নব্য ইয়াজিদদের বানানো আদালতি "কারবালার" সাওয়াল জওয়াব।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০১:৩৩:২১ রাত
এক)
হত্যা করা হল জনাব মীর কাশেম আলীকে। তিনি প্রকৃত ঈমানদারদের কাছে শহীদ বলে বিবেচিত হবেন ইনশাআল্লাহ। ব্যক্তি মীর কাশেম আলী (রঃ) জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা অর্জন করেছেন। একজন মানুষের এর চাইতে বড় সফলতা এবং আনন্দের আর কিছু হয় না। শহীদরা বিশ্বাসী মানুষদের কাছে প্রেরণার বাতিঘর হয়। যারা হত্যাকারী - তারা ইতিহাসে হত্যাকারী হিসাবে ঘৃণা কুড়াতে থাকে। বর্তমান পৃথিবীর কয়জন মুসলমান মিশরের সাবেক জালিম প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসের এর সাথে পরিচয় আছে। অথচ বিপরীতে শহীদ সাঈয়্যেদ কুতুব (রঃ) এর নাম কে না জানে। এই শহীদকে চিনে না এমন মানুষ খুবই কম হবে।
শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা (রঃ) শাহাদাতের পর পৃথিবীর ৭৮টি দেশে গায়েবানা জানাযা হয়েছিল। অথচ এই মোল্লা সাহেব উপমহাদেশে তার পরিচিতি তেমন ছিল না। শহীদদের এটা হল নগদ পাওনা।
শহীদ কে হবেন আর কার স্বাভাবিক মৃত্যু হবে সেই ফায়সালা জমীনে হয় না। বরং তা যার হাতে মানুষের হায়াত ও মওত তিনি এই ফায়সালা করেন। মহান আল্লাহর এই বড় ফায়সালার মধ্যে যেমন ব্যক্তির কল্যাণ হয় তেমন সামষ্ঠিক বড় মঙ্গল হয়। এই ধারাবাহিকতা নতুন নয় বরং তা সেই হাবিল কাবিল থেকে।
দুই)
বিলাতে আওয়ামী রাজনীতিতে উচ্ছকন্ঠ এক ব্যক্তি। মাঝে মধ্যে লেখালেখি ও করেন। তিনি আওয়ামী ভ্যানগার্ডখ্যাত কলামিষ্ট জনাব আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর খুবই ভক্ত। আমার সাথে বেশ সম্পর্ক। কখনো দেখা হয় নাই। তবে সপ্তাহে একবার করে লম্বা মেইল পাই। জামায়াত রাজনীতির প্রচন্ড সমালোচক। আমার সাথে সম্পর্ক শুরুটা হয় ফেবুতে। বিএনপির তারেক সাহেবের নাম শুনলে আমার এই বন্ধুটা সাবান দিয়ে পবিত্র হন। তিনি আবার আল্লামা সাঈদী সাহেবের বেশ ভক্ত।
এই বন্ধুটি গত পরশু একটি লেখা পাঠিয়েছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সুত্র ধরে।
বক্তব্যটি ছিল - ৭৫ এর ১৫ ই আগষ্ট নিয়ে। এই দিনটিকে ঘরনার লোকেরা জাতীয় শোক দিবস হিসাবে পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানে বলেন - "১৫ আগষ্ট কারবালাকে হার মানিয়েছে"।
পাল্টা একটি মেইলে লিখেছিলাম - "কারবালা ঘটনার প্রধান চরিত্র ছিল ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া। মোয়াবিয়ার সামনে যখন ইমাম হোসাইনের খন্ডিত মাথা রাখা হল তখন ইয়াজিদের চোখ ছল ছল করছিল। বার বার বলছিল তোমরা এই রাসূলের নাতিকে এভাবে হত্যা করলে? সীমারকে খুবই ভৎসনা করেছিলেন ইয়াজিদ।"
ইতিহাসে ইয়াজিদকে কিভাবে মূল্যায়ণ করে তা সবাই জানে। আমার বিলাতী বন্ধুকে জানালাম আশা করি তুমি বা তোমার দল ইয়াজিদকে পছন্দ কর না। ফিরতি ইমেইল পেলাম তার পরের দিন। ঠিকই সে ইয়াজিদকে বা ইয়াজিদ চরিত্র পছন্দ করে না। তবে সে তার দলের ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে চাইল না।
(তিন)
শহীদ মীর কাশেম আলী (রঃ) শাহাদাতের এক ঘন্টা পার হতেই বিলাতী বন্ধুর মেইল পেলাম। মেইলটা ছিল বেশ লম্বা। মনে হল খুবই আবেগ নিয়ে লিখেছে। ইয়াজিদের প্রসঙ্গ আবার নিয়ে আসল। বুঝাতে চাইল ১৫ আগষ্টে যা হয়েছিল তা কারবালাকে ও হার মানিয়েছে। জবাব দেবার জন্য তাগিদ করল।
আমি জবাবে লিখলাম -
# কাশেম আলী সাহেবকে ফাঁসি দেয়া হল - ব্যরিষ্টার আরমানকে সাদাপোশাকের নতুন ডিজিটাল বাকশালীরা ধরে নিয়ে গেল।
# সাবেক একজন ব্রিগেডিয়ার যে চাকুরী জীবনে অত্যান্ত সৎ ও যোগ্য অফিসার - বৃদ্ধ মার একমাত্র অবলম্বণ ব্রিগেডিয়ার আমানকে ধরে নিয়ে গেল।
এই কাজগুলো ইয়াজিদি চরিত্রের সাথে মিলে কি না?
ইয়াজিদী শাসন জাতীকে উপহার দেয় তাকে ইয়াজিদের যোগ্য উত্তরসূরী বলা যায় কি না?
আবার বলি - এটা একটা চিত্র।
আরেকটি চিত্র কল্পনা কর বন্ধু। মনে কর তোমাদের গনেষবাবু উল্টে গেল -
# প্রধানমন্ত্রীর বিদেশী পুত্র নিখোজ। তাকে সাদাপেশাকের পূলিশ নিয়ে গেছে। এই ডিজিটাল বিজ্ঞানী বাংলাদেশে এসেছিলেন তার ইয়াহুদী উকিল স্ত্রীসহ।
# স্বরাষ্টমন্ত্রীর ছেলেকে গত সপ্তাহে সাদাপোশাকের পূলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
# র্যব প্রধানের মেয়েকে স্কুল থেকে কিছু বখাটে ছেলেরা (আদর) করে নিয়ে গেছে। পরের দিন নারায়নগন্জ এ লাশ পাওয়া গেছে।
বন্ধু তুমি এবং তোমার দলের কি? প্রতিক্রিয়া হবে --- একটু জানাও।
কষ্ট করে মেইলে লিখ।
-------------------------------------------------------
হে আল্লাহ শহীদ মীর কাশেম আলীর শাহাদাত কবুল কর। তার পরিবারকে সবরের সাথে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার তৌফিক দাও। নিখোঁজ ব্যরিষ্টার আরমানকে ফেরত দাও।
-----------------------------
(অনেক দিন পর ফিরে আসলাম লেখালেখিতে। আশা করি সবাইকে পাব। একান্ত ব্যক্তিগত কারণ ছিল।)
বিষয়: বিবিধ
১৯০৩ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সময় বদলাবেl
একদিন হাসিনাও থাকবেনাl
আমরাও থাকবনাl
হাশরের মাঠে মাবুদে এলাহীর হাতে হাসিনা এবং তার পান্ডাদের বিচারের দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকলামl
আমাদেরই ট্যাক্সে পোষা পুলিশ আর ৱ্যাব আজ আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেl
আমরা তোমাদের ছাড়বোনাl
আমীন
“ইয়াজীদ এর বিষয়টি ক্লিয়ার করবেন প্লিজ। অনেক আহলে হাদীস ভাইকেও দেখি ইয়াজীদ এর বেশ প্রশংসা করে থাকেন। কিন্তু তাদের যুক্তিগুলো ঠুনকো ও উদ্ভট।”
আল্লাহ মজলুমানের স হায় হোন_আমিন!
জিবন মানে তার নয় পরাজয়।
নিরীহ মুসলমানদের মারার শাস্তি এরা আখেরাতেও পাবে । বান্দার হক বান্দা ক্ষমা না করলে সেটা আল্লাহও ক্ষমা করেন না ।
মীর কাশেমরা শুধু নিরপরাধ মুসলমানদেরকেই মারেন নি বরং সেটা ঠিক করেছেন বলে এতদিন দম্ভ করে গেছেন । একটি বারের জন্যও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান নি ৭১ এ কৃত কাজের জন্য ।যে দশের অভ্যুথ্থানের বিরোধীতা করেছেন সেই দেশের লোকেরাই তাদেরকে আপন করে নেবার / ক্ষমা করে দেবার একটা সুযোগ দিয়েছিল ।
আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে ভালবাসেন না ।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি বেশ কিছু কোর বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর পজিশনকে ইসলামের সাথে সরাসরি কন্ট্রাডিক্টরী বলে মনে করি এবং বিশ্বাস করি ওনারা 'কিয়াস' কিংবা 'হেকমাহ'র ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করে ঐ সব পজিশন হোল্ড করলেও - তা ওনাদের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে এবং হবে। (কিন্তু সে সাথে মনে করি মানুষ হিসাবে ওনাদের মত আমার ও ভুল হতে পারে। আল্লাহই ভাল জানেন)
কিন্তু আপনার এই জাতীয় বিশেষনঃ ''চট্টগ্রামের কসাই'' কিংবা ''খুনী'' বলে সার্টিফাই করা - মুসলিম হিসাবে কোরান ও হাদীসের শিক্ষানুযায়ী - কি একটু বেশী ঝুঁকিসম্পন্ন হয়ে যায়নি। বিশেষ করে যখন ঐ বিশেষন সমূহ এমন সোর্সসমূহ হতে আসে - যে সোর্স সমূহ হতে - যত না সত্য বের হয় তার চেয়ে অধিকসংখ্যক মিথ্যা বের হয়। আপনার বিভিন্ন লিখায় ও ঐ সোর্স সম্পর্কে আমি এমন মতামতই অনুভব করেছি।
------------------- ---------------
নিরীহ মুসলমানদের মারার শাস্তি এরা আখেরাতেও পাবে। বান্দার হক বান্দা ক্ষমা না করলে সেটা আল্লাহও ক্ষমা করেন না ।
>>>> নিরীহ মুসলমানদের মারার শাস্তি প্রত্যেকেই পাবে এটা আল্লাহর প্রমিজ এবং আমাদের ও প্রত্যাশা। কিন্তু ''এরা'' বলে যাদের ইংগিত করলেন - তারা যদি সেই হত্যাকারী না হন - আপনি কি দয়া করে ''এদের'' কে এইভাবে হত্যার জন্য নিজেকে হত্যাকারীর সহযোগী হিসাবে আল্লাহর সামনে প্লেস করতে চাইছেন? না কি আপনি ব্যাক্তিগতভাবে ১০০% নিশ্চিত যে আসলেই এরা নিরীহ? মুসলমান হত্যাকারী? যদি তাই হয় - তবে আমি আপনার সাথে সহমত এবং এদের অমন মৃত্যু চাই।
---------------------------
----------------------
মীর কাশেমরা শুধু নিরপরাধ মুসলমানদেরকেই মারেন নি বরং সেটা ঠিক করেছেন বলে এতদিন দম্ভ করে গেছেন । একটি বারের জন্যও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান নি ৭১ এ কৃত কাজের জন্য।
>>>> আমি যতটুকু জানি ৭১ এ এই ভুখন্ডের মুসলিম জনমানুষ, নেতৃবৃন্দ ও জামায়াতে ইসলামীর পজিশান ছিল মুসলমানের ঐক্য এবং এ ভূখন্ডে যারা মুশরিকদের সহযোগী, মুসলিম ঐক্য বিনাশী, তাদের বিরোধীতা করা, তাদের প্রতিরোধ করা।
এর বাহিরে বৃটিশ ঔরসজাত তথাকথিত পাকিস্থানের স্যেকুলার আইন ও কন্সটিটিউশান মেনে নেওয়া নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্ব ছিল ভারতের বিরোধীতা করা, ভারতের পরিকল্পনাকে ভুন্ডুল করা।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রতিটি জানাশোনা মুসলিম (কোরান ও হাদীস এর সাথে সম্পর্কহীন তথাকথিত মুসলমান বাদে) জনমানুষ ১৯৪৭ হতে শুরু করে ১৯৭১ হয়ে ১৯৯০ হয়ে ২০০৯ হয়ে আজ পয্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে এ উপমহাদেশের মুশরিকদের বিরুদ্ধে কনটিনিউ ফাইট করে আসছে তার ঈমান, শরীয়া ও আমল বাঁচাতে এবং এটা কনটিনিউ করবে যতক্ষন না বর্ডারহীন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট মুসলিম জয় নিশ্চিত হবে। এটা আমি কিংবা আপনি চাই কিংবা না চাই - এটা রাসুল সঃ এর ভবিষ্যতবানী এবং হিন্দ এর ডেসটিনি।
সো যে সব মুসলিমরা সামহাউ ঐ ফাইটে জড়িয়েছে - আপনার কথানুযায়ী তাদের উচিত ছিল মুশরিক ও তাদের দোসরদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের জন্য জাহান্নাম নিশ্চিত করা উচিত ছিল?
কিংবা যে সব পলিটিক্যাল এ্যাকটিভিস্টরা তাদের স্যেকুলার কনস্টিটিউশান ও আইনানুযায়ী পাকিস্থানের শত্রু ও সহযোগীদের সাথে যুদ্ধ করেছে এবং হেরেছে - তাদের কাছে নিজের দেশের আইন মানার জন্য, নিজের দেশের প্রতি আনুগত্য দেখানোর জন্য শত্রু পক্ষের সহযোগী, দেশদ্রোহীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল?
বিষয়টি আমার কাছে বড় বেশী স্ট্রেইন্জ প্রত্যাশা বলে মনে হচ্ছে। এই চাওয়াটা না ধর্মীয় সেন্স এ যথার্থ না স্যেকুলার সেন্স এ। স্যেকুলার রা ও বলবেন ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর এর আগের দিন পয্যন্ত যারা ই পাকিস্থানের কনস্টিটিউশানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শত্রুদের সহযোগী হবে তারা দেশ-দ্রোহী, পাকিস্থানের আইন এ অবৈধ। সো যারা দেশদ্রোহী হয় নি, যারা অবৈধ কাজ করেনি - তারা ক্ষমা চাইবে যারা দেশদ্রোহী হয়েছিল, যারা অবৈধ কাজ করেছিল?
এটা সত্য হলে তো ইন্ডিয়ার ঔরসে ৭১ এ জন্ম নেওয়া তথাকথিত বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই আজ দেশদ্রোহী হতে চাইবে, অবৈধ কাজে জড়াবে।
সো আমার মনে হয় না আপনার প্রত্যাশাটা যথার্থ। অবশ্য আপনার আন্ডারস্ট্যান্ডিং হতে আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং দূর্বল হতে পারে।
পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করে হেরে গিয়ে কাশেম-কাদের-নিজামীদের কি বাংলাদেশে পড়ে থাকা উচিত হয়েছে যেখানে পাকিস্তানকে বাংলাদেশ দখল করে নেয় নি ?
যা পাকিস্তানের জন্য ভাল ছিল সে সময়ে তা ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে । এজন্য আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ মতিয়ুরকে তারা গাদ্দার বলে , নিজামী কাশেমদের বীর বলে।
যদি বাংলাদেশ স্বাধীন না হত তাহলে কি মনে করেন জিয়া - অলি- শওকতদের আস্ত রাখতো ?
যাদের শাস্তি হচ্ছে তাদের সবার ব্যাপারে এরকম কারণ ঝুলিয়ে রাখা আছে ।
সত্যের বিজয় অনিবার্য,
মিথ্যার বিণাশ অবশ্যম্ভাবী
মন্তব্য করতে লগইন করুন