প্রকৃত জ্ঞানী ও জান্নাত প্রত্যাশী মু'মিনের চরিত্র (সূরা আর রায়াদ ১৯ থেকে ২৪) পর্ব - ছয়।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০১:৪৩:৫৬ দুপুর
পর্ব - ছয়
وَالَّذِينَ صَبَرُواْ ابْتِغَاء وَجْهِ رَبِّهِمْ وَأَقَامُواْ الصَّلاَةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقْنَاهُمْ سِرًّا وَعَلاَنِيَةً وَيَدْرَؤُونَ بِالْحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ أُوْلَئِكَ لَهُمْ عُقْبَى الدَّارِ
তরজমা - এবং যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্যে সবর করে, সালাত প্রতিষ্ঠা করে আর আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে এবং প্রকাশ্যে ব্যয় করে,যারা মন্দের বিপরীতে ভাল করে, তাদের জন্যে রয়েছে পরকালে স্থায়ী ঘর। সূরা আর রায়াদ আয়াত ২২।
# আয়াতটির আলোকে যে কয়টি বিষয় আলোচনা করা যায়।
# ক) সবরের অর্থ এবং তার ব্যাপ্তি।
# খ) ইনফাক কি এবং কিভাবে। এর সঠিক স্পিরিট কী? ইনফাক,সাদাকা,যাকাত এবং ওসিয়াত সম্পর্কে আমাদের ব্যক্তিগত আ'মাল/চরিত্র কোন পর্যায়ের।
# গ) মন্দের বিপরীতে ভালো কি ভাবে? এটা কি মানুষের বিবেকের কাজ, না নফসের কর্ম।
# ঘ) চারটি গুনাবলীর (সবর,সালাত,ইনফাক,মন্দের বিপরীত ভাল) মধ্যে কয়টি ব্যক্তিগত এবং কয়টি সামাজিক দায়িত্ববোধ।
বিবেচনা করুণ -
যখন আয়াতটি নাযিল হয় তখনকার মানুষের সাধ্য আর সামর্থ কেমন ছিল। যে চারটি গুনাবলীর কথা বলা হচ্ছে আলোচিত আয়াতে সেগুলোর চর্চা/বাস্তবতা কেমন ছিল। সাহাবীদের (রাঃ) সবরের ইতিহাস আমরা কিছুটা জানি।কিন্তু তাদের ইনফাকের (আল্লাহর পথে খরচ) ইতিহাস যেমন জানা নেই। তেমন যারা জানেন তাদের মধ্যে আমলের বালাই নেই।
সবর এবং সালাতকে যদি আমরা ব্যক্তিগত ইবাদত মনে করি। এই দুটি মৌলিক গুনাবলীর ফলাফল ব্যক্তির উন্নয়নের সাথে জড়িত। বাকি দুটি গুনাবলী - খরচ করা আর মন্দের বিপরীত ভাল উদ্দ্যোগ গ্রহন করা - এ দুটি সমাজিক ইবাদত। যা একজন মুসলমানের জন্য জরুরী।
সে যুগের সাহাবীরা ইনফাক আর মন্দের বিপরীত কল্যাণকর উদ্দ্যোগ গ্রহনই তাদেরকে সামাজিক নেতৃত্বে বসিয়েছিল।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন - নেতা হতে চাও তাহলে মানুষের খেদমত কর।(ভাবার্থ)
আমাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হত যদি মন্দের বিপরীত ভাল চর্চা করতে পারতাম। আমাদের মিডিয়া জগত যাদেরকে আদর্শ হিসাবে জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় - তাদের মধ্যে মন্দ চর্চা করার প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশী। স্বাধীনতার এতদিন পরও আমরা সবাই সবার মন্দ দিকটা বেশী করে আলোচনা করি।যারা আমাদের জতীয় নেতা তারা অন্যের খারাপ মন্দ দিক নিয়ে পাবলিকলি বলা - তাদের যোগ্যতা মনে করেন।
যে সংসদকে আমরা পবিত্র বলে গর্ব করি। যাদেরকে নির্বাচিত গনমানুষের প্রতিনিধি হিসাবে সার্বভৌমত্বের জয়গান গাই। সেই সংসদের ভাষা,বক্তৃতার রুচিবোধ,রসবোধ,উপস্থাপনা সবই বস্তিবাসীর সবচেয়ে নিন্দিত মুর্খ ঝগড়াটে বালিকার মত।
আর এই কর্মে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদি ও তিনি অন্য দশটি অসত্য বলার মত বলেন - মদিনার সনদে নাকি দেশ চলছে।
মনে পড়ছে মোফাস্সীরে আজম আল্লামা সাঈদী সাহেবের সংসদে দেয়া একটি বক্তৃতা।
তিনি বলেছিলেন - মাননীয় স্পীকার - মহান আল্লাহ মানুষের জিহবাতে হাড্ডি দেন নি। কারন মানুষ যেন ভাল কথা বলে। এই জিহবা দিয়ে মানুষকে কষ্ট না দেয়। অথচ আপনার সংসদের সম্মানীত সদস্যরা এই জিহবাকে কুড়ালের কাজে ব্যবহার করে।
রাসূলের একটি হাদীস - সে প্রকৃত মোমিন নয় যার হাত এবং জিহবা থেকে তার আশে পাশের মানুষ নিরাপদ নয়।(ভাবার্থ)
আজকের ডিজিটাল গনতন্ত্রের শাসনে - শাসক দল ছাড়া বাকি কেউ ই জিহবা আর হাত থেকে নিরাপদ নয়।
আগামী পর্বে - এই গুন অর্জনকারীদের পুরস্কার এবং সূরা সম্পর্কে কিছু তথ্য।
====================================
বিষয়: বিবিধ
১৪০০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা কিন্তু সেবা পেতেই বেশী আগ্রহী।
ভেবে দেখার বিষয়!
আয়াতটির লক্ষ্য "সমষ্টি"র দিকে ["যারা"]
এর দ্বারা কি দলীয় / প্রাতিষ্ঠানিক / সামাজিক "নীতিগত অবস্থান" বোঝায় না???
মন্তব্য করতে লগইন করুন