জামায়াতের রাজনীতির পোস্টমর্টেম ও আগামীর পথচলা - পর্ব -২
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৫:১৪:৩৭ বিকাল
যে বিষয়গুলোর দৃষ্টি আকর্ষন -
১) ইসলামী রাষ্ট্র আর মানব কল্যাণ দুটি আলাদা জিনিষ -
আলোচিত সাক্ষাৎকারে মানুষের কল্যাণ করা আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা দুটি আলাদা বিষয় হিসাবে পেশ করা হয়েছে।পরামর্শ দেয়া হয়েছে ভারতের বিজেপির সাথে বজরং দল সহ আরএসএসর।
আমার কাছে এটা হচ্ছে প্রথম সমস্যা।অবশ্য তা চিন্তার ক্ষেত্রে। উদাহরণ হিসাবে হিলফূল ফুজুল এর নাম নেয়া হয়েছে। প্রথমত - হিলফূল ফূজুল প্রতিষ্ঠানটা রাসূল (সঃ) এর নবুয়ত পূর্ব সামাজিক প্রচেষ্টা। পূর্ব থেকেই এই চিন্তাটা ছিল মক্কায়। জাহেলী যুগের ছয় জনের নামের সাথে মিলিয়ে হিলফূল ফূজূল রাখা হয়েছিল। রাসূল (সঃ) এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেবার পর এটাকে একটি সাংগঠনিক এবং সামাজিক তথা সামগ্রিক রুপ দান করেন।তখনকার মক্কার গোটা পরিবেশের ওপর এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু এই সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের কোন প্রকার সফল চেষ্টা হয় নাই। সমাজ সেবা একটি দিক আর সমাজ পরিবর্তন করে একটি কল্যাণমূখী ব্যবস্থা স্থাপিত করা ভিন্ন বিষয়। যা হিলফূল ফুজুল দিয়ে সম্ভব হয় নাই।
এবং এটা ইতিহাস- নবুয়ত লাভের পর বা প্রায় তিন থেকে আড়াই বছর পূর্ব থেকে রাসূল (সঃ) নিজেও এই সামাজিক সংগঠনে তেমন সক্রিয় ছিলেন না।
২য় বিষয় হল - নবুয়ত পাবার পর মক্কাতে ১৩ বছর আর মদিনায় ১০ বছর হিলফূল ফুজুলের মত প্রতিষ্ঠান হয়নি। অবশ্য ব্যক্তিগত জীবনে রাসূল সহ মুহাজীর আনসার সাহাবীরা সবাই ছিলেন একেকজন মানব কল্যাণে - সেই সময়ে সবার চেয়ে অগ্রসর এবং নিবেধিত।
একটি ঘটনা বলা যেতে পারে। এটি বর্ণনা করেছেন মা খাদিজা (রাঃ) নিজে। তখনো নবুয়ত লাভ করেন নি। নির্জনতা রাসূলের স্বভাবে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।তখন ও তিনি হেরা গুহাতে যাতায়াত শুরু করেন নি।ঐ সময় মক্কাতে মঙ্গা চলছিল।
একদিন রাসূল বাহির থেকে এসে সোজা কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লেন। মা খাদিজা রাসূলের চেহারা দেখে বূঝতে পারেন,রাসুলের মন খারাপ। চেহারাতে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মা খাদিজা আলতো মাথায় হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবুল কাসিম - আপনার কি হয়েছে? কেন আপনাকে এত বিচলিত দেখা যাচ্ছে। আমাকে খুলে বলূন। রাসূল (সঃ) কেঁদে ফেললেন। বললেন, খাদিজা আমি যে দৃশ্য দেখে আসলাম তা বরদাশত করতে পারছি না-দেখলাম ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা খাদ্যের অভাবে ছটফট করছে। আমি পাশ দিয়ে চলে আসলাম।অথচ তাদেরকে কিছুই সাহায্য দিতে পারলাম না।
খাদিজা বললেন, হে রাসূল (সঃ) আপনি মন খারাপ করবেন না। একটু অপেক্ষা করুন। খাদিজা মক্কার টপ টেন ব্যবসায়ীদের একজন। তার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা বন্ধু ছিল। তাদের সবাইকে ডাকলেন। এদের মধ্যে আবুবকর,আব্দুর রহমান ইবনে আউফ,ওয়ারাকা ইবনে নওফেল সহ আরো অনেকেই। খাদিজা সবাইকে আহব্বান করলেন -দুস্থ মানবতার জন্য সাহায্য করতে। খাদিজার ঘরে সিরিয়াতে ব্যবসায়ী ট্যূরে পাঠাবেন,এমন সব মালামাল ছিল।সব রাসূলের সামনে হাজির করলেন। অবস্থা এমন হল - যে সবার অংশগ্রহনে মালামালের বিরাট স্তুপে পরিণত হল।
খাদিজা বলেন - হে আবুল কাসিম - আপনার সামনে যা সম্পদ দেখছেন। তা সবই আপনার।যাকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সাহায্য করুন।
মা খাদিজা বলেন - রাসূল আমার বিপরীতে বসা ছিলেন- জমাকৃত সম্পদ দেখে রাসূলের মুখে হাঁসি ফূটে উঠলো। আমি খুবই খুশি হলাম। আমি নিজে - আবুবকর সহ সবাই রাসুলের দেখা ঐ বাচ্ছাগুলোর কাছে গেলাম। তাদের প্রয়োজনের চাইতে বেশী দেয়া হল। তার পর মক্কাতে খুঁজে খুঁজে দুস্থ অসহায় পরিবারকে রাসূল নিজ হাতে সাহায্য দিয়ে আসলেন। মা খাদিজা বলেন - আমার জীবনে নবুয়ত পূর্ব জীবনে রাসূলকে এত খুশি আর কখনো দেখিনি।
এখন প্রশ্ন হল - মানব কল্যাণ আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্টা যদি দুটি আলাদা বিষয় হয়। যা আপনার সাক্ষাৎকারে দাবী করা হয়েছে।আরো দাবী করা হয়েছে এভাবেই বর্তমান জামায়াতকে সাজাতে।তাহলে এই সিসটেম টা কেন পরবর্তীতে চালূ রাখা হল না।
আপনি কি বলতে পারবেন - নবুয়ত পাবার পর মক্কার ১৩ বছরের ইতিহাসে হিলফূল ফূজুল আবার কাজ শুরু করেছে?
আমার মনে হয় - মানব কল্যাণ আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্টা মুদ্রার এপিট ওপিট।কেননা সামাজিক সংগঠন,ব্যক্তি বা ব্যক্তি বলয়ে কাজ করে। আর ইসলামী রাষ্ট্রের কর্ম পরিধি হল গোটা জাতির প্রতিটি সদস্য।একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের বিপরীতে একটি সামাজিক সংগঠন কখনো তুলনীয় হতে পারে না।
আরেকটি বিষয় - সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের উদাহরণগুলো আমাদের জন্য সহায়ক,উৎসাহের? সেই প্রচেষ্টা থাকা চাই এবং উচিত।তবে পদ্ধতিগত চিন্তাগুলো আপনার আমার আলোচনার বিষয় হতে পারে।
বর্তমানে তুর্কিতে গুলেন আন্দোলনকে দলীল পেশ করতে পারেন।আমি বলবো একটু অপেক্ষা করুন।তুর্কীর গুলেন আন্দোলনের সুন্দর একটি পরিসমাপ্তি সময় এখনো আসেনি। তাদের অবদান রয়েছে তুর্কী সমাজে। এমনটি বর্তমান তুর্কি সরকারে যারা আছেন তারা স্বীকার করেন। কিন্তু এটাই একমাত্র কারন বা সম্ভাবনা অথবা বিকল্প যদি বলতে চান, তহলে বিপত্তিটা হবে বড় আকারে। আমি আগাম কিছু বলতে চাই না। তবে আমি নিশ্চিত যে, আপনি আমাকে একসময় সমর্থন করে লিখবেন।
একই চেষ্টা করা হয়েছিল মিশরে ৮০ দশকে।এখনো তা আছে।মিশরে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫ম হয়েছিলেন ড: আবুল ফুতুহ। তিনি ইখওয়ানের আন্তর্জাতিক রিলিপ ওয়ার্কের প্রধান ছিলেন। পাকিস্থানে ৬০ এর দশকে জামায়াত থেকে বেশ কয়েকজন উচুমানে (নঈম সিদ্দিকির মত) নেতৃত্ব বের হয়ে চেষ্টা করেছিলেন। কিছুই দাঁড় করাতে পারেন নি। খেদমতে খালক করতে গিয়ে মুল শ্রোত থেকে তারা হারিয়ে গিয়েছেন। আলেজেরিয়া এবং তিউনিসিয়ার উদাহরণ দিতে পারেন।আমি একমত। খবর নেন।সেখানকার সামাজিক সংগঠনগুলো মুল আন্দোলনের সহায়ক ছিল এবং আছে।মূল সংগঠনের একটি কমিটি তাদের নীতি নির্ধারন করে দেয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কখনো হস্তক্ষেপ করে না।
জামায়াতের সমস্যা হল এই জায়গায়। সব কিছু করতে হবে আমীর বা তার নিয়োজিত কোন একান্ত পছন্দের ব্যক্তি।আর প্রায় সকল ক্ষেত্রে যারা দায়িত্ব পালন করেন তারা সেই ফিল্ডের লোক না। যেমন মুমতাজূল মুহদ্দীস মরহুম আবুল কালাম মোহাম্মদ ইঊসুফ (রঃ) কে চাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি করা।আমি মনে করি এটা তার ফিল্ড ছিল না।জাতী আরো বেশী উপকৃত হত যদি হাদীসের মৌলিক গ্রন্থের বাংলায় শরাহ (ব্যাখ্যা) লিখতেন।কাজটা হত তার জন্য স্বাচ্ছন্দের। উপভোগ করতেন তিনি তার জীবন।
একটা হল সহযোগী সংগঠন আর আরেকটা হল অঙ্গ সংগঠন।এই ক্ষেত্রে জামায়াত তার সকল সহযোগী সংগঠনকে অঙ্গ সংগঠনের পরিণত করে ফেলে। সমালোচনা বা পরামর্শ দেবার জায়গাটা হতে পারে এই পয়েন্টে।
আমি মনে করি এবং এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একমাত্র জামায়াত ই সত্যিকার (প্রায়) দুর্নিতিমুক্ত সামাজিক সংগঠনের জন্ম দিয়েছে। অসংখ্য অগনিত সংগঠন যা জামায়াতের দ্বারা প্রভাবিত,পরিচালিত হচ্ছে। এগুলোর দুর্বলতা রয়েছে,সমস্যা রয়েছে এটা সত্য। আওয়ামীলীগ বিএনপি সহ অন্য দলের লোকেরা যেখানে এমপি বা জেলা কমিটিতে যাবার জন্য সামাজিক সংগঠন করে। ঠিক সেই জায়গায় জামায়াত সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার ও মানবতার কল্যাণে কাজ গুলো করে থাকে। একমত না হতে পারেন। কিন্তু সত্যটা স্বীকার করা আমাদের সকলের জন্য মঙ্গলজনক।
===================================
মাদ্রাসা শিক্ষা এবং নেতৃবৃন্দের সন্তানদের পড়া লেখা নিয়ে হিপোক্র্যাসি শব্দটা চয়ন করেছেন।এই শব্দটা যদি ব্যবহার করে থাকেন সামগ্রিক অর্থে তাহলে আমি মোটেই একমত না।এবং এটা হবে সামগ্রিক অর্থে জুলূম করার সামিল।
এটা সত্য কিছু দায়ীত্বশীল আছেন তারা এই ভুল করছেন। এবং তার খেসারত দিচ্ছেন।আমি এরকম বেশ কিছু পরিবার জানি। যাদের কপাল পুড়েছে। ছেলেকে পাঠিয়েছেন বিদেশে ডাক্তার বানাতে। ছেলে বাপের আদর্শকে গালি দেয়। এরকম দৃষ্টান্ত খুবই কম। এখনও বিরাট একটি অংশ দ্বীনি মাদ্রাসাকে ই প্রাধান্য দিচ্ছেন।হিপোক্র্যাট সংখ্যায় খুবই কম। দু:খ জন সত্য হল এদের কয়েকজন জামায়াত নামক নৌকার মাঝি হয়ে আছেন।
এটাকে আপনার ভাষায় - স্টাবলিশম্যান্ট সমস্যা।এই প্রকারের যারা আছেন ইসলামী আন্দোলনে তাদের জন্য করুনা হয়। হতে পারেন তাদের সন্তানরা বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এক সময় এরাই হবে জামায়াতের জন্য গলার ফাঁস।
সমস্যাটা হবে মুসলীমলীগের মত। পরিবারের সদস্যদেরকে ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে অজ্ঞ রেখে জাতির মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা বিজ্ঞতার পরিচয় নয়।বরং সেটা বুমেরাং হয়।হওয়াটা স্বাভাবিক।
আগামী পর্বে -(দৃষ্টি আকর্ষন ২)
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৫ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
--
**পরিসমাপ্তি সুন্দর হবে- সে নিশ্চয়তাই বা কোথায়! ইতিমধ্যে তো নিজেরা সংকটে পড়ে গেছে এবং অন্যদের জন্যও সংকট তৈরী করেছে-
রাজনৈতিক ময়দান থেকে দূরত্বে থাকার কারণেই হয়তো অন্যের ক্রীড়ানক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া থেকে বাঁচতে পারছেনা!
****
*হিপোক্র্যাট সংখ্যায় খুবই কম। দু:খ জন সত্য হল এদের কয়েকজন জামায়াত নামক নৌকার মাঝি হয়ে আছেন।
--
**তার চেয়ে বড় সংকট হলো- ঐসব মাঝিদের মাইন্ডসেট অনুসারীদের হাতেই সারা দেশের নেতৃত্ব রাখার পদ্ধতিগত ও কৌশলগত ধারাবাহিকতা, য়া ভিন্নমত বা নতুন/ব্যতিক্রমী চিন্তাকে নিরুতসাহিত বা অবরুদ্ধ করে!
সারা দেশের স্থানীয় পরিষদসমূহের নির্বাচনের অনেক বিজয় ও গণমুখী নেতৃত্ব এ খাদে পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে!!
এই লাইনটা দেবার একান্ত ইচ্ছা ছিল। কিন্তু অনেক চিন্তা করে লিখতে পারি নি। আপনাকে মোবারকবাদ।
এর চাইতে সঠিক বিষয় হয়না৷ একেই বলে 'বগলমে ইঁট'৷ পরের পর্বে আওয়াজ দিয়েন৷ ধন্যবাদ৷
আপনি শেষে যে সমস্যাটি তুলে ধরেছেন, "পরিবারের সদস্যদেরকে ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে অজ্ঞ রেখে জাতির মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা বিজ্ঞতার পরিচয় নয়।বরং সেটা বুমেরাং হয়। হওয়াটা স্বাভাবিক ।"-- কোরআনে এর সমাধান আছে মুহকাম আদেশ হিসাবে ।
'কু আনফুসাকুম এয়া আহলিকুম নারান''
তুমি তোমার নিজকে এবং তোমার স্ত্রী-পুত্র-পরিবারকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও ।
ওয়া'মুর আহলাকা বিস সালাতি ওয়াসতাবির আলাইহা (২০ ত্বাহা, ১৩২ )
নিজের স্ত্রী-পুত্র-পরিজনকে নামাজের আদেশ দাও, এবং নিজেও এর উপর দৃঢ়পদ থাক ।
এগুলো কি আল্লাহর স্পষ্ট আদেশ নয় ?
সুরা তওবা'র ১১১ নম্বর আয়াতে জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহর কাছে জান-মাল বিক্রয় করার যে বিষয়টি আছে, তা দেখিয়ে সদস্য শপথ করানোর জন্য যে টোপ দেয়া হয়, নিজের পরিবারকে তাযকিয়াহ করার জন্য এর পঞ্চাশভাগের একভাগও নির্দেশনা দেয়া হত, তাহলে ইসলামী আন্দোলনের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যেত ।
সমর্থক টার্গেট, কর্মী টার্গেট কি নিজের স্ত্রীকে করা যায় না ? পুত্রকে করা যায় না ? ভাইকে করা যায় না ?
যারা শপথ নিয়েছেন, তারাও কেন যেন পুরানো বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে চান না ।
'রুকন' নামের এক 'ব্রাহ্মণ' শ্রেণী তৈরী করা হয়েছে, যাদের ছাড়া আর কারো কাছ থেক কোন পরামর্শ শোনা হয় না ।
কোন পরামর্শ দিতে গেলেই বলা হয়, আগে 'রোকন' হয়ে আসুন ।
একজন ইসলামী আন্দোলনের সৈনিকের চরিত্রে এমন সংকীর্ণতা শোভা পায় না ।
আপনি নিয়মিত লিখুন । পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম ।
'কু আনফুসাকুম এয়া আহলিকুম নারান'- এর আলোকে পরিবার গঠন করার তাগাদা কি সংগঠন দেয়নি? আমার জানামতে ‘পারিবারিক বৈঠক’ নামে একটি কলাম রয়েছে ব্যক্তিগত রিপোর্টে। পরিবারের সদস্যদেরকে ইসলামের পথে ডাকা হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য। তারপরও যদি কারো নসিবে হেদায়েত না থাকে তা ভিন্ন কথা।
েো‘রোকন’নামের 'ব্রাহ্মণ'! আপনার নিকট থেকে শব্দটি শুনতে ভালো লাগলো না, যদিওি আমি তা নই।
ফরজ ওয়াজীব ও হালাল হারামের সীমা রেখা মেনে চলা, নিয়মিত দাওয়াতী কাজ করা,বায়তুল মালে দান করা, দাওয়াতী কাজ করা। কালেমা তাইয়েবার বিপরীত কারো অনুগত্য না করার সিদ্ধান্ত নেয়া এবং আনুষাঙ্গিক আরো কয়েকটি কাজ করলে যদি রোকন হওয়া যায় তাহলে রোকন হয়ে পরামর্শ দিতে সমস্যা কোথায়?
ধন্যবাদ।
আমি যা দেখেছি, তা লিখেছি । আপনি যা লিখেছেন, তা সত্য; আমি যা দেখেছি, তাও সত্য ।
কেউ যদি রোকন না-হয়ে খূররম মুরাদ বা প্রফেসর খুরশীদ আহমদের মত ভূমিকা পালন করতে চায়, তাহলে তাদের যোগ্য রূপে গড়ে তোলার কোন ব্যবস্থা কি থাকা উচিত নয় ?
রোকন হবার জন্য মাসে ৯০ ঘন্টা কাজ করার একটা বাধ্যবাধকতা আছে । যিনি মাসে ৯০ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন না, তাদের মানোন্নয়ের জন্য আলাদা কোন সংগঠন কায়েম কারা উচিত ?
আপনি রাগ করতে পারেন, তারপরও বলছি, মুক্তভাবে চিন্তা করার মত মানুষের মূল্যায়ন খুব বেশি কিন্তু নেই, যতটুকু মূল্যায়ন আছে আনুগত্যকারীর ।
তাহলে মেধাবিরা কোথায় যাবে ?
এম এন হাসান, লোকমান বিন ইউসুফ এরা ?
তাহলে মেধাবিরা কোথায় যাবে ?”
আমার ব্যক্তিগত কোন ক্ষয়-ক্ষতি হলে হয়তো রাগ করতাম। আপনি আপনা মতামত ব্যক্ত করছেন আর আমি আমার। এতে আমি কেন রাগ করবো?
আপনি, আমি, এম এন হাসান, লোকমান বিন ইউসুফ-এদের পেছনে সংগঠনের কোন অবদান নেই কি?
সমর্থক টার্গেট, কর্মী টার্গেট কি নিজের স্ত্রীকে করা যায় না ? পুত্রকে করা যায় না ? ভাইকে করা যায় না ?
যারা শপথ নিয়েছেন, তারাও কেন যেন পুরানো বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে চান না ।
'রুকন' নামের এক 'ব্রাহ্মণ' শ্রেণী তৈরী করা হয়েছে...হয় না। -
**
সুরা তওবা'র ১১১ ... যে টোপ দেয়া হয়, নিজের পরিবারকে তাযকিয়াহ করার জন্য এর পঞ্চাশভাগের একভাগও নির্দেশনা দেয়া হত, তাহলে ইসলামী আন্দোলনের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যেত।
সহমত-
নিজের পরিবারকে তাযকিয়াহ করার এমন উঁচুমানের মানুষও জামায়াতে আছেন বলেই দুর্বলতার জায়গাটা সহজেই চোখে পড়ে, বুঝতে পারা যায়!!
***
@মোহাম্মদ লোকমান- ফরজ ওয়াজীব ... যদি রোকন হওয়া যায় তাহলে রোকন হয়ে পরামর্শ দিতে সমস্যা কোথায়?
এমন অনেক মানুষ আছেন য়াঁরা রুকন হওয়ার আগে সমাজের বিশিষ্ট মান্যব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু রুকন হয়ে সামাজিক কর্মকান্ড থেকে বহুদূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন!
যদি একই সময়ে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান এবং রুকন/দায়িত্বশীল বৈঠক হয় তবে আমি কোনটায় যাবো!
এমন ঘটনা মাসে একাধিকবার ঘটতে পারে!
প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়, বিপূল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী ইউপি/পৌরসভা চেয়ারম্যান/মেম্বর/কমিশনার জনবিচ্ছিন্ন বা জামায়াতচ্যূত হওয়ার উদাহরণ ভূরিভূরি!!
তাই রুকন হয়ে সমাজ-বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকি না নিয়েও ইসলামী আন্দোলনের কাজ করতে আগ্রহী মানুষদের জন্য জামায়াত এখনো তেমন কোন ভালো ব্যবস্থা করতে পারেনি!!
ফলে ঐসব শুভাকাংখীগণ ছটফট করে মরলেও সংগঠনের মুলস্রোতের সাথে থেকে কিছু করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন, সংগঠনও বঞ্চিত হয়!
কোনো বিজ্ঞ পরামর্শকের পরামর্শকে ডিনাই করার জন্য এমন বাক্য ব্যবহার করা হয় বলে আমার অন্তত জানা নেই।
শব্দ/বাক্যটি হুবহু এমন না হলেও মূলকথাটি একই- অসংখ্যবার শোনার অভিজ্ঞতা হয়েছে!
রুকন হবার আগে নিজে যেমন শুনেছি, পরেও ছোট-বড় বিভিন্ন পালনকালে সহকর্মী দায়িত্বশীলদেরকে অন্যদের উদ্দেশ্যে বলতে শুনেছি!
একজন ডাক্তার/প্রফেসর যেমন তাঁর ময়দানে বিশেষজ্ঞ, একজন জনপ্রিয় সমাজকর্মীও তেমনি সমাজসেবা ও জনমত গঠনে বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞ পরামর্শক!!
তবে পরের অংশ- কেউ পরামর্শ দিলে বলা হয় রুকন হয়ে আসুন এমনটি যদি কেউ বলে তাহলে তা তাঁর নিজের বুঝের ভুল। ইসলামী আন্দোলনে যে কেউ পরামর্শ দেয়ার অধিকার রাখে-এর ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা আপনার সাথে একমত হতে দেয়না!
শব্দ/বাক্যটি হুবহু এমন না হলেও মূলকথাটি একই- অসংখ্যবার শোনার অভিজ্ঞতা হয়েছে!
রুকন হবার আগে নিজে যেমন শুনেছি, পরেও ছোট-বড় বিভিন্ন পালনকালে সহকর্মী দায়িত্বশীলদেরকে অন্যদের উদ্দেশ্যে বলতে শুনেছি!
ইসলামী আন্দোলনে যে কেউ পরামর্শ দেয়ার অধিকার রাখে।- কথাটি সত্য বটে! কিন্তু সে পরামর্শটির বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের জন্য গ্রহনযোগ্যতার বিবেচনায় পাশ করা নিয়ে যত কথা!! অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ-রুকনের/কর্মী-সমর্থকের পরামর্শ বিবেচনার টেবিল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনা!
***
একজন ডাক্তার/প্রফেসর যেমন তাঁর ময়দানে বিশেষজ্ঞ, একজন জনপ্রিয় সমাজকর্মীও তেমনি সমাজসেবা ও জনমত গঠনে বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞ পরামর্শক বটে!!
আমাদের চিন্তা চেতনা সবই একটি বৃত্তের মধ্যে। ইসলাম,ইসলামী আন্দোলন অথবা মুসলিম উম্মাহ এগুলো যাদের কাছে বিবেচ্য।তারা পারবে চিন্তা চেতনায় একটি কিছু করতে। সেই করার মত একটা বিষয়ের জন্য সবার অপেক্ষায়।
জামায়াতের বর্তমান দুর্দিনে অনেকই অনেক কথা বলছেন ।
সব দেখে আমার মনে পড়ছে সে সময়ের কথা যখন জামায়াত আরেকটা দুর্দিনে পড়েছিল, দেশে শুরু হয়েছিল 'মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা প্রশ্ন । তখন ও শুনেছিলাম সে সব কথা যা এখন শুনতেছি । তখন ও সে সব কথাবার্তার শানে নুযুল ছিল ছাত্র শিবিরের বিভক্তি আর মরহুম আবদুল জব্বারের নেতৃত্ব নতুন জামায়তে ইসলামী গঠন ।
বর্তমান আলোচনার উদ্দেশ্য্ও কি পূর্ববত
মিডিয়ায় এমন কোন কথা আসা অনুচিত যাতে ইসলামেন শত্রুরা উপকৃত হয় ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন