৫ মে ২০১৩ কালো রাতের কয়েকটি প্রশ্ন না তুললেই নয়।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০৬ মে, ২০১৪, ০২:১৩:০৫ দুপুর
ফেবুতে যারা নিয়মিত এবং সক্রিয় চিন্তার খোরাক প্রতিনিয়ত সরবরাহ করেন, তাদের মধ্যে জনাব একে এম ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব অন্যতম।আমি চেষ্টা করি নিয়মিত পড়ার এবং মন্তব্য করার। তিনি সত্যি সময়ের প্রয়োজনে - সময়কে ধারণ করে - সময়ের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করার ক্ষমতা রাখেন।
নিচে তার ফেবু থেকে হুবহু লেখাটি তুলে দিলাম। অবশ্য আমার কিছু প্রশ্ন আছে সেগুলো ও আপনাদেরকে শেয়ার করলাম।
=====================================
প্রথমে নিজের কিছু প্রশ্ন =
এক) ক্বাওমী আলেমদের সম্পর্কে বিএনপি রিডিং থাকার কথা। ঐ দিন রাতে কেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হেফাজতের পাশে দাড়ালো না। এটা কি সরকারের সাথে বিএনপির নেতেৃত্বের সমজোতা! শাপলা চত্তরে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হত কি না? কয়েকটা ফ্লাশ লাইটের ব্যবস্থা করা কি যেত না। আমরা প্রবাসে থেকে বিকাল ৬টার দিকে ফেবুতে ফ্রাশ লাইটের কথা লিখেছিলাম।
দুই) বেগম খালেদা জিয়া ঘোষনা দিলেন-তার পর কি?তার কিছুই করণীয় ছিল না। তিনি কি জানতেন না এত বড় ম্যসাকার করা হবে। রাতের আধারে এত বড় গণহত্যা চালালো সরকার অথচ দেশের তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রীর কোন নলেজ ছিলনা। এটা কি বিশ্বাস করতে হবে।ওমরা করতে আসা একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন - বেগম খালেদা জিয়াকে ইনফরম করা হয়েছিল।
তিন) যে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সুচনা করা হয়েছিল এটা ধরে রাখা এবং সঠিক খাতে পরিচালিত করার দায়িত্ব কি জাতিয়তাবাদি এবং ইসলামী বুদ্ধিজীবিদের ছিল না। তাদের ভুমিকা কি ছিল? গণজাগরণের কারণে যারা একঘরে হয়েছিলেন তাদেরকে হেফাজত কি নতুন প্লাট ফরম তৈরী করে দেয় নি? তাদের কারোর কোন দায়িত্ব ছিল না।
চার) এটাতো পরিস্কার ছিল - আল্লামা শফি সাহেবের সাথে একটা সম্পর্ক ছিল সরকাররের। তার পর তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য কোন মাহমুদুর রহমান কি বিএনপি বা জামায়াতে ছিল না।
পাচ) ক্বাওমী মাদ্রাসার সম্মানীত হুজুররা আর কত বছর বাকশালীদের দ্বারা পরিচালিত হবেন। তাদের নিজেদের বোধদ্বয় কবে হবে।ভাড়ায় খেটে খতম পড়ানো আর রাজনীতিতে অন্যের জন্য ভাড়ায় খাটা কি এক? চলমান রাজনীতিতে প্রতারিত হওয়া আর প্রতারিত হওয়ার জন্য নিজেদেরকে কোরবানী দুম্বা হিসাবে পেশ করা আলাদা বিষয়।
ছয়) গত চারদলীয় জোটের সময় জামায়াতে ইসলামীর দুই মন্ত্রী কেন এই সব বড় বড় মাদ্রাসা সফর করতে পারলেন না। বা একটা সম্পর্ক তৈরী হল না। অথবা তাদের দাবী দাওয়া কেন পূরণ হল না। বাধা কি? শুধু বিএনপি ই ছিল না জামায়াত নিজেই।জামায়াতের রাজনীতি আর ইলমী,ফিকহী বিষয় নিয়ে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরীর সুযোগ কেন কাজে লাগানো গেল না?
====================================
জনাব একে এম ওয়াহিদুজ্জমান সাহেবের ফেবুতে পাবেন -
৫ মে ২০১৩ বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন না তুললেই নয়।
====================================
০১/ কথা ছিলো সরকার হেফাজতের কর্মীদের ঢাকায় প্রবেশ করতে দেবে না, আর হেফাজতে ইসলামীর কর্মীরা ঢাকার প্রবেশ পথে সমাবেশ করবে। কার কার মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে শাপলা চত্ত্বরে যাবার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো? হেফাজতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো কে?
০২/ আল্লামা শফি সাহেব জানতেন লালবাগ মাদ্রাসায় থাকলে তাকে সরকার সহজেই অবরোধ করতে পারবে। এর আগেও ৫ এপ্রিল ২০১৩ তাকে অবরোধ করা হয়েছিলো এবং পরে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়া হয়েছিলো। এই অভিজ্ঞতার পরও এতো বড় আন্দোলনের ডাক দিয়ে তিনি কেন সরকারী বিশেষ বাহিনীর লোক দ্বারা ঢাকায় লালবাগে পরিবেষ্টিত থাকলেন?
০৩/ আল্লামা শফি যখন বুঝতে পারলেন যে তাকে যেতে দেয়া হবে না, তখন তিনি কেন সমাবেশ শেষ করে হেফাজতের কর্মীদের ফিরে যেতে নির্দেশ দিলেন না?
০৪/ আল্লামা শফির আহবানে যারা ঢাকায় এসে হতাহত হলো, পরদিন ৬ মে কেন তিনি সেই হতাহতদের না দেখেই ফেরত গেলেন? কেন তিনি দাবী করলেন না যে তার আহবানে ঢাকায় আসা আলেম ও এতিমদের অসহায় অবস্থায় ফেলে তিনি বিমানপথে চট্টগ্রাম যাবেন না?
০৫/ যারা হেফাজত কর্মীদের হত্যা করলো, তাদের সাথে আল্লামা শফি কী ভাবে মিটিং করে কী সিদ্ধান্ত নিলেন? এয়ারপোর্টে তিনি এত দীর্ঘ সময় ধরেই বা কাদের সাথে মিটিং করলেন? সেখানে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিলো?
০৬/ হতাহতদের সঠিক সংখ্যা জানার জন্য আল্লামা শফি কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? নিহতের পরিবার ও আহতদের চিকিৎসার জন্য উনার কী কী পদক্ষেপ ছিলো?
০৭/ হেফাজতে ইসলামীতে আল্লামা শফি সাহেবের ছেলের অবস্থান কী? উনার সাম্প্রতিক দুবাই যাবার কারণই বা কী?
০৮/ যারা তার আহবানে সমাবেশে আসা এতিম ও আলেমদের হত্যা করলো, সেই তাদের সাথে কীসের সমঝোতার ভিত্তিতে আল্লামা শফি সাহেব মাদ্রাসার জন্য কোটি টাকার জমি গ্রহন করে ছাত্রলীগ যুবলীগকে বন্ধু ডাকলেন?
০৯/ ৫ মে ২০১৩ আল্লামা শফি সাহেবে ডাকা কর্মসূচীতে সমর্থন দিয়ে যারা উনারই কর্মসূচীতে যোগ দেয়া মানুষ হত্যার জন্য মামলা খেয়ে জেল-জুলুম সহ্য করলো সেই তারা যখন ছাত্রলীগ যুবলীগের সাথে উনার এই বন্ধুত্ব নিয়ে কষ্ট পায় তখন উনি ভুল বোঝেন কেন? আর উনার অন্ধ অনুসারীরাই বা তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে কেন?
১০/ ৫ মে ২০১৩ তারিখের শাপলা অভিযান ছিলো দেশের মানুষের কাছে শূন্য জনপ্রিয়তায় থাকা আওয়ামী লীগের বিদেশী মিত্রদের কাছে জঙ্গী দমনে সক্ষমতা প্রদর্শনের লাইভ মহড়া। বিএনপি এটা বুঝতে ব্যর্থ হলো কেন?
=====================================
আপনাদের কাছে এক কোন জবাব আছে কি? এগুলোর জবাব কার কাছে পাবো।শাপলা চত্তরের সেই সব শহীদদের জন্য এই সব প্রশ্নের জবাব একান্ত প্রয়োজন। আগামীর প্রজন্মকে বাকশালীরা প্রতারিত করবেই। যদি না এগুলো উত্তর না পাওয়া যায়।
কোরআনের ধারক বাহকরা আগামীর পাঠসুচিতে লেখা হবে কোরআন পোড়ানোর তান্ডবকারী হিসাবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৯ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে মোবারকবাদ।
প্যরিস ভাই নিজের মন্তব্যটা না করে কেমন যেন কি পাঠিয়েছে। আমি এগুলো খানকে উপহার স্বরুপ পাঠালাম।
আমি গরীবের বাড়িতে আসা যাওয়া করায় আপনাদের সাবাইকে অতি উত্তম ধন্যবাদ।
এতে তো মন্তব্যকারী আপনার জবাব পারেন না!!
মন্তব্য করুন - সমালোচনা করুন - কিন্তু প্লিজ।প্লিজ।
এক্ষেত্রে আমার মনে হয় সফি হুজুর সব মুসলিম কে এক কাতারে আনার জন্য এই কথাটা বলেছেন। যা হলূদ মিড়িয়া এই সুযোগে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের উচিত তার পুরো বক্তব্য শুনা।
কোথায়ও কেউ কখনো বলেনি যে, আওয়ামীলীগ নাস্তিক দল। তারা সবাই নাস্তিক। নিজেরা গায়ে পড়ে কাউকে সার্টিফিকেট দেয়ার প্রয়োজন কী? সকল বিপত্তিটা এই জায়গায়।
ধন্যবাদ।
আপনি কি মনে করেন? সময় কি আপনাকে এতই শাসন করে?
এতে তো মন্তব্যকারী আপনার জবাব পারেন না!!
"বিষম চিন্তা"
মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছেনা কেউ জবাব তার-
সবাই বলে "মিথ্যে-বাজে বকিসনা আর খবরদার"!!
অমন ধারা ধমক দিলে কেমন করে শিখবো সব?
বলবে আমায় "মূর্খছেলে" বলবে আমায় গো-গর্দভ!!
......
......
বয়স হলে কিতাব খুলে জানতে পাবো সমস্তই!!
আপনার সকল প্রশ্নের এককথায় জবাব-
"কুল্লু হিজ্বিম্ বিমা লাদাইহিম ফারিহুন"
মেঘহীন আকাশে প্রচন্ড বজ্রপাত, তারপর ত্রাসের মাধ্য সৃস্টি করা একটি মিনি কিয়ামত, এ যেন সভ্যতার সব অর্জনকে মাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, আল্লাহর গায়ের চাদর যেন সেদিন খুলে দিয়েছে। মশকরা হয়েছে তারঁ অহংকারের সাথে। যারা তারঁ মহাগ্রন্থকে বুকে ধারণ করেছিল,
যারা কিয়ামতে আল্লাহর হাতে তাজ পরিহিত হবার আগাম সার্টিফিকেট পেয়েছে,
যারা জীবন্ত কোরআন হয়ে জিকিরে বসেছিল,
তাদেরকে নির্মমভাবে শুধু হত্যা নয়, জানাজা না দিয়ে ডাষ্টবিনের সাথে মিশে দেয়া হল..। সেদিনের দৃশ্য মনে হলে আমি খুব ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। ভাবি, পৃথিবীতে এতগুলো কোরআনের হাফেজকে হত্যা মানেই আরশের অধিপতির সাথে ক্ষমাযোগ্য বেয়াদবী করা। জানিনা কোন কে গজব ধেয়ে আসছে এ জাতির প্রতি।
হায় আল্লাহ। আমাদেরকে ক্ষমা করে তোমার করে নাও। হাসিনাকে পাকড়াও করার সময় হযরুত নুহ (আ) এর কিস্তির লোকগুলোর মত সাহায্য কর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন