হাজার বছরের পিতার যোগ্য কন্যার নির্বাচন।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৯ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:১৮:১৫ সন্ধ্যা
এক)
ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক লম্বা - দীর্ঘ আন্দোলন। প্রতিষ্ঠিত এই আন্দোলনে অনেক মানুষ তাদের জীবন দিয়েছে। আগামীতে ও দিবে। তবে??????
দ্বিখন্ডিত ঢাকা সিটি ও চট্রলার মেয়র নির্বাচন হল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন - অনেক ত্যাগের বিনিময়ে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল। দলবাজ ও ভারতের পোষ্য মিডিয়া হাউসগুলো আবারও প্রমান করল তারা গণমাধ্যম নয়।
আমার দেশের যাত্রা শুরুর ব্যরোমিটার হল ১৯৭০ সালের নির্বাচন। সেই নির্বাচনে হাজার বছরের পিতা কেমন করে প্রচারণা সহ ইত্যাদি সম্পাদন করেছিলেন।
আবার ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ছিল স্বাধীন দেশের প্রথম নির্বাচন। সেই নির্বাচনের হাল হকিকত কেমন ছিল।
একটু পিছনে ফেরা যাক। (অবশ্য আমার নিজের নয় - বরং দলিল দস্তাবেজ থেকে)।
দুই)
১ জানুয়ারী ১৯৭০ সাল থেকে শুরু হলো প্রকাশ্য রাজনীতি। ১১ জানুয়ারী,রোববার ছিল আওয়ামী লীগের জনসভা। তার পরের রোববার ছিল জামায়াতে ইসলামীর জনসভা। আগেই ছাত্রলীগের সিরাজ গ্রুপের একটা সিদ্ধান্ত ছিল, জামায়াতকে সভা করতে দেয়া হবে না। (শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি নির্দেশ দেন ছাত্র নেতা আব্দুর রাজ্জাককে।)
তার পরের রোববার ছিল ২৫ জানুয়ারী। পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) জনসভা। এই সভাও জয়বাংলার দামাল ছেলেরা বীর দর্পে পন্ড করে দেয়। নেতারা কোন ক্রমে পালিয়ে জান বাঁচান।
এ ছিল ঐতিহাসিক নির্বাচনের পূর্ব গণতান্ত্রিক আওয়ামীলীগের মহান! গনতন্ত্র চর্চা। (দেখুন - জাসদের উথান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি। মহিউদ্দিন আহমদ। পৃষ্টা ২৮ এবং ২৯।)
তিন)
১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন আওয়ামীলীগ (মহিলা আসন সহ) লাভ করে। আওয়ামীলীগের এ বিরাট বিজয়ের পিছনে কারন ছিল জনগণের সমর্থন,জাল ভোট,বিপক্ষ দলকে শক্তি দিয়ে প্রতিহত করা।
"অন্যান্য দল কদাচিৎ কোন জনসভার আয়োজন করতে পারত এবং যখন তারা তা করত তখন জংলী আওয়ামিলীগরা তা পন্ড করে দিত।" (জি, ডব্লিও চৌধুরী - অখন্ড পাকিস্তানের শেষ দিনগুলি। পৃষ্ঠা ৯৬।)
"দলটি (আওয়ামীলীগ পয়লা ফেব্রুয়ারী পিডিপির ঢাকার জনসভা, একই মাসের ২৮ তারিখ চট্রগ্রামের জনসভা, সৈয়দ পুরের ৭ই মার্চের জনসভা আওয়ামী গুন্ডা দিয়ে পন্ড করে।"(নিয়াজীর আত্মসমর্পনের দলিল। পৃস্ঠা ৩১।)
"আত্মঘাতী রাজনীতির তিনকাল বইটি বাংলাদেশে সর্বমহলে গ্রহযোগ্য। এই বইয়ের ৩৭১ হতে ৩৮৩ পর্যন্ত শেখ মুজিবের আওয়ামীলীগের হামলার বেশ কিছু দুর্লভ চিত্র আছে।" এই একই বইয়ের ৩৯১ পৃষ্ঠায় জাল ভোটের কিছু কথা আছে।
"সেদিন (১৯৭০) আওয়ামী নেতা কর্মীরা ভুয়া ভোট দেয়ার প্রতিযোগীতায় নেমেছিল।কে কতটা ভোট দিয়েছে, এ নিয়ে বড়াই করেছে। কেউ বলেছে আমি একাই ৫০টি, কেউ ১০০টি।"
"মেজর সিদ্দিক সালিক তার নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিল বই এর ৪২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোর যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ আওয়ামীলীগ ও তার নেতা কর্মীদের উপর ছেড়ে দিয়ে সেনাবাহিনী কৌশলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হবার ব্যাপারিটিতে অবদান রাখল।"
ঐতিহাসিক ৭০ সালের নির্বাচনে যে পরিমান পেশী শক্তি ব্যবহার করেছিল আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে পুরাতন দলটি। ২০১৫ সালে এসে ঠিক একই রকমের কাজ করেছে।
কে যেন বলেছিল - সব প্রজাতির চরিত্র বদলায় - কিন্তু বাংলাদেশে শুধুমাত্র একটি প্রজাতি আছে যাদের চরিত্র হাজার বছরের পিতার সময় যেমন ছিল - লাখো বছরের কন্যার সময় একই অবস্থায় বিদ্যমান। তার নাম - আওয়ামীলীগ।
তখনকার আওয়ামীলীগ - ছাত্রলীগ যেমন চরিত্র ছিল - আজও একটু বদলায়নি। দেখুন নিচের ছবিটি।
বর্তমানে দলের পূরুষদের চাইতে মহিলারা এগিয়ে।
গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই সব নেত্রীরা একসময় বারিত হন ৭১ এর চেতনায়।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় - অনেক রক্তের বদলে এবারের চমতকার নির্বাচন। দেখুন - এই লিংকে।
https://www.youtube.com/watch?v=LEzdYyeWfNU#t=57
বিষয়: বিবিধ
১৫০৭ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি ও লিখুন।
আর এদেশের মানুষের জন্য পজিটিভ কিছু হলে তা আওয়ামী লীগের আমলেই হয় । খেলার কথা তো বাদই দিলাম , আজ ৩০০ মেগাওয়াট যুক্ত হলো জাতীয় গ্রিডে । দাম বেশী হলেও এখন কিন্তু আগের মত ঘন ঘন লোডশেডিং হয় না ।
তাই যেভাবেই জিতুক না কেন বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু সেই ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ব্রুট মেজরিটির ম্যান্ডেট দিয়ে দিয়েছে ।
তবে এটাও সত্য আওয়ামীলীগের আমলেই কম্বল চোরদের দৌরাত্ব বেড়ে যায়। আবার ব্যংক লুট করার নেতার অভাব হয় না।
২০০৮ সালের নির্বাচন - বিজি প্রেসের ছাপানো ব্যালেট হয়তো একদিন সামানে আসবে।
আপনি মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন