হেফাজতে ইসলাম,আহলে হাদীস এবং দরদি বন্ধু সেকুলার রাজনীতি।পর্ব - (দুই)

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:২৫:১২ বিকাল

তিন)

প্রথম পর্বের পর -

দেশে কতটি মাদ্রাসা আছে যা কওমী নেসাবে চলে।এর হিসাব হয়তো কারোর কাছে নেই।তাদের নিজেদের মধ্যে এত ভাগ (দল-উপদল) তা নিজেরাই হিসাব রাখার প্রয়োজন মনে করেন না।এবতেদায়ী (প্রাইমারী) পর্যন্ত মাদ্রাসা। নাম দেয়া হয় জামেয়া (বিশ্ববিদ্যালয়)।যিনি মুহাতামীম তিনি হয়তো কয়েক বছর আগে দাওরা ফারেগ (পাশ) হয়েছেন। মুতামীম সাহেবের পরিচিত কোন সম্পদশালী ব্যক্তির অনুদানে শুরু হয় মাদ্রাসার কার্যক্রম। এভাবেই যাত্রা শুরু।

কে পয়সা দিচ্ছে,তার উপর্জন হালাল কি না,সে সেকুলার না বামপন্থী - আস্তিক না নাস্তিক রাজনীতি করে ইত্যাদি বিবেচনা করার কোন প্রয়োজন পড়ে না।আল্লাহর ওয়াস্তে দিচ্ছেন আর মুহতামীম হুজুর নিচ্ছেন। চলছে মাদ্রাসা। খুব কম মাদ্রাসা আছে যেগুলো এই সব বিষয় বিবেচনা করে।

নাম করা অনেক মাদ্রাসার মুহতামীমরা প্রবাসে এমন সব ব্যক্তিদের মেহমান হন - যাদের অর্থ উপার্জন ও ব্যক্তিগত রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা এবং নৈতিক দিক থেকে খুবই বিতর্কিত।খুবই বিবৃত হতে হয় মাঝে মধ্যে।

কওমী মাদ্রাসাগুলো দেশের জন্য কি করছে।এই একটি পয়েন্টে সবাই এক হওয়া প্রয়োজন ছিল।কওমী বোড কতটি আছে কারো জানা নেই।সামান্য মত পার্থক্য হলেই নতুন একটি বোড। তবে শাহবাগী মাওলানা - ফরিদ উদ্দিন মাসউদের মতে কওমী বোড কয়েকশত।

আমাদের জাতীয় পর্যায়ে এর একটি সমীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। আমি মনে করি কওমী মাদ্রাসাগুলো থেকে যে সমস্ত আলেম ওলামা বের হচ্ছেন তারা আমাদের দ্বীনের রাহবার হতে পারতেন। অতীতে এই জাতি অনেকবার তাদের ওপর ভরসা করেছে। আগামীতে ও করবে।বাস্তবতা হল প্রতিবারই জাতি আশাহত হয়েছে। আরো বেশ কিছু বিতর্ক জন্ম দিয়ে ইন্তিকাল হয়েছে।ব্যক্তি কেন্দ্রিক যে আন্দোলনের জন্ম হয় তার উপসংহার এভাবেই হয়।এটা ইতিহাস। ব্যক্তিগত ইগো,সামান্য দুনিয়াবী স্বার্থ,মাদ্রাসার প্রধান পদটি হয় এই সমস্ত কারণ। সমস্যা হল - তারা নিজেরাই।

মরহুম হাফিজ্জি হুজুর (রঃ) তওবার রাজনীতি শুরু করেছিলেন - জাতির মধ্যে কত বড় আশা জেগেছিল ঐ সময়। কিন্তু ঐ একই সমস্যা। পবিত্র এই আন্দোলনে বাধা হলেন তারই পুত্র আর জামাই। এগুলো একেবারে নিকটি ইতিহাস।

এরশাদকে দিয়ে আল্লামা আজিজুল হক সাহেবকে বের করা হল লাল ভাগ থেকে। আজকের এমপি হাজি মকবুল সাহেব এগুলো খুবই ভাল করে জানেন। রহমানীয়াতে গিয়ে ও তিনি শান্তিতে ছিলেন না।

বর্তমান হেফাজতে ইসলাম পর্দার অন্তরালে চলে যাবার কারন ও ঐ একটা।

কেউ একমত না হতে পারেন - তবে আমার বিবেচনায় আসল সমস্যা হল - ইসলাম সম্পর্কে কওমী ওলামাদের ইসলামের খন্ডিত ব্যাখ্যা।যদিও বিবেচনাটা খুবই শক্ত। তবে এটাই ইতিহাস। ৪৭ পূর্ব দেওবন্দের আকাবীরদের অবস্থান পর্যালোচনা করুন।

মাসলায়ে কওমিয়াত (জাতিয়তাবাদ) নিয়ে হোসেন আহমাদ মাদানী (রঃ) হিন্দু মুসলিমকে এক জাতি করে ফতওয়া দিয়ে দিলেন।দেওবন্দের ওলামারা সেদিন যদি জাতীয়তার প্রশ্নে ইসলামের মৌলিক আকিদা ঠিক রাখতেন। তাহলে উপমহাদেশের চেহারা ভিন্ন হত।

ইসলামের খন্ডিত রুপকে তারা তখন যেমন মনে করতেন আসল ইসলাম।নিজেদের ইজতেহাদকে ইসলামের একমাত্র ব্যাখ্যা হিসাবে বিশ্বাস করতেন।

এই ভূল এবং মারাত্মক আকিদায় আক্রান্ত তখনকার কওমী আলেম ছিলেন। আজও সেই জায়গা থেকে বের হতে পারেননি আমাদের সম্মানীত এই মানুষগুলো।

সমস্যাটা এই জায়গায়।

আজকের ভারতীয় পরারাষ্ট্রমন্ত্রীর (সালমান খুরশীদ) চাচা (শাইখ হাবিবুর রহমান) একজন আকাবীরে দেওবন্দ।এই দেশ থেকে যারা যেতে পারেন তাদের মধ্যে শহবাগী মাওলানা (ফরিদ উদ্দিন মাসউদ) একমাত্র প্রতিনিধি।এদেশের দেওবন্দের আলেমদেরকে ভারত যেভাবে চায় সেভাবেই চলতে বাধ্য করে।তার প্রমান অতীত নির্বাচনে এই জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।আল্লামা সাঈদি সাহেবকে যারা ভোট দিবে তারা শুকুরের গোশত খাবে। এমন ফতোয়া দিয়েছিলেন ২০০১ সালে।
ইনকিলাবের উপসম্পদকীয়তে এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা হয়েছিল।

বাংলার রাজনৈতিক এতিম ইনু মেননরা যখন বীর দর্পে ঘোষনা দেন - কওমী মাদ্রাসা বন্ধ করার। তখন দেখা যায় - কওমীর কিছু আকাবীর সরকারের সাথে মিটিং করছেন। কওমী মাছলাকের আলেমদের কাছে ইসলাম পন্থী দল বা মানুষ যত না গ্রহনীয় তার চাইতে বেশী আপন হলো - সেকুলার ও বামপন্থী গোষ্ঠী।এটা অপ্রিয় হলেও সত্য। বর্তমান সরাকারের সাথে তিনবার বঙ্গ ভবনে বৈঠক করেছেন আল্লামা শফী সাহেব। তার পর শাপলা চত্তর। এর পর আবার তারপর আওয়ামীলীগ দরদি বন্ধু হবার ঘোষণা।

উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের বিজয় হয়েছে বড় কারণ।বন্ধুর সাথে পিরীত হতে সময় লাগেনি।যা আগে ছিল -কেননা - মোতায়াল্লী সাহেবরা (অর্থদাতাগোষ্ঠী) যা বলবে তা না মানলে তো মাদ্রাসা চালানো যাবে না।করুণ এবং নিদারুন বাস্তবতা হল এটা।


চার)

কওমী ওলামাদের মনোজগতটা কেমন তা বুঝতে আমার ব্যক্তিগত একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।

গত কয়েক বছর আগে একটি প্রোগ্রাম হয়েছিল আলিয়া এবং কওমী হাজারাতদের নিয়ে।এটার আয়োজন করেছিলেন আমাদের পরিচিত প্রবাসী এক আলেম। যিনি খেলাফত মজলিসের বড় দায়িত্বশীল। আমি দাওয়াত পেয়েছিলাম আমার ঐ চাচার পরিচিতিতে।আমি শাইখ বদরপুরীরর ভাতিজা।এরকম পরিচিতি খুবই বড় হয় কওমী ওলামাদের কাছে।

আমি বয়সে,কর্মে,ছিরতে ও ছুরতে মজলিসের একেবারে ছোট মানুষ। আমার শুনা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।ঐ পরিবেশে কথা বললে উপস্থিত সবার কাছে হত চরম বেয়াদবী।

মজলিসে জামায়াতের কেউ ছিলেন মনে পড়ছে না। তবে আলোচনাটা শুরু হয় জামায়াতকে নিয়েই। জামায়াতের আকিদা,মাওলানা মওদুদী - এদের সাথে কোন ঐক্য সম্ভব নয়। ঈমান বাঁচাতে অবশ্যই আমাদের (কওমী তথা দেওবন্দী) আকাবিরদের অনুসরণ করতে হবে।

তেমন কোন কর্মসূচি ছিলনা। তবে আলোচনার প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগই জামায়াতকে নিয়ে। তার পর খাবার দেয়া হল। আমি খাবারের সময় যিনি দাওয়াত করেছেন তাকে সকল বিনয় আর শ্রদ্ধা একত্রিত করে জিজ্ঞেস করলাম - আজকের বৈঠকের উদ্দেশ্য কি ছিল। তিনি আমার দিকে তাকালেন, মুচকি হাসলেন। বললেন - আমি জানতাম তুমি এরকম প্রশ্ন করবে।

আমি বললাম,এত সময় দিলেন - লাভ হল কী? বরং আরো ক্ষতিই তো হল।

তিনি আর কিছু বললেন না। আমার দিকে তাকিয়ে শুধু বললেন - দেখলে তো জামায়াতের ব্যাপারে আমাদের আলেমদের চিন্তা কেমন।

আমি বললাম, আপনি ইচ্ছা করলে তো জামায়াতের একজনকে রাখতে পারতেন। তাহলে তারা এর জবাব দিত।আলেম সাহেব আর কিছু বললেন না। মনে হল বিরক্ত হচ্ছেন।

আমি খাবার টেবিলের দিকে অগ্রসর হতেই দেখা হল আমার আগের পরিচিত একজনের সাথে। তিনি আমাকে দেখে খুবই চমকালেন। বললেন,আপনি ছিলেন অথচ কিছুই বললেন না।আপনারা আর কবে এক হবেন।আপনারা এক না হলে তো এরকম হবেই।বাকশালীরা আপনাদেরকে পিটাবে। আর বিএনপি আপনাদেরকে নিয়ে খেলা করবে।

আমি তাকে কাছে টেনে বললাম,ভাই কাকে এক হতে বলছেন?

জামায়াত সেই ১৯৪১ ইংরেজী থেকে এক আছে। কবে তারা ভাগ হল। এতক্ষণ যে হুজুরদের কথা শুনলেন,তারা কবে এক এবং ঐক্য ছিলেন?

তওবার রাজনীতি দিয়ে যারা শুরু করছিলেন - তারা আজ সম্ভবত এক ডজনের বেশী ভাগে ভাগ হয়ে আছেন।একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করেন না। একজনের মাদ্রাসায় আরেকজন দাওয়াত গ্রহন করেন না।কমিনিষ্টরা তারা সাইনবোড ভাগ করেছে। আদর্শ ভাগ করেনি। আফসোস হল - আমাদের সম্মানীত হুজুররা নিজেদের স্বার্থের জন্য ইসলামকে বহু ভাগে ভাগ করেছেন।


জামায়াতকে টার্গেট করে যত কথা বলেছেন তার চাইতে শতগুন বেশী সমস্যা রয়েছে তাদের নিজেদের মধ্যে। নিজেদের মাদ্রাসার চার দেয়ালের ভিতর গোটা দুনিয়াটা ভাবেন। মাত্র কয়েক হাজার ছাত্রদের মুহতামীম হয়ে নিজেদেরকে আমীরুল মুজাহীদীন বলে ভাবতে থাকেন।বললাম যারা নিজেরা মাত্র কয়েক বছর একসাথে চলতে পারলেন না তারা আবার ঐক্য করবেন এটা আপনি বিশ্বাস করেন?

খাওয়া দাওয়া শেষ করে যারা খুবই উচ্চকন্ঠ ছিলেন তাদের সাথে মিলিত হলাম।চেহারা সুরত দেখে মনে হল আজ তারা বড় জিহাদ করেছেন। আমার বয়সী এবং কিছুটা পরিচিত একজনকে জিজ্ঞেস করলাম - জামায়াতের বিষয়ে একটা সিদ্দান্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল? তিনি বললেন - আমি মুফতি সাহেবকে বলেছিলাম। কিন্তু মুফতি সাহেব রাজি হননি।আমি বললাম আপনি কি ভাবছেন - বললেন প্রবাসী ওলামাদের পক্ষ থেকে একটি ফতোয়া দেয়া উচিত।

পরিচিত হয়ে জানলাম - তিনি এক মসজিদের খাদেম।তার ব্যবসা হল ইন্টারনেট।ভাল পয়সা কামিয়েছেন। বিবি বাচ্ছা নিয়ে আছেন।

গাড়িতে বসে চিন্তা করছিলাম আর আমি নিজের অজান্তেই চলে গেলাম ১৯৮৯ সালে। সিলেট জিন্দাবাজার পয়েন্ট। সভা চলছে। আমি কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদের ইমাম সাহেবের (মাওলানা জমীর উদ্দিন) হুজরাতে বসা। কিছুক্ষন পর প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করবেন সিলেটের কাজীর বাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমান (বুলবুলি) সাহেব।সভার আয়োজন করেছে জাগ্রত জনতা বা এরকম নতুন নামের কোন সংগঠন। আল্লামা দেলওয়ার হোসেন সাঈদি সাহেবকে রুখতে হবে শাহজালালের মাঠিতে।এটা তাদের ভাষায় ঈমান রক্ষার আন্দোলন।

আগের দিন একই জায়গায় একই দাবীতে জনসভা করেছেন কমিনিষ্ট পার্টি।সভাপতি ছিলেন কমরেড সদর উদ্দিন।

আগামী পর্বে - জিন্দাবাজার পয়েন্টে জনাব বুলবুলির বক্তৃতা -

====================================

প্রথম পর্বের লিংক।http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/1876/IBNAHMED/43914

বিষয়: বিবিধ

২৭৮৩ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

214946
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
আবু সাইফ লিখেছেন : পূরোটাই পড়লাম-

আরো পড়ার আশা ও তৃষা তো রয়েই গেল

আল্লাহতায়ালা আপনার সুস্থ্যজীবন ও সচল-কলম দীর্ঘায়ূ করুন

যেহেতু আমি আলিম নই- তাই তাঁদের নিয়ে আমার মন্তব্য করা অনুচিত মনে করি!

কিন্তু তিনযুগের বাস্তব/ময়দানের অভিজ্ঞতায় আপনার ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলো সমর্থন করা কর্তব্য মনে করি!!

জামালউদ্দীন আফগানী রাহেমাহুল্লাহর ভাষায়-

এঁরা একটি বিষয়ে একমত যে-
এঁরা কখনো একমত(ঐক্যবদ্ধ) হবেননা!!
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১১
163196
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : মুহতারাম আপনি আলেম নন। এটা আপনার বিনয়। আমরা ব্লগে যারা আছি তারা প্রায় সবাই আপনাকে আলেম ই মনে করে। এবং আপনা থেকে সেরকমই অনেক কিছু পাই।
আল্লাহ আপনাকে ও আমাদের জন্য আমাদের এই জগতের জন্য সকল সুযোগ দিয়ে যেন দীর্ঘদিন সুস্থ্য রাখেন।
আপনার পরামর্শ চাই।
214956
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২০
ইমরান ভাই লিখেছেন : পরের পবের্র অপেখায় ......
২৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১১
163197
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : পড়ার জন্য অনেক অনেক মোবারকবাদ।
215025
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৫০
শেখের পোলা লিখেছেন : আহমদ ভাই, সত্য কথার বাজর নাই, তবুবলে যেতে হবে ৷ যদি এক জনও বোঝে কম কি? আপনাকে ধন্যবাদ৷
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪০
163659
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : বিষয়টা এমন না যে,কারোর সমালোচনা অথবা খাটো করা নয়। বরং এই বিষয়টা ওপর নির্ভর করে আমাদের জাতীয় অনেক সমস্যার সমাধান।
নিজের বিবেক থেকে লেখা।আপনাকে ধন্যবাদ।
215028
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০২
আহমদ মুসা লিখেছেন : আমার প্রাথমিক শিক্ষা ক্বাউমী মাদ্রাসা থেকেই শুরু। মনে দরদ নিয়ে ক্বাউমী হাযারাতদের কিছু কিছু চিন্তা-ধারা, জীবন যাপন নিয়ে আত্মশুদ্ধিমূলক কিছু বলতে চাইলেই বিস্তর তিরস্কামূলক নিন্দাবানে জর্জরিত হই।
আপনার লেখার মধ্যে আমাদের আলেম সমাজের বাস্তব চিত্রই তুলে ধরেছেন।
ব্লগার মাই নেম খান ভাইয়ের ইসলামিক মিডিয়া: সমস্যা ও সম্ভাবনা শিরোনামের ব্লগটিতে আমি একটি মন্তব্য করেছিলাম। পরবর্তীতে আমার মন্তব্যটি সামান্য এডিট করে আরো সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় ফেইসবুকেও শেয়ার করেছিলাম। ফেবুতে শেয়ার করা আমার স্ট্যাটাসটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি বিখ্যাত ক্বাউমী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম সাহেবকে মোবাইলে নেট ওপেন করে পড়ে শুনানোর পর আমাকে ধমকের সাথেই মুছে দিতে পরামর্শ দিলেন। আমার মন্তব্যটিতে তার দৃষ্টিতে ওলামায়ে কেরামের প্রতি মারাত্মক গোস্তাখীমূলক লেখা হয়ে গেছে। তিনি বিভিন্ন মান্তেকী যুক্তি, আকাবেরীনে হাযারাতদের বানী ও উক্তি দিয়ে, নিজের বুদ্ধি দিয়ে আমাকে বুঝাতে চেষ্টা করলেন যে, আমার লেখাটির কারণে আমাকে কাফের ফতওয়া দিতে দলীল পেশ করতে পারবেন। উক্ত মুহতামিম সাহেব সম্পর্কে আমার প্রতিবেশী এবং দূর-আত্মীয়। তিনি আক্বিদাগতভাবে জামায়াতের বিরোধী। তবে বিদ্বেষী বলা যায় না।
ক্বাউমী মাদ্রসা এবং তাদের আকাবেরীনদের ব্যাপারে অনেক কিছু বলতে ও লিখতে ইচ্ছে করে। কিন্তু ”কাফের” হয়ে যাওয়ার ভয়ে কিছু লিখা হয় না। অবশ্য জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মাওদুদী সাহেবের নামের শুরুতে অথবা নামের শেষে সম্মান সূচক কিছু না লিখার কারণে এযাবত আমাকে কোন জামায়াতপন্থী লোক বেয়াদব হিসেবে সাব্যস্ত করেননি। সম্ভবত ক্বাউমী আসাতেজায়ে কেরামদের মনোভাব বুঝার জন্য এ একটি উদারহাণই যথেষ্ট।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪৫
163663
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : জনাব,
প্রত্যাশিত মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ। কাফের বানানোর প্রক্রিয়া বা লাইসেন্স আল্রাহ কাউকে দেননি। এই ভয়ের কারনে সত্য বলবেন না। এটা আরেকটা সসম্যা।
মাই নেইম ইজ খান ব্লগার জগতে আমাদের অগ্রজ। আমি নিজেও মন্তব্য করি। তবে দ্বিমত আছে আমার খানের সাথে।
পৃথিবীর কারোর সাথে বেয়াদবী বা গোস্তাখী করলে ঈমান বা গুনাহ হবে এমন কোন নীতিমালা ইসলামে নেই।
বরং সূরা হুজরাতে এটা খাস করা হয়েছে বিশ্ব নবী (সাঃ) কে। তাফহীমুল কোরআনের ব্যখ্যা পড়তে পারেন। অবশ্য মা'রেফূল কোরআন পড়লে ভিন্নটা পাবেন।
০৪ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:২৮
165550
সাদাচোখে লিখেছেন : আহমাদ ভাই, 'পৃথিবীর কারোর সাথে বেয়াদবী বা গোস্তাখী করলে ঈমান বা গুনাহ হবে এমন কোন নীতিমালা ইসলামে নেই।'

দুঃখিত, আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন, ঈমান হারা হবে এমন কোন নীতিমালা ইসলামে নেই?


215077
২৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৫৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ পোষ্টটির জন্য।
কওমি মাদ্রাসার বড় সমস্যাই এই সর্ব বিষয়ে আকাবেরিন দের অনুসরন। কুরআন ও সুন্নাহর যুক্তিও তারা মানতে রাজি নন। আমাদের বাসার সামনেই একটি মসজিদ আছে। যার সভাপতি আমার চাচা নিয়মিত নামাজ ও পড়েননা। কওমি মাদ্রাসা সমুহের মুতওয়াল্লিদের সম্পর্কেও তাই প্রযোজ্য।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪৮
163664
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আকাবেরীনদের অনুসরণ অনুকরণ করতে গিয়ে ক্বাওমী ওলামারা অনেক সময় এমন সব কাজ করেন যা মোটেই কুরআন সুন্নাহ অনুমোদিত হয় না। উসওয়াতুন হাসানার মাকামে বসিয়ে দেন আকাবীরীনদেরকে। প্রবলেমটা এই জায়গায়।
০৪ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:৩০
165552
সাদাচোখে লিখেছেন : আমার সীমাবদ্ধতার জন্য দুঃখিত। দয়া করে বলবেন কি, আকাবেরিন দিয়ে কি বোঝানো হয়? লিডার?
215304
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:১৩
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : অনেক শেখার আছে আপনার অভিজ্ঞতা হতে। চালিয়ে যান, সাথেই আছি।
৩০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫৫
163666
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : প্রেসিডেন্ট মানুষ। শিখবো তো আপনাদের থেকে। সাথে থাকার ওয়াদার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
215583
৩০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০০
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : তওবার রাজনীতি দিয়ে যারা শুরু করছিলেন - তারা আজ সম্ভবত এক ডজনের বেশী ভাগে ভাগ হয়ে আছেন।একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করেন না। একজনের মাদ্রাসায় আরেকজন দাওয়াত গ্রহন করেন না।কমিনিষ্টরা তারা সাইনবোড ভাগ করেছে। আদর্শ ভাগ করেনি। আফসোস হল - আমাদের সম্মানীত হুজুররা নিজেদের স্বার্থের জন্য ইসলামকে বহু ভাগে ভাগ করেছেন।

জামায়াতকে টার্গেট করে যত কথা বলেছেন তার চাইতে শতগুন বেশী সমস্যা রয়েছে তাদের নিজেদের মধ্যে। নিজেদের মাদ্রাসার চার দেয়ালের ভিতর গোটা দুনিয়াটা ভাবেন। মাত্র কয়েক হাজার ছাত্রদের মুহতামীম হয়ে নিজেদেরকে আমীরুল মুজাহীদীন বলে ভাবতে থাকেন।বললাম যারা নিজেরা মাত্র কয়েক বছর একসাথে চলতে পারলেন না তারা আবার ঐক্য করবেন এটা আপনি বিশ্বাস করেন?


তথ্যপুর্ন সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার বিশ্লেষনটা বাস্তবতাই। চারদেয়ালের মাঝে সীমাবদ্ধ কোন খাস মুসলিম আবেগ দিয়ে নিজেদের গন্ডির মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তা সম্ভব নয় এটি হেফাজনের উত্থান পতনেই জাতি বুঝতে পারছে।

আমরা চাইনা হেফাজত ক্ষতিগ্রস্থ হোক। কিন্তু লাগমহীন কথাবার্তা শূধু হেফাজতকে নয়, জানবাজী রেখে লড়ে যাওয়া আওয়ামীলীগের যমদুত জামায়াতকেও ক্ষতিগ্রাস্থ করবে।

তাই আজকের এ বাস্তবতায়, নোংরা রাজনীতির সাথে ইসলামকে টিকিয়ে কতটুক রাখতে পারবে হেফাজত এটি জাতি বুঝতে শুরু করেছে। ধন্যবাদ।
215692
০১ মে ২০১৪ রাত ০২:৩৩
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আমার নিজের অবস্থান হল হেফাজতের পক্ষে। মন থেকে চাই হেফাজতের মত একটি প্রতিষ্ঠান থাকুক। যারা প্রেসার গ্রুপ হয়ে কাজ করবে।
তবে এরকম প্রতিষ্ঠানের লক্ষ হওয়া উচিত দেশ ও জাতির জন্য কাজ করা। কোন গোষ্ঠী বা কোন পন্থীদের জন্য নয়।
আপনাকে ধন্যবাদ।
215718
০১ মে ২০১৪ রাত ০৪:০৬
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : জামায়াত সেই ১৯৪১ ইংরেজী থেকে এক আছে। কবে তারা ভাগ হল। এতক্ষণ যে হুজুরদের কথা শুনলেন,তারা কবে এক এবং ঐক্য ছিলেন?

চমৎকার লিখেছেন ভাই। অনেকেই বলে জামায়াতের সাথে কেন অন্য ইসলামিক দলগুলোর ঐক্য হয়না। ইচ্ছা ছিলো এবিষয়ে লিখবো,কিন্তু খুব ভালো লিখতে পারবো বলে মনে হয়না,তাই লিখিনি। আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে এবং আরো আসবে সে প্রত্যাশা রাখি।
১০
215953
০১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৩৮
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার সম্পর্কে যতটুকু জানি তাতে এ বিষয়ে আপনার লেখার অধিকার বেশী। এখনো প্রত্যাশা করি আপনি শুরু করবেন।
সময় এসেছে লেখার। কারন আর কত হতাশা আর প্রতারণায় পড়তে হবে।
আপনার মূল্যানধর্মী মন্তব্য চাই।
১১
216076
০১ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৭
আবু জারীর লিখেছেন : তওবার রাজনীতি দিয়ে যারা শুরু করছিলেন - তারা আজ সম্ভবত এক ডজনের বেশী ভাগে ভাগ হয়ে আছেন।একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করেন না। একজনের মাদ্রাসায় আরেকজন দাওয়াত গ্রহন করেন না।কমিনিষ্টরা তারা সাইনবোড ভাগ করেছে। আদর্শ ভাগ করেনি। আফসোস হল - আমাদের সম্মানীত হুজুররা নিজেদের স্বার্থের জন্য ইসলামকে বহু ভাগে ভাগ করেছেন।
১২
216078
০১ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০২
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : আপনার মন্তব্য পেলে সবাই উপকৃত হত। আপনাদের মত বোদ্ধা মানুষগুলো একটু হাত খুলে লিখলে ই দেশ ও জাতির কল্যণ হত।
১৩
218907
০৮ মে ২০১৪ সকাল ০৯:২৬
আবু আশফাক লিখেছেন : এরা সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে যে কোনো কিছু যে বিনিময় করতে পারে তা বার বার প্রমাণিত।
ইসলামী ঐক্যজোট নামে শাইখুলই হাদিস, চরমোনাই পীর সৈয়দ ফজলুল করিম, মুফতি আমিনিসহ কওমীদের কাছে গ্রহণযোগ্য উলামাদের যে ঐক্য হয়েছিল তা ভেঙ্গে যায় সামান্য নেতৃত্ব দ্বন্দ্বে।
শাইখুল হাদীস যখন লালবাগে নতুন শিক্ষক তখন নাকি সৈয়দ ফজলুল করিম সেখানকার বিদায়ী ছাত্র। সুতরাং তিনি ছাত্রের নেতৃত্ব মানতে পারেন(!)?
আবার সারাদেশব্যাপী চরমোনাইয়ের মুরিদ। যারা আবার মুজাহিদ বাহিনী। আর সৈয়দ সাহেব আমিরুল মুজাহিদীন। সুতরাং তারও কোনো এক মাদ্রাসার বোখারীর শিক্ষকের নেতৃত্ব মানা অসম্ভব(!)।
অন্যদিকে মুফতি আমিনী তাওবার রাজনীতি শুরু করা হাফেজ্জী হুজুরের স্নেহের কন্যা জামাতা। অতএব নেতৃত্ব অন্যের কাছে যাওয়ার প্রশ্ন অবান্তর(!)।
এভাবেই চলছে, আর এভাবেই চলবে। সুতরাং আমি এদের নিয়ে ভিন্ন কিছু আশা করতে রাজি নই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File