আল কোরআনের সম্মোহনী শক্তি ও আমাদের বিচারক সমাজ - পর্ব - ৫

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:২২:৪৯ বিকাল

৪র্থ পর্বের পর

==========

দেশীয় আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত শুরু ২০০১ সালের নির্বাচনের পর।জামায়াতের দুজন মন্ত্রী হওয়ার পর তা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পায়। কয়েক হাজার সাংবাদিক, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সোসাল মিডিয়া মিলে জামায়াতের দুই মন্ত্রীর কোন দুর্নীতির কোন খবর সংগ্রহ করতে পারেনি। গরীব দেশের ৪৬টা মন্ত্রনালয়ের মধ্যে খয়রাত খাওয়া (সাবসিডি) মন্ত্রনালয় গুলোর একটি হল সমাজকল্যান মন্ত্রানালয়। জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ছিলেন এই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী। যে মন্ত্রনালয় চলতো খয়রাতের পয়সা দিয়ে। সেই মন্ত্রনালয় পাচঁ বছরের মাথায় এসে লাভজনক মন্ত্রনালয়ে পরিণত হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী সময়ের অর্থ মন্ত্রী মরহুম সাইফূর রহমান সাহেব বলেছিলেন- এটা মিরাকল। কেমন করে তা সম্ভব হল তিনি জানতে চেয়েছিলেন জামায়াত নেতা মুজাহিদ সাহেবের কাছে।

জামায়াতের আমীর জনাব নিজামী সাহেব যে মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে ছিলেন – শিল্পমন্ত্রনালয়। অবশ্য অল্প দিন ছিলেন – কৃষি মন্ত্রী। মাঝখানের হাইফেন সরকার (আইএমএফ বা উদ্দিনদের) পরবর্তী আওয়ামীলীগের পাঁচ বছর রাষ্ট্রীয় সকল চেষ্টা করে কোন সামান্যতম দুর্নীতি বের করতে পারেনি।

সম্পুর্ণ নতুন অথচ সফল মন্ত্রনালয় পরিচালনা করা, ঐ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীরা যখন দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান তখন তারা দুজন আলাদা একটি পরিচয় জাতির সামনে তুলে ধরেন।

জামায়াতের অনেক রাজনৈতিক সিদ্দান্ত বিতর্কিত হবার পরও দেশের সাধারন এবং শিক্ষিত সমাজ রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে শতভাগ সততার দৃষ্টান্তকে বিবেচনা করতে শুরু করে। ঐ সময় (২০০৯)ওমরা করতে আসা একজন সচিব। তিনি জেদ্দাতে এক ঘরোয়া পরিবেশে বেশ খোলামেলা মন্তব্য করেন।

“জামায়াতের দুই মন্ত্রী যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন – তার প্রভাব পড়েছে গোটা প্রশাসনে। এর ফল জামায়াত পাবে আরো কয়েক বছর পর। আমার চিন্তায় জামায়াত সমান্তরাল রাজনীতি করে না। সমান্তরাল বলতে আমি সামগ্রিক রাজনীতির কথা বলছি। বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের থিংক ট্যংক রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে। জামায়াতের কোন উপদেষ্টা পরিষদ নেই।জামায়াতের থিংক ট্যংক বলতে যা আছে সেগুলোর লাগাম জামায়াতের কোন না কোন নেতার হাতে। এ জন্য জামায়াত যখন যা করতে চেয়েছে তা একমুখি হয়েছে। জামায়াতের উচিত হবে আগাম বিপদ সম্পর্কে এখনই পদক্ষেপ নেয়া। কারন এর আগে জামায়াত শুধুমাত্র রাজনৈতিক শক্তিই ছিল। ক্ষমতায় স্বাদ নেয়ার পর একমুখি রাজনীতি দিয়ে চলবে না।”

স্পষ্টত ২০০১ এর নির্বাচনের পর এবং সফল ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণ জামায়াতের শত্রুর সংখ্যা আগের চাইতে বেশী হয়েছে। কারন এখানে বড় বড় ফ্যক্টর কাজ করে। তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কখনোই দুর্নীতিমুক্ত প্রসাশন গড়তে দেয়না। এটা শিল্পোন্নত দেশ গুলোর সম্মিলিত সিদ্দান্ত। গরীব দেশগুলোতে চরম দুর্নীতিবাজ নেতৃত্ব, নৈতিক ভাবে দুর্বল লোকদের হাইলাইট করে। জামায়াতের মন্ত্রীরা যে সততার পরিচয় দিয়েছেন তার জন্য তাদেরকে খেশারত দিতে হয়েছে এবং হচ্ছে। কারন এই মহত গুনটি আমাদের প্রচলিত রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য আত্মহত্যার সমতুল্য।” এই সচিব নিজে জামায়াতের রাজনীতির বিরোধী ছিলেন। এখন ও আছেন।

আগামী পর্ব রবিবার – ৬

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৮ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

275015
১৬ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : আপনার প্রাণবন্ত লিখাটি এক নিশ্বাসে পড়ে শেষ করে ফেললাম। কোরানের সম্মোহনী শক্তির টানে জামায়াতের দুজন মন্ত্রী যে স্বাধীন বাংলার অতীতের সকল মন্ত্রীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এ সততা যদি কোন আওয়ামীলীগ মন্ত্রী করতো তাহলে সাংবাদিকরা এ নিয়ে মাঠে নামত। কিন্তু দু"খজনক হল, আব্দুল্লাহর ছেলে শূধূ মোহাম্মদই এ দ্বীনের কারণে জাহেলদের কাছে হিংসার পাত্র হননি, তার অনুসারীরাও তা থেকে মুক্তি পায়নি। ধন্যবাদ ভাইজান।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৭
219872
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই আনন্দিত। কষ্ট করে পড়েছেন এবং সুন্দর মন্তব্য করেছেন। তাই আপনাকে আন্তরিক মোবারকবাদ।
275018
১৬ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৯
আবু ফারিহা লিখেছেন : ”এই মহত গুনটি আমাদের প্রচলিত রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য আত্মহত্যার সমতুল্য।”

অপ্রিয় হলেও একদম সত্যি কথা বললেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৭
219874
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনাকে ও অসংখ্য মোবারকবাদ। সত্য বলার লোক কম নয় - তবে বলেন কম।
275034
১৬ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৮
219875
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মন্তব্য করার জন্য আপনাকে মোবারকবাদ।
275045
১৬ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:০৫
শেখের পোলা লিখেছেন : তারা আজ জেলখানায়৷ যাদেরকে সততা দিয়েছেন তাা এখন তামাশা দেখে৷ যতদিন না আমরা তাগুতের আনুগত্য ছাড়ব, ততদিন আমাদের কোন সফলতা পাব না৷ধন্যবাদ আপনাকে৷
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৯
219877
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : তাগুতের আনুগত্য ছাড়া নয় - বরং কোরআনে অস্বীকার করতে বলা হয়েছে। আপনাকে ধন্যবাদ।
275066
১৬ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:১৩
ফেরারী মন লিখেছেন : জাজাকআল্লাহ... অনেক ভালো লাগলো । চলতে থাকুক
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৯
219878
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনাকে জাজাকাল্লাহ খাইর। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
275070
১৬ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪৪
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের থিংক ট্যংক রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে। জামায়াতের কোন উপদেষ্টা পরিষদ নেই। জামায়াতের থিংক ট্যংক বলতে যা আছে সেগুলোর লাগাম জামায়াতের কোন না কোন নেতার হাতে। এ জন্য জামায়াত যখন যা করতে চেয়েছে তা একমুখি হয়েছে। জামায়াতের উচিত হবে আগাম বিপদ সম্পর্কে এখনই পদক্ষেপ নেয়া।


ঐ সময় (২০০৯)এর পরে পাঁচবছর চলে গেছে,
এ ব্যাপারে কোন অগ্রগতি হয়েছে বলে আপনি মনে করেন কি???


ধারাবাহিক পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:০০
219880
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। আপনাকে মোবারকবাদ।
275084
১৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:১১
সন্ধাতারা লিখেছেন : Chalam vaiya. It is a valuable writing to know the truth. Jajakallahu khair.
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:০০
219881
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ। সাথে আছেন - আলহামদুলিল্লাহ।
275086
১৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:১৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
আমাদের সমস্যা হচ্ছে চোখের সামনে উদাহরন দেখেও আমরা সত্য বিশ্বাস করতে বিব্রত। আর জেনে শুনেও কিছু মিথ্যভাষি উচ্চকন্ঠের কথায় প্রভাবিত হই।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:০১
219882
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : একেবারে সত্যি বলেছেন। একমত আপনার সাথে।
275138
১৭ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৫:০৬
কাহাফ লিখেছেন :
জবাবদিহীতার প্রশ্ন থাকলেই মানুষ স্বেচ্ছাচারীতা মুক্ত হতে পারে, আর জবাবদিহীতার মনন গড়ে উঠে আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস থেকে, যা জামাতে ইসলামীর লোকদের সহজাত গুণ। তাই তো দুর্নীতি মুক্ত মন্ত্রণালয় তারা চালাতে পেরেছে।
আলকোরানই মানুষকে শান্তির জোয়ারে ভাসাতে পারে।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:০২
219884
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার সাথে একমত। মোবারকবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File