসবের ধারে কাছে ঘেষতে দেয়নি। ফলে এসব আধুনিক অস্ত্রগুলোতে ঠিকই প্রতিপক্ষ শান দিয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারছে। আর আপনারা এসব দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এই ভয়ানক অস্ত্রটির আঘাতে কাবু হয়ে আপনাদেরই কোন কোন ভ্রাতার মুখে শুনি মোল্লা ওমর খারাপ, বিন লাদেন খরাপ, ওস্তাদ আনওয়ার আল আওলাকী খারাপ, এমনকি জাকির নায়িকও খারাপ।
মোল্লা ওমররা আজ সন্ত্রাসী হয়েছে একটি মাত্র অস্ত্র আপনাদের হাতে না থাকার কারণে। জানেন সে অস্ত্র কি? সেটি হচ্ছে মিডিয়া!
আপনি গোড়া ধরে টান দিয়েছেন। তাই লিখতে গেলে অনেক কিছুই চলে আছে। কিন্তু গ্যাঞ্জাম লাগানোর রুচি নেই এ মুুহুর্তে। সবাই যাচ্ছে ইফতারীর টেবিলে। যদিও ফরজ নামাজের কোন বালাই নেই। কিন্তু তারাবিহ নামাজ নিয়ে আছে মহা ব্যস্থতা!!!
বৃটিশ উত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা মিডিয়াতে দখলদারিত্ব করতে ব্যর্থতার পেছনে আপনাদের আকাবেরদের ভূমিকা অশ্বীকার করে নতুনভাবে গ্যাঞ্জাম লাগাতে চান কিল্লাই মশাই? এখনো পর্যন্ত দেশের অনেক দ্বীনি মাদারিসগুলোতে পেপার-পত্রিকা পড়া পর্যন্ত ছাত্রদের জন্য হারাম করে রাখা হয়েছে।
মিশিরসহ মধ্যেপ্রাচ্যের অতীতের মুসলিম চিন্তাবিদরা এব্যাপারে দুরদর্শিতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন বলেই আজ কিছুটা হলেও ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশের নির্যাতিত মুসলিমদের খবরা খবর বিশ্ববাসী জানতে পারছে। না হলে বিবিসি সিএনএনের কল্যাণে আপনাদের মত মডারেট! মুসলিমরা ফিলিস্তিনিদের নিষ্টুর ইয়াহুদী নিধনকারী সন্ত্রাসী হিসিবেই ঘৃণা করতে শিখতেন মশাই! যেমনটা বৌদ্ধ মন্দির ভাঙ্গার পরে মোল্লা ওমর, বিল লাদেন এবং তালিবানদেরকে মধ্যযুগীয় বর্বর অসভ্য হিসেবে বিশ্ববাসীকে জানানো হয়েছিল।
আসল কথা হচ্ছে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, বিচক্ষণ হতে হবে, বহুমুখী প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুনিয়াতে ফিতনা সৃস্টিকারী সমস্ত অপশক্তির মোকাবিলায় বহুমুখী ততপরতার উদ্যেগ নিতে হবে। কিউ মিডিয়া তৈরী উদ্যেগ নিলে কাউকে হয়তো মাল মসলার যোগান দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে এ জিনিসটির বড়ই অভাব। কিউ হয়তো কিছু একটা নিয়ে তৎপরাতা শুরু করলো অন্যরা তার সুদুরপ্রসারী প্রভাব প্রতিপত্তির পর্যালোচনা না করে উপস্থিত নগদ নিজের স্বার্থের প্রতিকুল হলেই হারাম হারাম হারাম!!! ফতওয়া দিয়ে গায়েল করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে যায়। যেমনটা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইসলামী ব্যাংকের অবস্থা। এই ব্যংকটি মওদুদীওয়ালা প্রতিষ্ঠা করেছে বলেই তাদেরকে বাকাঁ চোখে দেখার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেনি অনেক ইসলামী ব্যক্তিত্বের ষোল এজেন্সীর দাবিদার আকাবেরীনে হযরাত।
একবার চিন্তা করুণ তো ঘোটা বিশ্বের তাবৎ প্রসাধনী সামগ্রীর উৎপাদনকারী কারা? আর এসব উৎপাদিত পন্যের ভোক্তা কারা? গোটা দুনিয়ার বিলাস সামগ্রীর উৎপাদনকারী কারা? আর এসব বিলাশ পন্যের ভোক্তা কারা?
মুসলামদের মধ্যে কিছু অতি আবেগী মানুষ ইস্রাইয়েলী পণ্যে বর্জনের স্লোগান দিয়ে মাঠ গরম করার জিহাদ করে থাকেন। কিন্তু নিজেরা এসব পন্যের উৎপাটন ও বাজারজাত করণের উদ্যেগ নিতে চিন্তা করেন না। ঘোটা দুনিয়ায় আজ হালাল এবং হারাম পন্যের একটি ধারণা প্রচলিত আছে। হালাল জিনিসের উৎপানকারী যারা হারাম জিনিসের উৎপানকারীও তারা। অর্থাৎ হারাম হালাল উভয়ের উৎপানের নিয়ন্ত্রণ একই গোষ্টীর কব্জায়! মুসলামরা আছে এসব জিনিসের ভোক্তার পর্যায়ে। উৎপানের পর্যায়ে নেই। ফলে এসবের নিয়ন্ত্রণও মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
অনেক কিছুই লিখে ফেলছি। এতো কিছু লিখতে গেলে হয়তো ধান বাধতে শীবের গীত গাওয়ার নামান্তর হয়ে যাবে। সুতরাং আর বেশী আগাচ্ছি না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন