প্রেম ভালবাসা আর পিরিত করার অধিকার -দায়িত্ব - দায়িত্ববোধ। = চতুর্থ পর্ব =

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৯ মার্চ, ২০১৫, ০১:৩৫:০২ দুপুর

নয়)

দৃশ্যকল্প - ২

=======

সাফা বিনতে মুহিত। ইন্টার শেষ করে দেশে যাবার অপেক্ষা। বাবা তেল কোম্পানীতে চাকুরী করেন। সাফা বাবার বড় সন্তান।তার আরো তিনটা ভাই আছে। তারা একই স্কুলে পড়ে। অসম্ভব মেধাবী। মা তাদের সব। ঢাকার শনির আখড়ায় তাদের বাসা। দেশের বাড়ি হল শেরেবাংলার জেলার পূর্ব পাশে।

সাফার ফেবু একাউন্ট বর্তমানে তালাবদ্ধ। সাফাকে বাহিরে যেতে দেয়া হয় না। এমনকি তার বান্ধবীদের সাথে ও না। দেশে যাবার জন্য সব কিছুই ঠিকঠাক করা। কলেজ ও হোষ্টেল সব ঠিক। বাবা যেতে পারবেন না। সাফার সাথে শুধু মা যাবেন। ভাই বোন থাকবে বাবার সাথে।

সাফার নিজের পরিকল্পনা এমন - সে দেশে যাবে। তাও সম্পূর্ণ একা। হোষ্টেলে থাকবে। কেই থাকবে না গোয়েন্দাগীরি করার। মন যা চাইবে তাই করা যাবে। গোছগাছ সবই ঠিক ঠাক। সাফা ফেবুর বন্ধুদের আগাম দাওয়াত দিয়ে রেখেছিল।

যাবার আগে একটি অনুষ্ঠান করার জন্য তাগাদা দিচ্ছিল সাফা তার বাপকে। মা রাজি কিন্তু বাবা সময় বের করতে পারছেন না। এর মধ্যে ঘটল বিপত্তি। সকল বিপত্তির নায়ক পহেলা বৈশাখ।

প্রবাসের বৈশাখ পালন। সীমিত আকারে স্কুল ও এম্বেসীতে পালন করা হয়।একদিনের জন্য হলেও বাঙ্গালী হবার কসরত করা।

সাফার বন্ধু মুনা। তার বাবা পেশায় প্রকৌশলী । বড় বেতন পান। চাকুরীস্থল ইয়ানবু। মেয়ে আর স্ত্রী বসবাস করেন জেদ্দায়। মুনার লেখাপড়ার স্বার্থে বাবা ইয়ানবু থেকে আসেন প্রতি সপ্তাহে। যে দিন ঘটনাটা ঘটে সেদিন মুনার মা ছিলেন বাহিরে বান্ধবীর বাসায়। সাফা এবং মুনা তাদের ছেলে বন্ধুদের দাওয়াত করে। পয়লা বৈশাখ উদযাপন করবে একসাথে।তারা সবাই একই চেতনায় বড় হয়েছে।

সাফা - মূনা মিলে চারজন। একজন আরেক জনের প্রেমিক - প্রেমিকা।পহেলা বৈশাখ পালন করতে গিয়ে তাদের জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা বিনিময়।তার পর -

ঘরে আর কতক্ষণ। স্বাভাবিক বাহির হওয়া। চারজন একসাথে বেরিয়ে পড়ল।

সন্ধার আগে বাসায় ফিরতে হবে। সেরকম পরিকল্পনা নিয়ে তাদের সমুদ্র বিহারে যাত্রা। পরিকল্পনা মতে সব ঠিক মত ই চলছিল। বিপত্তিটা হল বেরসিক পুলিশ। পুলিশ ধরে নিয়ে যায় সোজা থানায়। রাতের শেষ প্রহরে উভয় পরিবারের সদস্যরা গিয়ে থানায় হাজির। তার পর নানান মুছলেকা দিয়ে ঘরে ফেরত।ঘটনা এই পর্যন্ত। কিন্তু এটা চর্চায় চর্চিত হয় গোটা কমিউনিটি। সাফাকে ফেবু থেকে দুরে রাখা আর দেশে না পাঠানোর মুল কারণ এটা।

ফলাফল হল - সাফা এবং মুনার কাছে তাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলো (বাবা - মা) এখন সবচেয়ে বেশী অপ্রিয়। প্রেম - ভালবাসা - পিরিত।

এখানে দায়ী কে? কিভাবে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা হবে।কেন এমন হল।সাফার জন্য গোটা পৃথিবী চার দেয়ালের ভিতর। এখানে কার দায়িত্ব কি ছিল? এখানে দায়িত্ববোধটা কেমন হওয়া উচিত ছিল?

আমাদের দৃশ্যকল্প ২ এর ইতি।

দশ)

আসুন এখন শতকরা অঙ্ক করি। মনে করুন আমি ইসলামী আন্দোলনের কর্মী / নেতা / সমর্থক।অথবা আমি অন্য যে কোন ইসলামী দল করি।মনে প্রানে চাই দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হউক। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীর মূল চাওয়া এমনই হয়।

মোটা দাগে বললে - আখেরাতে নাযাত আর দুনিয়াতে ইনসাফ কায়েম করা। তবে ব্যক্তির নাযাত ই মূখ্য।সূরা আস সফ পড়ুন (আয়াত ১০-১১-১২) - দেখবেন - দুনিয়ার বিজয় - মহান আল্লাহর সাহায্য এগুলো পরের ষ্টেপ। অনেকটা ঐচ্ছিক চাওয়া পাওয়ার বিষয় হিসাবে দেখানো হয়েছে।

রাসূলের প্রতি নাযিল হওয়া ২য় ওহির পর্যালোচনা করুন। সূরা আল মুদ্দাসীর।(আয়াত ১ থেকে ৫)
বিষয়টা হল - ইসলামী আন্দোলনের ব্যক্তির টার্গেট পরকালীন নাযাত। আর সামগ্রিক টার্গেট হল দ্বীনের বিজয়। এজন্য একজন মুসলমান প্রকৃত ঈমানদারের সকল কর্মকান্ড হবে পরকাল কেন্দ্রিক।

রাসূল (সাঃ) এর পর সাহাবীদের জামাতের জীবন বোধ এমন ছিল। এবং এজন্য তাদের যুগ ই ছিল সকল বিবেচনায় সবচেয়ে সেরা।তাদের চাওয়া পাওয়া - বস্তুবাদি চিন্তা চেতনায় হিসাব নিকাশ ছিল না। তাদের জীবনের উদ্দেশ্য বলতেই দ্বীন ছিল।দ্বীন ই একমাত্র জীবন উদ্দেশ্য।

একটি উদাহরণ দেয়া -

==========

হযরত আবু বকল সিদ্দিক (রাঃ)। ছিলেন মক্কার বিরাট ধনকুবের পুত্র। নিজেও ছিলেন ব্যবসায়ী। ইসলাম গ্রহনের সময় সম্পদের পরিমান ছিল চল্লিশ হাজার দিরহাম। হিজরতের সময় সেই সম্পদ নেমে আসে চার হাজার দিরহামে। আর খেলাফতের দায়িত্বগ্রহনের সময় এই মানুষটি একেবারে ফকীর। নিজের পরিবারের আহার যোগাড় করতে হত অন্যের কাজ করে দিয়ে। এই হল একটি চিত্র।

এবার আসুন হযরত আবুবকর (রাঃ) পরিবারের একটু খবর নেই।দুনিয়ার জৌলূশ বলতে যা বুঝায় তা কিছুই ছিলনা এই পরিবারে। গোটা পরিবার ছিল দ্বীনের জন্য। এমন ভাবে তৈরী করেছিলেন সাঈয়েদুনা আবুবকর (রাঃ)।

হিজরতের সময়ের একটি ঘটনা থেকে এমন দৃষ্টান্ত পাই। মক্কার স্যেকুলার ও তাগুত শক্তি যখন সম্মিলিত সিদ্দান্ত নিল রাসূল (সাঃ) কে হত্যার। তখন মহান আল্লাহ হিজরতের অনুমতি দিলেন।হিজরতের অনুমতি পেয়ে পূর্ব প্রস্তুতির জন্য রাসূল (সাঃ) সাথী আবু বকরের (রাঃ) বাড়িতে হাজির। হযরত আবু বকর (রাঃ) বাড়ী বর্তমান এই টাওয়ারের আশে পাশে ছিল। পরে এই বাড়ীতে একটি মসজিদ ছিল। যার নাম ছিল সাঈয়েদুনা আবু বকর মসজিদ।



========

আগামী পর্বে।

বিষয়: বিবিধ

১৫৭৯ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

308021
০৯ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:০৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

এটুকুর দরকার ছিল কি??
..বিনতে মুহিত। ... ঢাকার শনির আখড়ায় তাদের বাসা। দেশের বাড়ি হল শেরেবাংলার জেলার পূর্ব পাশে। m/ Loser

আমার মতে, অনেকেই বিব্রতবোধ করতে পারেন-
যেহেতু আপনার কোন ফুটনোট দেয়া নেই-
এবং ঘটনাটির বর্ণনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শণাক্তকরণে সহায়ক! Thinking

কলম হোক তরবারির মত, কিন্তু যেন নির্দিষ্ট কাউকে আহত না করে!!
Praying Praying Praying
১১ মার্চ ২০১৫ সকাল ১০:১৪
249369
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : এত অহেতুক বিধিনিষেধ মানলে তো ভাই কোন লেখাই এগুবেনা। শেরেবাংলার জেলার পূর্ব পাশে লক্ষ লক্ষ লোক বাস করে। একই নামেও নিশ্চয়ই শত শত মানুষ আছে। এছাড়া তিনি তো ছদ্মনামও দিতে পারেন। সবকিছুর জন্য ফুটনোট দিতে হবে কেন? স্ট্রেঞ্জ!
১৬ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:৪৮
250346
আবু সাইফ লিখেছেন : @প্রেসিডেন্ট : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আপনার কথাও ফেলনা নয়, তবে-

কাকতালীয় বা হাঁসতালীয়- যা-ই হোক, পরিচিতিবৃত্তের নাম এড়িয়ে যাওয়া উত্তম! নামের তো আকাল পড়েনি!

অপরকে বিব্রত করা থেকে বেঁচে থাকাটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়!
308023
০৯ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:১১
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আবারও সতর্ক করার জন্য। জাযাকাল্লাহু খায়ের।
308061
০৯ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৪
শেখের পোলা লিখেছেন : শেষ হয়েও হইলনা শেষ৷ ভালই চলছে, পরেরটির অপেক্ষায়৷
308066
০৯ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : ধন্যবাদ।
308103
০৯ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৪৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পরিবারে প্রকৃত ইসলামি শিক্ষা নাই। কিন্তু পিতা-মাতা সুবিধা মত কেন ইসলামের অধিকার এর দাবি করবে সেটাই বুঝিনা!
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৩০
249228
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : রিদওয়ান ভাই আপনার মন্তব্যের ২য় অংশটা বুঝতে পারিনি। একটু পরিস্কার করবেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:১৯
249232
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক পিতামাতা কে দেখেছি সন্তান কে ইসলামি শিক্ষা দেওয়া এবং পর্দার বিধান সম্পর্কে উদাসিন। কিন্তু বিয়ে বা প্রেমের ক্ষেত্রে তারা ইসলামের দোহাই দিতে চান। সেটাই বুঝতে পারিনা কেন।
308127
১০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৩:৪০
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসলামুআলাইকুম! পরিবারের অগোচরে ছেলেমেয়েরা অনেক সময় ভুল করে বসে এই বিষয়গুলো নিয়ে এজন্য বাবা মায়েদর অনক বশি সাবধান থাকা দরকার!শুকরিয়া ভাই শেয়ার করার জন্য। Good Luck
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৩১
249229
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : সহমত আপনার সাথে।সবাইকে সাবধান হওয়া উচিত।
308169
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:২৩
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : জাত অজাত কুজাত আর শিক্সিত অশিক্ষিত মিলে প্রবাস জীবন একেবারেই লেভেলহীণ। যাদের সন্তান সন্ততি এমন কাজে লিপ্ত, পয়সার দাপটে কিছুটা সভ্য মনে হল্ওে ভেতরে একেবারেই ফাকা। এসব লোকগুলোই যেন প্রবাসকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এসব বেহায়া পিতামাতার জন্য পুরো প্রবাসীরাই ভুক্তভোগী।

...দ্বীন প্রতিষ্ঠা! খুব লজ্জা লাগে সে সব নেতার নাম মুখে নিতে যারা দালালী গীবত আর ব্যবসার নামে নীরীহ কর্মীদের পকেট হাতিয়ে টাকা নেয়। ছি। অযোগ্য লোকদেরকে সব সময় দেখেছি তেল মেরে উপরে উঠতে। প্রবাসেও তাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৩২
249230
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : এই শ্রেনীর মানুষগুলোর জন্য সংশোধনীর পথ রাখা উচিত। সকলের প্রচেষ্টায় হতে পারে।
310475
২২ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৪

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File