বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের বড় ভুল!
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৬ মে, ২০১৫, ০৫:০১:৩৪ বিকাল
আমি বসা ডান পাশে। আড়াআড়ি করে রাখা চেয়ার। চোখ দিয়ে আবছা আবছা দেখা যায় অনেক দুর। দুরের শহরটির নাম আমাদের জানা নেই। সামনে স্বচ্ছ গ্লাস। নিচের রাস্তার সব কিছু পরিস্কার দেখা যাচ্ছে। দুই বন্ধু বসে কথা বলছি। এই জায়গাটার সাথে নিজের হৃদয়ের একটা টান আছে। সুযোগ পেলেই বসতে চেষ্টা করি আপনজন নিয়ে। আজ সেরকমই বসা। পারিবারিক আলাপ আলোচনার সাথে দেশের রাজনীতি।
১৮ বছর বয়সের একটি বালক কেমন করে এতগুলো হত্যাকান্ড করল। কেমন করে গ্রামের মেট্রিক পড়ুয়া ছেলের নির্দেশে পাকিস্তানের আর্মী জেনারেলরা হুকুম তামিল করত।
এই বিষয়গুলো আদালতের মাননীয় বিচারপতিদের সামনে আনা হয়েছে। তার পর ও তারা রায় দিলেন। বড় আদালতের বড় বিচারপতিদেরও একই রায়।সরকার আসলে কি চায়? কেন চায়? কারন কি? আসলে আওয়ামীলীগ বাংলাদেশে কি করতে চাচ্ছে?
প্রাজ্ঞ সাহিত্যিক ও সাংবাদিক বন্ধুটি চমতকার পর্যলোচনা করেছেন। কেন জামায়াতের নেতৃত্বকে সাজানো গোছানো আদালতের সিল দিয়ে রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ড করা হচ্ছে।
======
# আইন আদালত - রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতি কোন কিছুর পরওয়া কেন করছে না সরকার?
# যে আদালতের মাধ্যমে (বাংলা লিংকের দামে) ফাঁসির রায় হচ্ছে?
# আবার অতি স্বাধীন বিচারপতিরা জামায়াতের সকল মামলা খারিজ করেছেন?
# ১৮ বছরের বালক অথবা ৪ বছরের শিশু সবার জন্য একই আইন। একই রায়?
# বর্তমান সরকারের ক্ষমতা প্রলম্বিত ফাঁসির বিকল্প আর কি আছে?
===
আমাকে প্রশ্ন করলেন - বলুনতো কেন? আওয়ামীলীগ জামায়াতের কেন্দ্রিয় নেতাদের ফাঁসি দিচ্ছে?
আমার জবাব শুনে তিনি বললেন - এটা হয়তো একটা কারণ - তবে আমার দৃষ্টিতে আসল কারণ হল ভিন্ন।
# তার ভাষায় - আওয়ামী রাজনীতিটা এমন - যারা তাদের প্রতিপক্ষ হবে - তাদেরকে খতম করা।
যেমন - শেখ মুজিবের পথ সাফ করার জন্য আওয়ামীলীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদককে পাগল করা হয়েছিল। দলের ভিতর এরকম অনেক উদাহারণ আছে। হাসিনার ট্রামকার্ড মার্কা আব্দুল জলীল সাহেবকে ও পাগল হয়ে মরতে হয়েছে।
# জামায়াতের যে সমস্ত নেতাদের ফাঁসির আয়োজন করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তথা রাজনৈতিক উঠাবসা ছিল আওয়ামীলীগের। আওয়ামীলীগ জানে এদেরকে খুব ভাল ভাবে। তাদের সততা - দেশপ্রেম - তাদের লেখাপড়া সব কিছু খুব কাছ থেকে দেখেছে। ভয়ের জায়গাটা হল এখানে।
# বিগত আন্দোলনগুলোতে তারা দেখেছে - তোফায়েল সাহেব - আমু সাহেব সহ সিনিয়র নেতারা বুজেছেন - যদি জামায়াতের নেতারা এভাবে জনগণের সাথে মিশতে পারে - তাহলে আওয়ামীলীগ তথা সেক্যুলার রাজনীতির নেতৃত্ব থেকে জনগন মুখ ফিরিয়ে নেবে।
# আমার বন্ধু বললেন - দেখেন - শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা বা কামরুজ্জামান - আলী আহসান মুজাহীদ - বা মতিউর রহমান নিজামী এদের সাথে রাজনৈতিক টেবিলে অসংখ্যবার বসেছেন। মত বিনিময় হযেছে। আন্দোলনের কলাকৌশল নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা জানেন তার আশে পাশের মানুষদের চরিত্র। বিপরীতে জামায়াতের নেতৃত্ব তার কাছে পরিস্কার আছে।
# যদি এই গ্রুপটাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বাভাবিক কাজ করতে দেয়া যায় - তাহলে মিথ্যার রাজনীতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। সৎ রাজনীতির বিপরীতে দুর্নীতিতে অকন্ঠ নিমজ্জিত আওয়ামী পরিবারের রাজনীতির দিন শেষ ছিল।
# তাই জামায়াতের নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় ভুল হল - তাদের দেশ প্রেম -সততা এবং যোগ্যতা। এটাই হল - ফাসিঁর আসল কারন।
===
আমি তার সাথে যোগ করলাম - কোরআনের সুরা বুরুজের ৮ নং আয়াত।
وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَن يُؤْمِنُوا بِاللَّـهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
তরজমা - তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল।
=======
বিষয়: বিবিধ
২০৬০ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ জ্বী তাদের ৭১ এ পাকিস্তানপ্রেম ও তার আবেগের জন্য আজকের এই বিচার হচ্ছে , বাংলাদেশে।
দেশ প্রেমই যেখানে বড় অপরাধ সেখানে দেশের জনগণ যদি সময় থাকতেই বুঝত তাহলে জাতি পথের দিশা পেত।
সুন্দর করে আওয়ামী আদালতের সত্যের অপলাপ তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
সাধারন মানুষ যদি আপনাদের মত দেশপ্রেম বুঝতো তাহলে আজকেও মাস্টার্স পাশ করে পাকিদের পিছনে পিছনে ঘুরতে হত গামছা নিয়ে তাদের জুতো সাফ করার জন্য ।
ভাগ্যিস সেই সাধারণ মানুষ আপনাদের মত মহা ট্যালেন্টেড ছিল না ।
ধান্যবাদ।
সংখ্যা গরিষ্ট মানুষের আচার-আচরণ, কর্ম-কৌশল অনুযায়ী তাদের উপর শাসক মহান আল্লাহও নির্ধারণ করেন!
'না কা ওয়াস্তে মুসলমান'বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ! স্বার্থবাদীতা আর দ্বীনহীনতায় চরম পর্যায়ে! এমন পরিবেশে- সঠিক দেশপ্রেম-নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্ব-ঈমানী দৃঢ়তা অবশ্যই অনেক বড় অপরাধ হিসেবেই সাব্যস্ত হবে!
জামায়াত নেতারা তো এমন অপরাধে মারাত্মক অপরাধী!
আল্লাহ সাধারণ নামধারী মুসলমানদের সঠিক বুঝ দান করুন,আমিন!!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!!
এ কেমন কথা যে, হিসাব বিহীন মৃত্যুর জন্য শহীদ হতে চাই। আর শহীদ হলে বলি জুলুম করা হয়েছে। তাহলে কোনটি ঠিক?
ধন্যবাদ প্রচলিত বিষয়ে ব্লগ লিখার জন্য।
আমাদের দরার এর হোলিস্টিক চিত্র পাওয়া। কেন বাংলাদেশের ওনারা যেমন নিগ্রহের শিকার, অন্যায় ও জুলুম এর শিকার - ঠিক তেমনি বার্মা, চায়না, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া হতে শুরু করে পাকিস্থান, মিশর, তিউনিশিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন সহ সারা পৃথিবীর আজকের চিত্রটা সমরূপ নিগ্রহের, অন্যায়ের ও জুলুমের?
আমার মনে হয় কেউ যদি দয়া করে কোরান ও হাদীস ঘাটে এবং খোঁজে কেন আজকে এই একবিংশ শতাব্দী এই ক্ষনটায় - যখন জ্ঞান বিজ্ঞান এতটা এ্যাডভান্স - তখন কেন এই অন্যায় এই জুলুম - তখন যে চিত্র কিংবা মতামতটা পাবেন - তা হবে যথার্থ, পরিপূর্ন। আর নয়তো আমরা খন্ডাংশ পাবো - যা কোনদিন পরিপূর্ন সত্য বলে পরিগনিত হতে পারেনা।
আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ।
ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ পোস্টটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন