ব্লগ ও ফেসবুকে হজ নিয়ে কটাক্ষ!

লিখেছেন লিখেছেন বিদ্রোহী রণক্লান্ত ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০২:৩০:৪৫ রাত











ডিজিটাল দিনলিপিকে মূলত ব্লগ হিসেবে চেনে এ দেশের মানুষ। কিন্তু এই দিনলিপি লিখতে লিখতে যে এক ভয়ঙ্কর নাস্তিকচক্র গড়ে উঠেছে তা অনেকেরই অজানা। থাবা বাবা ওরফে রাজীব খুনের পর বিষয়টি সামনে আসে। রাজীবের বিভিন্ন ব্লগ ও ফেসবুকে অনেকের মন্তব্যও কুৎসিত এবং বিকৃত রুচির।

ইসলাম ধর্ম, নবী মোহাম্মদ সা: এবং ইসলামের রীতিনীতির বাইরেও মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালাকে নিয়ে কুৎসা রটিয়ে ব্লগে বিভিন্ন রকমের লেখা ছড়ানো হয়েছে। সরকারের তরফে রাজনৈতিক বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া হলেও ধর্মীয় বিষয়গুলো একেবারেই মনিটরিংয়ের বাইরে ছিল জানিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এক কর্মকর্তা বলেন, এমন সব ব্লগের সন্ধান মিলছে যা আমরা চিন্তাও করিনি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলাম নিয়ে এ রকম কোনো ব্লগ বা ফেসবুক বার্তা বা নোট কেউ লিখতে পারেন এমনটা ভাবনায়ও আসে না।

আমার ব্লগে থাবা বাবা ‘লাড়ায়া দে…’ নামে একটি ব্লগ লিখেন গত বছরের জুলাই মাসের ১৮ তারিখে। সেখানে থাবা বাবা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আক্রমণ করেন। তার নিরাকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। লাত, উজ্জা ও মানাতকে আল্লাহর কন্যা হিসেবে উল্লেখ করেন। হিমালয়ের চিপায় দেবতাদের এক অনুষ্ঠানের আকারে কাল্পনিক রম্য সাজানো হয়, যেখানে নোংরাভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আক্রমণ করা হয়েছে। একই সাথে নবী মোহাম্মদ সা:কে আক্রমণ করা হয় ওই ব্লগে।

আমার ব্লগটিতে এটি এখনো প্রকাশিত আছে। গতকাল মঙ্গলবার এতে গিয়ে দেখা যায় তার অশালীন এবং ধর্মকে আক্রমণ করা বিভিন্ন ব্লগের পাঠক সংখ্যা কম নয়। তাকে সমর্থন করেও অনেকে লিখেছেন। তাকে সাহস জুগিয়েছেন। থাবা বাবার এসব ব্লগ অনেক দিন ধরে চলে এলেও এ ব্যাপারে ইসলামপন্থীরা একেবারেই অন্ধকারে ছিলেন। থাবার মৃত্যুর পর একটি অনলাইন নিউজে প্রথম থাবা বাবার ফেসবুকের স্ক্রিনশর্ট দেয়ার পর সেখানে ঢুকে অনেকে তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন। সেই থেকে শুরু।

অথচ এর জন্য এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে দায়ী করা হচ্ছে। থাবা বাবা, তার সহযোগীদের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সবাই ওয়াকিবহাল ছিল না। তাদের জানিয়েছেন থাবারই অনুসারীরা। থাবার জন্মদাতা পিতা একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লেখার কারণে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আবার আরেকটি পত্রিকা বলছে, থাবার হত্যাকাণ্ডের মোটিভ জানতে পুলিশ এগোচ্ছে ভিন্ন পথে। তানজিলা নামে তার এক বান্ধবীর সাথে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে আলাপ হচ্ছে।

থাবা কেবল ব্লগে নয়, ফেসবুকে ব্যাপকভিত্তিক সমর্থন পেয়েছে। তার থাবা বাবা অ্যাকাউন্টে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৭টা ৪৯ মিনিটে একটি স্ট্যাটাস আপডেট করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, ‘সবাই তারেক- কোকো আর হাসিনা-খালেদার বিদেশে টাকা পাচারের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় করে ফেলছে… এ দিকে প্রতি বছর সবার চোখের সামনে দিয়ে কয়েক লাখ হাজী যে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা সৌদি আরবে ঢেলে আসছে সেটা কেউ টুঁ-শব্দটা করে না…!!’

এখানে গ্র্যান্ডফাদার জাস্টিস বলেছেন, ‘হাজীদের টাকাটা তো অবৈধ না…তাই না।’ জবাবে থাবা বলেছেন, ‘টাকা তো চলেই যাচ্ছে তা স্রেফ বিনা কারণে।’ ধৈর্য নেই বলেছেন, ‘সমস্যা নাই, প্রতিবেশী না খাইয়া মরুক আমার ফরজ আমি পালন করুম। পরকালে আমারে বাঁশ দেয়নের সময় কি প্রতিবেশীরা আইবো।’

ক্ষণিকের অতিথি বলেছেন, ‘এন্সাল্লা, এবার আমরা ৪০০ শয়তান আদমের পাপ ধুয়তে সৌদিয়ারব পাঠাচ্ছি। আমাদের কোম্পানির একটা সিস্টার কনসার্ন ৪০০ হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। দাড়িওয়ালা লোক এমনিতেই আমার পছন্দ না। কিন্তু তারা যে কতখানি শয়তান তা এদের না দেখলে বোঝা মুশকিল।’

জাকির বালী লিখেছে, ‘যে টাকা খরচ হয় তা দিয়া ১০০ জন বেশ্যা দেশে বইসা ভোগ করে ও দেশের জন্য উপকার করার মতো টাকা থাকে। তাই আসুন ৭২ এর নেশা বাদ দিয়া ১০০ উপভোগ করি আর গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করি। ’

লুৎফুন নাহার শোভা বলেছে, ‘বুদ্ধি থাকলে থাইল্যান্ড গিয়া রিফ্রেশ হইত। লোভীগুলি পাপ খণ্ডাইতে যায়…ধিক।’

এ রকম তার আরো অনেক সাঙ্গোপাঙ্গ ছিল এবং আছে। যারা আপাতত এ ধরনের লেখা থেকে বিরত আছে। আবার অনেকে এসব লেখা সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

বাংলা ভাষার প্রথম ব্লগ সামহোয়্যারইন-এ ইসলাম, ইসলামের নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.), সাহাবায়ে কেরাম, পবিত্র গ্রন্থ কোরআন, হাদিস এবং মহান আল্লাহতায়ালা সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য অব্যাহতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। ব্লগটিতে একজন ব্লগার মন্তব্য করে—‘আমার ধারণা, আল্লাহ আমার খাটের তলায় বয়া গাঞ্জা টানে’ (নাউজুবিল্লাহ)। আরেকজন ব্লগার মুসলমানদের কটাক্ষ করে বলে, ‘ওই শালাদের মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া দরকার, ওইখানে তারা অমানবিকতার চর্চা করে।’ ছন্নছাড়া ছদ্মনাম দিয়ে একজন ব্লগার নবীজী ও কোরআন শরিফের বিরুদ্ধে লেখে—কোরআন, হাদিস মানবসভ্যতার জন্য বড় রকমের একটা হুমকি। এগুলোর আবিষ্কারক মোহাম্মদ প্রতারণা আর মানুষের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য ইতিহাসে নিকৃষ্ট মানুষরূপে আখ্যা পাবেন (নাউজুবিল্লাহ)। এভাবে আল্লাহ-রাসুল (সা.) ও ইসলাম সম্পর্কে রয়েছে অজস্র কুত্সা।

সামহোয়্যারইন ব্লগটি অনুসন্ধান করে পাওয়া গেছে বিভিন্ন ছদ্মনামে ইসলামবিদ্বেষী পোস্ট ও মন্তব্য করেছে শাহবাগ সমাবেশে ব্লগারচক্রটি। এরা হলো, আসিফ মহিউদ্দিন, আরিফুর রহমান, টেলি সামাদ, রাজসোহান, ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে মুক্তমনা নামধারী বিকৃত মানসিকতার নাস্তিকদের মিলনমেলা বাংলা ভাষার প্রথম ব্লগ । ব্লগের মালিক বাংলাদেশী নাগরিক গুলশান আরা জানা এবং নরওয়ের নাগরিক আরিল। বিভিন্ন সময় ব্লগ কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে somewhereinblog.net-এর ব্লগারের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ (যদিও প্রকৃত ব্লগার সংখ্যা নিয়ে নিয়মিত ব্লগ ব্যবহারকারীদের দ্বিমত আছে। বেশিরভাগ ব্লগারেরই মাল্টি তথা একের অধিক ব্লগ আইডি থাকার কারণে প্রকৃত ব্লগারের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হবে না—এমনটাই ধারণা নিয়মিত

ব্লগারদের)।

বাংলা ভাষার প্রথম পাবলিক ব্লগ হওয়ার কারণে সামহোয়্যারইন ব্লগের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ২০০৯-২০১০ থেকে নাস্তিকরা এই ব্লগে মুসলমানদের ধর্মীয় বিভিন্ন উত্সব ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও হজ নিয়ে অশালীন, অযৌক্তিক, অশ্লীল সব কমেন্ট করতে শুরু করে। আস্তে আস্তে শুরু হয় ইসলাম, আল্লাহ, রাসুল (সা.), বিভিন্ন সাহাবি, নবীকে জড়িয়ে নোংরা আক্রমণ। যার নেতৃত্ব দেয় প্রবাসী নাস্তিক ব্লগার আরিফুর রহমান। যদিও ব্লগারদের বিভিন্ন কমেন্টে আরিফুর রহমানের আসল নাম বলা হয়েছে নিতাই ভট্টাচার্য। একদিকে চলে মুসলিম নাম নিয়ে নোংরামি; অপরদিকে চলে রিভার্স (মুসলিম নিকনেম দিয়ে হিন্দুবিরোধী পোস্ট দিয়ে মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক সাজানোর ঘৃণ্য প্রচেষ্টাকে ব্লগীয় ভাষায় রিভার্স বলা হয়) নোংরামি।

নাস্তিক গুরু হিসেবে খ্যাত আরিফুর রহমানের বিভিন্ন সময়কার কমেন্ট, বিভিন্ন পোস্টে এমন কোনো জঘন্য ভাষা নেই যে ভাষায় ইসলামকে আক্রমণ করা হয়নি। ১৬ অক্টোবর ২০১০ ব্লগার মামুনুর রশিদের অসামাজিক কার্যকলাপ : ‘তুরাগের ৯ নৌকা পুড়িয়েছে মুসল্লিরা’ শিরোনামের পোস্টে নাস্তিক আরিফুর রহমান কমেন্ট করে ‘ওই শালাদের মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়া দরকার... ওখানে তারা অমানবিকতার চর্চা করে’।

সামহোয়্যারইন ব্লগের নীতিমালায় ৩ঞ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘বাংলাদেশ অথবা যে কোনো স্বীকৃত জাতি বা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস, ধর্মবিষয়ক সত্যকে অস্বীকার করে, বিরুদ্ধাচরণ করে, অসম্মান করে অথবা সত্যের অপলাপ বা অর্থহীন পোস্ট মুছে ফেলা যেতে পারে এবং ব্লগারের ব্লগিং সুবিধা সাময়িক অথবা স্থায়ীভাবে স্থগিত কিংবা বাতিল করা যেতে পারে।’ অবাক করার ব্যাপার হলো, সাধারণ ব্লগারদের তীব্র প্রতিবাদের মুখেও এমন জঘন্য কমেন্টের পরও আরিফুর রহমানের ব্লগিং সুবিধা বাতিল কিংবা পুরো ব্লগ বাতিল না করে কমেন্টটি মুছে দিয়েই দায় সেরেছে ব্লগ কর্তৃপক্ষ। আরিফুর রহমান ২৩ আগস্ট ২০১২ পর্যন্ত কমেন্ট করেছে। ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিকৃত মানসিকতার নাস্তিক আরিফুর রহমান তথা নিতাই ভট্টাচার্য ঘনাদা, সুশীল সমাজ, ওঙ্কারসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাল্টি নিকে ইসলাম ধর্মকে আক্রমণ করে আসছে। ব্লগ কর্তৃপক্ষ সব জেনেও নির্বিকার। যতবারই সাধারণ ব্লগার এসবের প্রতিবাদ চেয়েছে, ততবারই ২৪ ঘণ্টা মডারেশন করতে না পারার দোহাই দেয় ব্লগ কর্তৃপক্ষ!

২০১০ সালে টেলিসামাদ ছদ্মনামধারী এক ব্লগার কমেন্ট করেন, ‘আমার ধারণা, আল্লাহ আমার খাটের তলে বয়া গাঞ্জা টানে!’ (নাউজুবিল্লাহ)

এমন জঘন্য কমেন্টের পরও টেলিসামাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ পর্যন্ত বিভিন্ন পোস্টে ইসলামবিদ্বেষী কমেন্ট করে বেড়িয়েছেন টেলিসামাদ। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ব্লগে টেলিসামাদের সব লেখা আছে।

আরিফুর রহমান, টেলিসামাদ, ছন্নছাড়া, রাজসোহান, দূরের পাখি, নারী ব্লগার মেঘসহ আরও বেশকিছু ব্লগার ভয়াবহ কমেন্ট করেছে ব্লগটিতে। এ ব্লগচক্রটি এখন শাহবাগ মাতিয়ে তুলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরকম ১৯ জন ব্লগারের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন। ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ডা. ইমরান ও আসিফ মহিউদ্দিন।

এদের কুকীর্তির কয়েকটি নমুনা : আরিফুর রহমানের পর ব্লগে নাস্তিকতার নামে চরম অসভ্যতামি করে যাচ্ছে ইব্রাহিম খলিল ওরফে সবাক। অন্যদিকে সবাকের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, তার নাম সুমন সওদাগর।

সবাকের বিভিন্ন পোস্ট এবং বেশ কয়েকজন ব্লগারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনৈক শিল্পপতি ব্লগারের বেশকিছু টাকা মেরে দিয়েছে। ব্লগ মালিকপক্ষের আশকারা পেয়ে একের পর এক অশ্লীল কমেন্ট পোস্ট করে যাচ্ছে সবাক। সাধারণ ব্লগাররা সবাকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। উল্টো সবাকের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ জানিয়েছে, তাদের ব্লগিং সুবিধা কেড়ে নেয়ার পাশাপাশি অনেকের ব্লগও বাতিল করেছে ব্লগ কর্তৃপক্ষ। সবাকের ‘ঈশ্বর দর্শন : গাঁজাখোর পর্ব’ শিরোনামের পোস্টটির পরও ব্লগ মালিকদের সঙ্গে ‘সবাক প্রেম’-এ ব্লগে প্রশ্ন উঠেছিল, ব্লগের মালিক গুলশান আরা জানার সঙ্গে সবাকের কী এমন সখ্য যে, আশি ভাগ মুসলমানের দেশেও এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়?

আরিফুর রহমান, সবাকের পাশাপাশি গত দু’বছর ধরে বাংলা ব্লগিংয়ে ননস্টপ ইসলামকে আক্রমণ করে যাচ্ছে আসিফ মহিউদ্দীন। সাধারণ ব্লগারদের তীব্র প্রতিবাদ, অভিযোগের পরও আসিফ মহিউদ্দীনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

অক্টোবর ২০১২-তে আসিফ মহিউদ্দীন গ্রেফতার হওয়ার পর নিজের একটি পোস্টে স্বীকার করেছেন, ডা. জাফর ইকবাল আসিফের বড় বোনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় নিয়ে আলাপ করে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছেন। সস্তা খ্যাতির লোভে আসিফ মহিউদ্দীন ধর্মকে নানাভাবে কটাক্ষ করেই নিজেকে আলোচনায় রাখেননি শুধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করেন। এবং এর কয়েক মাস পর ছুরিকাহত হন।

আসিফ ছুরিকাহত হওয়ার পর জামায়াত-শিবিরের ওপর দোষ চাপিয়ে অনলাইনে প্রচার চালানো হলেও সুস্থ হয়ে আসিফ এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি বললেই চলে। ব্লগের বিভিন্ন কমেন্টে দেখা গেছে, আসিফের ছুরিকাহত হওয়াকে সাধারণ ব্লগাররা ‘নাটক’ হিসেবে দেখছেন। অনেকে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির কারণেই আসিফ ছাত্রলীগ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন এমন মন্তব্যও করেছেন।

উপরের স্ক্রিনশর্ট এবং নাস্তিকদের কার্যকলাপ দেখে পাঠকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে সামহোয়্যারইন ব্লগে কি শুধু এসবই হচ্ছে? না পাঠক, শুধু নাস্তিকতায় না—মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভেকধারী আওয়ামীপন্থী ব্লগাররা ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি, ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ করলেই ‘রাজাকার’ উপাধি দিয়ে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে অত্যন্ত বাজে ভাষায় গালাগালি করে।

মোসাদ্দেক আলী ফালু এবং খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে অত্যন্ত আপত্তিকর পোস্ট করেই ক্লান্ত হয় না ওরা। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মতো বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকেও ‘মাগির পোলা কাদের সিদ্দিকী’ বলে গালি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এসএ মল্লিক নামের একজন ব্লগার প্রতিবাদ করলে এসএ মল্লিকের ব্লগ বাতিল করে দেয়া হয় কয়েক মিনিটের মধ্যে। আসিফ নজরুল, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও আওয়ামীপন্থীদের অশ্লীল আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি। সামহোয়্যারইন ব্লগ যেন ডিজিটাল বাকশালের কুিসত রূপ।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী শাহবাগ আন্দোলনের কথিত অনলাইন নেতা মাহমুদুল হক মুন্সী (বাঁধন) ওরফে রুদ্রপ্রতাপ ওরফে স্বপ্নকথকের আক্রমণের শিকার হয়েছেন স্বয়ং ব্লগ মালিক গুলশান আরা জানা এবং আরিল। মাহমুদুল হক মুন্সীর একটি কমেন্ট মুছে দেয়া হলে অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় গালি দেন।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কাদের ‘লালন-পালন’ করে যাচ্ছে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ? সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে ইসলামকে এমনভাবে আক্রমণের দায় কি এড়াতে পারে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষ? যেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের যৌক্তিক সমালোচনার কারণেও ব্লগ বাতিল করা হয়, সেখানে ধর্ম নিয়ে অশ্লীলতার পরও কীভাবে এরা পার পেয়ে গেছে বিকৃত মানসিকতার নাস্তিক ও আওয়ামী সমর্থিত পাণ্ডারা? কী এজেন্ডা নিয়ে সামহোয়্যারইন ব্লগ পরিচালিত হচ্ছে? শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম ইসলাম অবমাননাকারীদের ‘লালন’ করার সাহস কোথায় পেয়েছে সামহোয়্যারইন ব্লগ মালিক কর্তৃপক্ষ?

সুত্র : নয়া দিগন্ত ও আমারদেশ ।

বিষয়: বিবিধ

২৯১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File