রাসূল (সাঃ) এর মুজেযা - পর্ব - ১ কুরআন শুনে তাগুত নেতার পিছুটান।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০২:০৫:০৩ দুপুর
এক)
পৃথিবীতে মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় নিয়ামত হল রিসালাত। রাসূলগণকে প্রেরণ করা হয়েছে মানুষের জন্য। মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করার মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যই রিসালাতের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। অবশ্য রাসূলগণ ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ ও উত্তম চরিত্রের এবং বিশ্বমানবতার বন্ধু।
এই পৃথিবীতে দুটি শ্রেণী মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে। ব্যক্তি ও সামষ্টিক উন্নতির জন্য এই দুই শ্রেণী সবচেয়ে বেশী পরিশ্রম করেছে। তাদের নিজেদের জীবনে অনেক কষ্ট,নির্যাতন,জেল জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। বিশ্ব মানবতা এই দুই শ্রেণীর মানুেষের কাছে চিরদিন দ্বায়বদ্ধ থাকবে।
প্রথম শ্রেণী হল - আম্বিয়া আলাইহিস সালাম। যাদেরকে আমাদের পরিভাষায় বলি নবি রাসূল।
২য় শ্রেণী হল - দার্শনিকবৃন্দ। যারা নতুন মত তৈরী করেছেন।
নবীদের সংখ্যা যেমন অসংখ্য অগনিত ঠিক তেমনী দার্শনিকদের সংখ্যা ও অসংখ্য অগনিত।
নবীরা মানুষের চলার পথ যা শরীয়াত নামে জানি। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত ও নির্দেশিত ছিলেন। মানুষের জীবন চলার পথ ও মত যা রেখে গেছেন তা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। এজন্য সকল নবীদের মৌলিক শিক্ষা একই ছিল। নবীরা সবাই মানব কল্যাণে একই রকম কথা বলেছেন। সময়ের ব্যবধানে জীবন সমস্যার সমাধান হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু তাদের মূল দাওয়াত ছিল একই।
অপর দিকে দার্শনিকরা কথা বলেছেন - তাদের মন মস্তিস্কপ্রসুত জ্ঞান দিয়ে। নিজেরা চিন্তা করেছেন - বর্তমান সময়ের সমস্যার সমাধানে তারা তথ্য হাজির করেছেন। একজন যা চিন্তা করেছেন ঠিক তার বিপরীত চিন্তা করেছেন অন্যজন। একজন দার্শনিক আজ যা বলছেন - তারই পড়ন্ত বেলায় তার নিজের মতের বিপরীত চিন্তা - দর্শন পেশ করেছেন।
এর অনেক কারন। তবে মৌলিক কারন দুটি ।
একটি হল - দার্শনিকদের সামনে বর্তমান ছিল। অতীতের বিষয়ে তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হয়েছে। আর ভবিষ্যতের জ্ঞান তাদের নেই। ধারনা করে ব্ক্তব্য পেশ করতে হয়েছে। তাই চিরস্থায়ী সিদ্দান্ত নিতে ভূল করেছেন। ভুল হওটা স্বাভাবিক ছিল। হয়েছেও তাই।
২য়টি হল - সামগ্রিক তথা সমগ্র মানুষের সমস্যার সমাধান কোন ব্যক্তির পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়। যেমন - সমাজতন্ত্রের জনক - তার দেশ জার্মান। ইয়াহুদী পরিবার - পিতা সাধারণ খামারের শ্রমিক - ১৭ বছর বয়সে কারাবরণ - তিনি যে পরিবেশে বড় হয়েছেন - তখনকার সামাজিকতা,তখনকার ধর্মীয় শক্তির প্রভাব,রাষ্ট্রীয় বলয়ে সমাধানের চিন্তা করেছেন। এই দার্শনিক যে প্রান্তিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন - তার চিন্তা চেতনা - সমস্যা সমাধানে এসেছে সেই আদলেই। তাই দেখা যায় যত দেশে এই মতবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে - সব জায়গায় মানবতার সকল মানবিকতা অস্বীকার করা হয়েছে। আমার দেশে যারা এই মতবাদের ধারক বাহক তাদের ব্যক্তিগত জীবন - রাজনৈতিক জীবন - সামাজিকতা বিবেচনা করুন।
মানব রচিত মতবাদের বড় গলদ এই জায়গায়। মুসলমান আর অন্য ধর্মের হউক প্রত্যেকের ফিতরাত বলতে কিছু আছে। যাকে আমরা ইউনিভার্সেল ট্রুথ বলে থাকি।
আরেকটি উদাহরণ হতে পারে - পুজিবাদী সমাজব্যবস্থার- সমকামীদের মধ্যে বিবাহ প্রথা বৈধ করা হয়েছে। চিন্তা করুন বাংলাদেশে এই আইনের বাস্তবায়ন।
অপার সম্ভবনার এই দেশ আরো বিচিত্র। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক মানুষগুলো চরিত্র বিবেচনা করুণ। তারা একই সাথে ধর্মনিরপেক্ষ - আবার তারা পুজিবাদী ফ্যাসিষ্ট সরকারের দালাল - আবার সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সেবাদাস। তাদের নতুন আরো কিছু পরিচয় - অসাম্প্রদায়িকতা নাম ধারণ। তবে তারা কমন এক জায়গায় - সেটা হল বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চিন্তা চেতনা - ঈমান আকিদার বিপরীত অবস্থান।
এখানে নৈতিকতা - আদর্শ - মানবতা - চরম সত্য সামাজিক মূল্যবোধ ধার্তব্য নয়। নাস্তিকতা নামের তথাকথিত প্রগতিশীলতার অপর নাম হল চরম সুবিধাবাদি চরিত্র।
মানব মস্তিস্ক প্রসূত মতবাদ যা সামগ্রিক ও চিরস্থায়ী মানুষের কল্যাণ হয়নি। তা সম্ভব ও নয়। এটাই বাস্তবতা।
দুই)
নবীদের সংখ্যা কত? এটা হাদীসের কিতাব "মুসনাদে আহমাদ" বর্ণনায় পাই। হযরত আবু যর (রাঃ) রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন - হে রাসূল (সাঃ) হযরত আদম (আঃ) নবী ছিলেন? জবাবে রাসূল (সাঃ) বলেন - আদম নবী ছিলেন। হযরত আবুযর আবার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন - পৃথিবীতে নবী রাসূলদের সংখ্যা কত? রাসূল (সাঃ) বললেন - এক লক্ষ বিশ হাজার।
কোরআনে ২৫জন নবী রাসূলদের নাম এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী আলোচিত ৬ জন নবীর নাম এসেছে। যেমন হযরত মুসা (আঃ) এর নাম আল্লাহর কালামে এসেছে মোট ১৮৩ বার। হযরত ঈসা ও মসীহ এবং মরিয়মের পুত্র এই তিন নামে মোট ২০ বার এসেছে। আর আমাদের নবী - বিশ্ব নেতা মোহাম্মদ (সাঃ) এর নাম এসেছে মোট চার বার।
২৫ জন নবীদের মধ্যে কয়েকজন নবীর নাম শুধু আমরা জানতে পারি। যেমন "যাল কিফল"।
আবার হযরত মুসা (আঃ) এর জন্মপূর্ব অবস্থা সহ বিবাহ - বিবাহ উত্তর ঘটনা - সবই বিস্তারিত এসেছে।
আদম (আঃ) থেকে নূহ (আঃ) পর্যন্ত মানবতার একটি পর্যায়।
নূহ (আঃ) প্রথম নবী ও রাসূল। "আবুল বাশার" - মানুষ জাতীর পিতা হলেন - হযরত আদম (আঃ)। "আবুল আম্বীয়া" হলেন - হযরত নূহ (আঃ)। আর মুসলিম জাতীর পিতা হলেন হযরত ইব্রাহিম (আঃ)। যদিও বংশের দিক থেকে ইব্রাহিম (আঃ) হলেন - ইয়াহুদী,খৃষ্ঠান ও মুসলিম জাতীর পিতা।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্ত্রী 'সারা' থেকে হযরত ইয়াকুব (আঃ)। আর ২য় স্ত্রী 'হাজেরা' থেকে হলেন হযরত ইসমাইল (আঃ)।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বড় সন্তান হযরত ইসমাইল (আঃ) বংশে মাত্র একজন রাসূল। আর ২য় সন্তান হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর বংশে জগতের সকল নবী ও রাসূল।
মানুষ্যত্যের ২য় পর্যায় শুরু হয় হযরত ইব্রাহীম (আঃ) থেকে।
কোরআনে নবীদের নামে মোট সূরা হল - ৬টি। আর রাসূলের উপনামে মোট সূরা হল ৪টি - যেমন - ইয়াসিন - ত্বাহা - মুজাম্মীল - মুদ্দাসীর।
আল্লাহ পাক সমান ভাবে তিনটি বিষয় সকল নবী রাসূলদেরকে দিয়েছেন।
=====
আগামী পর্বে।
বিষয়: বিবিধ
২১৭৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে মোবারকবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন