সন্দেহ জটিল এক নারীরোগ
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ আরিফ ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৩৯:০৭ সন্ধ্যা
মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠতেই মনিটরে চোখ রাখলাম।মনিটরে সুমনের হাস্যজ্জল ছবি দেখে রিসিভ করে বললাম- রাত ২টায় না ঘুমিয়ে কি করছিস?
-আরে রাখ তোর ঘুম।তোর ভাবী রুম থেকে বের করে দিয়েছে।
-হাঃ হাঃ করে হেসে উঠে বললাম-আর তুই ছাদে বসে চাঁদকে বউ বানিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার ব্যর্থ চেষ্ঠা করছিস।
-কথায় কথায় ফান করা আর হাসা তোর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
-ঐ হাসব নাতো কাদঁব নাকি?ভাবী নিশ্চয় কোন কারণ ছাড়া তোকে বের করে দেয়নি।
-আর বলিস না অফিস থেকে বেরুতেই রাসেল,মারুফদের সাথে দেখা।জোর করে ওদের মেসে নিয়ে গেল।সবারই একটায়,অভিযোগ বিয়ের পর বউয়ের হাতের রান্নার স্বাদ পেয়ে ওদের মেসের অখাদ্য খাওয়ার ভয়ে নাকি মেসে যায়না।সবার অভিযোগের জবাব দিতে রাতে খেয়ে আসার ঘোষনা দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে আড্ডায় মেতে উঠি।জম্পেশ আড্ডা শেষে খেয়ে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ১টা।মারুপের সাথে বাজি ধরে এত বেশী খেয়েছি যে ঠিক মত হাটঁতেও পারছিলাম না।বেডরুমে ঢুকতেই পারফিউমের কড়া ঘ্রানে পেট থেকে সব বেরিয়ে এল।একেতো লেট;তার ওপর বমি।তোর ভাবী সন্দেহ করে বসল মদ জাতীয় কিছু খেয়ে এসেছি।প্লিজ দোস্ত কিছু একটা কর।
-ঐ তোর বউ তোকে কয়েকদিন পরপর ওভার বাউন্ডারী মেরে ছাদে পাঠাবে আর আমাকে মোবাইলের বিল উঠিয়ে তোর বউয়ের সন্দেহ দূর করতে হবে।আমাকে পাইছসটা কি?
-তুই যখন বিয়ে কর.ি..............
সুমনকে থামিয়ে দিয়ে বললাম-তোর অবস্থা দেখে বিয়ে করার স্বাদ মঙ্ঘলগ্রহে বিসর্জন দিয়েছি।
-লেকচার রাখ।মশার কামড় আর সহ্য হচ্ছেনা।কিছু একটা কর।আমার বউতো তোকে গুরু মানে।
-ঐ হাওয়া দিবি না কইলাম।৩০মিনিট পর নিচে যাবি।দেখি সন্দেহ প্রবন নারী জাতির গর্বিত এক নারীর সন্দেহ দূর করতে পারি বলে লাইন কেটে দিয়ে ফোনবুকে ভাবীর নাম্বার খুজঁছি এমন সময় আবার মোবাইল বেজে উঠল।
মনিটরে ফারিয়ার মায়াবী চেহারা দেখে রিসিভ করে ভয়ে ভয়ে বললাম-আমার লক্ষীটি এখনও ঘুমায়নি কেন জানতে পারি।
-ডায়লগ মারবানা।কার সাথে এতক্ষন প্রেমালাপ করছিলে।আধঘন্টা ধরে নাম্বার বিজি।
সুমনের নাম বললেও বিশ্বাস করবে না তাই বললাম-না মানে গেমস খেলছিলামতো তাই।
-মিথ্যা বলতে পারনা বল কেন।গেমস খেললে নাম্বার বিজি থাকেনা।শোন,আমি বাংলাদেশে থাকলেও তোমার ইন্দোনেশী,ইনডিয়ান,শ্রীলংকান আর ফিলিপিনি প্রেমিকাদের নাম পর্যন্ত জানি।
মিথ্যে অপবাদ শুনে রাগ হলেও নিজেকে সামলে নিলাম।বন্ধু রাজন বলে,'রাগ হলেও প্রেমিকার সাথে রাগতে নেই'।রাজনের বিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে ভালবাসায় ফেটে যাচ্ছি এমন স্বরে বললাম-আমার স্বপ্নরানী,কল্পনার রানী,আগামী দিনের সুখের বাসর রানীর আজ কি হয়েছে আমাকে কি বলবে?
-মুখেই তোমার যত ভালবাসা।তুমি আমাকে একটুও ভালবাসনা।শোন মেয়ে দেখলেই প্রেমে পড়ার এন্ড প্রেম করার অভ্যাস ছাড় না হয় আমি ফ্যানের সাথে ঝুলব।
যে তুমি কাটাঁর ভয়ে মাছ খাওনা সে তুমি ঝুলবে ফ্যানের সাথে বলতে গিয়েও থেমে গেলাম।'প্রেমিকার কাছে মনের ভাবনার কথা বলতে নেই'।বন্ধু রামিমের বিখ্যাত উক্তিটির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বিষন্ন সুরে বলালাম-এমন কথা আর কখনও বললে তোমার আগে আমি ঝুলব।আচ্ছা লক্ষীটি এখন রাখি।
-ফোন করেছি আমি,বিল উঠছে আমার তুমি রাখতে ব্যস্ত হচ্ছ কেন কেউ বুঝি ফোনের অপেক্ষায় আছে?তা অপেক্ষামান প্রেমিকাটির নাম কি?
আছেরে ফারিয়া আছে।আমি যদি থার্ড আম্পায়ার হয়ে ভাবীর কাছে সবুজ বাতি জ্বালাতে না পারি তাহলে বেচারা সুমনকে আজ ছাদেই রাত কাঠাতে হবে।এবারও মনের কথা মনে রেখে বললাম- না এখনও খায়ি তো তাই।
-ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমোতে যাও।ভালবাসি,ভীষন ভীষন।গুডনাইট।
-লাইন কেঠে দিয়ে বললাম-সন্দেহ নাইট।
বিষয়: বিবিধ
৩১৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন