৭১ থেকে আজ অবধি সকল প্রকৃত অপরাধীর বিচার কি প্রজন্ম চত্বরের সমাবেশ দাবি করতে পারবে??

লিখেছেন লিখেছেন হায়পোথিসিস ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৪৫:৩৮ সন্ধ্যা

৭১ থেকে আজ অবধি সকল প্রকৃত অপরাধীর বিচার কি প্রজন্ম চত্বরের সমাবেশ দাবি করতে পারবে??

মুক্তিযুদ্ধকে কিছু মানুষ বাংলাদেশ থেকে ইসলাম তাড়ানোর উপায় হিসাবে নিয়েছে। ইসলাম আসার আগে আয়ামে জাহেলিয়াতের সময় ইহুদী গোষ্ঠি আউস এবং খাজরাজ নামে দু’টি গোত্রের মাঝে এমন ভাবে হিংসার বিজ ছড়িয়েছিল যে এই দুই গ্রুপ যুগ যুগ ধরে খুনাখুনি তে লিপ্ত হয়ে পড়ে। রক্তের নেশায় তারা মেতে উঠেছিল। ইসলাম আসার পর এরা সমস্ত প্রতিশোধের নেশা ভুলে গিয়ে একে অপরকে ক্ষমা করা শেখে, ভাই ভাই হিসেবে বাচতে শেখে। নবী (স) এর মক্কী জীবনে বহু সাহাবী কে যারা নির্মম অত্যাচার করেছিল, যারা তাদেরকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করেছিল, এমন কি হিন্দা নামের এক মহিলা নবী (স) এর চাচা হামজা (রাঃ) কলিজা বাহির করে চিবিয়ে তার প্রতিশোধের নেশা পুরন করেছিল। মক্কা বিজয়ের পর নবী (স) এদের সবাইকে মাফ করে দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটাই মুসলমানদের অনুসরনীয়। আর এই মিলনের ফল হল তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতির চরম সোপানে পৌঁছে।

আর আমরা নিজেকে সেই নবী (স) এর উম্মত হিসেবে দাবী করছি অথচ আজ ৪২ বছর ধরে আমারা জিইয়ে রেখেছি বিদ্বেষ ভাব। কিছু স্বার্থান্নেসি চক্র স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ নামে দেশের মানুষকে বিভক্ত করে দেশে ফাসাদ সৃষ্টি করেছে। চাছে একটা গৃহযুদ্ধ বাধাতে। আউস-খাজরাজের প্রেতাত্মা কে আমরা আবার আবাহন করতে চাচ্ছি। শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুন, জাফর ইকবাল গং নিজেরা অধার্মিক তাই তারা চায় এদেশবাসিকে অধার্মিকে পরিনত করতে। তাদের চেষ্টায় চলছে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাষ্কর্যের নামে মুর্তি স্থাপন। একদিকে জাফর ইকবাল, অন্যদিকে মাওলানা সাঈদী দাড়ালে আমি সাঈদীর দিকে দাড়াব। নাস্তিক জাফর ইকবালের দিকে নয়। যে যাকে ভালবাসবে হাসর তাদের সাথেই হবে। তাই আমি জাফর ইকবালের সাথে আমার হাসর চাইতে পারি না।

আমি চাই জাতিসংঘের তত্তাবধানে এই বিচার হোক। কারন আমাদের ট্রাইবুনাল তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে বহু আগেই। এই বিচার প্রয়োজন এই জন্য যে, গত ৪২ বছর ধরে নিরন্তর প্রচারের মাধ্যমে একটি সুচতুর গোষ্ঠি জাতিকে ভাগ করার যে সুযোগ পেয়েছে তা বন্ধ হোক। কোরান মজিদে আল্লাহ পাক ফাসাদ সৃষ্টিকারিদের ভয়ানক পরিনতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। যদি ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, মুসলমান, নাস্তিক (এই ইনু-মেননদের গুরু ও পাকিস্তানের দালাল ছিল) সকল স্তরের লোক ই রাজাকার ছিল কিন্তু বিশেষ উদ্দ্যেশ্যে বাম/নাস্তিক প্রচার মিডিয়া এই অপরাধের পুরোটাই চাপিয়ে দিয়েছে দাড়ি-টুপি ওয়ালাদের উপর। তা বন্ধ হোক।

(* বামরা মনে করেঃ ধর্ম আফিম সম, ওরা স্পষ্টত ধর্মের বিরুদ্ধে।)

শুধু দাড়ি-টুপি ওয়ালাদের বিচার হবে, ক্লীন-কার্ট রাজাকার গং বিচার করবে তা অবিচার। প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে ফাসি দেয়া যায় না। তা অবিচার। ফাসি চাই না, ন্যায় বিচার চাই। দেলোয়ার হোসেইন সাইদি কে দেলোয়ার সিকদার বানিয়ে বিচার বন্ধ হোক। কোর্টের শুনানিতে স্পষ্টত প্রমান হয়েছে যে দেলোয়ার সিকদার নামে এক রাজাকার ছিল যাকে স্বাধিনতার অব্যবহিত পরেই মেরে ফেলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চড়ে বাম/নাস্তিকরা চাচ্ছে এই লোকটি যেহেতু মানুষকে ইসলামের দিকে সুন্দরভাবে ডাকতে পারে তাই ৭১ এর ব্যাপারে মানুষের আবেগ কে ব্যবহার করে একে ফাসিয়ে দিতে।

বিচার করতে হলে সকল রাজাকারের বিচার হতে হবে। সে যে দলের ই হোক। যারা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল পরে ভোল পালটে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে রাজাকারের বিচার চায় তাদের বিচার আগে করা উচিৎ। সাকা চৌধুরীর মত একই অপরাধে অপরাধি হাসিনার বেয়াই মুসাররফ তার ও বিচার দরকার। শাহরিয়ার কবির ৭১ এ পাক আর্মীকে মুরগি সরবরাহ করত। জহির রায়হান কে ডেকে সেই নিয়ে গিয়েছিল আরো কয়েকজন মুক্তুযোদ্ধাদের সাথে (সাক্ষি দিতে এসে কিছুদিন আগে নিজেই স্বীকার করেছে) তার ও বিচার দরকার। স্বরাস্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীর ৭১ এ ডিসি ছিল, পাকিস্তান আমলে একজন ডিসির ক্ষমতা কত ছিল তা আমরা সবাই জানি। সে হাজার হাজার রাজাকার রিক্রট করেছিল। সেই সব রাজাকারের সবার সমান অপরাধ ত তার একার। তার ও বিচার দরকার। মুনতাসির মামুন পুরা ৭১ এ যুদ্ধে যাওয়ার বয়স থাকা সত্বেও যুদ্ধে না যেয়ে বাবা-চাচার সাথে ধানমন্ডি এবং চট্টগ্রাম বন্দরে (যেখানে পাক আর্মির যুদ্ধাস্ত্র আমদানি হত) কাটিয়ে দিল। তার ও বিচার হওয়া দরকার। সাজেদা চৌধুরী টিক্কা খানের লিস্টের ৮৪ নং এ থেকে ও ইসলামী দল না করা এবং আওয়ামী রাজনিতি করার কারনে তার বিচার চাওয়া হচ্ছে না। তার ও বিচার হওয়া উচিৎ।

‘ইনসেন্স অব মুসলিম’ মুভিতে ইসলাম এবং নবী (স) কে যে নোংরা ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল তারো চেয়ে বেশি নোংরা কথাবার্তা যে সব ব্লগার ব্লগ সাইটে লিখেছে তারা কেন শাহবাগে? (এদের ‘ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট’ নামে ই শাহবাগ প্রজন্ম চত্তরের কর্মসুচি আহবান করা হয়েছিল।) শাহবাগ তাদের কেন বিচার চায় না? উল্টা আবার হাসিনা এই ভয়ঙ্কর ইসলাম বিদ্বেষী কে শহীদ বলে ঘোষনা দিল। হাসিনাকে কটুক্তি করাতে দ্রুত শাস্তি আর আল্লাহ, নবী (স), ও ইসলামকে জঘন্য কথা বলাতে সরকার তাকে দিচ্ছে বিরোচিত মর্যাদা। এটা একজন মুসলমান হিসাবে আমি মেনে নিতে পারিনা। এটা জখন্য অপরাধ। হাসিনা যদি এর বিচার না করে আমি হাসিনার ও বিচার চাই।

আশ্চর্য্য, যে সরকার বাহাদুর বিশ্বজিতের হত্যা পুরা দেশের মানুষ জানলে তারা না জানার ভান করল তারাই আবার রাতের আধারে মুখোসধারি কারা নাস্তিক ব্লগার কে হত্যা করে গেল তা চাপিয়ে দিল বলির পাঠা জামায়াতের উপর। মনে হয় খুনের সময় তারা সেখানে ছিল। এই সব ব্লগারদের বিচার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। ৯০% মুসলমানের দেশে যে সব নাস্তিক/বাম এবং সরকারের মন্ত্রীরা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদের ও বিচার চাই।

(* যারা নাস্তিক হতে চাও হয়ে যাও। কিন্তু আমার আল্লাহ, নবী (স), এবং ইসলামকে নিয়ে বিশ্বাস নিয়ে কেন তোমরা জঘন্য প্রচারনা করবে।)

আমি সঙ্কিত যখন দেখি ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশন শাহবাগ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে। এরা কোথায় ছিল যখন গুজরাটে বাবরি মসজিদ ধংস করা হয়। কোথায় ছিল যখন সেখানে মুসলমান এমপি সহ শত শত মুসলমান হত্যা করা হয়? আমি সংকিত এদেশ যেন হায়দ্রাবাদের ভাগ্য বরন না করে (হায়দ্রাবাদ একটি স্বাধিন রাষ্ট্র ছিল। ১৯৪৮ এ ছয় দিনে মধ্যে লাখো মানুষ কে হত্য, লাখো মা-বোনের ইজ্জতের হানি করে ভারত তা দখল করে নেয়। আমি সংকিত এদেশ যেন সিকিমের ভাগ্য বরন না করে। আল্লাহ এদেশকে এবং এদেশে ইসলাম কে হেফাজত করুন। আমাদের এই চেষ্টায় করা উচিৎ।

পরিশেষে, আমি মুসলমান, আমি হাসরের দিনে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিকে ভয় করি। তাইঃ

১। ন্যায় বিচার চাই, যেন তেন ভাবে ফাসি চাইনা। জাতিসংঘের তত্তাবধানে হোক এই বিচার।

২। ইসলাম, আল্লাহ এবং নবী (স) বিরুদ্ধে অকথ্য কথামালা যারা লিখতে পারে তারা যে আন্দোলনের ডাক দেয় সেই আন্দোলনের পক্ষে আমি থাকতে পারি না।

৩। বাম/নাস্তিক সহ অন্য দলের রাজাকার দের ও বিচার করতে হবে।

৪। ইসলামের আইন অনুযায়ি কাজ করা সকল মুসলমানের কাজ। এটা শুধু জামায়াতের কাজ নয়। আওয়ামী লীগ ৯০% মুসলিমের দেশে ইসলামিক আইন চালু করুক - আমি আওয়ামী লীগের সাথে থাকব।

৫। বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগনের সবাই যদি অবিচারের পক্ষে যায় - তবু আমি যেতে পারি না।

৬। এই কজন না হয় ৭১ এ দোষ করেছিল। কিন্তু যারা ৭১ এর পর থেকে আজ পর্যন্ত হত্যা, গুম, জনগনের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে তাদের ও বিচার চাই। বিচার চাই যারা বাংলাদেশের মত একটা মুসলিম দেশে ইসলামিক সকল কিছু কে জামায়াতের সাথে এক করে মুছে ফেলতে চাচ্ছে।

(**আসেন এই নাস্তিক গন যারা আমার বিশ্বাস কে টার্গেট করে আমার কলিজা কে ক্ষত-বিক্ষত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি। এটা শুধু আমার কাজ নয়, এটা আপনার আমার (যারা নিজেদের মুললিম বলে মনে করি তাদের) সবার কাজ। তাদের ব্লগীয় লিখা ও মন্তব্য দেখলে যার ভিতর এতটুকু ঈমান আছে তার ই খারাপ লাগার কথা। আমি নিশ্চিৎ আপনাদের ও খারাপ লাগবে।)

বিষয়: বিবিধ

১২০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File