সংবাদ মাধ্যম,সংবাদ কর্মী এবং গণমানুষ
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১৯ মার্চ, ২০১৩, ০৪:১৮:৪৯ বিকাল
সংবাদ মাধ্যম বা গণমাধ্যম বলতে মোটা দাগে আমরা কি বুঝি? সহজ কথায় বললে এভাবে বলা যায়,
মানুষের জন্য,মানুষের প্রযোজনে,সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠায়,অধিকাংশ মানুষের মতামতের বিকশিত রুপই আমরা প্রত্যাশা করি সত্যিকার গণমাধ্যমে।এর বিপরীত কিছু হলে সেগুলো আর গণমাধ্যম বলা যায় না।
যে কোন বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা যখন, মিডিয়ার একমাত্র কাজ হয়ে দাড়ায় তখন তা সমাজে বিভক্তি এনে দেয়। এর পরিণতি কারোর জন্য ই ভাল হয় না।
আবার তাবৎ দুনিয়ায় গণমাধ্যমের অলিখিত একটি ঐতিহ্য হল প্রতিষ্ঠিত শক্তির বিরুদ্ধে দুর্বলের পাশে দাড়ানো।এটাই সত্যিকার গণমাধ্যমের কাজ।
কিন্তু বিচিত্র সোনারবাংলায় কি দেখছি গত ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে আজ পর্যন্ত।আমাদের সংবাদ মাধ্যম গুলো কি তার গণমাধ্যমের চরিত্র বজায় রেখেছে?
চারটি টিভি যে ভাবে লাইভ দেখালো তথাকথিত গণজাগরণের চরম উৎপাত। মাইক হাতে নিয়ে যেভাবে সংবাদ কর্মী নামক উঠতি বয়সের দঙ্গল সাংবাদিকরা ধারাভাষ্য বর্ণনা করতেন সেগুলোকে কিভাবে মূল্যায়ন করবো? এগুলোকে গণমাধ্যম বলা যায়?
হিটলার মুসেলীনের সময় ও পত্রিকা ছিল,ছিল সংবাদ মাধ্যম।এই দুই ফ্যাসিষ্টদের পক্ষ নিয়েছিল তখনকার সংবাদ মাধ্যম।আবার সেই সমাজের শেওলাপড়া বুদ্ধিজীবিরা ও এই দুই ফ্যাসিষ্টদেরকে সমর্থন করেছিল।
বিনিময়ে ইতিহাসে ঐসব পত্রিকার সাংবাদিক,সম্পাদক আর পালিত বুদ্ধিজীবিরা সবাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।সমান ভাবে নিন্দিত হয়েছেন - হবেন হিটলার এবং মুসেলীনের সাথে।
যুগলবন্ধি করে বর্তমান ইতিহাস তাদেরকে চর্চা করে তখনকার বংশবদ সংবাদ মাধ্যম,ও সাহিত্যিকদেরকে।
হিটলারের তথ্য মন্ত্রী এখন নির্জলা মিথ্যার সিম্ভলিক হয়ে আছে।
আশা করছি নিকট ভবিষতে গণহত্যার সিম্বলিক হবেন আমাদের রাজাকারখ্যাত ডক্টর আলমগীর সাহেব।
আজকের বাংলাদেশের চেহারা সেই সময়ের চাইতে কি ব্যতিক্রম? দেশের সাধারণ মানুষ যখন ২০১৩ সালের হিটলার,মুসেলীন,হাফিজ আল আসাদ,মোবারকের যোগ্য উত্তরসূরী ফ্যাসিষ্ট ডিজিটাল বাকশালের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। ঠিক তখনই নাগরিক সমাজের নাম করে কিছু হাইব্রিডের বাকশালী জ্ঞানপাপীরা জড়ো হয়েছিলেন গত শনিবার ঢাকায়। মানব জমীন পত্রিকায় দেখলাম যারা আহব্বায়ক তারাই বিশিষ্ট নাগরিকের আসন দখল করে আছেন। আবার তারাই বক্তৃতা করলেন।তারাই দাবী জানালেন। নির্মুল করতে কিভাবে তার উপদেশ খয়রাত করলেন জাতিকে এবং সরকারকে।
আবার ঐদিন রাতে ফ্যাসিষ্ট শাসনের পক্ষে উকালতী করতে বিশিষ্ট! নাগরিকরা বিভিন্ন টিভিতে রাতের সিদেল চুরির আসরের যোগদান করলেন। একই আবেদন, একই সুর, একই তাল, একই লয়, একই ঝংকার। দাবী একটাই নির্মুল করতে হবে।
যে করেই হউক দেশের তৌহিদী জণতার এই গণজাগরণ ঠেকাতে হবে। ডিজিটাল বাকশালী সরকারকে লাইফ সার্পোট দিয়ে হলেও ফ্যসিষ্ট শাসন প্রলম্বিত করতে হবে।
অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম এবং সংবাদ কর্মীরা তাদের পবিত্র পেশা সাংবাদিকতাকে বিতর্কিত করেছেন জেনে বুঝে। নতুবা যারা ফ্যাসিষ্ট শাসনের পক্ষে অবস্থান নেয় তাদেরকে সাংবাদিকতার কোন এথিক্সের মাধ্যমে এত গুরুত্ব দেয়া হয়। যাদের হাতে নিজ দেশের মানুষের রক্তের দাগ জ্বল জ্বল করছে তাদেরকে সত্যিকার গণমাধ্যমে প্রসংসা করতে পারে না।যারা চরম নিন্দিত হওয়ার কথা ছিল মানবতার খাতিরে, যেই দানবদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করা উচিত ছিল, তাদেরকে নামহীন গোত্রহীন প্রতিষ্টান মানবাধিকারের তকমা পরিয়ে দিচ্ছে।যে সরকারের প্রথম ব্যক্তি থেকে শুরু করে পাতি নেতারা পর্যন্ত দেশের সাধারণ মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালানোর জন্য পুলিশ,র্যব,বিজেবিকে নির্দেশ করে সেই জালিম সরকারের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ কারীদেরেকে সত্যিকার গণমাধ্যম পিক করতে পারে না।এটা সভ্য সমাজের গণমাধ্যমের কাজ নয়।
আফ্রিকায় তা হলে হতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত এরকম চরম গণবিরোধী আচরণ পৃথিবীর কোন গণমাধ্যম করে না।সম্ভব ও না, যদি নিজেদেরকে সংবাদ কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতে হয়।
আমার হতাশার জায়গাটা এখানেই।
আগামীর ইতিহাসে এই হাইব্রিডের বুদ্ধিজীবিদের সাথে চিহিৃত সংবাদ মাধ্যমগুলো গণমানুষের দুশমন হিসাবে চিত্রিত হবে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।
গণমাধ্যমের সামান্য কর্মী হিসাবে নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হয়। ভয় লাগে যেভাবে আমাদের দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যম সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়ে এখন ভাড়াটে সন্ত্রাসী সাংবাদিকতা শুরু করেছে তাতে এই জগতের সবাইকে চরম মুল্য দিতে হবে।
এই সুশীল বান্ধব এবং তথাকথিত প্রগতিশীল সংবাদ মাধ্যম গুলো আগে হলুদ সাংবাদিকতা করতো। এখন এরা সম্মিলিতভাবে দেশের মৌলিক বোধবিশ্বাসের বিপরীত দাড়িয়ে অন্যের ভাড়া খাটছে।
বাকশালের জন্মদাতা শেখ মুজিবের আমলে যে মুল্য আমরা সাংবাদিক জগত দিয়েছিলাম। সংবাদ মাধ্যমগুলোর আচরণ এখনো ঠিক না করলে এর চেয়ে চরম মুল্য দিতে হবেই ডিজিটাল বাকশালী শেখ হাসিনার হাতে। তখন কিছুই করার থাকবে না। তাই সময় থাকতে যারা গণদুশমন ফ্যাসিষ্টদেরকে লালন,পালন,তোষণ করছে তারা সাবধান হওয়া প্রয়োজন সাংবাদকর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের পবিত্রতার জন্য।http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/1876/IBNAHMED/7909
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন