উপস্থাপক ফারুকী সাহেবের হত্যাকন্ডের প্রতিক্রিয়া
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৫৫:৫০ দুপুর
জনাব মরহুম ফারুকী সাহেব একজন পরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। ফেবুতে তাকে নিয়ে ভাল মন্দ মন্তব্য করা হচ্ছে। আমি গতকাল শুনার পর থেকে ভাবছিলাম - কেন তার এরকম পরিণতি হল। বয়স তো খুব বেশী হয়নি। মাত্র ৫৫ বছর।
জেদ্দায় একবার দেখা হয়েছিল। প্রোগ্রাম নিয়ে কথা হেয়েছে।অবশ্য ফারুকী সাহেবের আকিদার সাথে মোটেই একমত ছিলাম না। এখন ও না। দেশের হক্কানী আলেমরা জনাব ফারুকী সাহেব কে নিয়ে খুবই প্রান্তিক মন্তব্য করেন।
কেউ বলেন - রঈস আল মুশরিকিন। কেউ বলেন - বেদআতীদের সরদার।আবার কেউ আরো বাজে মন্তব্য করেন।
চ্যানেল আইর প্রোগ্রাম দেখা তেমন সময় হয় না। কারন এই টিভি,টিভির কতৃপক্ষ আর প্রথম আলো গ্রুপটা হল তথাকথিত সুশীল বান্ধব।
প্রথম আলো,ডেইলি ষ্টার,চ্যানেল আই সহ এই ঘরনার মিডিয়ার উদ্দেশ্য হল - শিকড় সন্ধানের নাম করে আমার দেশে রামপন্থী সাংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা।তাওহীদ পন্থী চিন্তা চেতনার বিপরীত অবস্থান তাদের। এরকম মিডিয়াতে কাজ করতেন জনাব ফারুকী সাহেব।
তার উপস্থাপিত অনুষ্ঠান মালাতে কোরআন সুন্নাহর দলীলের বিবরণ থাকতো কম। মূলত ফারুকী সাহেবের মূল টার্গেট থাকতো - দেশের জনপ্রিয় এবং সত্যবাদি (হক্কানী) আলেম ওলামার বিষদগার করা।এটা আমরা পছন্দ করতাম না।
জেদ্দাতে প্রবল ইচ্ছা থাকার পরও এগুলো কিছুই বলিনি। কারন ছিল - ফারুকী সাহেবের চিন্তাধারার গঠন ছিল ইসলাম এবং মুসলামানদের জন্য খুবই বিপদজনক। আমার কাছে মনে হয়েছে - শিরক,বিদআত এবং সঠিক ইসলাম চর্চার ক্ষেত্রে রয়েছে তার চরম দৈনতা। আল্লাহ তাকে মাফ করুন।
যেভাবে তিনি নিহত হলেন - সেভাবে একজন আলেমের শেষ পরিণতি হবে এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। হাদীস শরীফে ভাল মৃত্যুর বেশ কয়েকটি পরিচয় রয়েছে। দুর্ভাগ্য যে ফারুকী সাহেব সেরকম কোন মৃত্যু হয়নি।
যদিও তার একান্ত অনুসারীরা বলছে শহীদ।
বেশ কিছুদিন থেকে শোনা যাচ্ছিল - - ফারুকী সাহেব এবং ওলামা লীগের একজন নেতার (যিনি প্রধানমন্ত্রীর খুবই কাছের) হজ্জ কাফেলা নিয়ে চরম সমস্যা চলছিল। সরকারের আনুকুল্য ছিল ওলামালীগের নেতার পক্ষে। আর ফারুকী সাহেবের পক্ষে ছিলেন সুশীল মন্ত্রী দু জন। এ নিয়ে দুই বার সমাধানের চেষ্টা করেছেন বটতলার উকিলখ্যাত মন্ত্রী।টাকা নিয়ে চরম ঘাপলা ছিল।
ফারুকী সাহেবের ছেলে সাউদিতে ঘরভাড়া করতে এসেছেন।আজ তিনি চলে যাবেন পিতার দাফন করতে।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবিই আহত,মর্মাহত - কয়েক কোটি টাকা আর ব্যবসা বানিজ্য কার দখলে থাকবে- এটাতো বাংলাদেশে খুবই স্বাভাবিক বিষয়।বর্তমান সরকারের আমলে এটা একেবারে ডাল ভাত।নিজেরা লুটেপুটে খাবে আবার ঝগড়া হবে। হচ্ছে ও প্রতিদিন।কিন্তু এভাবে একেবারে দিন দুপুরে ঘরে গিয়ে হত্যা করা।
মনে হচ্ছে - আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আদেশ তার দলের কেউ কেউ শুনছেন না। গতকালই তো প্রধানমন্ত্রী তার পালিত! সাংবাদিকদের অনূষ্ঠানে বললেন - সাবধান - তোমরা যে ডালে বসে আছ - সেই গাছ কাঠতে যাবে না। কারণ গাছটা কাঠলে কি হবে তা প্রধানমন্ত্রী ইশারায় বলেছেন।ফারুকী সাহেব হজ্জ কাফেলা নিয়ে অনেক পয়সার মালিক হয়েছিলেন সত্য। তার ভাগ বাটওয়ারা হচ্ছিল। এখন ---- ?
তাই ফারুকী সাহেব এভাবে প্রাণ দিবেন তা মানতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
আমি জানি এ নিয়ে রাজনীতি হবে। করাটা খুবই স্বাভাবিক। যে সমস্ত যুবক তার ফ্লাটে গিয়ে হত্যা করল। তারা মুখোশ পরা ছিল না। তারা কোন উত্তেজনা বা ত্রাস সৃষ্টি করেনি। বরং চ্যানেল আই বর্ণনা মতে তারা খুবই স্বাভাবিক ছিল। হত্যাকান্ডের পুরা মিশন চালিয়েছে খুবই আত্মবিশ্বাসের সাথে। আবার এলাকার সবাই তাদেরকে দেখেছে।
আমার ভয় হচ্ছে - বেনজির মিয়া ওরফে ডিএমডি সাহেব কোন জজ মিয়ারে গল্প তৈরী করছেন।
সকল আন্তরিকতার দিয়ে চাইবো এই হত্যাকন্ডের বিচারটা যেন হয়। আর ফারুকী সাহেবের জন্য মাগফিরাতের দোয়া চাই।
বিষয়: বিবিধ
২১২৭ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি বলেছেন-
আর ফারুকী সাহেবের জন্য মাগফিরাতের দোয়া চাই।
আরো বলেছেন-
মূলত ফারুকী সাহেবের মূল টার্গেট থাকতো - দেশের জনপ্রিয় এবং সত্যবাদি (হক্কানী) আলেম ওলামার বিষদগার করা।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন – তার জন্য দোয়া করা জায়েয কিনা
আবার কেউ বলেছেন -
মৃতব্যক্তির দোষ বলা অনুচিত, হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে!
শরিয়াহ কী বলে???
উনি মুসলমানের কাতারে পরেন কি? কুরআন হাদীস ও হাক্কানী আলেমদের মতে জবাব- না।
উনি মুসলমানের কাতারে পরেন কি? কুরআন হাদীস ও হাক্কানী আলেমদের মতে জবাব- না।
উনি মুসলমানের কাতারে পরেন কি? কুরআন হাদীস ও হাক্কানী আলেমদের মতে জবাব- না।
পোস্টদাতার জবাবের অপেক্ষায় আছি
আর হের মরনেরে শহীদ কইলে তো আমাগো বাবা শেখ মুজিবকেও শহীদ কইতে হইবে। আমামীলীগ কুন দিন শেখ মুজিবকে শহীদ কয় নাই, কয় মরছে, নিহত হইয়াছে ইত্যাদি
প্রথমত আমি দোয়া চেয়েছি। আপনি বা আপনার দোয়া করতে পারেন বা এড়িয়ে যেতে পারেন।
শরিয়া হল - প্রকাশ্য কোন মুনাফিক,ফাজির,ফাসিক,যিন্দিকের মাগফিরাতের জন্য দোয়া চাওয়া যাবে না। এই মতের পক্ষে ইসলামী স্কলারদের সংখ্যা বেশী।
আবার কিছু সংখ্যক স্কলারের মত হল - তার ভাল কাজ কবুলের জন্য দোয়া করা যেতে পারে।
মৃতব্যক্তির দোষ বলা অনুচিত - এটা সাধারন নির্দেশ।
কিন্তু মৃত ব্যক্তির কর্মের পরিধি যদি গনমানুষের ক্ষতির কারণ হয় - তাহলে অবশ্যই করা যাবে।
দেখুন সূরা হুজরাত। আয়াত ৬ থেকে ৯।
যত অপরাধই হোক, ক্ষমার পরিধি তার চেয়ে অ-নে-ক বড়!
আর যে ব্যক্তির কাজই ছিল মানুষকে গোমরাহ করা- আল্লাহর দেয়া সঠিক পথ থেকে দূরে রাখা [সদ্দু আন সাবীল] তার ভালো কাজগুলো সবই বাতিল- একথা আল্লাহতায়ালা-ই বলেছেন [সদাক্বাল্লাহ]
তার ভক্ত-অনুসারী/ওয়ারিশদের কর্তব্য সঠিক পথে ফিরে আসা- তা না হলে ঐ ব্যক্তির মন্দকাজের সমালোচনা শোনার কষ্টা যেমন পেতে থাকবে, তেমনি তাদের জন্যও কঠিন পরিণাম অপেক্ষা করবে
আল্লাহতায়ালা তার ভক্ত-অনুসারী/ওয়ারিশদের সবর করার ও সঠিক পথে ফিরে আসার তৌফিক দিন
এবং
সর্বস্তরের মানুষকে ওসব ভ্রান্তপথ ও মত থেকে হেফাজত করুন (আমীন)
বিনুদুনগুলো আমি সহজে মিস করি না।
কালকে রাতে মাওলানা ফারুকীকে হত্যার সাথে সাথেই,
বোধহয় রাত ১০ টার দিকে একজনের স্ট্যাটাস
চোখে পড়লো।
" আমি নির্বাক। কথা বলতে পারছি না। ফারুকী ভাইয়ের
প্রতিটা নাটক সিনেমা দেখে মুগ্ধ হতাম। আমার
জীবনে দেখা সেরা নাটক "ফোর টুয়েন্টি"। সেই
ফারুকী ভাইকে ওরা হত্যা করলো! আমার খুব ইচ্ছা ছিল,
একদিন ফারুকী ভাইকে কাছ থেকে দেখবো, কথা বলবো।
না, পারলাম না। ফারুকীর খুনীদের শাস্তি চাই।"
আমি মজা করে কমেন্ট করলাম, "ফারুকী তো ভালো মানুষ
না। তার নাটকে অশ্লীল সংলাপ থাকে। মরছে,
ভালো হইছে।"
এইবার অই ভক্ত পারলে আমাকে খেয়ে ফেলে, " ওই তুই
শিবিরের ছাগু। ফারুকী ভাইয়ের বিপক্ষে বলিস?
তোকে ব্লক করলাম!"(কয়েকটা গালিও দিছে)
আশ্চর্যজনক ভাবে এক্টু পর আরেকটা স্ট্যাটাস
চোখে পড়লো। ওই স্ট্যাটাস পড়ে হাসবো না কাঁদবো,
বুঝতে পারছিলাম না!
"নাস্তিক শয়তান
ফারুকীরে নাকি জাহান্নামে পাঠানো হইছে? ওহ!
মগা পেলুম। এই শয়তানটা থার্ড পার্সন সিংুলার
নাম্বার সিনেমায় লিভ টুগেদার দেখাইছিলো।
টেলিভিশন সিনেমায় ইসলাম
নিয়া হাসি ঠাট্টা করছে।"
হাসতে হাসতে কমেন্ট করলাম, "ফারুকী নাস্তিক
আপনাকে কে বলল? দেখেন না, ওর লম্বা দাড়ি আছে!"
এইবার আমার এই জ্ঞানী ভাই কমেন্ট করলো,
"হায়রে আবাল! দাড়ি থাকলেই ঈমানদার হয়ে যায়? তোর
মত মূর্খদের ফ্রেন্ডলিস্টে রাখবো না!"
Copy-Pasted from কাউসার আলম
আরো সাবধান হলাম এবং হওয়া উচিত।
তবে আজকের চট্রগ্রামের সাংবাদিক সম্মেলন হয়তো দেখেছেন। শুরু হয়েছে রাজনীতি।
মনে অইতাছে মৃত ব্যক্তির প্রকৃত হান্তাদের সেইভ করণের লিগ্যা নতুন কুনো জজ মিয়ার নাঠক শুরু অইয়া যাইবো।
জজ মিয়া নামর জমের যারে পাইব হেতানর খবর আছে -
আগামীতে হলে হইতে পারে।ডিজিটাল সরকারের মেহমানদারীর নাম হল - রিমান্ড। বিএনপি এনালগ সমস্যা এখনও কাঠাতে পারেনি। তাই সম্ভাবনা দেখছিনা।
পোস্ট ও মন্তব্যগুলি পড়ে অনেক জানতে পারলাম।
যাজাকাল্লাহ খহায়ের।
ভাবলাম ঘটনা কি!!!?? ১দিন পযন্ত কোন খুজই ছিলনা কিন্তু হঠাৎ করে আজ দুপুরের পর এসে ৪ঘন্টায় ৪টা নিউজ করছে কেন?
নিউজ পড়েই বুঝতে পারলাম কেন ১দিন পর এসে ফারুকি খবর তাদের কাছে এতোটা গুরুত্ব পেল। সেটা হল ফারুকির অনুসারীরা এই হত্যা জন্য জামাত-শিবির/হেফাজত কে দায়ি করতেছে।
তার মানে ফারুকি তাদের আলোচ্য বিষয় নয়। গুরুত্ব পেয়েছে জামাত-শিবিরকে দায়ি করায়।
তিনি তার কৃতকর্মের পুরুষ্কার আল্লাহর কাছে পাবেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে কি কোন সাহাবী হত্যা করে ছিল?
করেন নি। মদিনার ইসলামী রাষ্ট্রে মোনাফিক সরদারও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পেয়েছিল।
ফারুকী সাহেবকে হক পন্থীরা হত্যা করেনি, করতে পারেনা, হকের সাথে এমন কাজ যায়না। তাকে হয়ত হত্যা করেছে যারা তাকে দলে ভিড়িয়েছিল তারাই। তাই এমন নিন্দনীয় ঘটনার নিন্দা না করে পুলকিত হওয়াকে আমি সমীচীন মনে করিনি।
ধন্যবাদ।
আর হা,যে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা না বলা ভালো। তবে কথা ও কাজ যদি সমাজের জন্য ফেতনা হয় সেক্ষেত্রে ফেতনা থেকে বাচার জন্য বিষয়গুলো আলোচনা করা নাজায়েজ নয় বরঞ্চ সওয়াবের কাজ।
আপনার ধারনা ফল পেতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন