This is Awami League!!

লিখেছেন লিখেছেন তহুরা ০৯ জানুয়ারি, ২০১৩, ১২:৪৫:৩৪ রাত



আওয়ামলীগের রাজনীতি হলো- কেবল ক্ষমতায় যাবার রাজনীতি। কি মুজিব, কি তার কন্যা, একই রূপ। আওয়ামীলীগের পূর্নজন্মের পর থেকেই এটা চলছে। সে জন্য চলে কখনো সাপের গালে চুমা, কখনো ব্যাঙের গালে। সেখানে ভুট্টো, জামায়াত, ইন্ডিয়া, এরশাদ যে কারো সাথে মিতালী করতে তাদের দোষ নাই। দরকার হলে গুন্ডা দিয়ে ভাসানীর মিটিং ভাঙ্গা পর্যন্ত তার জন্য জায়েজ!

সত্তরের নির্বাচনের পরে পাকিস্তানের ক্ষমতায় বসার চেষ্টায় মুজিব সর্বপ্রকারের চেষ্টাই করেছেন। ইয়াহিয়া ভুট্টোর সাথে আলোচনা, ৭ মার্চের হুমকিসহ সবকিছু। এরপরে ২৫ মার্চে গনহত্যা হবে জেনেও ইয়াহিয়ার কথামত ধরা দিয়েছিলেন। ভাবনা ছিলো, জেল থেকে বের হয়ে বা পিন্ডিতে আলোচনা করে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিস্কার হবে। উনি কখনোই পাকিস্তান ভেঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশ করার পক্ষে ছিলেন না। মার্চের ১ তারিখে, ৩ তারিখে ছাত্র জনতাকে স্বাধীনতার দাবী ফিরিয়ে দিয়েছেন। ২৫ তারিখ রাতে স্বাধীনতা ঘোষনার জন্য তাজউদ্দিন টেপরেকর্ড নিয়ে গেলেও ফিরিয়ে দেন তাকে। পিন্ডির জেলখানায় ইয়াহিয়া তাকে বিচারের উদ্যোগ নিলে তিনি আদালতে নিশ্চিত করে বলেছিলেন, তিনি পাকিস্তান ভাগ করেন নি। এটা তার আইনজীবি এম এম ব্রোহির বক্তব্য। ইন্দিরা গান্ধী তো ৬ নভেম্বর ১৯৭১ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিস্কার করে বলেছেন, "এখন পর্যন্ত মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা চান নি।"

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও তিনি ভুট্টোর সাথে বৃহত্তর ”পাকিস্তান কনফেডারেশন’ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ভুট্টো এবং মুজিব রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিলো বেশ মজার। সেজন্যই ১৯৭৪ সালেও ভুট্টোর সাথে গলাগলি করতে মুজিবের দ্বিধা হয়নি।

অন্যদিকে, স্বাধীন দেশে বিভক্তি না বাড়িয়ে পক্ষে বিপক্ষে সবাইকে সাধারন ক্ষমা করে দিয়ে জাতীয় ঐক্য আনতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মুজিব। তবে যারা হত্যা, ধর্ষন, অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত ছিল, তাদের বিচারের কথা আছে, কিছু মুক্তিযোদ্ধারাও এ বিচারের আওতায় আসবে। এ বিচারটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক, সেটা আমারও চাওয়া। যুদ্ধাপরাধ নিয়ে নতুন করে আর কোনো বিচার সম্ভব নয়, সে জন্যই আদালতের নাম যুদ্ধাপরাধ আদালত নয় - আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। যুদ্ধাপরাধের বিষয় মুজিবের সাধারন ক্ষমার মাধ্যমে শেষ হয়ে গেছে। এখন নতুন করে আবার রাজাকারদের বিচার করতে চাইলে প্রথমে করতে হবে রাজাকারের নিয়োগকর্তা (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) মখা আলমগীর, (আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ) আশিকুর রহমান, (সাবেক সিইসি) শামসুল হুদাদের। এরা সবাই ইয়াহিয়া সরকারের ডিসি এডিসি হিসাবে রাজাকার আলবদর নিয়োগকর্তা ছিলেন।

খান এ সবুর, শাহ আজিজের মত চরম স্বাধীনতা বিরোধীদের মুজিব জেল থেকে ছেড়েছেন নিজ দায়িত্বে। এটা তার উদারতা এবং জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ। খেলায় যেমন দু’টো পক্ষ থাকে। হেরে যাওয়া দলকে যেমন নিঃশেষ করে দেয়া হয় না, তেমনি স্বাধীনতার বিপক্ষে যারা ছিলেন, সেটা তাদেরও রাজনৈতিক অবস্থান বা বোঝার ভুল।তাছাড়া ৭১ সালের শেষের দিকেও এদেশের অনেকেই বিশ্বাস করতেন না দেশ স্বাধীন হবে। তারা কিন্তু রাজাকার নয়, এদেশের সাধারন মানুষ। এমনকি ১৪ ডিসেম্বর যে সব বুদ্ধিজীবি নিহত হয়েছেন, তাদের অনেকেই পাক সরকারের অধীনে কাজ কর্ম করেছেন, শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ মিয়াও ছিলেন। যুদ্ধের সময় এরা কেউ ঢাকা ছাড়ে নি। তারা জানতেন না, আদৌ দেশ স্বাধীন হবে কিনা। এটা তাদের অপরাধ নয়। ৩ ডিসেম্বর থেকে পূর্ব পশ্চিম দু্’ফ্রন্টে ভারতের সর্বাত্মক যুদ্ধে পাকিস্তান হেরে যায়, ফলে বাংলাদেশ হয় হানাদার মুক্ত, তাতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ব্যাপক। যুদ্ধোত্তর দেশে সকল গ্রুপকে একত্র করে মুজিব দেশ পূর্নগঠনের চেষ্টা করেছিলেন, সেটা সাধারন ক্ষমা ঘোষনার আগে ২৯ নভেম্বর ১৯৭১ মুজিব বলে গেছেন। স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজকে নিয়ে মুজিব ওআইসি গিয়েছিলেন, সেটাও ছিলো এক বড় কূটনীতি। পাকিস্তান থেকে যুদ্ধফেরত সেনাদের এবং পাক বাহিনীকে সাহয়তা করেছে এমন সিভিল অফিসারদের উচ্চ পদে বসিয়েছিলেন ‍তিনি। সবই কঠিন বাস্তব।

মুজিবের মত তার কন্যাও ক্ষমতার রাজনীতি নিয়েই আছেন। সে কারনে এরশাদের সাথে ইলেকশনে গিয়ে জাতীয় বেইমান খেতাব নিতেও তার দ্বিধা হয়নি। এমনকি গোলাম আযমের বাংলাদেশ নাগরিকত্ব, সেটাও আওয়ামীলীগের অবদান। ইনারাই আদালতে গিয়ে সেটা হাসিল করে দিয়েছিলেন। মোট কথা, যখন দরকার গোলাম আযমের পায়ে পরেছেন, নিজামীর সাথে মিটিং করেছেন, তখন উনাদের গায়ে যুদ্ধাপরাধীর গন্ধ ছিলো না। প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে বা ভিন্ন জোটে গেলে তাদের গা থেকে যুদ্ধাপরাধের গন্দ পাওয়া শুরু করলেন শেখ কন্যা। শুরু হলো বিচার আর জেলে পোড়ার পালা- এটাই হাসিনার নীতি। হিন্দুদের ভোট পকেটে ভরবেন, আবার চাপাতির কোপে বিশ্বজিৎ হত্যা করে বলবেন- উহা শিবির। অর্থাৎ, এখানে কোনো নৈতিকতা নেই। জনসমর্থন হারিয়ে সামনে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যখন ভারতীয় সহায়তা দরকার ১০০%, সেটা নিশ্চিত করতেই এখন হাসিনার পাকিস্তানে না যাওয়া, আর যখন তখন অন্যকে পাকিস্তানের দালাল রাজাকার ইত্যাদি আখ্যা দেয়া চলছে। নিজের দলের রাজাকার এবং মেয়ের শ্বশুর কিন্তু এসবের আওতার বাইরে থাকবেন সর্বদা। কারণ তারা বতিক্রম! সোজা কথা হলো, রাজনৈতিক প্রয়োজনে আ’লীগ নিজেদের দাবী করবে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ যদিও এদের বেশীরভাগই শরনার্থী শিবিরের বাইরে যাননি, কেউ আবার বাইজিখানায় গিয়ে মৌজ মাস্তিতে ব্যস্ত ছিলো; অন্যদিকে বিরোধী দলের লোকজন স্বাধীনতার বীর যোদ্ধা হলেও তাকে বানাবেন ”রাজাকার”, যেনো মুক্তিযুদ্ধটা উনাদের পৈত্রিক প্রোপার্টি যেভাবে ইচ্ছা মেশিন থেকে বের করে আনবেন মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার খেতাব!

এটাই আওয়ামী লীগ! আমি অবাক হই না।















[img]http://www.bdtomorrow.net/blog/bloggeruploadedimage/tohora/1357670552.jpg[/img

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File