সিলেট বিভাগে হরতাল,জননেতা যুবায়ের এবং মিডিয়া
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২১ মার্চ, ২০১৩, ০৩:৪৪:৩৩ দুপুর
প্রবাসে অবস্থানের কারনে নিয়ম করে টেলিভিশন দেখা হয় না।যে অনুষ্ঠানগুলো ভালো,শিক্ষনীয় এবং নান্দনিক তা দেখতে পারি খুবই কম। নিজের চাকুরীর ব্যস্ততা,পারিবারিক দায়ীত্ব,সামাজিক যোগাযোগ ইত্যাদি মিলে প্রিন্ট মিডিয়া বা স্যটালাইট মিডিয়াতে সময় করে দেখা হয়ে উঠে না। আমার মত প্রায় সব প্রবাসীর একই সমস্যা।
সমস্যা আরেকটি নতুন করে সৃষ্টি করেছে মিডিয়া নিজেই। ইদানিং রাতের বেলায় কয়েকটি ব্যতিক্রম চ্যনেল ছাড়া বাকিগুলো দেখা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। কারন তাতে মানসষিক যাতনার সাথে শারিরীক কষ্টটা ও বেড়ে যায়। এর জন্য দায়ী সাধারণ দর্শক নয়। আমার আশে পাশের অসংখ্য প্রবাসীদের একই অভিযোগ।
মিডিয়াগুলো বর্তমানে দলীয় ক্যডারদের মত ভুমিকা পালন করছে। কিছু মিডিয়া সম্পর্কে এমন ও অভিযোগ আছে যারা পূর্বে হুলূদ সাংবাদিকতার চর্চা করতো। আর এখন ঐ একই মিডিয়াগুলো দলবাজ একচোখ,দলকানা চরম অনৈতিক ভুমিকা পালন করছে। আবার আমাদের সুশীল বান্ধব মিডিয়াগুলো এখন পরিকল্পিত গণহত্যার সহযোগী হয়ে মিডিয়া তান্ডব,ট্রায়াল চালাচ্ছে। একটি সংবাদ মাধ্যম বা গণমাধ্যমের যে চরিত্রের হওয়া উচিত,কাম্য। বর্তমান সময়ে সেটা নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে মিডিয়ার ই বেশী। যে আস্থাহীনতা তৈরী হয়েছে পাঠক আর দর্শকদের মধ্যে এর খেসারত দিতে হবে সংবাদমাধ্যম এবং সংবাদকর্মীদেরকেই।নব্য গজিয়ে উঠা এই সমস্ত দলীয় মাস্তানদের দ্বারা মানুষের মত ও মতামতকে দলন করার কোন উপকার বা সুবিধা তারা কেউই পাবেনা।এই বাস্তবতা বুঝতে যত দেরী করবে আমাদের মূলধারার মিডিয়াগুলো ততই তাদের ই কল্যাণ।
নগদ একটি প্রমান দেয়া যায়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বুধবার সিলেটে বিভাগে হরতালের ডাক দিয়েছিল। সিলেট বলতে বর্তমান সিলেট নয়। প্রাক্তন সিলেট। মৌলভী বাজার,সুনামগন্জ,হবিগন্জ এবং সিলেট।এটা ছিল বিভাগীয় একটি সফল হরতাল। কিন্তু পত্রিকা আর টেলিভিশনের খবরের পরিবেশনা ছিল চাতুর্যপূর্ণ।মনে হচ্ছিল হরতাল হচ্ছে শুধু মাত্র সিলেটে।
এই য়ে আড়াল করার/ব্লাক আউট করার/জামায়াতের শক্তি স্বীকার না করার প্রবণতা, এগুলো কোন সভ্য সমাজের সংবাদপত্র সেবীদের কর্ম হতে পারে না।
ডিজিটাল সরকারের চাপে তা হচ্ছে না অন্য কোন শক্তির নির্দেশে হচ্ছে এগুলোর জাবাব একদিন দিতে হবে।
হরতালের দিন বিশ্বনাথ থানার জামায়াতের সক্রিয় একজন কমী রাব্বানীকে প্রকাশ্যে পুলিশ গুলি করে হত্যা করলো।তাকে যেভাবে গুলি করে হত্যা করলো পুলিশ, সে খবর পরিবেশনায় ছিল আরো ঘৃণ্যতম উপায়ে।ঐসমস্ত পত্রিকা বা টেলিভিশনের খবর পড়ে পাঠক একটা গোলক ধাধায় পড়বে যে জামায়াতের ঐ রাজনৈতিক কর্মী পুলিশের সাথে সহিংসতায় লিপ্ত ছিল।অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের বণনা আর প্রগতি মার্কা সুশীল বান্ধব পত্রিকা টেলিভিশন গুলোতে সম্পর্ণ উল্টো চিত্রই দেখানো হল।
আমাদের অতি উৎসাহী পরিচিত এই সমস্ত মিডিয়ার কাছে মনুষ এবং মনবতার পরিচয় দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে।
এর চেয়ে জঘণ্য মানষিকতা,এর চেয়ে মনবতার অধঃপতন আর কি হতে পারে? মানুষের পরিচয় মানুষ। সে বাংলাদেশের নাগরিক।
গত ৫ ফেব্রুয়ারীর শাহবাগের ভারতীয় দালালদের উৎপাত থেকে চিহিৃত সংবাদ মধ্যম গুলোর ভিতরের চেহারা বেরিয়ে আসে। যে কুৎসিত চেহারা মানবতার বিরুদ্ধে প্রকাশ পেল গণমাধ্যমে, তার জন্য চরম হুমকির মধ্যেই পড়লো তথাকথিত গণমাধ্যম নিজেই।
যাকে কেন্দ্র করে হরতাল ডাকা হলো এবং একজন মানুষকে হত্যা করা হল, ৫০ এর অধিক নেতা কর্মী আহত হলেন,১০০ মত সাধারণ জনগণকে গ্রেফতার করা হল তার কোন বর্ণনা নেই সংবাদে। দুটি টেলিভিশান এবং দুটি পত্রিকা ছাড়া বাকি সবাই একই খবর।
সিন্ডেকেট খবর পরিবেশনার স্বর্ণযুগ চলছে।
এই সংবাদ কর্মীদের কাছে মানুষ,মানবতা,মানুষের সম্মান,মানুষের রাজনৈতিক অধিকার কিছুই বিচার্য বিষয নয়।
এই সবই দলীয় পরিচয় আর উৎকট ভারতীয় বাঙ্গালী চেতনার পদতলে পিষ্ট।
সময় এসেছে আমাদের সবাই ভারতীয় অর্থে পালিত এই সব মিডিয়া এবং ভারতীয় দালালদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করা।বিরোধী দল নামক আজিব বস্তুরা কি পারবে? না তারাও বিক্রিত হবে ভারতের কাছে?
বিষয়: বিবিধ
১৪১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন