রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের পরিপন্থী ????

লিখেছেন লিখেছেন হায়পোথিসিস ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:৩৩:২৭ সকাল

খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এতদিনে তাদের মনের কথাটা বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের পরিপন্থী। আওয়ামী লীগ এবং বাম/নাস্তিক চামচারা এতদিন যেটা আভাষে ইংগিতে বলে যাচ্ছিল তিনি তা প্রকাশ করলেন। তাদের মিডিয়া সংবিধান পন্থি (?) কাজ অনেক দিন থেকেই করে দেখিয়ে দিচ্ছিল কিন্তু আমরা তা বুঝতে চাচ্ছিলাম না, তাই তিনি পরিষ্কার করে দিলেন। এরই কথা প্রথম আলো সেই ২০০৭ এ আমাদের নবী (স) এর বিরুদ্ধে কার্টুন প্রকাশ করে বলে দিয়েছিল। পরে বেকায়দা দেখে ততকালীন বায়তুল মুকাররামের খতিবের কাছে মাফ চেয়ে বেচেছিলেন। আমরা তখন বুঝিনি। বিভিন্ন মন্ত্রীরা ইসলাম বিরোধি কথা বলে আমাদের বুঝাতে চেয়েছিলেন (শুধু একটি উদাহরনঃ ডেপুটি স্পিকার শওকত বলেছিলেন কুত্সিত চেহারা ঢাকতেই. মেয়েরা বোরখা পরে।) আমরা তখন বুঝিনি। প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় (প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উপদেষ্টা পরিচয়ে) বলেছিলেন, সেনাবাহিনী থেকে ইসলামপন্থীদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। তখনো বুঝিনি আমরা।

এরপর তারা আরো একটূ পরিষ্কার করে বলল। যেমন সাজেদা চৌধুরী বললেন, ‘‘সংবিধান থেকে ধর্মের কালো ছায়াও

একদিন মুছে ফেলবো'। তখনো বুঝিনি আমরা। বিশ্বকাপের উদ্বোধন উপলক্ষে জাতীয় মসজিদের আসর, মাগরিব ও এশা এই তিন ওয়াক্তের আযানের সময় মাইক বন্ধ রেখে দেয় আওয়ামী লীগ। তাছাড়া মঙ্গলযাত্রা দেখানো হলেও পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত হয়নি।

তখনো বুঝিনি আমরা।

প্রথমে ইসলামের বিরুদ্ধে একটু আধটু কথা বলছিল, পরে কাজ শুরু করল আর এখন খাদ্যমন্ত্রী বলেই দিলেন ইসলাম সংবিধান পরিপন্থী।

রাজধানির শাহবাগে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় বাম/নাস্তিক ব্লগারদের ব্যানারে ‘প্রজন্ম চত্বরে’ দিনের পর দিন ধরে চলতে দেয়া হচ্ছে নাটক। মিডিয়া গুলি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে একে বাংলাদেশের আপামর জনতার দাবি বলে আমাদের মত বোকা জনতাকে বুঝানোর কোন কসিস বাকি রাখছেনা। তবে এটা যদি জামায়াত শিবিরের হত বা অন্য কোন ইসলামী দলের হত তবে এই একি মিডিয়ার হেডিং সহ কাভারেজ হত ভিন্ন। কেউ বলত, ‘স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি রাজধানীর ব্যস্ততম মোড় দখলে রেখে জাতির অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলতে চাচ্ছে।‘ কেউ লিখত, ‘ধর্ম ব্যবসায়ীরা দেশের অগ্রগতিকে ব্যহত করার মহা-পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে।‘ ইত্যাদি, ইত্যাদি...।

তখনো বুঝিনি আমরা।

শাহবাগের মঞ্চে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের একাত্মতা প্রকাশের হিড়িক পড়েছে। নাস্তিক ব্লগার কে বা কার হাতে মারা গেল প্রধানমন্ত্রী তাকে শহীদ বলে তার পরিবারকে সান্তনা দিতে হাজির হল তার বাড়িতে। কিন্তু জামায়াত শিবির তাদের মত প্রকাশের জন্য রাস্তায় নামতে পারবে না। রাস্তায় নামলেই গুলি করে মাত্র একমাসে ২০ জন কর্মীকে মেরে ফেলল। পাকিস্তান আর্মী ও এরকম নির্মম ভাবে ৫২ ‘র ভাষা আন্দোলনে বা ৭১ এর ২৫ শে মার্চের ক্রাক ডাউনের আগে গুলি করে এত মানুষ মারেনি। মিডিয়া গুলি ও সিন্ডিকেটেড কাভারেজের মাধ্যমে যারা মারা গেল তাদের ই উপর চাপিয়ে দিল সমস্ত দোষ। রাইফেল, বন্দুক, নিদেন পক্ষে চাপাতি, রামদা সহ শিবিরের মিছিলের কোন ছবি তারা দেখাতে না পারলে ও ঢিল-পাথর মারাকেই তারা মারাত্মক অস্ত্র হিসেবে তুলে ধরল। বলে গোলা-গুলি হয়েছে। গোলা-গুলি কই? এত দেখি একপক্ষ, রাজাকার রিক্রুটার, মখা আলমগীরের বাহিনীর নিশানা করে গুলি করা। গোলা-গুলি নয়। কিন্তু তবু ঠিক যেমন ভাবে এতদিন দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটেড প্রচার করে মুসলমানদের চিহ্নকে খারাপ ভাবে তুলে ধরেছে। তেমনি ভাবে মিডিয়া শিবিরকে ভয়ঙ্কর হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তখনো বুঝিনি আমরা। কারন ওরা শিবির, ওরা মানুষ নয় (!)

একদিকে ‘প্রজন্ম চত্বরে’ বাম/নাস্তিক/ধর্ম-নিরপেক্ষদের দাবি দাওয়ার আন্দোলন, অন্যদিকে জামায়াত শিবিরের মতপ্রকাশের স্বাধিনতার আন্দোলন, বাঁচা-মরার আন্দোলন। একদিকে থাবাবাবা, আসিফ মহিউদ্দীনদের আন্দোলন, অন্যদিকে ইসলাম কে বাংলাদেশের জমিন থেকে মুছে দেয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন। একদিকে ঢাক-ঢোল, নাচ-গান চলছে, অন্যদিকে আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে মানুষ কে সরকারের সকল জুলেমের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানাচ্ছে। কিন্তু একদিকে বিরিয়ানি অন্যদিকে গুলি। একদিকে ঠান্ডা পানীয়, অন্যদিকে গরম পানির গোলা।

তখনো বুঝিনি আমরা। কারন ওরা তো জামায়াত শিবির (!)

আওয়ামী লীগের দলীয় গঠনতন্ত্রের মুলনীতি সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা সংবিধান পরিপন্থী নয়। জামায়াতের গঠনতন্ত্রের আল্লাহর সার্বভৌমত্ব সংবিধান পরিপন্থী। আওয়ামী লীগ তার ধর্ম নিরপেক্ষতা বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতি করতে পারবে। জামায়াত ইসলামিক শারিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করতে পারবে না। শারীয়া কি শুধু জামায়াতের সম্পদ? শারীয়া কি মুসলমানদের বিধান নয়? যদি এটা মুসলমানদের আইন হয় তবে ৯০ ভাগ মুসলমানদের দেশে আওয়ামী লীগ নিজে তা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করে না কেন? তাহলে তো জামায়াতের দরকার ছিল না। বরং আওয়ামী লীগ ইসলামের বিরুদ্ধে তার সমস্ত শক্তি নিয়োগ করেছে। কেন? তখনো বলিনি আমরা যে হে আওয়ামী লীগের কর্নধার গন তোমরা কেন বাম/নাস্তিকদের নিয়ে ধর্মহীন আইন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছ? চেষ্টা করছ দেশে ফেরাউনি আইন প্রতিষ্ঠা করতে? কেন? কেন?

তাই আমাদের খাদ্যমন্ত্রী বাহাদুর পরিষ্কার করেই বলে দিলেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান পরিপন্থী। আমি অভিজ্ঞতা থেকে জানি এখনো আমরা তাদের চিনতে পারব না।

বিষয়: বিবিধ

৯৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File