এই নষ্ট-ভ্রষ্ট-গাঁজাখুরী গল্পের শেষ হবে কবে?
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৫:২৮:০৭ বিকাল
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যতই খারাপ হচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে মাথা খারাপ হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ সরকার ও তার তল্পিবাহক পুলিশ বাহিনীর। এ পর্যন্ত যতগুলো নাশকতার ঘটনা ঘটেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোনটারই কার্যকর ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি বরং আই.এস, হুজি, জঙ্গি হামলা, আনসারুল্লাহ বাংলা টীম সহ নানারকম গল্প ফেঁদে পরিস্থিতি কে জটিল করে তুলেছে। যে কোন ঘটনাকে তদন্ত ছাড়াই সরকার উৎখাতের জন্য বিএনপি-জামায়াতের ষড় যন্ত্র বলে চালিয়ে দেয়া তাদের একটা মানসিক বিকারে পরিণত হয়েছে।
তারা তাদের সর্বশেষ গাঁজাখুরী গল্প ফেঁদেছে যুদ্ধাপরাধের মামলার বিচারে আইনী সহায়তায় নিয়োজিত মাওলানা নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদ এর আইনজীবী শিশির মুহাম্মদ মনির, এডভোকেট আসাদ উদ্দিন এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কয়েকজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নেতৃবৃন্দকে নিয়ে।
সকল পত্র-পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমের বরাতে দেশের মানুষ জানে যে, গত গত ২৩ অক্টোবর' ২০১৫, সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ অকস্মাৎ এডভোকেট শিশির মনিরের বাসায় হানা দেয়, একই দিন বিকেলে তারা সিরাজগন্জ থেকে এডভোকেট আসাদ উদ্দিন কে এবংগুলশান থেকে নিজ পেশাগত দায়িত্ব পালন করে ফেরার পথে শিবিরের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুর রহমান ও তার অপর একজন সহকর্মী ইবনেসিনার সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক কে আটক করে। এডভোকেট আসাদ ও জাহিদুর রহমান কে গ্রেফতারের বিষয়টি সর্বমহলে জানাজানি হলেও ডিবি তা নির্লজ্জ ভাবে অস্বীকার করে। এডভোকেট শিশির মনিরের উপর এহেন বে-আইনী পুলিশী হয়রানীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীগণ প্রতিবাদে সোচ্চার হন এবং শিশির মনিরের জীবন ও পরিবারের প্রটেকশন চেয়ে সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি জৈষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের প্রোটেকশন চান।
২ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার পর গত ২৫অক্টোবর' ২০১৫ তারিখ ডিবি পুলিশ সাবেক শিবির সভাপতি জাহিদুর রহমান, এডভোকেট আসাদ উদ্দিন এবং ইবনেসিনার কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক কে আদালতে উপস্থাপন করে। অত্যন্ত হাস্যকর ও মজার ব্যপার হচ্ছে তাদের কে আদালতে উপস্থাপন করার সময় ডিবি এক মজাদার গল্পের জন্ম দেয়। আদালতে দাখিলকৃত গল্পে পুলিশ দাবী করে গত ২৪-১০-২০১৫ ইং তারিখে তারা নাকি গোপন সূত্রে খবর পায় যে শিবিরের সাবেক সভাপতি জাহিদুর রহমান, এডভোকেট আসাদ উদ্দিন, শিবিরের সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আইনজীবী শিশির মনির, শিবিরের অপর দুই সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মন্জু ও রেজাউল করিম, আরও কিছু সাবেক শিবির নেতা, কয়েকজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এবং কলামিস্ট মিলে সরকার উৎখাতের জন্য মোহাম্মদপুরস্থ লালমাটিয়া আড়ং ভবনে বসে একটি গোপন মিটিং করছে। ডিবি পুলিশ তাৎক্ষণিক সেখানে সাঁড়াশী অভিযান চালায় এবং সেখান থেকে হাতেনাতে জাহিদুর রহমান, এডভোকেট আসাদ উদ্দিন ও আব্দুর রাজ্জাক কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বাকী নেতা, বুদ্ধীজীবি ও কলামিস্টরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ৫৪ ধারায় তাদের এই থ্রিলিং অভিজানের বর্ণনা দেয় এবং উপস্থাপিত আসামীদের ১০ দিনের রিমান্ড চায়।
মজার ব্যপার হলো ৩দিন আগে গুলশান থেকে গ্রেফতারকৃত এবং ডিবি হেফাজতে থাকা জাহিদুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক এবং সিরাজগন্জ থেকে আটক ও ডিবি কার্যালয়ে বন্দী থাকা অবস্থায় আসাদ উদ্দিন কিভাবে একসাথ হয়ে মোহাম্মদপুরে গোপন মিটিং করতে পারে! বারংবার নিজ বাসভবনে পুলিশী হয়রানীর মুখে মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রোটেকশন চাওয়া এডভোকেট শিশির মনির কিভাবে গোপন মিটিং করতে পারে? আরও হাস্যকর ব্যপার হলো নিজের মা কে নিয়ে সৌদী আরবে হজ্ব পালনরত সাবেক শিবির সভাপতি মজিবুর রহমান মন্জু কিভাবে সেই মিটিং এ উপস্থিত থাকতে পারে?
এসব হাস্যকর বানোয়াট গল্প কি সরকারকে যেন তেন করে তুষ্ট করার মরিয়া প্রচেষ্টা! নাকি দেশের আইন-বিচার ব্যবস্থা কে প্রহসনে পরিণত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ বিশেষ?
এহেন ধারাবাহিক নির্লজ্জ মিথ্যা গল্পের বেসাতী কি সহসা বন্ধ হবে? নাকি কোন বিশেষ মহল কে আড়াল করার জন্য নির্দোষ সৃষ্টিশীল মানুষদের জিম্মী করে তাদের উপর জঘন্য অত্যাচার, রিমান্ডের পৈচাশিকতা চলতেই থাকবে?
জাতির বিবেকের কাছে আজ একটাই প্রশ্ন ???
বিষয়: বিবিধ
২৪৫৫ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অচিরেই জুলুমবাজদের পতন দেখব এবং কঠিন থেকে কঠিন পরিনতিও অবলোকন করব
নিরিহ এবং নিরপরাধ ভাইদেরকে যেই ভাবে জুলুমের স্বীকার হতে হচ্ছে তাতে মনে হয় আল্লাহর সিদ্ধান্ত অতিসত্তর বাস্তবায়িত হবে
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
দেশ আজ জালিমের কারখানায় পরিণত হয়েছে। সু-বিচার, ইনসাফ ও মানতবা সবই আজ দূর বহুদূর।
লিখেছেন : এই পুলিশ
মরহুম কবি মতিউর
রহমান মল্লিক কে
হামলায় অংশ নেওয়ার
আসামী করে ছিল!!
নতুন আর কি???
আপনার লিখায় বিবেকসম্পন্ন মানুষের মানুষিক অবস্থা তথা হতাশা বিমূর্ত হয়েছে।
কিন্তু, যেখানে সারা পৃথিবীর সর্বস্তরের সাধারন মানুষ, মহা এক পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে, তথাকথিত আইন নামক অদৃশ্য এক প্রেফারেন্সিয়াল সিস্টেম এ আটকে পড়ে, পরিপূর্ন এ্যানস্লেইভারীতে জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়ে পড়েছে, গুটিকয়েক মানুষের ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছার উপর সরকারপ্রধান হতে শুরু করে দফাদার অবধি সকলে ডানে বায়ে কাত হতে বাধ্য - সেখানে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেবার জন্য মূলতঃ কোন বিবেক নেই।
বিবেক এখন কচু পাতার পানির ন্যায় টলটলায়মান। নিউজ, ভিউজ এর কারনে যা কিছু নড়ে উঠতে চায় - সিস্টেম ও অদৃশ্য বাউন্ডারী ওয়াল এখন সেই নড়চড়কেও নিয়ন্ত্রন করছে।
বরং সময় হয়েছে জানার ও বোঝার সেই অদৃশ্য সিস্টেমের জন্মদাতাদের চেনার, জানার ও বোঝার এবং সিস্টেমটি কিভাবে আমাকে আপনাকে আপনার দেশবাসীকে এ্যানস্লেইভ করেছে - একবার বুঝলে আপনি আমি হয়তো বের হবার চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু তা না করলে এমন হতাশায় কষ্টে হাত পা ছোড়াছুড়ি ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।
আল্লাহ আপনার কষ্টকে শান্তিতে রূপান্তর করুক আর মজলুম এর উপর ট্রান্কুইলিটি নিশ্চিত করুক এবং আখেরাতে পুরুষ্কৃত করুক।
বাকি থাকলো আপনার দোয়া। সেটাও কবুল হবে।
হতাশার মধ্যে আপনার মত মানুষই আশার বাতিঘর।
ধন্যবাদ।
সর্বক্ষেত্রেই অরাজকতা বিরাজ করছে আজকের সমাজে!
'গাজার নৌকা বাতাসে ভাসে' এই কথা সবাই জানলেও পুলিশ নামীয় লীগ চেলারা তাও ভূলে গেছে!
চেতনাময় নেশায় চেতনাহীন রাষ্ট্রীয় সকল বিভাগ!
সত্যের বিজয় অনিবার্য,
মিথ্যার বিণাশ অবশ্যম্ভাবী,
সত্যের সাথে থাকাই ঈমানের দাবী
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন