এই মিথ্যাবাদী মিসবাহুর সাপওয়ালা মিছবাহুর রহমান নামেও পরিচিত !

লিখেছেন লিখেছেন মুন্নাহ চৌঃ ০৫ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৬:০২:৩৮ সন্ধ্যা



''যিনি জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও ব্যারিস্টার আবদূর রাজ্জাকের নামে মিথ্যা অভিযোগ ও অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন, আসুন জেনে নেই সেই মিথ্যাবাদী মিসবাহুর রহমান চৌধুরী সম্পর্কে''



কে এই সাপওয়ালা মিছবাহুর রহমান??! (জনকণ্ঠ রিপোর্ট)

কে এই সাপওয়ালা মিছবাহুর রহমান ! (জনকণ্ঠ রিপোর্ট)

______________________

ইয়ং মুসলিম সোসাইটি বাংলাদেশ -এর সভাপতি আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর গ্রেফতারের নগরীর হকার ও ছিন্নমুল ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, জিপিও। বায়তুল মোকাররম এলাকায় সে খ্যাত ছিল একজন চাঁদাবাজ ও মাস্তান হিসেবে। ধীরে ধীরে সে তার কালো হাত প্রসারিত করছিল নগরীর অন্যান্য এলাকার হকারদের উপরও।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্প্রতি মিছবাহুর রহমান দ্রুত পরিচিত হয়ে ওঠে। মাস চারেক আগেও সে গুলিস্তান সিনেমা হলের পাশে দাঁড়িয়ে মজমা জমিয়েং টোটকা ওষুধ, তাবিচ-কবচ এসব বিক্রি করতো। মাঝে মধ্যে হাত দেখে মানুষের আতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত বলার ভান করে তাদের কাছ থেকে আদায় করতো মোটা অংকের টাকা। চড়া দামে বিক্রি করতো বিভিন্ন পাথর। নিজের পেশাগত জীবন শুরু করলেও মিছবাহুর রহমান তার বাক পটুতার গুণে খুব দ্রুত এলাইনের একজন শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়। তার ক্যানভাসের ধরণটাও ছিল অন্য দশজনের চেয়ে আলাদা। মাঝ মাঝে একটি প্রাইভেট কারে বসে সে তার আসর জমানো কথাবার্তা বলে পথচারীদের মোহিত করা চেষ্টা চালাতো। ধীরে ধীরে পেশী-শক্তি অর্জনের মাধ্যমে সে পরিণত হয় ক্যানভাসারদের স্ব-ঘোষিত নেতায়। নিজেকে ঘোষণা করে দেশীয় চিকিৎসক ও ক্যানভাসার কল্যাণ সমিতির “আমৃত্যু সুপ্রীম কমান্ড” হিসেবে। এ নিয়ে ক্যানভাসারদের তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু পেশী-শক্তি এবং প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে সে সবাইকে ঠান্ডা করে দেয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর মহলের সাথে মিছবাহুর রহমানের দহরম-মহরম ছিল

এ ধরনের তথ্য সে নিজেই প্রকাশ্য বলে বেড়াত। সামান্য কারণে হকার বা ছিন্নমুল ব্যবসায়ীকে সে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। এমন একাধিক উদাহরণ রয়েছে। প্রশাসনের সাথে তার এ সম্পর্কের কারণেই তার প্রতি হকারদের ভীতিটা তীব্র ছিল বলে জিপিও সামনের একজন হকার জানিয়েছেন।

ক্যানভাসারদের স্বঘোষিত এই নেতার প্রতি সাধারণ ক্যানভাসারদের আনুগত্যের মূল ভিত্তিটা ছিল পেশী-শক্তি এবং ওপর মহলের যাতায়াত। নগরীতে এই বিশেষ একটি শ্রনীর মধ্যে তার প্রভাব এতটাই ছিল যে, প্রতিটি ক্যানভাসার দৈনিক তাকে এক’শ টাকা চাঁদা দিত। বিনিময়ে সে দিত তাদের অবাধে ব্যবসা করার নিরাপত্তা। এভাবে সে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল সাপুড়েদের উপরও। কারণ ইদানিং সাপুড়েদের উপার্জনের প্রধান উপায়ই হচ্ছে ‘সাপুখেলা’ দেখিয়ে ক্যানভাসারদের জন্য মানুষ জড়া করা। এ রকম প্রতিটি মজমা জমানো বাবদ তাদের আয় ৫০ টাকা। সাপুড়েদের ওপর এই কর্তৃত্বকে পুঁজি করেই গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে প্রেস ক্লাবের সামনে সে সাপ নিয়ে মিছিল করেছিল। এজন্য অবশ্য প্রতিটি সাপুড়েকে ১০০ টাকা করে দেয়া হয়েছিল বলেও একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে।

সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাজনীতিকে পুঁজি করে গত কয়েক মাসে খুব দ্রুত সে একজন আলোচিত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিল। নিজেকে ইয়ং মুসলিম সোসাইটির প্রতিষ্ঠা সভাপতি হিসাবে জাহির করলেও এ নিয়ে অনেকেই ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। সোসাইটির সভাপতির পদটি রীতিমত গায়ের জোরে সে হাইজাক করেছে বলে সমিতির একাধিক নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন। এছাড়াওগত কয়েক মাসের মধ্যেই সে পরিণত হয়েছিল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লী কমিটির সভাপতি। ইসলাম ও রাষ্ট্রদ্রোহী প্রতিরোধ মোর্চার যুগ্ম সচিব এবং সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা। এর মধ্যে প্রথমোক্ত সংগঠনটি ছিল তার পকেট সংগঠন। তার সাঙ্গ-পাঙ্গ আর বংশদরাই ছিল মূলত এর নেতৃবৃন্দ। এ সংগঠনের এক সভায় “মন্ত্রীদের বায়তুল মোকাররমে ঢুকতে দেয়া হবে না” হুমকি দিয়েসে সকল মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল।

সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের অনেক নেতাই তাদের সাথে মিছবাহুর রহমানের অবস্থানে বিব্রতবোধ করতেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে ইয়ং মুসলিম সোসাইটি ও মুসল্লী কমিটি গঠনের মাধ্যমে বায়তুল মোকাররম ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মধ্যে প্রবেশ করাই ছিল তার মুখ্য উদ্দেশ্য। এভাবে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের দোকান বরাদ্দ ও ভাড়া আদায়ের খবরদারীর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও ক্ষমতা ভোগের লক্ষ্য নিয়েই সে এগিয়ে যাচ্ছিল। ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্মিত দোকান পাটের বরাদ্দ হকারদের পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে ইতোমধ্যেই হাজী-সাহেব মোটা অংকের টাকা কামিয়ে নিয়েছিল। ইসলামিক আন্দোলনের লেবাস ও ব্যানারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়াই ছিল তার মুখ্য উদ্দেশ্য। আসলে ইসলামী আন্দোলন কিছু নয়।

মুসল্লী কমিটির এক জনসভায় তার এ আকাংখার বিষয়টি প্রকাশিতও হয়েছিল।

সে বলেছিল, প্রয়োজনে সরকারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করে মসজিদ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বায়তুল মোকাররমকে পরিচালনা করা হবে।

মিরাতুন্নবী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে গোলযোগের কারণে গত সোমবার তাকে গ্রেফতার করা হলেও তার বিরুদ্ধে আরো অনেক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। হোটেল ওসমানী তেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হোটেলটিতে দীর্ঘদিন ধরে সে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ফয়সাল লিঃ নামে সেখানে সে একটি আদম বেপারীর প্রতিষ্ঠানখুলে বসেছিল। তার ছত্রচায়ায় এ হোটেলটিতেই তার এক সহকর্মী “আধ্যাধিক উপায়ে জাগতিক সমাধানের” দাবি করে অপর একটিপ ্রতারণা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছিল। প্রতি রাতে এখানে তারা অসামাজিক কাজের আসর বসাতো বলেও অভিযোড় রয়েছে।

হোটেল কর্মচারীরা ভয়ে কিছু বলতে পারতো না। মিছবাহুর রহমানের ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়েও নানা ধরনের কতা শোনা যায়। হজ্ব পালন করে এলেও তার ৪২ থেকে ৪৫ বছরের জীবনে সে কমপক্ষে দশটি বিয়ে করেছে বলে জানা গেছে। আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রিন্সেস ৫৫৫ রত্না নামের এক যাত্রার মক্ষিরাণীকেও সে বিয়ে করেছিল। প্রিন্সেস রত্না মাত্র কয়েক মাস তার ঘর করে। হাজী সাহেবের বাকী স্ত্রীদের পরিচয় জানা যায়নি। অনেকেই নাকি হাজী সাহেবের অত্যাচারে এখনও দুবিসহ জীবন যাপন করছেন। এহেন স্বঘোষিত ‘ইসলামী চিন্তাবিদের’ গ্রেফতারের সংবাদে নগরীর অধিকাংশ হকারই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। অস্বস্তি মুক্ত হয়েছেন সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের একাধিক নেতা।

সূত্র : দৈনিক জনকণ্ঠ

২৪/৮/১৯৯৪

পৃষ্ঠা-১, কলাম-৬

''ব্যারিস্টার আবদূর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কে এক সাক্ষাৎকারে বলেন......

শেষ প্রশ্ন: মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী মিসবাহুর রহমান চৌধুরী আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পরপরই আপনাকে অন্য যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখেছেন। এরপর আপনি আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেছেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ১৯৭১ সালে আপনি কোথায় ছিলেন এবং আপনি বলেছিলেন, ‘আমি এই প্রশ্নের উত্তর দেব না’। আপনি আমাকে বলেছিলেন, ‘যেহেতু লোকজন আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছে, তারাই বলুক আমি কোথায় ছিলাম।’ আজও কি আপনি একই উত্তর দেবেন?

রাজ্জাক: মিসবাহুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, তিনি আমাকে লন্ডনের ৫৭ প্লাস্টো নামের কোনো এক জায়গায় দেখেছিলেন। এখন গুগলের যুগ এবং ৫৭ প্লাস্টো নামের কোনো জায়গা বাস্তবে আছে কি না তা যে কেউ দেখতে পারে।

একাত্তরের কাদা আমাকে স্পর্শ করেনি। একাত্তরে আমার অবস্থান নিয়ে কিছু যাবে আসবে না, আমি যেখানেই থাকি না কেন। তদন্ত সংস্থা ওই স্থানকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তৈরি করবে। একটা অলীক কাহিনী তৈরি করবে। আমি যদি বলি, আমি বাংলাদেশে ছিলাম তাহলে এই উত্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তারা অভিযোগ সাজাবে। আর আমি যদি বলি, আমি লন্ডনে ছিলাম, তাহলে লন্ডনকে ঘিরে তারা একটি ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করবে। ''

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/টিএ/বিডি/জেকে/১৭১২ ঘ.

http://bdnews24.com/bangla/details.php?cid=3&id=215517&hb=top

পাঠক এখন আপনারাই আবিস্কার করতে পারলেন কত বড় জানোয়ার মিথ্যাবাদী বাদী এই মিসবাহুর রহমান।

বিষয়: বিবিধ

২৬১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File