নীরবতা ভাঙলেন মনসুর, বর্তমান সরকার ভোটারবিহীন ক্ষমতা দখলকারী সরকার।
লিখেছেন লিখেছেন মুন্নি ৩০ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:১০:৪০ সকাল
আশির দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা, ছাত্রলীগের জনপ্রিয় সভাপতি, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার ভোটারবিহীন ক্ষমতা দখলকারী সরকার। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব, বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রেক্ষাপট ও বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের কট্টর সমালোচকদের নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সামনে রেখে এই সরকারে ঠাঁই পেয়েছেন অনেকেই, যারা সেদিন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পথকে ত্বরান্বিত করেছিলেন। তার প্রমাণ সেদিন চীনপন্থি এবং সোভিয়েতপন্থি কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের কেউ কেউ এই সরকারের মন্ত্রী। সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় আগ্রাসনের কথা বলে সেদিন হরতাল ডাকা হলো কোন উদ্দেশে। দ্বিতীয় হরতাল ডাকা হলো ১ জানুয়ারি, ১৯৭৩ সালে। এমন কী প্রয়োজন ছিল মাত্র ৫ মাসের মধ্যেই ছাত্রলীগকে বিভক্ত করার। ছাত্রলীগ মুজিববাদ এবং বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে আলাদা গ্র“প করা হয়েছিল কোন অদৃশ্য শক্তির বলে। দীর্ঘ নীরবতার পর সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ গতকাল অনেক খোলামেলা কথা বলেন।সুলতান মনসুর প্রশ্ন রেখে বলেন, ১৯৭৩ সালের ২১ জুলাই এই বিভক্ত ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন করে বঙ্গবন্ধুকে অতিথি করা হয়েছিল কার স্বার্থে? আজ এসব প্রশ্নের উত্তর জানার সময় এসেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সামনে যখন কেউ কথা বলার সাহস রাখেননি সেই সময় ১৯৭৩ সালের ৩১ অক্টোবর জাসদ গঠন করা হলো কী কারণে? কার স্বার্থে গঠিত হলো জাসদ? তিনি বলেন, শেখ ফজলুল হক মণি ভাইয়ের নেতৃত্বে সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমেদসহ আমরা সবাই সেদিন ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে মুজিববাহিনীর পক্ষ থেকে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলাম। কিন্তু তারপরও জাসদের হাতে এত অস্ত্র এলো কোথা থেকে? এই জাসদই সেদিন বঙ্গবন্ধু হত্যার ক্ষেত্র তৈরি করেছিল।ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কমরেড মণি সিংহ, মোজাফফর আহমেদ আর মতিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে সেদিন যারা জিয়াউর রহমানের খাল কাটা বিপ্লবে অংশ নিয়ে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন, ক্লান্ত হয়ে অবশেষে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। আজ তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ক্ষমতাবান। এদের কারণেই আওয়ামী লীগ তার মৌলিক জায়গা থেকে দিন দিন সরে যাচ্ছে। এই সুবিধাবাদীরাই বিভ্রান্ত করছে আওয়ামী লীগের মূলধারাকে। তিনি বলেন, সচিবালয়সহ প্রশাসনে যে অচলাবস্থা এর জন্য দায়ী কে? এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান এবং তৌফিক-ই-ইলাহীর কাছ থেকে রাজনীতির সবক নিতে হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এরা ’৭৫-পরবর্তী সব সরকারেরই সুবিধাভোগী। সুলতান মনসুর এই সুবিধাবাদীদের হাত থেকে দল বাঁচাতে বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ত্যাগী ও মূলধারার আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব রেখে বলেন, এই সংসদে সেদিন বঙ্গবন্ধুর সরকারের বিরোধিতাকারীদের জন্য দুঃখ প্রকাশসহ যারা মুজিব হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হোক। সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, এই সরকারের মধ্যে সুবিধাভোগী রাজনীতিবিদ, অসৎ আমলা ও দানবীয় পুঁজিপতি রয়েছেন। তারাই সরকার নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরকার এবং দলে ’৭৫-পরবর্তী ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতাদের বঞ্চিত করে একটি কচিকাঁচার আসর বানানো হয়েছে
বিষয়: বিবিধ
১১৫৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন