সহীহ বুখারীর ভিতর মওদূদী (রহ) এর ভুল নিয়ে 'পরিশিষ্ট!

লিখেছেন লিখেছেন ঈগল ১৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:৫৪:৫৩ রাত

অবাক হই, বিচলিত বোধ করি যখন ভাবি মুসলিম উম্মাহর বিদ্বেষীপনা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!

শায়খুল হাদিস আজিজুল হক (রহঃ) বুখারীর অনুবাদ করেছেন, ভালো, কিন্তু শেষ খন্ডে তিনি যা করেছেন কি দ্বীনী খেদমতের জন্য নাকি উম্মাহর মাঝে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে! যদি ধরেও নিই যে, তিনি মাওলানা মওদূদী (রহঃ) ফেতনা থেকে উম্মাহকে রক্ষার জন্য বুখারীর ৭ম খন্ডে একটি 'পরিশিষ্ট' সংযোজন করেছেন তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়। বুখারির ভিতর কেন তিনি তার 'সুকর্ম!'টি করবেন? এর জন্য তিনি আলাদা একটি বই লিখতে পারতেন। কিন্তু না, কোন বই নয়, বুখারীর ভিতরই তিনি মওদূদী (রহ)কে নিয়ে একটি পরিশিষ্ট সংযোজন করে দিলেন! তিনি কি এটাই মনে করছিলেন যে সাধারণ মুসলমানগণ সহী বুখারী কিনবে, শেষ খন্ডে তারা একটি আশ্চার্য জনক অধ্যায় পাবে, কৌতুহল বশত তারা সেই অধ্যায়টি পড়বে অতপর তারা মওদূদী (রহ) ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে!!!!

কোন বিবেকবান মানুষ মাওলানা আজিজুল হক (রহঃ) এর উক্ত কর্মটি মেনে নিবে না। আজিজুল হক (রহঃ) এর বুখারীর অনুবাদ চল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও ঐ 'পরিশিষ্ট'কে বুখারী থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় নি। এখানে যারা শায়খুল হাদিস আযিযুল হক (রহঃ) এর ভক্ত আছেন তাদেরকে অনুরোধ করছি, বুখারীর অনুবাদের ভিতর থেকে ঐ পরিশিষ্টটি উঠিয়ে নিন।


জেনে রাখা উচিত, মওদূদী ( রহঃ) কর্তৃক সাহাবীদের সমালোচনা সম্পর্কে আকাবীরে দেওবন্দী ধারার আলেমরা যে সব আপত্তি পেশ করেছেন তার জবাব দেওয়া হয়েছে। এখন যদি আপনাদের হিম্মত থাকে 'সত্যের মশাল' সত্যের মাপকাঠি' বইটি দুইটির তাহকিক করুন। আর যদি হিম্মতে না থাকে তাহলে অনুরোধ করছি, সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরও যদি আপনারা বিদ্বেষ প্রসূত সহীহ বুখারীর অনুবাদের দোহায় দিয়ে মাওলানা মওদূদী (রহঃ) এর বিরোধিতা চালিয়ে যান তাহলে আমাদের করার কিছুই নাই, আখেরাতেই এর ফয়সালা হবে।

=================

হে মহান আল্লাহ, শায়খুল হাদিস এবং মাওলানা মওদূদী (রহঃ) কে ক্ষমা করুন, তাদেরকে আখেরাতে সম্মাণিত করুন।

বিষয়: বিবিধ

২৪০৭ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

210340
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৫
ইনতিজামুল ইসলাম লিখেছেন : হে মহান আল্লাহ, শায়খুল হাদিস এবং মাওলানা মওদূদী (রহঃ) কে ক্ষমা করুন, তাদেরকে আখেরাতে সম্মাণিত করুন। আমীন।
210344
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৫৮
বিভীষিকা লিখেছেন : আখেরাতেই এর ফয়সালা হবে।
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৪১
158868
তহুরা লিখেছেন : দেউবন্দীদের আকিদাহ শুনুন-
210353
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:০৫
বিভীষিকা লিখেছেন : সাহাবীদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানা না নিয়ে মাওলানা মওদুদী কফের হলে চার ইমামসহ অন্যান্য উলামারা কি?

মাওলানা মওদুদী (রহ: ) “সত্যের মাপকাঠি এবং যাচাই বাছাই” সম্পর্কে যে আলোচনা রাখেন, সেটা তৎকালীন পাকিস্তান জামায়া’তে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের ৩নং ধারার ৬ নং উপধারায় লিখিত আছে । মাওলানার আলোচনাটি নিন্মরূপ :-

“আল্লাহর রাসুল (স: ) ছাড়া অন্য কোন মানুষকে সত্যের মাপকাঠি বানাবেনা ।কাউকে যাচাই বাছাইয়ের উর্ধে মনে করবেনা । কারো অন্ধ গোলামীতে নিমজ্জিত হবে না, বরং আল্লাহর দেয়া এ পূর্ণ মাপ কাঠির মাধ্যমে যাচাই ও পরখ করবে ‘এবং এ মাপকাঠির দৃষ্টিতে যার যে মর্যাদা হতে পারে, তাকে সে মর্যাদাই দেবে’।”

মাওলানার এ আলাচনা থেকে দুটি কথা স্পষ্টত: জানতে পারা যায়:

১।আল্লাহর রাসুল (স: ) ছাড়া কেউ সত্যের মাপকাঠি নয় ।

২।আল্লাহর রাসুল (সা: ) ছাড়া কেউ যাচাই বাছাইয়ের উর্ধে নয় ।

মাওলানার উল্লিখিত কথাগুলোর উপর কোন কোন মহল অভিযোগ করে বলেছেন যে, যদি এ কথাগুলো মেনে নেওয়া যায় তা হলে সাহাবায়ে কিরাম (রা: ) সত্যের মাপকাঠি হচ্ছেন না এবং তাদের উপর তানকী’দ বা যাচাই বাছাই বৈধ হয়ে যায় । অথচ কো’রআন ও হাদীসে তাদের অনেক মর্যাদা বর্ণনা করা হয়েছে । আল্লাহ তায়ালা তাদের সম্পর্কে বলেছেন رضى الله عنهم و رضوا عنه অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি সন্ত্তষ্ট হয়েছেন এবং তারাও সন্ত্তষ্ট হয়েছেন আল্লাহর প্রতি ।

আর রাসুলে করীম (স: ) বলছেন اصحابي كالنجوم باىهم اقتدىتم اهتدىتم

অর্থাৎ আমার সাহাবীগণ তারকা সদৃশ, তোমরা তাদের মধ্য থেকে যার অনুসরণ করবে হেদায়েত পাবে ।অতএব যারা এ আকীদা পোষণ করবে যে সাহাবায়ে কিরাম (রা: )সত্যের মাপকাঠি নন এবং যাচাই বাছাইয়েরও উর্ধে নন, তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বহির্ভূত।

সন্মানিত পাঠকবৃন্দ।আসুন, আমরা কোরআন ও হাদীসের আলোকে আলোচনা করে দেখি সত্যিই কি মাওলানা মওদুদী (রাহ ) এ কথাগুলো বলার কারণে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত থেকে বহির্ভূত হওয়ার যোগ্য, না নিছক ,একটা অপবাদ মাত্র ।

কোরআন শরীফের আলোকে মিয়ারে হক :

আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরীফে এরশাদ করেছেন :

ذالك خير واحسن تاويلا – فان تنازعتم فى شئ فردوه الى الله والرسول ان كنتم تؤمنون بالله واليوم الاخر

“যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মত বিরোধ হয় তাহলে উহা আল্লাহ ও তার রসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও । যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের উপর বিশ্বাস রাখ । উহাই উত্তম এবং পরকালের দিক দিযেও মঙ্গলজনক”।(সূরা নিসা , আয়াত নং-৫৯)

এ আয়াতে একটি কথা লক্ষণীয় যে, আল্লাহ তায়ালা “তোমরা” বলে যে সম্মোধন করেছেন এর মধ্যে সাহাবায়ে কিরাম (রা: ) ও রয়েছেন । সুতরাং স্পষ্টত: বুঝা গেল সাহাবায়ে কিরাম (রা: )সহ কিয়ামত পর্যন্ত আগত মুমিনদের একে অন্যের সাথে মত বিরোধ হতে পারে । একজন সাহাবীর সাথে যেমন অন্য একজন সাহাবীর মত বিরোধ হতে পারে ,তেমনি একজন সাহাবীর সাথে এমন ব্যক্তি যিনি সাহাবী নন তারও মত বিরোধ হতে পারে । কিন্ত এমতাবস্থায় ফয়সালাকারী হবে আল্লাহর কিতাব ও সুন্নতে রাসুল (স: )।

অতএব বুঝা গেল মিয়ারে হক বা সত্যের মাপকাঠি আল্লাহর কিতাব ও সুন্নতে রাসুল (স: )। যদি সাহাবায়ে কিরাম (রা: )সত্যের মাপকাঠি হতেন তাহলে গায়রে সাহাবী (যিনি সাহাবী নন) তো দুরের কথা একজন সাহাবীর অন্য সাহাবীর সাথে মতবিরোধের কোন অধিকার থাকত না, কিংবা মত বিরোধের সময় প্রত্যেক সাহাবী নিজ নিজ মতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার হুকুম হত, এবং গায়ের সাহাবীকে বিনা দ্বিধায় সাহাবীর মতকে গ্রহণ করার উপর বাধ্য করা হত।

অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন মতবিরোধের সময় কেউ কারো মত গ্রহণ না করে বরং আল্লাহর কিতাব ও সুন্নতে রাসুল (স: ) যে ফয়সালা দেয় উভয় পক্ষ তা মেনে নিতে হবে । সুতরাং সত্যের মাপকাঠি একমাত্র আল্লাহর কিতাব কোরআনে করীম এবং সুন্নতে রাসুল (স: )।সাহাবায়ে কিরাম বা অন্য কেউ নন । কারণ মিয়ারে হক বলতে এ জিনিষকেই বুঝায় যার অনুসরণ ও অনুকরণ উহার সত্য হওয়ার প্রমান এবং যার বিরোধিতা উহার বাতিল হওয়ার পরিচয় বহন করে । আর এটা ঐ জিনিসই হতে পারে যা নিশ্চিত সত্য এবং বাতিল হওয়ার এতে কোনরূপ আশাংকা নেই।এবং এটা প্রকাশ্য যে, নিশ্চিত সত্য মাত্র দুটি জিনিষ, আল্লাহ তায়ালার কিতাব কোরআনে কারীম এবং রাসুলে করীম (স: ) এর সুন্নত । সুতরাং মিযারে হক শুধুমাত্র এ দুটোকেই মানতে হবে । অন্য কাউকে নয় ।

মাওলানা মওদুদী (রহ: )কে মিয়ারে হক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি ঠিক একথাটাই বলেছেন:-

“মিয়ারে হক বলতে আমরা সেই বস্তুকেই বুঝি , যার অনুকরণ ও অনুসরণের মধ্যে হক বা সত্য নিহিত আছে এবং যার অবাধ্যতার মধ্যে বাতিল বা অসত্য নিহিত আছে।এ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে দেখো যায় যে, আল্লাহর কিতাব ও রাসুলে করীম (স: ) এর সুন্নতই হচ্ছে একমাত্র সত্যের মাপকাঠি।সাহাবীগণ মাপকাঠি নন , বরং তারা হচ্ছেন আল্লাহর কিতাব ও রসুলের সুন্নতের মাপকাঠি অনুসারে সত্যের পূর্ণ অনুসারী।কোরআন ও হাদীসের মাপকাঠিতে পরখ করে আমরা এরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হযেছি যে, সাহাবাদের জামায়াত একটি সত্যপন্থি জামায়াত । তাদের ইজমা অর্থাৎ সর্ব সম্মত সিদ্ধান্তকে আমরা শরীয়তের প্রামান্য দলীল রূপে এজন্যে মেনে থাকি যে, কোরআন ও হাদীসের সাথে সামান্যতম বিরোধমুলক বিষয়েও সকল সাহাবাদের একমত হযে যাওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব। দেখুন-(তরজমানুল কোরআন, জিলদ ৫৬, সংখ্যা ৫)

হাদীসের আলোকে মিয়ারে হক :

عن ملك بن انس رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم تركت فيكم امرين لن تفعلوا ماتمسكتم بهما كتاب الله وسنة رسوله

“হযরত মালিক বিন আনাস (রা: ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলে করীম (স: ) বলেছেন, “আমি তোমাদের মাঝে দুটো জিনিস রেখে গেলাম । যতক্ষন তোমরা এ দুটো জিনিসকে শক্ত ভাবে ধারণ করবে ততক্ষণ তোমরা কখনও পথভষ্ট হবে না । এ দুটো জিনিস হচ্ছে আল্লfহর কিতাব তথা কোরআন শরীফ এবং তার রাসুলের সুন্নত”।

উক্ত হাদীস দ্বারা স্পষ্টত: বুঝা যাচ্ছে যে সত্য, ন্যায় ও সঠিক পথে থাকতে হলে মানুষকে কেবল মাত্র এ দুটোই শক্ত ভাবে ধারণ করতে হবে। এ দুটির অনুসরণের মধ্যেই সত্য নির্হিত এবং বিরোধিতার মধ্যে বাতিল নিহিত । সুতারং মিয়ারে হক শুধুমাত্র আল্লাহর কিতাব ও সুন্নাতে রাসুল (স: )। সাহাবায়ে কিরাম (রা: ) ও যদি মিয়ারে হক হতেন, তাহলে উক্ত হাদীসে রাসুল (স: ) কিতাব ও সুন্নাহ উল্লেখ করার পর পরই তাদের কথা উল্লেখ করতেন ।

তা ছাড়া সাহাবায়ে কিরাম (রা: ) যদি মিয়ারে হক হতেন তাহলে তাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত কথা বা অভিমত শরিয়তের মধ্যে দলীল হিসেবে গণ্য হত।অথচ তাদের ব্যক্তিগত অভিমত শরিয়তে দলীল হিসেবে গণ্য হয়না । এ ব্যাপারে আইম্মায়ে মুজতাহিদীন এবং নির্ভর যোগ্য উলামায়ে কিরামদের অভিমত নিন্মরূপ:

হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফকীহ ইমাম সারাখসীর অভিমত :

وانما كان الاجماع حجة باعتبار ظهور وجه الصواب فيه بالاجماع عليه وانما يظهر هذا فى قول الجماعة لافى قول الواحد الاترى ان قول الواحد لايكون موجبا للعلم وان لم يكن بمعا بلته جماعة يخالفونه

(كتاب الاصول)

“সাহাবাদের ইজমা (ঐক্যমত) এজন্যই দলীল হিসাবে গৃহীত হয়ে থাকে যে, সবাই একটি ব্যাপারে একমত হওয়াতে এর সত্যতা নির্ভূলভাবে প্রতীয়মান হয় , কিন্ত একজনের কথায় তা হয় না । তুমি কি দেখোনা , একজনের কথায় সঠিক জ্ঞান অর্জিত হয় না, যদিও এর কেউ বিরোধীতা না করে । (দেখুন-কিতাবুল উসুল ১ম খন্ড, সাহবাদের ইজমা সম্পর্কীয় আলোচনা। )

ইমাম সারাখসী আরও বলেন :

“অভিমত হিসেবে কোন সাহাবার কাছ থেকে কোন ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে এবং এটা এমন স্পষ্ট কথা যা অস্বীকার করা যায় না । আর অভিমত অনেক সময় ভূল হয়ে থাকে । অতএব সাহাবীদের একজনের ব্যক্তিগত মত ভূল কিংবা নির্ভূল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ ধরণের অভিমত বিরোধী মতও ত্যাগ করা যাবে না , যেমনিভাবে কোন তাবেয়ীর কথায় কিয়াসকে ত্যাগ করা যায় না । দেখুন: কিতাবুল উসুল ২য় খন্ড পৃষ্টা নং-১০৫

দার্শনিক ইমাম গাযযালীর অভিমত :

ইমাম গাযযালী المستصفى গ্রন্থের ১৩৫ পৃষ্টায় কাওলে সাহাবী সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন : অনেকের কাছে সাহাবীর মাযহাব স্বাভাবিকভাবে দলীলের সূত্র । আর অনেকের মতে কিয়াস বহির্ভূত মাসআলায় তা দলীল হিসাবে গণ্য এবং অনেকের কাছে আবু বকর (রা: ) ও উমর (রা: ) এর কথা দলীল হিসেবে গৃহীত । অত:পর তিনি বলেন :

আমাদের কাছে এসব কথা বাতিল বলে গণ্য।যে ব্যক্তির ভূল হবার সম্ভাবনা আছে এবং যার নিস্পাপ ও নির্ভূল হবার কোন প্রামান্য দলীল নেই । তার দলীল রূপে গৃহীত হতে পারেনা।কাজেই সাহাবীদের ব্যক্তিগত কথা কিভাবে দলীল হতে পারে ? অথচ তাদের ভূলের সম্ভাবনা আছে । আর দলীলে মুতাওয়াতির বা আসামানী দলীল ছাড়া কিভাবে তাদের নিস্পাপ হওয়ার দাবি করা যেতে পারে ? তাদের মধ্যে মত পার্থক্য বিদ্যমান থাকা সত্তেও কিরূপে তাদের দলকে নিস্পাপ বলে ধারণা করা যায়? আর দুজন মাসুম বা নিস্পাপ ব্যক্তিদের মধ্যে মতপার্থক্য সম্ভব হয় কেমন করে ? তা ছাড়া সাহাবারা নিজেরাই তো তাদের মধ্যে মত পার্থক্য বৈধ হবার ব্যাপারে একমত।আবু বকর ও উমর (রা: ) পর্যন্ত তাদের বিরোধীমতের ইজতেহাদকারীদের অস্বীকার করেননি , বরং মুজতাহিদ যেন ইজতেহাদী মাসআলায় তার ইজতেহাদের অনুসরণ করে এটা অবশ্য পালনীয় করে দিয়েছেন । সুতরাং সাহাবাদের নিস্পাপ হওয়ার দলীল না থাকা , তাদের পরস্পরের বিরোধীতা করা বৈধ এবং তাদের নিজেদেরই একথা বলে দেয়া যে, তাদের বিরোধিতা করা বৈধ– এ তিনটি কথাই আমাদের আকাট্য দলীল।

এরপর ইমাম গাযযালী (রহ: ) ইমাম শাফিযীর দুটি কথার উদ্ধৃতি দিয়েছেন।প্রথমটি হলো যদি কোন সাহাবীর কথা প্রসিদ্ধি লাভ করে এবং কারো বিরুদ্ধে কোন মত পাওয়া না যায় , তাহলে এর অনুসরণ করা জায়েয , ওয়াজিব নয় । পরবর্তীতে তিনি নূতন মত ব্যক্ত করে বলেন :- لا ىقلد العالم صحابىا كما لا ىقلد عالما اخر

অর্থাৎ কোন আলেম যেমন অন্য আলেমের তাকলীদ বা অনুসরণ করেন না ঠিক তেমনি কোন সাহাবীরও যেন তাকলীদ না করেন ।

ইমাম গাযযালী (রাহ: ) আরও বলেন :-

وهو الصحيح المختار عندنا ادكل ماول على تحريم تقليد العالم للعالم لايفرق فيه بين الصحابى وغيره

এইটিই আমাদের কাছে সহীহ ও গ্রহণ যোগ্য কথা । কারণ যে সমস্ত দলীলের ভিত্তিতে এক আলেমের জন্য অন্য আলেমের তাকলীদ হারাম প্রমানিত হলো, সেগুলোর ব্যাপারে একজন সাহাবীও একজন গায়রে সাহাবীর মধ্যে কোনরূপ পার্থক্য সৃষ্টি করা যাবেনা।

যারা সাহাবীদের ফযীলত সম্পর্কীয় আয়াত ও হাদীস দ্বারা তাদের অনুসরণ করা জাযেয় ও কর্তব্য বলে দলীল পেশ করেন , সে সব দলীলের জবাবে ইমাম গাযাযলী (রাহ: )বলেন:-

قلنا هذا كله ثناء يوجب حسن الاعتقاد فى عملهم ودنيهم ومحلهم عند الله تعالى ولايوجب تقليدهم لاجوازا ولاوجوبا

আমরা সাহাবীদের ফযীলত সম্পর্কিত আয়াত ও হাদীস সমূহকে তাদের প্রশংসা জ্ঞাপক দলীল হিসেবে মনে করি। সেগুলো দ্বারা তাদের আমল, দ্বীনদারী এবং আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদা সম্পর্কে সুধারনা পোষন করা কর্তব্য বলে প্রমাণিত হয় ।কিন্ত এসবের মাধ্যমে তাদের অন্ধ অনুসরণ করা জায়েয ও কর্তব্য বলে প্রমানিত হয় না । জবাবের শেষাংশে তিনি বলেন :- كل ذالك ثناء لايوجب الاقتداء اصلا

এসব প্রশংসা ও মর্যাদা জ্ঞাপক দলীল এর দ্বারা অনুসরণ করা কর্তব্য এটা প্রমাণিত হয় না।

ইমাম শাফিয়ীর অভিমত :

وقال الشافعى فى قوله الجديد لايقلد احدمنهم اى لايكون قوله دليلا وان كان لايدرك بالقياس

ইমাম শাফিয়ীর সর্বশেষ মতামত এই যে, সাহাবীদের কারও অনুসরণ করা যাবেনা , অর্থাৎ তাদের ব্যক্তিগত কথা শরীয়তের মধ্যে কোন দলীল নয় । ঐ সমস্ত মাসআলায়ও যে গুলোতে কিয়াসের কোন দখল নেই ।

দেখুন –(مقدمت فتح الملهم)

ইমাম শওকানীর অভিমত:

ইমাম শওকানী ارشاد الفحول গ্রন্থের الاستدلال নামক সপ্তম অধ্যায়ের পঞ্চম অনুচ্ছেদে কাওলে সাহাবী সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন :

সত্য কথা হলো সাহাবীর ব্যক্তিগত কথা শরীয়তের কোন দলীল নয় । কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের প্রতি মুহাম্মদ (স: ) ছাড়া অন্য কাউকে প্রেরণ করেননি।তিনি আমাদের একমাত্র রাসুল (স: ) আর কিতাব ও আমাদের জন্য মাত্র একটি।সমস্ত উম্মতকে আল্লহর কিতাব ও তার নবীর সুন্নত অনুসরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপার সাহাবী ও গায়রে সাহাবীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।প্রত্যেকই শরীয়তী বিধানের আওতাধীন এবং কিতাব ও সুন্নত অনুসরণে সমান ভাবে আদিষ্ট । যারা বলেন যে, আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নত ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে দলীল কায়েম হতে পারে, তারা দ্বীনের ব্যাপারে একটি প্রমানহীন কথা বলেন ।

শাহ ওলিউল্লাহর অভিমত :

শাহ ওলিউল্লাহ (রহ: ) তার রচিত হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ গ্রন্থের প্রথম খন্ডের শেষাংশে التنبىه على مسائل শিরোনামের একটি পরিচ্ছেদে বলেন :

قد صحّ اجماع الصحابة كلهم اولهم عن اخرهم واجماع التابعين اولهم عن اخرهم واجماع تابعى التابعين اولهم عن اخرهم على الامتناع والمنع من ان يقصد منهم احد الى قول انسان منهم اوممن قبلهم فياخذه كله

সাহাবী , তাবেয়ী ও তাবে তাবেয়ীনদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলের ঐক্যমতে প্রমানিত যে, তাদের কোন একজনের পক্ষে ও তাদের মধ্য থেকে কিংবা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তির কথা দ্বিধাহীন ভাবে ও অকুন্ঠ চিত্তে গ্রহণ করা বৈধ নয়।অত:পর তিনি বিভিন্ন ইমামগণের অভিমত পেশ করেণ :

ইমাম মালেকের অভিমত :

مامن احد الا وهو ماخوذ من كلامه ومردود عليه الا رسول الله

একমাত্র রাসুল (স: ) ছাড় এমন কোন লোক নেই , যার কথা কিছু গ্রহণ যোগ্য ও কিছু বর্জন যোগ্য হবে না ।

ইমাম শাফিয়ীর অভিমত :

لا حجة فى قول احد دون رسول الله صلى الله عليه وسلم وان كثروا

“রাসুল ছাড়া অন্য কারো কথা দলীল হতে পারে না । যদি ও তারা সংখ্যায় বেশী হন ।

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের অভিমত :

ليس لا حد مع الله ورسوله كلام

“কারো কথা আল্লাহ ও তার রাসুলের কথার সমান হতে পারে না ।

মওলানা মওদূদী (রহ: )এ প্রতিপক্ষের দলীলের অসরতা :

যারা সাহাবায়ে কিরাম (রা: ) কে মিয়ারে হক বলে দাবী করেন , তারা নিন্মের হাদীসটি দলীল হিসেবে পেশ করেন : قال رسول الله صلى الله علىه و سلم اصحابي كالنجوم باىهم اقتدىتم اهتدىتم

“রাসুল (স: )বলেছেন আমার সাহাবীগণ তারকা সদৃশ, তোমরা তাদের মধ্য থেকে যাকেই অনুসরণ করবে হেদয়াত পাবে ।

এ হাদীসটি আসলে একটি জয়ীফ বা দুর্বল হাদীস । আর জয়ীফ হাদীস কখন ও দলীল হিসেবে গ্রহণ করা যায় না । এটা সর্বসম্মত কথা ।

হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসীনে কিরামের অভিমত নিন্মরূপ:

বিখ্যাত মুহাদ্দিস হাফেয ইবনে আব্দুল বার তার লিখিত

“جامع بيان العلم” নামক কিতাবে এ হাদীসটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন :

هذا اسناد لاتقوم به حجة

অর্থাৎ এ হাদিসটির সনদ এমন যার উপর ভিত্তি করে কোন বিষয়ের দলীল হিসেবে এটাকে পেশ করা যায় না ।

প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাযম বলেন :

هذه رواية ساقطة خبر مكذوب موضوع باطل لم يصح قط

এটি হচ্ছে একটি পরিত্যাক্ত বর্ণনা একটি মিথ্যে মন গড়া জালিয়াতি পূর্ণ এবং অসারতা পূর্ণ বাতেল খবর । এর সত্যতা কোন কালেই প্রমানিত হয়নি ।

হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী বলেন : এ হাদিসটির যাবতীয় সনদই দুর্বল। (দেখুন- تخريج كشاف)

ইমাম শওকানী বলেন :

فيه مقال معروف

অর্থাৎ এ হাদিসটির সনদ সম্পর্কে বিশেষ কথাবার্তা ও মন্তব্য রয়েছে ।

(দেখুন – ارشاد الفحول)

তিনি আরো বলেন , এর একজন রাবী অত্যন্ত দুর্বল এবং ইবনে মুঈনের মতে মিথ্যাবাদী। ইমাম বুখারীর নিকট সবোর্তভাবে পরিত্যাজ্য । ইমাম বুখারী এ হাদীসের একজন বর্ণনাকারী সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন : انه منكر الحديث অর্থাৎ নিশ্চয়ই তিনি হাদীস শাস্ত্রে অপরিচিত ব্যক্তি।

ইমাম আবু হাতেম (রহ: ) এ হাদিসের একজন বর্ণনাকারী সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন : ضعيف جدا অর্থাৎ সে খুবই দুর্বল । বিখ্যাত হদিস বিশারদ ইয়াইয়া ইবনে মুঈন এ হাদীসের বর্ণনা কারী সম্পকে বলেছেন: لا يساوى فلسا অর্থাৎ এ হাদীসটির বর্ণনা কারীর মূল্য এক পয়সারও সমান হতে পারে না ।

হাফেজ ইবনে কাইয়্যুম :

علام الموقعين নামক গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ডে القول فى التقليد অধ্যায়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন যে, এ রেওয়ায়তটি মোটেই শূদ্ধ নহে ।

এ ছাড়াও মাওলানার প্রতিপক্ষরা সাহাবায়ে কিরামদের ফযিলত সম্পর্কিত কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত ও হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন।এ গুলো সম্পর্কে ইমাম গাযযালীর জওয়াব একটু আগেই বর্ণনা করেছি।পাঠক ভাইদেরকে তাদের দৃষ্টি একটু পছনে নিয়ে ঐ জওয়াবটি দেখে নেয়ার অনুরোধ জানাই ।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এ দীর্ঘ আলোচনা থেকে আশাকরি বুঝতে পেরেছেন যে, আল্লাহর রাসুল ছাড়া কেউই সত্যের মাপকাঠি নয় । কারো ব্যক্তিগত কথা কিংবা অভিমত অবশ্য পালনীয় নয়। সুতরাং মাওলানা মওদূদী(রহ: ) এর কথা “আল্লাহর রাসুল ছাড়া কাউকে সত্যর মাপকাঠি বানাবে না “ এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদার বিরোধী কোন কথা নয়, এবং একথা বলার কারণে মাওলানা মাওদুদী (রহ: ) আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত থেকে বেরও হননি।বরং মাওলানার কথাই যর্থাথ কথা । যারা সাহাবায়ে কিরামদেরকে সত্যের মাপকাঠি বলে দাবী করেন তারা প্রকৃত পক্ষে অনুসরণের ক্ষেত্রে সাহাবা (রা: ) কে রাসুল (স: ) এর সম মর্যাদায় নিয়ে যান ।

উপমহাদেশের উজ্জল নক্ষত্র আল্লামা জাফর আহমদ উসমানীর ফতোয়া:

কালিমায়ে ইসলামের দ্বিতীয় অংশ محمد رسول الله এর অর্থ এই যে, এখন একমাত্র আল্লাহর রাসুল ছাড়া অন্য কেউ সত্যের মাপকাঠি নয় । এ জন্য উক্ত ধারণা প্রত্যেক মসুলমান মাত্রের আকিদা হওয়া উচিত। ইমাম মালিক (রহ: ) রাসুলে করীস (স: ) এর কবরের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন , এই কবরে যে মহান ব্যক্তি শায়িত আছেন, তিনি ছাড়া অন্য সবার কথা যাচাই বাছাই করে দেখতে হবে।একথা পরিষ্কার যে, ইমাম মালিকের এ কথার অর্থ নবী ছাড়া অন্য সবাই ।এ থেকে অহেতুক নবী ওলিদের অবমাননা বের করা যুলুম । (দেখুন,৮০ জন উলামার দৃষ্টিতে জামায়াতে ইসলামী )

তাফসীরে মাজেদীর লেখক মাওলানা আব্দুল মাজিদ দরিয়াবাদীর অভিমত :

আপনি মৌলিক আকিদা সম্পর্কীয় যে উদ্ধতিটি পাঠিয়েছেন , তা সম্পূর্ণ সঠিক।এবং প্রত্যেক মসুলমানের এই আকিদা হওয়া উচিত। আল্লাহর রাসুলকে সত্যের মাপকাঠি স্বীকার করার ভিতর দিয়ে অন্যান্য নবীদের স্বীকৃতিও এসে গেছে। প্রশ্নকারীর সম্ভবত: তানকীদ(যাচাই) এবং তাওহীন(অসম্মান) এর মধ্যে ব্যবধান জানা নেই।মুহাদ্দিসীনরা হাদীস বর্ণনাকারীরদের কি কঠোর ভাবে যাচাই বাছাই করেছেন , এত কি তারা সাহাবায়ে কিরামদের অসম্মান কারী হয়ে গেলেন ?

অনুরূপভাবে প্রশ্নকারীর সম্ভবত : অনুসরণ ও অন্ধ অনুকরণের পার্থক্য জানা নেই । অনুসরণ তো উস্তাদ, পিতা –মাত এবং বুজুর্গ ব্যক্তিদের করা হয়ে থাকে আর অন্ধ অনুকরণ একমাত্র নিষ্পাপ রাসুল ছাড়া অন্য কারো হয় না । (জামায়াতে ইসলামী ৮০ জন উলামার দৃষ্টিতে )

Note: লেখাটি মাওলানা বশিরুজ্জামান লিখিত “সত্যের আলো” নামক বই থেকে নেয়া হয়েছে।পৃষ্ঠা ২৭-৩৯
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
158934
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : অসাধারণ যুক্তি! কুরআন হাদীসের আলোকে চমৎকার আলোচনা। এর উপর আর কথা হয়না।
২০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৬
159029
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : যুক্তি অসাধারণ হলেও পদ্ধতি বেসাধারণ। এতো বড় মন্তব্য হয় নাকি। একই বিষয়ে পৃথক পোষ্ট দিলে ভাল হতো।
210387
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৫৬
সবার আমি লিখেছেন : ভালো লাগলো
210390
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:০০
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : কাজের চেয়ে অকাজ বেশী হওয়া। বোখারী বঙ্গানুবাদ করতে গিয়ে তিনি কারো বিরুদ্ধে বিষেধাগার করেছেন। যিনি বোখারী শরীফ লিখেছেন, তার জমানায় ইসলামের দুষমন প্রচুর ছিল, তিনি কিন্তু তা করেন নি। তিনি আবু লাহাব আবু জেহেলও সমালোচনা করেন নি।

চেয়ারম্যানের চেয়ে চৌকিদার বেশী গরম হলে যা হয়, এখানেও তাই হয়েছে। ধন্যবাদ
210460
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৪১
তহুরা লিখেছেন : দেউবন্দীদের আকিদাহ শুনুন-
210608
২০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৫
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : মাওলানা মওদূদী রাহ: যা লিখেছেন তা নিয়ে আলোচনা আর সামালোচনা-উভয়টির যুগ শেষ হয়ে গেছে।
এক সময় ছিল যখন মওদূদীর সমালোচনা না করলে ওয়াজের গলায় কারেন্ট আসতো না। এখন ঐ গলার তার লুজ হয়ে গেছে।
অপর দিকে সেই সময়ে মওদূদী রাহ. এর আত্মার আত্মীয়দের অবস্থাও এমন ছিল যে, জবাব না দিলেই নয়। তারই ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয়েছে সত্যের আলো-সত্যের মশাল ইত্যাদি বই সমূহ।
কিন্তু বাস্তব কথা হলোঃ
মাওলানা মওদূদী নাই, শায়খুল হাদীস আজীজুল হক সাহেবও নাই। দূ'জনের আমল নামা এখন বন্ধ। তাদের রবের কাছে যা পাওয়ার তা তারা পাবেন। কিন্তু পুরাতন বিতর্কটাকে আবার নতুন করে জীবিত করার কি প্রয়োজন আছে মুসলিম উম্মার।
৪ইমামের এখতেলাফ যেমন সমাধান সম্ভব নয়। মওদূদী আর মওদূদী বিরুদের এখতেলাফও সমাধান সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ।
২০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:০৭
159044
ঈগল লিখেছেন : মাসআলা এখতেলাফে হয়ত সমাধান নয় কিন্তু, নিেজেকে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের ভিতর শামিল করতে চাইলে তো কমপক্ষে আক্বিদার সমাধান হতে হবে।
==========
শায়খুল হাদিস আজিজুল হক (রহঃ) নাই কিন্তু তাঁর বুখারী তো এখনও আছে, পববর্তীতে যদি কোন সংস্ককরণ বের করা হয়, আশা করছি শায়খুল হাদিসের কোন শুভাকাঙ্খি এই বির্তক অবসানের লক্ষ্যে উক্ত অনুবাদ থেকে 'পরিশিষ্ট' বাদ দিবেন।
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:৪০
159544
আধা শিক্ষিত মানুষ লিখেছেন : আমার পয়েন্টটা সেখানে নয়। আমার পয়েন্ট হচেছ মুসলিম উম্মাহ এই সব বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মুল বিষয়ে কথা বলা ভূলে গেছে।
মুসলমানেরা নিজেদের মেধাকে সৃজনশীলতার পেছনে ব্যয় না করে পরস্পর কাঁদা ছোড়াতে ব্যস্ত হয়ে সাধারণ মানুষকে কর্মসূচী দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তাই সাধারণ মানুষেরা গাছের পরিবর্তে আগাছাদের দেয়া কর্মসূচী বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়েছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File