একনজরে কুরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবন

লিখেছেন লিখেছেন তহুরা ১৮ এপ্রিল, ২০১৪, ০৪:৪৭:৫০ রাত



১. জন্মঃ ১৯৪০ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলার সাইদখালী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।

পিতার নামঃ ইউসুফ সাঈদী যিনি একজন স্বনাধন্য ইসলামী পণ্ডিত বা আলেম ছিলেন।

মায়ের নামঃ গুলনাহার বেগম

আল্লামা সাইদীর সন্তানঃ চার ছেলে- মরহুম রফিক সাইদী, শামীম সাইদী, মাসুদ সাইদী এবং নাসিম সাইদী।

২. শিক্ষাজীবনঃ পিতার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন। পরে তিনি খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় কিছুদিন এবং পরে ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করেন। কামিল পাশ করার পর বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, দর্শন , বিজ্ঞান , রাজনীতি, অর্থনীতি,পররাষ্ট্রনীতি, মনোবিজ্ঞান ও বিভিন্ন তত্তের উপর দীর্ঘ ৫ বছর অধ্যায়ন করেন ।

৩. দায়ী ঈলাল্লাহঃ ১৯৬৭ সাল থেকে তিনি নিজেকে "দায়ি ইলাল্লাহ" হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন । মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী পৃথিবীর অর্ধশতেরও বেশি দেশে আমন্ত্রিত হয়ে ইসলামের সু-মহান আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। দেশে তাঁর ৫০ বছরের ইসলাম প্রচারের নমুনা দেখুন সংক্ষেপে---

ক. চট্টগ্রাম প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে প্রতি বছর ৫ দিন করে টানা ২৯ বছর। পবিত্র কাবা শরীফের সম্মানিত ইমাম এ মাহফিলে দু’বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

খ. খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দান সহ শহরের বিভিন্ন মাঠে প্রতি বছর ২ দিন করে ৩৮ বছর

গ. সিলেট সরকারী আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে টানা ৩৩ বছর

ঘ. রাজশাহী সরকারী মাদ্রাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে এক টানা ৩৫ বছর

ঙ. বগুড়া শহরে প্রতি বছর ২ দিন করে একটানা ২৫ বছর

চ. ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে ময়দান ও পল্টন ময়দানে প্রতি বছর ৩ দিন করে একটানা ৩৪ বছর

৪. রাজনৈতিক জীবনঃ ১৯৭৯ সালে জামায়াতের সাধারণ সমর্থক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৯ সালে জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

৫. আন্তর্জাতিক অঙ্গনেঃ

ক. ১৯৭৬ সাল থেকে সৌদি আমন্ত্রনে রাজকীয় মেহমান হিসেবে তিনি হজ্জব্রত পালন করে আসছেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর রমজান মাস মক্কামদীনায় থাকা রুটিন হয়ে গিয়েছিল তাঁর।

খ. ১৯৮২ সালে ইমাম খমিনির আমন্ত্রনে ইরানের প্রথম বিপ্লব বার্ষিকী উজ্জাপন উপলক্ষে তিনি তেহরান সফর করেন । ১৯৯১ সালে সৌদি বাদশার আমন্ত্রনে কুয়েত - ইরাক যুদ্ধের মিমাংসা বৈঠকে তিনি যোগদান করেন । ১৯৯১ সালে ইসলামী সারকেল অফ নর্থ অ্যামেরিকা তাকে "আল্লামা" খেতাবে ভূষিত করেন ।

গ. ১৯৯৩ সালে নিউইয়ার্কে জাতিসঙ্ঘের সামনে অ্যামেরিকান মুসলিম ডে প্যারেড সম্মেলনে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদিকে "গ্র্যান্ড মার্শাল "পদক দেয়া হয় । দুবাই সরকারের আমন্ত্রনে ২০০০ সালের ৮ই ডিসেম্বর আরব আমিরাতে ৫০,০০০ হাজারেরও বেশি শ্রোতার সামনে তিনি কোরআনের তাফসির পেশ করেন ।

ঘ. লন্ডন মুসলিম সেন্টারের উদ্ভধনি অনুষ্ঠানে কাবা শরিফের সম্মানিত ইমাম "শায়েখ আব্দুর রাহমান আস সুদাইসির" সাথে মাওলানা সাঈদিও আমন্ত্রিত হন ।

৬. মাওলানা সাঈদীর হাতে হাত রেখে ছয় শতাধিক অমুসলিম ইসলামের সুমহান আদর্শে দিক্ষিত হন ।

আসুন আমরা সবাই কুরআনের পাখির জন্য দোয়া করি প্রাণ উজার করে। হে আল্লাহ! তুমি কুরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে দ্রুত মুক্তভাবে কুরআনের দাওয়াতী কাজে মশগুল থাকার ব্যবস্থা করে দাও

বিষয়: বিবিধ

৩৪৪১ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

209332
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৫:১২
তহুরা লিখেছেন : আল্লামা সাঈদীর অপরাধ একটাই তিনি ইসলামের সৈনিক।১৯৯৬ সালে কোন এক অনুষ্ঠানে আল্লামা সাঈদী কে এক মহিলা একটা প্রশ্ন করেছিলেন আমি সেটা তুলে ধরছি আপনাদের সামেন
_________________________
প্রশ্ন= আপনি অন্য ইসলামীক দল বাদ দিয়ে জামায়াতে ইসলামী কেন করেন?
আল্লামা সাঈদীর উত্তর= আমি যখন ছাত্র ছিলাম তখন সংগঠন করি নাই এবং যখন আমার কাছে স্পষ্ট হয়েছে আল্লাহ বলেছেন "দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা কর।খবরদার! এ ব্যাপারে মতবিরোধ কর না!" তখন আমি দেখলাম দ্বীন প্রতিষ্ঠা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়।দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কোন সংগঠন তৈরি করতে হবে আর না হয় কোন সংগঠন থাকলে সেটার সাথে শরীক হতে হবে।তখন আমি খুঁজতে লাগলাম যে,আল্লাহ যেহেতু আমার উপর ফরজ করেছেন দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বীনি আন্দোলনে শরীক হওয়া।আর দ্বীন প্রতিষ্ঠা হলে সুদ,ঘুষ,মদ,জুয়া জ্বিনা,ব্যভিচার, ছিনতাই, হাইজ্যাক,পরের হক নষ্ট করা এগুলো থাকবে না।তাই এরকম একটি সংগঠন খুঁজতে আরম্ভ করিলাম,যাদের সাথে আমি যুক্ত হব।তখন ইসলামী আন্দোলন করে এরকম অনেক কেই পেলাম।
তাদের মধ্য আমার দৃষ্টিতে দল বলতে যা বুঝায়,যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য যোগ্য একটি আধুনিক বিশ্বে একটি ষ্টেট পরিচালনা করতে পারে এরকম দল খুঁজতে খুঁজতে আমার কাছে এটাই প্রতিয়মান হল যে জামায়াতে ইসলামী সেই দল যারা বাংলাদেশ হাতে পেলে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারবে।আধুনিক বিশ্বে তাদের পক্ষেই সম্ভব দেশ পরিচালনা করা।কারণ সারা দেশে রাজধানী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত তাফের কর্মীবাহিনী ছড়িয়ে আছে।তারা কাজ করেছে পুরুষের মাঝে,ছাত্র-ছাত্রীরদের মাঝে,শ্রমিকের মাঝে,চাষীদের মাঝে,অমুসলিমদের মাঝে,ইঞ্জিনিয়ারদের মাঝে,ডাক্তারদের মাঝে,ব্যারিস্টারদের মাঝে,সেনাবাহিনীত মাঝে,পুলিশের মাঝে,নৌবাহিনীত মাঝে,আনসার,বিডিআর আর বইপত্রের রয়েছে বিরাট সম্ভার।
পত্র-পত্রিকা রয়েছে,ইসলামী সাহিত্য করআন-হাদিস,তাফসীর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে। ইংরেজি পত্রিকা দৈনিক,সাপ্তাহিক,মাসিক,পাক্ষিক,সব পত্রিকা আছে।ইসলামী ষ্টেট চালাবার জন্য যা যা দরকার সব আছে।৬৪ টি জেলার মুসলমান আধুনিক ডিসি বানাবার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন লোক তাদের আছে।৪৬০ টি থানার টি.এন.ও বানানোর যোগ্যতাসম্পন্ন লোক জামায়াতের আছে আছে আলহামদুলিল্লাহ
209338
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৪৭
স্বপন২ লিখেছেন : আমি আপনার সাথে ৪৬০ টি থানার টি.এন.ও বানানোর যোগ্যতাসম্পন্ন লোক জামায়াতের আছে আছে আলহামদুলিল্লাহ
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৪
157988
তহুরা লিখেছেন :
209365
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:৩৬
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : +++++
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
157992
তহুরা লিখেছেন :
209371
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:০৫
জাগ্রত চৌরঙ্গী লিখেছেন : হে আল্লাহ! তুমি কুরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে দ্রুত মুক্তভাবে কুরআনের দাওয়াতী কাজে মশগুল থাকার ব্যবস্থা করে দাও, আমিন
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৬
158002
তহুরা লিখেছেন :
209376
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:২৯
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : অনেক ইনফরমেশন জানাহলো আপনার পোস্টথেকে। অনেক ধন্যবাদ আপ্নাকে। যাজাকিল্লাহু খাইর Rose Rose Praying Praying
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৪
158000
তহুরা লিখেছেন : আজ কিতালের কথা বললেই প্রশ্ন উঠে, সমাজে সবাই তো কালেমা পড়া মুসলমান কার বিরুদ্ধে কিতাল করব ? এ ধরনের সংশয়মূলক কথাবার্তা তুলে ধরে বুঝাতে চান যে, মুনাফিক-মুরতাদ এসব শুধু নাবী-রাসূল (আঃ) গণের যুগে ছিল, এযুগে সবাই কালেমায় বিশ্বাসী পাক্কা মুসলমান, তাই এদের বিরুদ্ধে কিতাল করা জায়েয হবে না। আমাদের সকলেরই জানা আছে যে, কাফেরদের মধ্য হতে ফাসেক, মুনাফিক ও মুরতাদ তৈরী হয় না; বরং কালিমা পড়া মুসলমানদের মধ্য হতেই এসব তৈরী হয়।

অতএব মুসলিম আকীদার মানদন্ডে প্রথমে মুমিন, ফাসিক, মুনাফিক ও মুরতাদ এদের সকলের সঠিক পরিচয় জানা দরকার। নিম্নে সংক্ষেপে এদের পরিচয় তুলে ধরা হলোঃ-
মুমিনঃ- যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর উপর নাজিলকৃত সমুদয় অহী (অহীতে মাতলুঃ কুরআনের প্রতেক আয়াত এবং অহীয়ে গায়েব মাতলুঃ প্রমাণিত প্রতেক সহীহ হাদীস)-কে সত্য জেনে অন্তরে বিশ্বাস করে সেই অনুযায়ী সুন্নতী তারীকায় আমল করে, আর এসবের মৌখিক স্বীকারোক্তি দেয় এবং নিফাক ও ইরতিদাদে লিপ্ত থাকে না,তাকে মুমিন বলে।

ফাসিকঃ ঐ মুসলিমকে ফাসিক বলা হয়, যে কাবিরা গুনাহে লিপ্ত হয় অথবা শরীয়তের সীমা লঙ্ঘন করে এবং যতক্ষণ না সে অনুতপ্ত হয়ে অথবা তওবা করে ইসলামের বিধানের দিকে ফিরে আসে।

মুনাফিকঃ ঐ মুসলিম নামধারীকে মুনাফিক বলা হয়, যে প্রকাশ্যে ইসলামের কাজ করে কিন্তুু গোপন শরীয়তের আদেশ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং নিষেধ কাজের প্রসার ঘটায়। তাদেরকে সশস্ত্র জিহাদের প্রতি আহ্বান করলে টালবাহানা শুরু করে।

মুরতাদঃ যারা ঈমান আনার পর শরীয়ত বিধ্বংসী কাজগুলো প্রকাশ্যে করে বা ইসলামী বিধান ছাড়া অন্য বিধান প্রতিষ্ঠা করে তাদেরকে মুরতাদ বলা হয়। কুরআন-সুন্নাহ বাদ দিয়ে জাহেলী মতবাদ অর্থাৎ সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ইত্যাদি মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য যারা মানুষকে আহ্বান জানায় তারাও মুরতাদ। এযুগে দেখা যাচ্ছে নামধারী অনেক মুসলিমই মুরতাদের দলভুক্ত, এদেরকে মুনাফিক আখ্যা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যায় না, কারণ বর্তমানের মুনাফিকরা শরীয়তের বিধ্বংসী কাজগুলি শুধু গোপনে করে না; বরং তা প্রকাশ্যে করে, অতএব শরীয়ত বিধ্বংসী কাজগুলি প্রকাশ্যে করার কারণে মুনাফিকের পর্যায় অতিক্রম করে তারা মুরতাদে পরিণত হয়েছে।
‘‘হুজাইফা বিন আল ইয়ামান (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, বর্তমানের মুনাফিকরা নবী (সঃ)-এর সময়ের মুনাফিক হতেও জঘন্য, সে সময়ের মুনাফিকরা শরীয়ত বিধ্বংসী তাদের নেফাকী কাজগুলো গোপনে করত, কিন্তু বর্তমানের মুনাফিকরা শরীয়ত বিধ্বংসী তাদের নেফকী কাজগুলো প্রকাশ্যে করছে। এতে ঈমান আনার পর কুফরী করা হচ্ছে’’। – (সহীহ বুখারী)

ঈমান আনার পরে যারা কুফরী করে তারা মুরতাদ। কোন কোন মুরতাদদেরকে তওবা করার সুযোগ দিতে হয়, আবার বিশেষ ক্ষেত্রে তাদেরকে তওবা করার সুযোগ না দিয়ে সরাসরি হত্যা করতে হয়। অতএব কালেমা পড়ার পর মৃত্যু পর্যন্ত সবাই ঈমানের উপর দৃঢ় থাকে না। কেহ তার কর্মকান্ড দ্বারা মুশরিক হয়, কেউ মুনাফিক আবার কেউ মুরতাদ হয়। যারা আল্লাহদ্রোহী কাজকর্মের দরুন মুরতাদে পরিণত হওয়ার পরও নিজেদেরকে মুসলিম ধারণা করে নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি নেক আমল করতে থাকে এমতাবস্থায় তাদের আদায়কৃত এই সকল ইবাদত দুনিয়া ও আখিরাতে কোনই কাজে আসবে না; বরং তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। যেখান থেকে তারা আর কোনদিনই পরিত্রাণ পাবে না।

‘‘তোমাদের মধ্যে যারা দ্বীন থেকে ফিরে যাবে তারা কাফের অবস্থায় মৃতুবরণ করবে। দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হবে। আর তারাই হল দোজখবাসী। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে’’। – (সূরা বাক্বারাহ ২১৭)

এবার মুনাফিক সর্ম্পকে জানা যাক; দেখা যাচ্ছে মুসলিম সমাজে ঈমানদারও মুনাফিক উভয়ই একই সাথে বসবাস করে। মুনাফিকরা ঈমানদারদের সাথে একই কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, রমজান মাসে রোজা রাখে, এমনকি একই সাথে হজ্জও করে। এতে করে তাদের মাঝে কোন পার্থক্য করা যায় না। অতএব কে ঈমানদার এর কে মুনাফিক তা জানার জন্য আল্লাহ্তাআলা যুগে যুগে সশস্ত্র জিহাদের অবতারণা করেন। এতে মুুমিনদের উপরে যে দুঃখ কষ্ট আপতিত হয়, তা আল্লাহতাআলার হুকুমেই হয়ে থাকে । এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্তাআলা বলেনঃ
‘‘আর যে দু’দল সৈন্যের মোকাবেলা হয়েছে, সেদিন তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তা এজন্যই যে, তাতে ঈমানদারকে জানা যায় এবং মুনাফিকদেরকে সনাক্ত করা যায়।’’ (সূরা আল ইমরানঃ ১৬৬,১৬৭)

দ্বীন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে মুসলমানদেরকে যখন সশস্ত্র জিহাদের জন্য আহ্বান করা হয়, তখনই বোঝা যায়, কে ঈমাদার আর কে মুনাফিক। যারা এ ডাকে সারা দিয়ে সশস্ত্র জিহাদে অংশ গ্রহণ করবে তারাই হল ঈমানদার। আর যারা টালবাহানা করবে এবং বিভিন্ন অজুহাতে দেখিয়ে সশস্ত্র জিহাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে তারাই মুনাফিক।
‘‘তাদেরকে বলা হলো, এসো আল্লাহর রাস্তায় সশস্ত্র জিহাদ কর কিংবা শত্র“দেরকে প্রতিহত কর। তারা বলেছিল, আমরা যদি জানতাম যে যুদ্ধ হবে তবে অবশ্যই তোমাদের সাথে থাকতাম। সেদিন তারা ঈমানের তুলনায় কুফরীর অধিক নিকটবর্তী ছিল। তারা মুখে যা বলে তাদের অন্তরে তা নেই। বস্তুুতঃ আল্লাহ্ ভলো ভাবেই জানেন তারা যা কিছু গোপন করে থাকে।’’ – (সূরা আল ইমরানঃ ১৬৭)

‘‘মুনাফিক নর-নারী একে অপরকে শরীয়তের নিষেধ কাজগুলি করার নির্দেশ দেয় ও শরীয়তের আদেশগুলির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং নিজ মুঠো বন্ধ রাখে, তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে। কাজেই তিনিও তাদের ভুলে গেছেন। নিঃসন্দেহে মুনাফিকরাই নাফরমান। আল্লাহ্ ওয়াদা করেছেন মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজখের আগুন। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, সেটাই তাদের জন্য যথেষ্ঠ। আল্লাহ্ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’’ – (সূরা তাওবাঃ ৬৭,৬৮)

‘‘মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং মদীনায় গুজব রটনাকারীরা যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে উত্তেজিত করব। অতঃপর এই শহরে আপনার প্রতিবেশী অল্পই থাকবে। অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে ধরা হবে এব্ং হত্যা করা হবে।’’ – (সূরা আহ্যাবঃ ৬০,৬১)

‘‘আলোচ্য আয়াতে মুনাফিকদের দ্বিবিধ দুষ্কর্ম উল্লেখ করার পর তা থেকে বিরত না হলে এই শাস্তির বর্ণনা করা হয়েছে যে, ওরা যেখানেই থাকবে অভিসম্পাত ও লাঞ্ছনা ওদের সম্পদ হবে এবং যেখানেই পাওয়া যাবে গ্রেফতার করে তাদেরকে হত্যা করা হবে। এটা সাধারণ কাফেরদের শাস্তি নয়। উক্ত আয়াতে তাদেরকে সর্বাবস্তায় বন্দী ও হত্যার আদেশ শোনানো হয়েছে এই কারণে যে, ব্যাপারটি ছিল মুনাফিকদের। তারা নিজেদেরকে মুসলমান বলত। কোন মুসলমান ইসলামের বিধানবলীর প্রকাশ্য বিরোধীতা করলে শরীয়তের পরিভাষায় তাকে মুরতাদ্ বলা হয়। এর সাথে কোন আপোষ নেই। তবে সে তওবা করে মুসলমান হয়ে গেলে ভিন্ন কথা। নতুবা তাকে হত্যা করা হবে। রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর সুস্পষ্ট উক্তি এবং সাহাবায়ে কেরামের কর্ম পরম্পরা দ্বারা এটাই প্রমাণিত।’’ (তাফসীরে মাআরেফুরআন – ১০৯৭ পৃঃ)

আর যারা লোকেদেরকে জাহেলী মতবাদের দিকে আহ্বান করে তারা ‘মুরতাদ ’ যদিও তারা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে। রাসূল (সঃ) বলেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি জাহেলী মতবাদের দিকে লোকেদেরকে আহ্বান জানায় সে জাহান্নামী; যদিও সে রোজা রাখে, নামাজ পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে।’’ – (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)

নাস্তিক, মুরতাদ, মুশরিক, ধর্মহীন, সমাজবাদী, নিরশ্বরবাদী ও জাহেলী মতবাদের দিকে আহ্বানকারী সকল প্রকার কাফেররা এ সমাজে মুসলমান হিসাবে পরিচিত। শথ বুঝানোর পরও আল্লাহর পথ থেকে তারা বিমুখ থাকে; বরং আল্লাহ্ সত্য দ্বীন ধ্বংস করে মুমিনদেরকেও তাদের অনুরুপ কাফের বানাতে চায়। তাদেরকে হত্যার ব্যাপারে আল-কুরআনে সরাসরি নির্দেশ এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

‘‘অতঃপর তোমাদের কি হলো যে, মুনাফিকদের সর্ম্পকে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে ? (একদল বলছে এরা কাফের এদেরকে হত্যা করা যাবে, আরেক দল বলছে এরা মুমিন এদেরকে হত্যা করা যাবে না) অতচ আল্লাহতাআলা তাদেরকে ঘরিয়ে দিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারণে। তোমরা কি তাদেরকে পথ পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আলআহ্ পথভ্রষ্ট করেছেন ? আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না। তারা চায় যে তারা যেমন কাফের তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সবাই সমান হয়ে যাও। অতএব তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করনা, যে পযর্ন্ত তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করনা এবং সাহায্যকারী বানিওনা।’’ – (সূরা নিসাঃ ৮৮,৮৯)

কেউ কালেমা পড়ে থাকলে বা উত্তরাধিকার সূত্রে মুসলিম দাবী করলেই যে তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ করা যাবে না এ কথার কোন দলীল নেই। এ সর্ম্পকে রাসূল (সাঃ) বলেন, যারা কালেমা পড়ার পর ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করে বা এমন কোন কাজ করে ইসলামে যার শাস্তি মৃতু্্য ঘষনা করা হয়েছে, তবে তাকে হত্যা করা হবে।
‘‘আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রাঃ) হতে বণির্তঃ রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন, আমাকে কিতাল যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যতক্ষণ না মানুষ আল্লাহর একত্ববাদ ও মুহাম্মদ (সঃ)-এর রিসালাতের সাক্ষ্য দেয় এবং সালাত প্রতিষ্ঠ করে যাকাত দেয়, এমনটি করলে তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার হাত থেকে নিরাপদ থাকবে না। (এরুপ কোন কাজ না করলে) তাদের হিসাব আল্লাাহর উপর সমর্পিত হবে’’। – ( বুখরী ১ম খন্ড ৮ম হাদীস, মুসলিম ১ম খন্ড ৩৭ পৃঃ)

এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, নামাজ-রোজ ঠিক মত পড়ার পরও ইসলামে হক নষ্ট করার অপরাধে কালেমা পড়া ঐ মুসলমানকে হত্যা করতে হবে। কুরআন ও হাদীসে সঠিক জ্ঞান না থাকার ফলে আমরা সমাজের মুরতাদদেরকেও কালেমা পড়া মুসলমান মনে করি, যা ইসলামী আকীদার মানদন্ডে মোটেও ঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে সৌদি আরবের প্রখ্যাত মুফতী বিশ্বের অন্যতম ফকীহ শায়িখ আব্দুল আজীজ বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ) তাঁর ‘‘আল-আকীদাতুস সহীহা’’ নামক পুস্তিকায় লিখেছেন, একজন মুসলমান তার ইসলাম বিনষ্টকারী কাজের দ্বারা মুরতাদ হতে পারে, যার ফলে তার রক্ত ও সম্পদ অপর মুসলমানের জন্য হালাল হয়ে যায় এবং ইসলাম হতে পুরোপুরি খারিজ হয়ে যায়। এরুপ কাজ অনেক প্রকারের হয়ে থাকে, তন্মধ্যে যে মনে করে-
১। মানব রচিত আইন ও বিধি বিধান ইসলামী আইনের চেয়ে ভাল।
২। ইসলামী আইন এ বিংশ শতাব্দীতে বাস্তবায়ন করার উপযোগী নয়।
৩। ইসলামী বিধান মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কার।
৪। ইসলামী বিধান শুধুমাত্র আল্লাহর সাথে সর্ম্পক গড়ার কাজে সীমাবদ্ধ। জীবনে বাকী কর্মকান্ডে (সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি , রাষ্ট্র পরিচালনা ইত্যাদিতে) এর অনুপ্রবেশ ঠিক নয়।
৫। যাদের ধারণা ঐ যে, চোরের হাত কাটা ও যিনাকারীকে পাথর মেরে হত্যা, এই দুটি ইসলামী আইন বর্তমান যুগে চলতে পারে না, এরা সবাই ইসলাম হতে বহিস্কৃত। অনুরুপ ভাবে যদি কেউ মনে করে যে, মানব রচিত আইন আল্লাহ প্রদত্ত আইনের চেয়ে উত্তম নয় বটে কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষাপটে মানব রচিত সংবিধান দ্বারা ব্যাবসা-বানিজ্য, অর্থনীতি, বিচার ব্যাবস্থা ও রাষ্ট্র চালানো যেতে পারে, তবে সে আল্লাহ্ যা হারাম করেছেন তা হালাল করল । যেমন যিনা, মদপান, সুদ ও ইসলামী বিধান ছাড়া অন্য কোন বিধান দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনাকে হালাল করল বিধায় এরুপ ব্যক্তি কাফের এবং ইসলাম হতে বহিস্কৃত। এ ব্যাপারে মুসলমানগণের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
209394
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৪
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন!
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
157993
তহুরা লিখেছেন :
209396
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৭
ওমর ফারুক ইফতি লিখেছেন : অনেক তথ্য জানতে পারলাম।
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৪০
157995
তহুরা লিখেছেন : সাঈদী সাহেবের আব্বা
209437
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:২৪
খামচি বাবা লিখেছেন : কষ্ট লাগে খুব
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৪১
157996
তহুরা লিখেছেন :
209446
১৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : দাবি একটাই
নিশর্ত মুক্তি চাই।
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
157991
তহুরা লিখেছেন :
১০
209466
১৮ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : আমীন Praying Praying
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৪২
157997
তহুরা লিখেছেন :
১১
209523
১৮ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৫
তহুরা লিখেছেন :

১২
209678
১৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৩৩
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৩:৪৭
158252
তহুরা লিখেছেন :

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File