প্রেম ভালবাসা আর পিরিত করার অধিকার - দায়িত্ব - দায়িত্ববোধ। = ৫ম পর্ব =
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১০ মার্চ, ২০১৫, ০২:৩৬:৫২ দুপুর
৪র্থ পর্বের পর -
পূর্ব সুত্র - পরে এই বাড়ীতে একটি মসজিদ ছিল। যার নাম সাঈয়েদুনা আবু বকর মসজিদ।
=========
বিশ্ব নেতা বিশ্ব নবী (সাঃ) দরজার কড়া নাড়লেন। ভিতর থেকে দরজা খুলে আবু বকর (রাঃ) অবাক। সচরাচর এই সময় রাসূল (সাঃ) আসেন না। হয় বড় কোন বিপদ অথবা বড় বার্তা দিতে এসেছেন। ঘরের দরজা বন্ধ করে আবু বকর (রাঃ) রাসূলের সামনা সামনি হলেন।একই ঘরে সিদ্দিক পরিবারের দুই কন্যা আসমা ও আয়শা (রাঃ)।
আসমা বিনতে আবুবকরের বয়স আট বা নয়। আর আয়শার বয়স আরো কম। তারা বৈমাত্রিয় বোন। ভাই আব্দুল্লাহ বিন আবুবকর ও বোন আসমা একই মায়ের। আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর বড়।
রাসূল (সাঃ) বললেন - ঘর থেকে সবাইকে বের করে দাও। জরুরী কথা আছে। আবু বকর বললেন হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এরা আমার পরিবার। তাদের সামনে যে কোন বিষয় আলোচনা করতে পারেন।
পরিকল্পনা হল কিভাবে - কখন - কি বাহনে - কোন পথ দিয়ে মদিনায় হিজরত করা হবে।
# গোটা হিজরতের পরিকল্পনা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) এর শিশু সন্তানদের সামনে ই করা হল।
পূর্ব পরিকল্পনা মত রাসূল (সাঃ) রাতের শেষ প্রহরে আসলেন। আগে থেকে দুটো উট প্রস্তুত করে রাখা ছিল।যাত্রা শুরু হল।
রাসূল (সাঃ) বেশ আগে। পিছনে আবুবকর। তার আরো পিছনে আমর ইবনে ফুয়ারা ছাগল পাল নিয়ে চলছে।প্রথম গন্তব্য হল মিসফালা এলাকা দিয়ে (ইব্রাহিম খলিল রোড) সওর পর্বত গুহা।
# এই পর্বে আবুবকর (রাঃ) পূর্ব থেকে প্রস্তুতি করে রাখা দুটি উট কাজে লাগলো। এবং বিশ্বস্ত চাকর (ইয়াহুদী) আমর ইবনে ফুয়ারাকে কাজে লাগানো হল। চাগলের পাল পিছনে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আগে থেকে দেয়া হয়েছিল। কারন যাতে মক্কার তাগুত শক্তি পায়ের চিহৃ দেখে বের করতে না পারে।আরবরা পায়ের ছাপ দেখে বলে দিতে পারত পায়ের চিহৃ কাদের।
সওর পর্বতের গুহায় অবস্থানের (তিনদিনের) কর্ম বন্টন এমন ছিল।
# আদর্শের জন্য হযরত আবুবকর (রাঃ) কেমন করে গড়ে ছিলেন তার পারিবারকে। ছেলে আব্দুল্লাহ প্রতিদিন মক্কার সর্বশেষ তথ্য তথ্যাদির সরবারাহের দায়িত্ব। বড় মেয়ে আসমা খাদ্য সরবরাহ করা।প্রতিদিন ছাগলের পাল নিয়ে সওর পর্বতের কাছে যাওয়া। যাতে আব্দুল্লাহ এবং আসমা লোক চক্ষুর আড়ালে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
# এই ছিল সিদ্দিক পরিবারের অবস্থা।
মক্কার তাগুত জোট যখন নিশ্চিত হল রাসুল (সাঃ) হিজরতের জন্য বের হয়ে গেছেন। তখন একটি বড় দল নিয়ে আবুবকরের বাড়িতে হানা দেয় আবুজেহলে।
আসমা দরজা খুলে আবু জাহেলের মুখোমুখি। আবুজেহেলের প্রশ্নের জবাবে কিশরী মেয়ে আসমা বিনত আবুবকর সাহসের সাথে জবাব দিলেন। তিনি নির্লিপ্ত ভাবে বললেন - আমি কি জানি এই মূহর্তে আমার বাপ কোথায় আছেন।জবাব শুনে আবুজেহেল সাজরে থাপ্পড় মারে। প্রচন্ড শক্তিশালী মানুষ আবুজেহেল।আঘাতের প্রচন্ডতা এত ছিল - আসমা (রাঃ) কানের দুল ছিটকে পড়ে। অপর পার্শের কান দিয়ে রক্ত ঝরে। তার পরও সিদ্দিক পরিবারের এই সদস্য তাগুত শক্তিকে তথ্য সরবরাহ করেনি।
পারিবারিক শিক্ষা কাকে বলে। মাত্র কয়েক বছরে সাইয়েদুনা আবুবকর (রাঃ) তার পরিবারের অল্প বয়স্ক সদস্যদেরকে দ্বীনের জন্য তৈরী করেছিলেন।
দশ)
আমরা আমাদের পারিবারিক দায়িত্ব - দায়িত্ববোধের ব্যাখ্যা কিভাবে করবো?
আমাদের সন্তানদেরকে কি বোধ দিয়ে তৈরী করতে চাই। কতটুকুন সময় দেই?
সন্তানদের নিয়ে আমাদের প্রধান টার্গেট কি হয়? দুনিয়া অর্জনের জন্য সকল প্রকার ইনভেষ্ট করি সন্তানদের পিছনে।এবং প্রবাসীরা সফল ও হয়। বড় প্রতিযোগীতা। সন্তানদেরকে টাকা কামানোর মেশিন বানাবার। বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করতে নিজের সব কিছু বিলিয়ে দেই।
তার পর - সন্তানের দ্বীনি মানস গঠনের জন্য আমাদের ইনভেষ্ট কত? হিসাব করি - অথচ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুযোগ ছিল সাউদি আরবে।
========
আগামী পর্বে।
বিষয়: বিবিধ
১৭৪৯ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অথচ দেখা যায় নিজে দ্বীনের অনেক খেদমত করতেছেন। নিজে মাসের পর মাস দ্বীনি দাওয়াতের কাজ করতেছেন। কিন্তু নিজের সন্তানদের কোন খবর রাখেন না। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দার করুন। আমিন
শুকরিয়া শ্রদ্ধেয় ভাই!
মন্তব্য করতে লগইন করুন