হেফাজতে ইসলাম,আহলে হাদীস এবং দরদি বন্ধু সেকুলার রাজনীতি।পর্ব - (তিন)

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০১ মে, ২০১৪, ০২:২৬:৪৫ রাত

পাঁচ)

দ্বিতীয় পর্বের পর -

তখন বাকশালীদের সুস্বাদু আচার! জনাব এরশাদ সাহেবের শেষ বেলা। আল্লামা সাঈদী সাহেবের তাফসীর মাহফিল যেখানে - ১৪৪ ধারা সেখানে। আবার যেখানে ই ১৪৪ ধারা জারি করা হত - ঠিক একই দিন আবার হরতাল আহব্বান করা হত খুছরা কিছু সংগঠন থেকে।

অবশ্য তখন আজকের মত এত ৭১ চেতনা ব্যবসায়ী ছিল না।তবে মুক্তিযুদ্ধা কমান্ড এবং কিছু দরবারী (ভন্ড) আলেম দিয়ে মাঠ গরম রাখা হয়েছিল। দু:খ জনক হলেও সত্য - আমাদের কওমী হাজারাত এই কর্মে লিপ্ত ছিলেন। বরাবরের মত তারা ফতোয়া দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করতেন।

এখানে বলে রাখা ভাল - চট্রগ্রামের মত সিলেটের তাফসীর মাহফিল ছিল সারা বছরের অপেক্ষামান একটি গন মানুষের মহা মিলন মেলা।দৃশ্যত এটা শুধু তাফসীর মাহফিল ছিল না। বরং সিলেট আলীয়া ময়দানের তিনদিনের তাফসীর মাহফিলের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হত বছর ব্যাপি।সিলেট বাসীর সাথে আসামের গৌহাটি,করিমগন্জ,শিলচরের মুসলমান - অমুসলমান সবাই আসতো এই তাফসীর মাহফিলে।

চট্রগ্রাম তাফসীর মাহফিল শুরু হবার তিন বছর আগে সিলেটের তাফসীর মাহফিল শুরু হয়। আল্লামা সাঈদী সাহেবের পূর্বে এরকম কোরআনের সরাসরি তাফসীর মাহফিল হত না।যা হত সেগুলো জন নন্দিত এবং গনমানুষের কাছে হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি। ওয়াজ নসিহতের নামে যা ছিল - মাযার পন্থীরা করতেন ইসালে সাওয়াব,মিলাদুনব্বী ধরনের মাহফিল।সেগুলোতে মানুষের চরিত্র সংশোধনের কোন উপাদান থাকতো না।বরং মুসলমানকে নির্জিব এবং বিদআতের শিক্ষা দেয়া হত।

আর ক্বাওমী (পন্থী) মাছলাকের লোক মাদ্রাসা ভিত্তিক দাস্তারবন্ধী মাহফিল করতেন। এই মাহফিলগুলো হত সংলিষ্ট মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে। অত্র মাদ্রাসা থেকে যারা ফারেগ (পরিক্ষায় পাশ) করতেন তাদেরকে পাগড়ি পরানো হত এবং মাদ্রাসার জন্য পয়সা উঠানো হত।দৃশ্যমান উদ্দেশ্য হত মাদ্রাসার উন্নতির জন্য অর্থের যোগান দেয়া। এতে বিদেশ থেকে মেহমান আনা হত।

এরকম পরিবেশে সম্পুর্ণ বিপরীত এবং সত্যিকার মানুষের সংশোধন এবং সমকালীন জিজ্ঞাসার বাস্তবধর্মী আলোচনা নিয়ে আসেন আল্লামা সাঈদী সাহেব। আল্লামা সাঈদী সাহেব দেশ স্বাধীন হবার ১৯৭৪ থেকে শুরু করেন পরিকল্পিত তাফসীর মাহফিল। অবশ্য মাঝখানে তাকে জেলে যেতে হয়েছিল কয়েক মাসের জন্য। তার পর অবিরাম চলছিল এই কার্যক্রম।রেডিকাল পরিবর্তন বলতে যা বুঝায় তা শুরু হয়ে যায়। এতদিন যারা জশনে জুলুস,দাস্তারবন্ধী আর ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তারাও তাফসীর মাহফিল এবং সিরাতুন্নবী (সাঃ) নামে শুরু নিজেরা শুরু করতে বাধ্য হন।

এই পর্যায়ে একটি বস্তবতা তৈরী হয় - সাঈদী সাহেব সহ এই অঙ্গনের আলেমরা যে ভাবে কুরআনের তাফসীর করেন এবং গনমানুষের হৃদয়ে জায়গা করেন। বাকিরা সবাই পিছনে পড়ে যায়। ফলাফল হয় ওয়াজ নসীহ যাদের রুজি রুটির একমাত্র উপায় ছিল তাদের সমস্যা হয়। কিস্সা কাহিনী নির্ভর উদ্দেশ্য বিহীন ওয়াজ নসীহত দিয়ে মানুষ আর সন্তুষ্ট থাকে না।

সমাজের আরেক শ্রেণীর মাথায় বাজ পড়ে। দেশের কমিনিষ্ট এবং মানব রচিত মতবাদের রাজনীতি প্রমাদ গুনতে থাকে। মানব রচিত মতবাদের তুলনামূলক আলোচনায় তাফসীর মাহফিলগুলো যুব সমাজের মধ্যে টনিকের মত কাজ করে।তাদের পুকুরের জিয়ানো মানব সম্পদ (যুবসমাজ) ইসলামী আন্দোলনের পুকুরে স্থানান্তরিত হতে থাকে।

তাই সম্মিলিত বাধার মুখে পড়ে দেশের তাফসীর মাহফিলগুলো।এই ছিল সেই সময়কার ১৪৪ ধারার হাকিকত। বুলবুলি সাহেবের সেই মিটিং ছিল এরই ধারাবাহিকাতার একটি।

(ছয়)

মাওলানা হাবিবুর রহমান (বুলবুলি) সাহেব ক্বাওমী আলেমদের মধ্যে বেশ প্রভাশালী।একটি উদাহরণ দেই। একবার কাজীর বাজার মাদ্রাসার (তিনি ঐ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহাতামীম) বার্ষিক জলসায় আফগানী হাফিজূল হাদীসকে দাওয়াত করে আনা হয়। অবশ্য মাওলানা হাবিবুর রহমান সাহেব প্রত্যেক বছর হয় পাকিস্তান,ইন্ডিয়া অথবা আফগান থেকে মেহমান দাওয়াত করতেন। ঐ বার বিশ্বের একমাত্র হাফিজুল হাদীস আল্লামা দরখাস্তীকে (রঃ) নিয়ে আসেন। মাহফিল উপলক্ষে একটি কৌড়পত্র বের করা হয় মাদ্রাসার পক্ষ থেকে। হেড লাইন করা হয় - ‌'মাওলানা হাবিবুর রহমান ইচ্ছা করলে আসমান থেকে জিব্রাইল ও আনতে পারেন।' পরের দিন সিলেটের সকল পত্রিকায় তা হেড লাইন করে।

সিলেটের ব্রেরলভী গ্রুপ (ফুলতলী পীর) এ নিয়ে চরম হাংগামা শুরু করে। এদিকে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা গত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আল্লামা মওদুদী (রঃ) কে নিয়ে একটি বই লিখেন বুলবুলি সাহেব। 'সত্যের আলো' নামের এই বইটির জবাব লিখেন কুদরত উল্লাহ মসজিদের পেশ ইমাম সাহেব।আর যায় কোথায়? সমস্ত ক্বাওমী আলেম একত্রিত হন সাঈদী সাহেবকে রুখতে হবে। এই রুখার কাজে কারা বাতাশ করতে ছিল,কারা পয়সা দিচ্ছিল,কারা মিটিংয়ে লোক সাপ্লাই করছিল তা আমরা সব জানতাম।

জামায়াত বরাবরের মত এই সব কাজে তার জনশক্তিকে ব্যবহার করতো না। আবার অন্যায় ফতোয়ার কোন জবাব ও দিত না।এটা জামায়াতের ভুল না শুদ্ধ কর্ম পদ্ধতি। তা এখানে বিবেচ্য নয়। তবে জামায়াত যদি এ পর্যন্ত যত ফতোয়া দেয়া হয়েছে আমাদের ক্বাওমী হাজারাতের পক্ষ থেকে তার জাবাব দিত তাহলে আমার মনে হয় - ইতিহাসে আরেকটি ফতওয়ায়ে আলমগীরী হত।

মাওলানা হাবিবুর রহমান সাহেব আলোচিত মিটিংয়ে -বলেন - আংগুল উচু করে ঐযে মসজিদ দেখছেন (কুদরতউল্লাহ) এটা মসজিদ নয়।বরং তা মসজিদে জিরার। এখানে সালাত আদায় করা কোন মুসলমানের জন্য হারাম। তিনি ঘোষণা করেন - আমার লাশের ওপর দিয়ে বাতিল ফিরকার আলেম সাঈদি সিলেটে আসতে হবে।' আরো অনেক কথা।

আমি ইমামের হুজরা থেকে বের হয়ে পাশের মার্কেটের একটি পরিচিত ফটোকপির দোকান থেকে মাওলানার বক্তব্য শুনছিলাম।

প্রবাসের সেই আলেমদের বৈঠক থেকে বের হয়ে সিলেটের ঐ দিনের দৃশ্য চোখে দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম,১৯৮৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সময়ের ব্যবধান অনেক। অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে।আমাদের ক্বাওমী হাজারাতের মনোজগতের কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং যা ছিলেন তারা ৪৭ সালের আগে এবং পরে আজ ও সেই একই চিন্তা চেতনায় আছেন।আগে ছিল বন্ধু সেকুলার কংগ্রেস - আর আজ সেকুলার বাকশাল।এখানে ইসলাম মুসলমান কোন বিবেচ্য নয়। আকাবীরে দেওবন্দের অনুকরণ অনুসরন আসল।(ক্ষমা করবেন)

প্রশ্ন হল - ঈমান, আকিদার জন্য এই বন্ধু নির্বাচন না শুধুমাত্র নিজেদের দুনিয়াবী স্বার্থের জন্য।

==================================

আগামী পর্বে - তিন দিন পর -

=========

দ্বিতীয় পর্বের লিংক -

http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/1876/IBNAHMED/44016

বিষয়: বিবিধ

১৭৫৭ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

215698
০১ মে ২০১৪ রাত ০৩:১৩
আবু সাইফ লিখেছেন : শারমিন রিপি লিখেছেন নেতা ও পিতা...

আপনিও তেমন কিছু লিখে রাখুন- ভবিষ্যতে কাজে লাগবে!

তবে এখন সময়টা বোধ হয় এসব প্রকাশের অনুকুল নয়!!

সমস্যার আশংকা অনেক দিক থেকেই-
আলোচনা নিষ্প্রয়োজন!!


তবে লিখতে থাকুন-
সময়ের হাওয়া অনুকুল হতে কতক্ষণ??
215700
০১ মে ২০১৪ রাত ০৩:১৮
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার পরামর্শ মনে থাকবে। চেষ্টা করবো মেনে চলার। আপনাকে মোবারকবাদ।
215702
০১ মে ২০১৪ রাত ০৩:২৭
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : সিলেটের ব্রেরলভী গ্রুপ (ফুলতলী পীর) এ নিয়ে চরম হাংগামা শুরু করে। এদিকে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা গত শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আল্লামা মওদুদী (রঃ) কে নিয়ে একটি বই লিখেন বুলবুলি সাহেব। 'সত্যের আলো' নামের এই বইটির জবাব লিখেন কুদরত উল্লাহ মসজিদের পেশ ইমাম সাহেব।আর যায় কোথায়? সমস্ত ক্বাওমী আলেম একত্রিত হন সাঈদী সাহেবকে রুখতে হবে। এই রুখার কাজে কারা বাতাশ করতে ছিল,কারা পয়সা দিচ্ছিল,কারা মিটিংয়ে লোক সাপ্লাই করছিল তা আমরা সব জানতাম।

আমাদের ব্যর্থতা হল, কোরান হাদিস যতটুক দখলে আছে, তা বুঝিয়ে মানুষকে ইসলামের ছায়াতলে আনার যোগ্যতা নেই। যার কারণ ভারত বিভক্তির সময়ও দেওবন্দ আলেমরা রাজনীতির মাঠ গরম করলেও ফসল ঘরে তুলতে পারেননি। আজও মাওলানা সফি সাহেব এমন একটি কাজ করলেন।
হেফাজতে ম্যাসেকার ৭১ কে হার মানিয়েছে। এটাকে নিয়ে শফি সাহেব জনমানুষের সে নীরব সমর্থণ পেয়েছিলেন, লালদীঘির মাঠের বক্তৃতায় তা কবরস্থ হয়েছে। জাতি বিস্মিত হয়েছে। জানিনা রাজধানীর ডাস্টবিনের সাথে ফেলে দেয়া কোরানের হাফেজদের আত্মার অনুভতি কেমন ছিল।
আজকের এ দুর্দিনে রাজনীতিতে শিশুসম কওমী আলেমরা যদি আওয়ামীলীগের পাতানো ফাদে পা দিতে থাকে তাহলে এ দেশের মুসলমানদের ভাগ্য আর একটা অশনি সংকেত অপেক্ষমান।
ধন্যবাদ।
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:৩৩
163964
শেখের পোলা লিখেছেন : অশনি সংকেত এখন বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে৷ এখনও কি না বোঝার কিছু বাকী আছে?
215717
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:০০
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মহান আল্লাহ জাতীর সন্ধিক্ষণে মেহেরবানী করেণ। শহীদে শাপলা যারা তাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর উপায় নেই। অল্প কিছুদিন পর দেখবেন এই শাপলার বাকশালী ইতিহাস রচিত হবে।
যারা সেদিন প্রাণ দিল - তাদের কাছে পরকালে জবাব দিতে হবে সবাইকে।
০৮ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৩৫
166805
আবু আশফাক লিখেছেন : ইবনে আহমদ ভাই, আপনার কমেন্টের জবাব পদ্ধতি ভুল। আপনি জবাব দিতে গিয়ে ভিন্ন কমেন্টের স্থানে লিখেন; যার কারণে কমেন্টকারী আদেৌ দেখতে পান না যে আপনি তার কমেন্টের জবাব দিয়েছেন। এতে করে কমেন্টকারী কমেন্ট করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
215728
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:২৭
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আবার অন্যায় ফতোয়ার কোন জবাব ও দিত না।এটা জামায়াতের ভুল না শুদ্ধ কর্ম পদ্ধতি।

এই জবাব না দেয়াতেই আল্লাহ জামায়াতকে হেফাযত করেছে।
215729
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:৩১
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : সব ক্ষেত্রে সঠিক নয়। এটা ভিন্ন আলোচনা। তবে এই পয়েন্টগুলোতে জামায়াতের অবস্থান সঠিক ছিল।
আপনার সাথে অর্ধেক একমত। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
215731
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:৩৫
শেখের পোলা লিখেছেন : চালিয়ে যান, কিছু না হলেও মনে কিছুটা সান্ত্বনা তো পাই৷ কি চেয়েছিলাম আর কি পেলাম৷ কেন পেলাম না আর কাদের জন্য পেলামনা তা নিজের অভিজ্ঞতার সাথে অন্ততঃ মিলিয়ে দেখতে পারি৷৷ ধন্যবাদ৷
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৪২
164149
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে আমাদের জন্য বেশী উপকার হত। আমি নিশ্চিত যে, আপনার আবস্থান থেকে আরো বেশ কিছু জানা যাবে। আশা করি আশাহত করবেন না।
215781
০১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:২২
আয়নাশাহ লিখেছেন : সে সময়ে সিলেটেই ছিলাম এবং সবকিছু প্রত্যোক্ষ করার সুযোগ হয়েছে। আর বুলবুলি সাহেব কি চিজ যারা না মিশেছেন তারা কখনো বুঝতে পারবেন না।
আমাদের কাওমী মাসলাকের লোকেরা সবকিছু দেখে,জেনে বুঝেও তার সাথে থকেন। কেনো? সেটা নিশচয়ই আপনার পরবর্তী লেখায় পাবো।
তিন পর্ব একসাথে পড়ে নিলাম। চলুক।
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৪৭
164152
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মাশাআল্লাহ - আপনি একসাথে কষ্ট করে তিনটি পর্ব পড়েছেন। এটা আমার জন্য বিরাট পাওয়া।
সংশোধনের উদ্দেশ্যে লিখতে পারেন। কারন বর্তমানে বেশ কিছু ক্কাওমী আলেম যারা চিন্তা চেতনায় কিছুটা অগ্রসর। তাদেরকে সামনে রেখে লিখুন। আপনাকে ধন্যবাদ।
215795
০১ মে ২০১৪ সকাল ০৯:৪৬
আহমদ মুসা লিখেছেন : অবস্থানগত দিকে থেকে সিলেটের সার্বিক অবস্থার বাস্তব চিত্র উঠে আসছে আপনার লেখাতে। আমি জানি না আপনি সিলেটী কিনা। আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আপনি সেলেটী।
আমার জন্ম চট্টগ্রামে। আমার প্রাথমিক শিক্ষাও শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের সর্ববৃহত একটি ক্বাউমী মাদ্রাসা থেকে। চট্টগ্রামেই সাঈদী সাহেবের সর্ববৃহৎ তাফসীর মাহফিল হয়ে আসছিল। জামায়াত এবং সাইয়েদ আবুল আলা মাওদুদীর ব্যাপারে মারাত্মক এলার্জি থাকলেও (যা প্রকাশ্য তারা জাহির করে থাকে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও তথ্য প্রমাণহীন আজগুবি লেখালেখির মাধ্যমে) সাঈদী সাহেব সম্পর্কে এসব ক্বাউমী হাযারাতগণ বেশী বিষোধগার করতে দেখা যায় না। তবে বেরলভী আক্বিদার বেদআতপন্থীদের অবস্থান সরাসরি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে। এরা তো জামায়াতী ও দেওবন্দীদের মুসলমানই মনে করে না শুধু তাই নয়। ক্ষেত্র বিশেষে দুনিয়াতে সর্ব নিকৃষ্ট কাফির সম্প্রদায় মনে করে থাকে এরা।
তবে কিছু কিছু গবেষক ক্বাউমী আলেম আল্লামা সাইদী সাহেবের জন্য অন্তর থেকে দোয়া করতো। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিস, অসংখ্য আলেম ওলামাদের ওস্তাদ, আল্লামা নেছারুল হক (রাহ), (ফাজেলে দেওবন্দ) ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। সাঈদী সাহেব চট্টগ্রামে আসলেই আল্লামা নেসারুল হক সাহেবের খোজ খবর নিতেন।
আজকে আপনার এ লেখা পড়ে আমার মনে ইচ্ছে জাগছিল চট্টগ্রামে সাঈদী সাহেবের মাহফিল এবং একে কেন্দ্র করে ওলামায়ে দেওবন্দীদের অবস্থান, জামায়াতের ব্যাপারে বিভিন্ন দেওবন্দী আলেমদের ব্যাপারে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান তুলে ধরে কিছু লিখার। সমস্যা হচ্ছে যদি কারো থেকে আবার দয়্যিুস, পদভ্রষ্ট, ফাসেক এমনকি কাফের ফতওয়া পাওয়ার আশংকা রয়েছে।
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৫০
164155
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আমার জন্ম চট্রগ্রামে না হলে ও বেশ কয়েক বছর ছিলাম কাপ্তাই। আবার শাহা আমানত হলে ছিলাম মেহমান হয়ে ২৮ দিন।
আপনি যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করে বিরত রয়েছেন। তা হয়তো সঠিক নয়। কারন নিজের অবস্থান সম্পর্কে যদি পরিস্কার এবং জবাবদিহিতার জায়গায় আপনি স্বচ্ছ হন - তাহলে কেন ভয় পাবেন।
লিখুন আগামীর জন্য। বর্তমানের অনেক আছেন যারা আপনার লিখাকে স্বাগত করবে। আপনাকে ধন্যবাদ।
১০
215854
০১ মে ২০১৪ সকাল ১১:২৭
বেআক্কেল লিখেছেন : মাহফিল এই ধরনের হইলে তো সবাই পছন্দ কইরবে। পাগলিনী সুফিয়া একতারা লইয়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের ওয়াজ মাহফিলে জিকির করছিল। এগুলো অনুষ্ঠান.

১১
215967
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৫২
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : এই সব বিদআতী এবং বাড়াবাড়ি ওয়াজের বিপরীত কোরআন সু্ন্নাহ ভিত্তিক তাফসীর মাহফিল হল তাদের জন্য আসল সমস্যা। তাই নিজেদের রুজি রুটির জন্যই জামায়াতের বিরুদ্ধে ফতোয়া।
১২
215998
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৪০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
আমাদের দেশের আলেমদের মধ্যে তিনি কওমি বা আলিয়া যে ষ্ট্রিম এরই হোন একটা বড় সমস্যাই হলো তারা উস্তাদকে সকল ভুলের উর্দ্ধে মনে করেন। মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানি ভুল করেছিলেন। তার সাথে মাওলানা আশরাফুল হক থানভি একমত ছিলেননা। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের দেশের কওমি আলেমরা এখনও মাওলানা হুসাইন আহমদ এর ভুলকেই সঠিক মনে করে চলছে। তবে বায়তুল মুকাররম এবং চট্টগ্রাম শাহি জামে মসজিদ এর দুই মরহুম খতিব মাওলানা উবায়দুল হক এবং সাইয়েদ আবদুল আহাদ মাদানি এ ক্ষেত্রে উজ্জল ব্যতিক্রম। এরা মাওলানা হুসাইন আহমদ কে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করলেও তার ভুল হয়েছিল তা বলতেন। সাইয়েধ আবদুল আহাদ মাদানি সাহেব ভারত থেকে তৎকালিন পুর্ব পাকিস্তানে ১৯৬৬ সালে চলে আসার পরেও দির্ঘদিন মাওলানা মওদুদির বিরোধি আকিদা পোষন করতেন। পরে মাওলানা মওদুদির বই পরে তিনি তার মত পরিবর্তন করেন।
১৩
216013
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৫৮
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : সাইয়েধ আবদুল আহাদ মাদানি সাহেব ভারত থেকে তৎকালিন পুর্ব পাকিস্তানে ১৯৬৬ সালে চলে আসার পরেও দির্ঘদিন মাওলানা মওদুদির বিরোধি আকিদা পোষন করতেন। পরে মাওলানা মওদুদির বই পরে তিনি তার মত পরিবর্তন করেন।
এরকম অনেকের খবর আছে। যারা নিজেদের কর্মের জন্য তওবা করেছেন। আল্লাহ আমাদেরকে সত্য বুঝার তৌফিক দান করুন।
১৪
217395
০৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২১
সাদাচোখে লিখেছেন : আপনার লিখা ৪টি খন্ডই পড়লাম। ইসলামের কিছু টার্ম না জানার কারনে লিখাটির শতভাগ নির্যাস হয়তো অন্যভাইদের মত আমি নিতে পারিনি।

তারপরও আপনার লিখা পড়ে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামের কান্ডারী রূপী দল ও তার ফোকাস এর একটা সেন্স তৈরী হল।

গতকাল আমি শায়খ ইমরান হোসেন এর একটি বক্তব্য শুনছিলাম। উনি দলবাজি তুল্য ইসলামী নেতৃবৃন্দের উপর প্রচন্ড ক্ষুদ্ধতা নিয়ে কথা বলছিলেন এবং এ্যাফিল করছিলেন বাস্তবতাকে কোরআন হাদীস দিয়ে বোঝার জন্য।

সীমাবদ্ধ ইসলামিক জ্ঞানের আলোকে সাধারন মুসলিম হিসাবে আমার কাছে এতসব কিছুর পরও মনে হয় - নির্মোহ কিছু ইসলামিক স্কলারের এখনো সুযোগ আছে এবং উচিত ও - ইসলামের ধারক ও বাহক মুসলিম এ সকল স্কলারদের, নেতাদের, এ্যাক্টিভিস্টদের মধ্যে মিনিমাম সহযোগীতার একটি ক্ষেত্র তৈরী করা।

কয়েক মাস আগে অনুরূপ বিষয়ের উপর একটা লিখায় আমি কমেন্ট করেছিলাম - কোয়ালিফাইড কোন শিক্ষক কিংবা প্যানেল অব টিচার্স এর অধীনে - আমরা যদি যথাযথ একটি স্টাডি তথা রিসার্চ করতে পারতাম - যেখানে যথাযথ স্ম্যাপ্লিং-সার্ভে হত, যথাযথ তথ্য ও উপাত্ত সমূহ তুলে আনা যেত - তবে হয়তো আমরা দেখতাম - আসলে দল সমূহের আকিদাগত পার্থক্য এতটাই ক্ষীন, আর উদ্দেশ্যগত পার্থক্য ও নিহায়েত মামুলী।

তখন প্রতিটি সংগঠণই অন্ততঃ এই মর্মে একে অপরের সাথে কিছু মৌলিক বিষয়ে সহযোগীতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে পারতো। আর অন্যায় ইনফ্লুয়েন্স এ যারা জড়িত - তারা আপনা আপনি উম্মাহর সামনে নগ্ন হয়ে যেত। ধন্যবাদ।
১৫
217660
০৫ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আসলে দল সমূহের আকিদাগত পার্থক্য এতটাই ক্ষীন, আর উদ্দেশ্যগত পার্থক্য ও নিহায়েত মামুলী।

মাশাআল্লাহ - আপনি যে পরামর্শ রেখেছেন। তাতে আমার শ্রম সার্থক হয়েছে। আপনি নিজেকে খুবই বিনয়ী করে পেশ করেছেন। এই কৌশলটা খুবই উত্তম। এটা আমার রাসূল (সাঃ) পছন্দ করতেন। আপনাকে মোবারকবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File