ধর্মকারী সাইটটি কেন খুলে দিল সরকার ।

লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী রণক্লান্ত ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:৫২:৪৬ দুপুর

ব্লগের নামে নাস্তিকতার চর্চা জারি রাখতে সব চেয়ে বেশি সহযোগিতা করছে সরকার। এমন অভিযোগ করে উচ্চআদালতের একজন আইনজীবী নয়া দিগন্তকে বলেন, গত বছরের ২৬ জানুয়ারি একটি রিট পিটিশিন করা হয় উচ্চআদালতে, যার নম্বর ৮৮৬/১২। এরপর ২৯ মার্চ আদালত ইসলামের অবমাননাকারী এ সব ব্লগারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলেও সেটি বরাবরই উপেক্ষিত ছিল, এখনো আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উল্টো শাহবাগ আন্দোলন বানচাল করার জন্য এ সব ব্লগ সাইট জামায়াত-শিবির ক্রিয়েট করেছে বলে সাইবার যোদ্ধা ও শাহবাগের আন্দোলন পরিচালনাকারী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা অভিযোগ করে আসছেন। তারা অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এই আন্দোলন বানচালের জন্য ব্লগারদের নিয়ে এমন মিথ্যাচার করছেন।

এ অভিযোগ আগেই উড়িয়ে দেয়া হয়। ফেসবুকের মজা লস নামে একটি পেজে এ সাইটের সত্যতা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এখন আদালতের রিটের কপি পাওয়ার পর নিশ্চিত যে শাহবাগের আন্দোলনকারীরা সত্য বলেননি। এ সাইট থাবা বাবা ওরফে রাজীব আগেই ক্রিয়েট করেছে। আদালতের কাছে প্রমাণ রয়েছে ধর্মকারী নামে ধর্মকে অবমাননার ব্লগ সাইটটি রাজীব ওরফে থাবা বাবা হত্যার পর বানানো হয়নি। এটি আগে থেকেই ছিল।

২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে দাখিল করা রিট পিটিশনের সাথে ধর্মকারী ওয়েব সাইটে নবী সা:, ইসলাম, আল্লাহ এবং হাদিস শরীফকে অবমাননা করে লেখা ব্লগের শতাধিক পৃষ্ঠার একটি রঙিন প্রিন্ট আউট আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত যাচাইবাছাই করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ সব সাইট বন্ধ করা এবং পুলিশকে অপরাধীদের ধরে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ জারি করে।

তবে সেই নির্দেশ আর পালিত হয়নি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা একটি আন্দোলন শুরু করে। যারা এর ব্যানারে সমবেত হন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনই ধর্মকারীর লেখক। নাস্তিক হিসেবে নিজের পরিচয় দেয়ারাও রয়েছেন সেখানে। যদিও বরাবরই সেখান থেকে বলে আসা হচ্ছে ধর্মের সাথে এই আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তাদের আন্দোলনের একজন উদ্যোক্তা অমি রহমান পিয়াল বৃহস্পতিবারেও তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস আপডেট করেন হাটহাজারীর আল্লামা আহমদ শফিকে পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে। নিহত ব্লগার রাজীবের বাইরে বর্তমানে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন আন্দোলনের সাথে রয়েছে। যে বরাবরই ইসলামকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন ব্লগ লিখেছে। ধর্মকারীতে লিখেন এমন সবাই এ আন্দোলনের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদের মধ্যে ধর্মকারী ব্লগের লেখক নাম বে-হামদ ও বে-নাত, নাসির আবদুল্লাহ, গজব-এ-এলাহি, মহা ম্যাড, হিমালয় গাঙ্গুলী, ধর্মপ্রচার, পর্নোলৌকিক প্রমুখ রয়েছে।

ব্লগার ধর্মপ্রচারক নামে সূরা আল ফালাককে বিকৃত করে গত বছরের ৯ জানুয়ারি লিখেছে, ‘কুলি তুই রাব্বিরে ফেলেক/ মিনি শাড়িটা খুলেক/ অমন শাড়ি দিছে কুন আজব/ এমন শাড়ি নাপছন্দে ফেলেক/ এমন শাড়ি হাসুর মা’রে দেয় আসাদ’।

‘কৃষ্ণ আর মহা উম্মাদের কথোপকথন’ শিরোনামে ধর্মকারীর এক ব্লগে লেখা হয়েছেÑ‘ স্বর্গের উদ্যানে কৃষ্ণ বিমর্ষ হয়ে বাঁশি বাজাচ্ছে যাতে ইন্দ্রের অপ্সরারা আর মহা উম্মাদের হুরেরা তার কাছেই ঘুর ঘুর করে। এমন সময় এক (ভদ্র না অভদ্র কিছু একটা হবে) তার পাশে এসে বসে। তখন কৃষ্ণ বলে ওঠেÑ ‘আমি কৃষ্ণ, আপনি?’ মহা উম্মাদ বলে, ‘আমি মোহাম্মদ’। কৃষ্ণ বলে ওঠেÑ‘ পৃথিবীতে কী করতে? মহা উম্মাদ বলে, ‘আমি শেষ নবী’ কৃষ্ণ : মানে? মহা উম্মাদ: নতুন ধর্ম তৈরী করে শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করে গেছি নিজেকে। আর আপনি কি করতেন? কৃষ্ণ: আমি তো অবতার। মানে আমি সৃষ্টিকর্তার মানুষরূপ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছিলাম। মহা উম্মাদ: খাইছে!!! আমার মতোই।’ এভাবে ব্লগার তার গল্প চালিয়ে যায়।

এ রকম কুৎসিত ও নোংরা ভাষায় আক্রমণকে মেনে নিতে পারেন না কোনো মুসলমান, এমনটা উল্লেখ করে একজন ব্লগার গতরাতে বলেন, আমি নিজেও ব্লগ লিখি। তবে সেটি মূলত সামাজিক সমস্যা ও রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে। কিন্তু এ রকম নোংরা আবর্জনা ও কুৎসিত বিষয় যে লেখার মধ্যে আসতে পারে আমি সেটি চিন্তাও করতে পারি না।

তার মতে, ব্লগ সরকারের নজরদারিতে নিয়ে আসা উচিত। তিনি বলেন, সরকারের প্রধান ব্যক্তিকে আক্রমণ করলে সাথে সাথে মামলা হয়, কিন্তু মুসলমানদের নবী সা:, আল্লাহ এবং কুরআন শরীফকে আক্রমণের পরও সরকার যথারীতি এ সব মেনে নিচ্ছে। একটি মুসলিম রাষ্ট্রে মুসলমান নাম নিয়ে এমন নাস্তিক্যবাদের চর্চা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। রাজীব হত্যার পর ধর্মকারী আলোচনায় আসলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি সাইটটি বন্ধ করে দেয়। বন্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে এটি আবার খুলে দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ, কম্পিউটার থেকে এখন এটি দেখা যাচ্ছে।

http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=125596

বিষয়: বিবিধ

৩১৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File