শীতে বাড়তে পারে ব্রঙ্কাইটিস-আসুন জেনে নিই ব্রঙ্কাইটিস সর্ম্পকে

লিখেছেন লিখেছেন দয়াল বাবা ১০ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৮:৪১:৫৬ সকাল

শীতের মতো শুষ্ক আবহাওয়ায় ব্রঙ্কাইটিসের প্রকোপ বাড়ে। এ রোগে শ্বাসনালির ভেতরের দেয়ালে প্রদাহ হয় এবং বাতাস চলাচলের জায়গা সরু হয়ে তীব্র কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়



ব্রঙ্কাইটিস এক ধরনের প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন। এতে শ্বাসনালির ভেতরের দেয়াল লাল হয়ে ফুলে যায়। ফলে বাতাস চলাচলের জায়গা সরু হয়ে যায়। এতে ফুসফুসে অক্সিজেনসমৃদ্ধ বাতাস কম প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়া প্রদাহের কারণে প্রচুর শ্লেষ্মা তৈরি হয়। এতে শ্বাসনালিতে সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়। প্রদাহ ও সংক্রমণের কারণে তীব্র কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।

ব্রঙ্কাইটিস দুই রকমের

ব্রঙ্কাইটিস দুই রকম হতে পারে। অ্যাকিউট বা স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস এবং ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস। যদি একনাগাড়ে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি বছরে কমপক্ষে তিন মাস ধরে থাকে এবং রোগটি অন্তত পরপর দুই বছর হয়, তখন তাকে দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বলে। যদি রোগটি কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় তবে তা স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস।

সাধারণত ৪০-৪৫ বছর বয়সের পর ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বেশি হয়। তবে জন্মগত কিছু কারণে অল্প বয়সীরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। নারীদের চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে বয়স্করা এ ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

ব্রঙ্কাইটিসের কারণ

সব কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ এ রোগের প্রকোপ বাড়ায় যেমন ধূমপান (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উভয় ধরনের), বাতাসে ধুলাবালির উপস্থিতি ও বায়ুদূষণ, শুষ্ক ও ধূলিযুক্ত আবহাওয়া (আমাদের দেশে শীতকালে এমন অবস্থা থাকে), গাড়ি ও জ্বালানির ধোঁয়া, বারবার ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া, ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব, কর্মস্থলের পরিবেশ (পাট, কার্পেট, তুলা, সোয়েটার ইত্যাদির কারখানা), জন্মগতভাবে শরীরে আলফা ওয়ান অ্যান্টি ট্রিপসিনের ঘাটতি ও শ্বাসনালির অতি সংবেদনশীলতা।

উপসর্গ

এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্তরা নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়। শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের খাঁচা ভেতরের দিকে দেবে যায়। শ্বাসকষ্ট বাড়লে ঠোঁট ও জিহ্বা নীল হয়ে যায়। সকালের দিকে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি থাকে, যা বহুদিন ধরে থাকতে পারে। প্রথম দিকে শ্বাসকষ্ট কম থাকে। ধীরে ধীরে পরিশ্রম করলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। কখনো কখনো কাশির সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো শব্দ হয়। কখনো কখনো রোগীর ওজন কমে যায় বা পা ফুলে যায়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

রোগ নির্ণয়ের জন্য বুকের এক্সের, স্পাইরোমেট্রি, রক্তের টিসি-ডিসি-ইএসআর-হিমোগ্লোবিন ও এইচআরসিটি পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়।

প্রতিকার ও প্রতিরোধ

* ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।

* ধুলাবালি, ধোঁয়া থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

* ব্রঙ্কোডায়ালেটর জাতীয় ওষুধ ইনহেলার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কখনো কখনো স্টেরয়েডও ব্যবহার করতে হতে পারে।

* রোগের তীব্রতা বাড়লে ব্রঙ্কোডায়ালেটর সলুশন দিয়ে নেবুলাইজ করতে হবে।

* শ্বাসকষ্ট বেশি হলে লো ফ্লো অক্সিজেন ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে।

* সংক্রমণ সারাতে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। একেক রোগীর জন্য একেক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।

* কাশি বেশি ঘন হলে বা কাশি বের না হলে মিউকোলাইটিক জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হবে।

* বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা ও প্রতি পাঁচ বছর

অন্তর নিউমোনিয়ার প্রতিষেধক

নেওয়া ভালো।

* সর্দি-কাশি জাতীয় অসুখে আক্রান্ত হলে তা থেকে জটিলতা এড়াতে যথাসময়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

* ব্যবহার্য পরিধেয় কাপড় পরিষ্কার রাখুন।শীতের মতো শুষ্ক আবহাওয়ায় ব্রঙ্কাইটিসের প্রকোপ বাড়ে। এ রোগে শ্বাসনালির ভেতরের দেয়ালে প্রদাহ হয় এবং বাতাস চলাচলের জায়গা সরু হয়ে তীব্র কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়। লিখেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন

ব্রঙ্কাইটিস এক ধরনের প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন। এতে শ্বাসনালির ভেতরের দেয়াল লাল হয়ে ফুলে যায়। ফলে বাতাস চলাচলের জায়গা সরু হয়ে যায়। এতে ফুসফুসে অক্সিজেনসমৃদ্ধ বাতাস কম প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়া প্রদাহের কারণে প্রচুর শ্লেষ্মা তৈরি হয়। এতে শ্বাসনালিতে সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়। প্রদাহ ও সংক্রমণের কারণে তীব্র কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।

ব্রঙ্কাইটিস দুই রকমের

ব্রঙ্কাইটিস দুই রকম হতে পারে। অ্যাকিউট বা স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস এবং ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস। যদি একনাগাড়ে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি বছরে কমপক্ষে তিন মাস ধরে থাকে এবং রোগটি অন্তত পরপর দুই বছর হয়, তখন তাকে দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বলে। যদি রোগটি কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় তবে তা স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস।

সাধারণত ৪০-৪৫ বছর বয়সের পর ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বেশি হয়। তবে জন্মগত কিছু কারণে অল্প বয়সীরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। নারীদের চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। স্বল্পমেয়াদি ব্রঙ্কাইটিস যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে বয়স্করা এ ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

ব্রঙ্কাইটিসের কারণ

সব কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ এ রোগের প্রকোপ বাড়ায় যেমন ধূমপান (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উভয় ধরনের), বাতাসে ধুলাবালির উপস্থিতি ও বায়ুদূষণ, শুষ্ক ও ধূলিযুক্ত আবহাওয়া (আমাদের দেশে শীতকালে এমন অবস্থা থাকে), গাড়ি ও জ্বালানির ধোঁয়া, বারবার ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া, ঘনবসতি ও অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব, কর্মস্থলের পরিবেশ (পাট, কার্পেট, তুলা, সোয়েটার ইত্যাদির কারখানা), জন্মগতভাবে শরীরে আলফা ওয়ান অ্যান্টি ট্রিপসিনের ঘাটতি ও শ্বাসনালির অতি সংবেদনশীলতা।

উপসর্গ

এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্তরা নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন হয়। শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের খাঁচা ভেতরের দিকে দেবে যায়। শ্বাসকষ্ট বাড়লে ঠোঁট ও জিহ্বা নীল হয়ে যায়। সকালের দিকে শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি থাকে, যা বহুদিন ধরে থাকতে পারে। প্রথম দিকে শ্বাসকষ্ট কম থাকে। ধীরে ধীরে পরিশ্রম করলেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। কখনো কখনো কাশির সঙ্গে জ্বরও থাকতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো শব্দ হয়। কখনো কখনো রোগীর ওজন কমে যায় বা পা ফুলে যায়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

রোগ নির্ণয়ের জন্য বুকের এক্সের, স্পাইরোমেট্রি, রক্তের টিসি-ডিসি-ইএসআর-হিমোগ্লোবিন ও এইচআরসিটি পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়।

প্রতিকার ও প্রতিরোধ

* ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।

* ধুলাবালি, ধোঁয়া থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

* ব্রঙ্কোডায়ালেটর জাতীয় ওষুধ ইনহেলার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কখনো কখনো স্টেরয়েডও ব্যবহার করতে হতে পারে।

* রোগের তীব্রতা বাড়লে ব্রঙ্কোডায়ালেটর সলুশন দিয়ে নেবুলাইজ করতে হবে।

* শ্বাসকষ্ট বেশি হলে লো ফ্লো অক্সিজেন ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে।

* সংক্রমণ সারাতে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। একেক রোগীর জন্য একেক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।

* কাশি বেশি ঘন হলে বা কাশি বের না হলে মিউকোলাইটিক জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হবে।

* বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা ও প্রতি পাঁচ বছর

অন্তর নিউমোনিয়ার প্রতিষেধক

নেওয়া ভালো।

* সর্দি-কাশি জাতীয় অসুখে আক্রান্ত হলে তা থেকে জটিলতা এড়াতে যথাসময়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

* ব্যবহার্য পরিধেয় কাপড় পরিষ্কার রাখুন।

বিষয়: বিবিধ

২২০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File