প্রেম ভালবাসা আর পিরিত করার অধিকার -দায়িত্ব - দায়িত্ববোধ।

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৪ মার্চ, ২০১৫, ০১:৫৬:৫৫ দুপুর



এক)

আপনি কেমন মানুষ। এরকম শত শত ঘটনা আমার জানা।আপনাদের কোন দায়িত্ব নেই। আপনারা কি করছেন। একটা বিহীত করা উচিত।

ফোনে জিয়া ভাই এক সাথে আরো অনেক কথা বললেন। তার ক্ষোভ ঝাড়লেন অনেকক্ষণ। আমি কি বলবো - কি বলা উচিত - কিছু ই বলতে দিলেন না। বললেন আজ রাত আমি দেখা করব।বাসায় থাকবেন।রীতিমত ধমকালেন।

রাতে দেখা করে যা বললেন - তা শুনে মাথা খারাপের অবস্থা।সামান্য একটা বিষয়কে বড় বিষয় বানিয়ে নিজেই যুদ্ধের ময়দানে নেমেছেন। তিনি একটা বিহীত করবেন। তার সাহায্য প্রয়োজন। এবং আমাকে তার সাহায্য করতে ই হবে।

ঘটনার বিবরণ হল।

ইন্টারে পড়ুয়া ছাত্রীর সাথে জিয়া সাহেবের ছোট ছেলের প্রেম। তার ভাষায় প্রেম নয় বরং ভালবাসার সব দেয়াল টপকে একেবারে শেষ প্রান্তে। এর জন্য দায়ী হল বজ্জাত মেয়েটা। জিয়া সাহেবের দাবী - তার ছেলে এরকম নয়। বরং সে ভাল ছিল।

আমি উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম - তাদের মধ্যে কিছুই কি বাকি নেই।সব শেষ।

জিয়া সাহেব বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন আপনি তামাসা করছেন। আল্লাহ আপনাকেও ছেলের বাপ করেছেন।

দুই)

কিছুটা শান্ত হবার পর প্রশ্ন করলাম। ভাই আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন?

ভাবী কি তার দায়িত্ব পালন করেছেন?

সন্তানদের লালন পালনের যে দায়িত্ব মহান আল্লাহ দিয়েছেন। তার সঠিক চর্চা - বাস্তবায়ন - পারিবারিক আবহ সেরকম করেছি। বললাম জিয়া ভাই আমরা তো সবাই ছেলে মেয়েদেরকে বস্তুবাদি জীবনের জন্য তৈরী করার কারখানার কাচামাল হিসাবে ব্যবহার করছি? আমাদের সকল চেষ্টা - প্রচেষ্ট - আয়োজন - ইনভেষ্ট সবই তো দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা করার।

আমার মনে হয় - পারিবারিক দায়িত্ব পালন করার পর তৃতীয় পক্ষের প্রতি আঙ্গুল উচুঁ করুন।স্কুলের কতৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালন করতে সহযোগিতা করা উচিত সকলের।অথচ স্কুলের অবিভাবকরা বিপরীতটাই করে। এই যেমন আপনি বলছেন - আপনার ছেলে ভাল। আগামী কাল মেয়ের বাপ এসে বলবে তার মেয়ে বেশী ভাল।স্কুল কতৃপক্ষ যাবে কোথায়? করবে টা কি? তাদের করার ক্ষমতাটাই বা কতটুকু।তার পর আছে অভিবাভকদের অনায্য মাতব্বরী? একমত হতে পারেন আবার নাও হতে পারেন।

এ ছিল অসংখ্য ঘটনার মধ্যে একটি। শুধু জেদ্দা নয় - বরং মক্কা,মদিনা,তায়েফ সহ আশে পাশের সকল শহরে অবস্থানরত প্রবাসীদের একমাত্র ভরসা হল "বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল স্কুল এন্ড কলেজ"। স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই স্কুলটির অবদান কম নয়। এই স্কুল থেকে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা আজ পৃথিবীর অনেক দেশে সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। অসংখ্য সীমাবদ্ধতা - নানান জটিলতা - হাজারো সমস্যা নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান ফলাফলের দিক থেকে ঢাকা বোর্ডের সেরা দশের একটি।

স্কুল - স্কুলের পরিচালনা পরিষদ - স্কুলের সম্মানীত শিক্ষক - শিক্ষয়ত্রী নিয়ে অনেক পক্ষ - বিপক্ষ সমালোচনা আছে। এ নিয়ে রাজনীতি ও কম করা হয়নি। স্কুল নির্বাচনে দেখা যায় আমাদের আসল চরিত্র। আমরা বিভক্ত জাতি এটা আরো প্রকট আকারে দেখা যায় প্রতি দুবছর পর পর।আমার মনে হয় এই বিভক্তির হয়তো সমাধান করা যাবে না। আর সবাইকে খুশি করার মত পরিবেশ করা যাবে না।

তবে গর্ব করার মত ফলাফল - ঐতিহ্য রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

তিন)

মাগরিবের সালাত আদায় করে বাসায় যাচ্ছি। আমার পিছনে গাড়ী ব্রেক কষার আওয়াজ পেলাম। তাকিয়ে দেখি সাউদি মুতাওয়ার (শাইখ) গাড়ী।আমাকে হাতের ইশারায় ডাকলেন। ভাবলাম সালাত তো পড়ে আসলাম। মুতাওয়া কেন ডাকতেছে?আবার পড়তে বলে নাকি। মাথায় হাত দিয়ে টুপিটা ঠিক করলাম।

বেশ কয়েক বছর আগের এরকম একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।

আল গাছিম প্রদেশের ছিমছাম শহর আল রা'স। সাউদি আরবের বড় বড় আলেমদের শহর হিসাবে পরিচিত।এই আল রা'সের পাশের শহর আল বুকারিয়াতে শাইখ সুদাইসের বাড়ী।

সালাতুল আছরের পর বন্ধু সহ বাজার করার জন্য সবজির দোকানের দিকে যাচ্ছি। মাঝ পথে মুতাওয়ার গাড়ী। থামিয়ে জিজ্ঞেস করছেন সালাত আদায় করেছ? আমরা মুখে কথা না বলে মাথা নাড়ালাম। বলা হল গাড়িতে উঠতে। গাড়ীতে বসলাম। আমরা একজন আরেকজনকে দেখছি। কেউ কথা বলছে না।কয়েকবার চেষ্টা করেও কথা বলার অনুমতি পাওয়া যায়নি।

শহরের মধ্যেই 'হাইয়াতুল আমর বিল মা'রুফ ওয়ান নাহি আনিল মুনকারের' অফিস। সংক্ষেপে বলা হয় হাইয়ার অফিস। বাংলায় বলা যেতে পারে - ডাক দেবার অফিস বা আহব্বান করার অফিস। যারা সালাতের জন্য মানুষকে ডাকে।

এই দায়িত্বটা ইসলামী কল্যাণকর রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য জরুরী একটি বিষয়। মুসলমানদের মধ্যে একটি গ্রুপ দাওয়াতের কাজ করবেই। মুসলিম দেশে দ্বীন কায়েম করা ফরজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য। আর দ্বীন কায়েম হয়ে যাবার পর একটি দল এই কাজ করবে।

বলা যেতে পারে হাইয়া হল সেরকম একটি কাজ।

অফিসে যাবার পরই নির্দেশ করা হল অজু করতে। বললাম অজু তো আছে। বলা হল আবার অজু করতে। দুই বন্ধু আবার অজু করলাম। আছরের সালাত আবার পড়তে বলা হল। আমরা যেহেতু আগে পড়েছি তাই নফল নিয়তেই আবার চার রাকাত পড়লাম। সালাত পড়ার পর আমরা বসলাম প্রধান শাইখের সামনে এবং আমাদের পরিচয় দিলাম। শাইখ খুবই লজ্জিত হলেন। দু:খ প্রকাশ করলেন। গাওয়া আর চা খেয়ে বিদায় হলাম।

=========

আগামী পর্বে।

বিষয়: বিবিধ

১৫০১ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

307226
০৪ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৪০
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ ।


লেখাটা ভালো হয়েছে, জাযাকাল্লাহ


তবে "জিয়া" নামটা যদি সত্যিই কারো হয়ে থাকে তবে সেটা না এলেই ভালো হতো মনে হয়!

পরের পর্বের অপেক্ষায়..
307232
০৪ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৯
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আলহামুদলিল্লাহ।আপনাকে মোবারকবাদ।
জিয়া নামটা হতে পারে কারোর নাম। আবার দেশের এক সময়ের প্রেসিডেন্ট ও ছিলেন জিয়া নামের এক মেজর।
আমার পরিচিত চারজন আছেন জিয়া নামে। তবে তাদের কারোর ই নাম শুধু জিয়া নয়। নামটা এখানে আসল নয়। বরং তা নকল।
আবার আমার জিয়া নামটা খুবই পছন্দের।
আগামী পর্বে কথা হবে ইনশাআল্লাহ।
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৩৮
248536
আবু সাইফ লিখেছেন : মন্তব্যের জবাব যদি নতুন মন্তব্যের ঘরে হয় তবে তো সেটা মন্তব্যকারীর অজানাই থেকে যাবে!
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:২৭
248551
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : এটি পড়ে জিয়া নামের কেউ যদি মনে করে তাকে বলা হয়েছে, বুঝতে হবে হেতে ছুতিয়া নাম্বার ্ওয়ান।
307240
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:১৮
অষ্টপ্রহর লিখেছেন : অনেক ভাল লাগলো।বিশেষ করে ধন্যবাদ নিবেন|
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:০৬
248607
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ।
307251
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:২৩
শেখের পোলা লিখেছেন : এটাতো 'ইকরাহা ফিদ্দীন' হয়ে গেল৷ যাক পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম৷ ধন্যবাদ৷
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:০৭
248608
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মাশাআল্রাহ - না বুঝে করেছে। পরের পর্বের তার ব্যাখ্যা আছে।
307262
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:২৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : নিজের ছেলে যখন সবার অমতে বিয়ে করে আনে তখন মেয়েটা ডাইনি। আর মেয়ে যখন কারো সাথে পালায় তখন ছেলেটা গুন্ডা!!!
আমাদের এই অন্ধ আস্থার চরিত্রই জাতিগতভাবে ধ্বংস করছে। নেতানেত্রিদের প্রতিও বুদ্ধি বিবেচনা বাদ দিয়ে আমরা অন্ধ অনুসরন করছি।
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:০৮
248610
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : ভাই আপনি তো মাশাআল্লাহ দুই লাইনে আমাদের চরিত্র বয়ান করে দিলেন।
307263
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:২৯
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম। বস দারুণ হইছে। বড় ব্যাপার হল, শূধু ঘটনা নয়, শিক্ষণীয় অনেক কিছু আছে। ধন্যবাদ। ধারাবাহিকতার এর ক্লাশে নিয়মিত হাজিরা দেবার ইচ্ছে আছে।
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:০৯
248611
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মোবারকবাদ স্যার। আপনার মত লেখার হাত হলে পারতাম। দোয়া চাই।
307264
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:২৯
আফরা লিখেছেন : নিজের দুষ কেউই স্বীকার করে না ।ভাল লাগল ধন্যবাদ ।
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:১০
248613
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : নিজের পর্যালোচনা করে আগাম ঠিক করার জন্য দোয়া চাই।
307271
০৪ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৪৬
আবু জারীর লিখেছেন : জেদ্দার স্কুল এন্ড কলেজটা নিয়ে বাঙালীদের গর্বিত হওয়া উচিৎ এবং সেটার মান কিভাবে ধরে রাখা যায় সে চেষ্টা করা উচিৎ কিন্তু এক শ্রেণীর অভিভাবক যাদের কথা বললেন তারা সব সময় নিজেদের স্বার্থের ধান্দায় থাকে। স্বর্থপরতা কেমন যেন একশ্রেণীর বাঙালীদের রক্তে মিশে গেছে।
ধন্যবাদ।
০৫ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:১০
248615
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মাত্র কয়েকজন মানুষের জন্য একটি ভাল প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে। সত্য বলেছেন।
308040
০৯ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০৩:০৫
মহিউডীন লিখেছেন : আপনার সুচিন্তিত তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।ব্লগ এখন শিখা এবং শিখানোর একটি বড় মাধ্যম।সুন্দর বাচন ভংগিতে সমস্যা তুলে ধরা এবং সুচিন্তিত মতামত পেশ করা যাতে সংস্কারের কাজটি সমাজে প্রতিফলিত হয় দ্রুত।যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য মুল টুলটি হলো মানুষ।এ মানুষটি যদি সৎ চরিত্রবান ও বিকশিত হয়ে গড়ে উঠে তাহলে পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,অফিস আদালত সবকিছুই সুন্দর হতে বাধ্য।গ্রীক দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন,কোন মানুষ খারাপ কিছু পছন্দ করে না,সে খারাপ কাজটি করে অজ্গতা থেকে।' এই অজ্গতা দূর করার উপায় হলো ধর্মীয় অনুভূতি জাগ্রত করা এবং ভাল বই পড়া।পড়ার মাধ্যমে অন্তর আলোকিত হয়।এই আলোকিত মানুষ সমাজে যত বেশী তৈরি হবে সমাজ থেকে পংকিলতা দূর হবে।
১০
308051
০৯ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:২২
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মাশাআল্লাহ - আপনার মন্তব্য আমাকে উৎসাহিত করবে ইনশাআল্লাহ।আপনার সাথে একমত। এই ব্লগে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আলহামদুলিল্লাহ।
১১
308154
১০ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:০২
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো|ধন্যবাদ|
১২
308178
১০ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:২৯
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ।
১৩
308309
১১ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৪৬
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : মানুষ গড়ার একজন কারিগর হিসেবে আছেন জেনে খুব ভাল লাগলো।
রিদওয়ান কবির সবুজ ভাই যথার্থ মন্তব্য করেছেনঃ
নিজের ছেলে যখন সবার অমতে বিয়ে করে আনে তখন মেয়েটা ডাইনি। আর মেয়ে যখন কারো সাথে পালায় তখন ছেলেটা গুন্ডা!!!
আমাদের এই অন্ধ আস্থার চরিত্রই জাতিগতভাবে ধ্বংস করছে। নেতানেত্রিদের প্রতিও বুদ্ধি বিবেচনা বাদ দিয়ে আমরা অন্ধ অনুসরন করছি।
১১ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০১:৪৮
249402
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আমি ও একমত আপনাদের সাথে। অনেক অনেক মোবারকবাদ। আমার মত গরীব ব্লগারের বাড়িতে এসেছেন। খুব উৎসাহিত হলাম।
১৪
311440
২৮ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:০৩
১৫
312316
০২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ১২:৩৪
shaidur rahman siddik লিখেছেন : লেখাটা অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ২য় পর্বের আশায় রইলাম

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File