আইম্মায়ে মুজতাহীদিনদের মতই চলে গেলেন মুমতাজুল মুহাদ্দীস।
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:১৭:২৭ দুপুর
ফজরের আযান হতে এখনো বাকি কয়েক ঘন্টা। রাতের প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে প্রায় বারোটা। খাওয়া দাওয়া এবং ঘুমের প্রস্তুতি নিতে নিতে আরো এক ঘন্টা। আমি নিচে বিছানা করে - আর মাওলানা খাটে। আমার ঘুম পাচ্ছিল বিছানায় আসার আগে। কিন্তু মাওলানার সাথে একই রুমে শুয়ে আছি ভাবতেই রাজ্যের ঘুম কোথায় চলে গেল।রুমটা অন্ধকার এবং মাওলানা অবস্থান করছেন, তাই কোন নড়া চড়া নয়। চোখ বুজে ভাবছিলাম কত বড় মাপের একজন আলেম বিছানায় যেতে ঘুমিইয়ে গেলেন।আমাদের সমাজে এই বয়সের মানুষের ঘুমাবার জন্য কত কসরত করতে হয়। মানুষের মানসিক প্রসান্তি থাকলে দেহের ওপর তার প্রভাব পড়ে।
ঘুমের আগে মাওলানা আমাকে বলেছিলেন, বাথরুমটার লাইটটা যেন বন্ধ না করি।আমি চোখ বুজে ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম তার খবর ছিল না। ঘুম ভাংগে কিছু পড়ার আওয়াজে।তখন দেখি মাওলানা জায়নামাজের ওপর দাড়িয়ে তাহাজ্জুদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিজেকে খুবই অপরাধি মনে হচ্ছিল। আমি যুবক বয়সের আর মাওলানার বয়স তখন হবে ৭০ কাছাকাছি। কখন তিনি ঘুম থেকে উঠেছেন তা আমি টের ও পা্ইনি।
তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা সবার জন্য হয় না। এর স্বাদ পেতে হলে আলাদা একটা সম্পর্ক থাকতে হয় মাবুদের সাথে।মাওলানার সেই সম্পর্ক ছিল। সাউদি আরবের বর্তমান সময়ের শাইখ সানকিতির এক আলোচনায় শুনছিলাম - আমাদের সালফে সালেহীনরা বছরের পর বছর তাহাজ্জুদের অভ্যাস করে সঠিক স্বাদ পেতেন। তাহাজ্জুদ সালাতটা হল একান্ত হৃদয় নিংড়ানো গোলামের এক অভিব্যক্তি। এটা সবার কিসমতে জুটে না।
আমি মাওলানার একে বারে তার পায়ের ঘুমাচ্ছিলাম। মাওলানা সালাম ফিরিয়ে আমার পায়ে হাত রাখতেই আমি লাফ দিয়ে উঠে দাড়ালাম। মাওলানা বললেন, তোমার ঘুম হয় নাই। তোমাকে খুবই বিরক্ত করছি। যাক যখন ঘুম ভাংলো তখন চার রাকাত সালাত পড়। আমি তাই করলাম। সালাত শেষ করে মাওলানা নিজের জন্য আমার জন্য দোয়া করলেন। দোয়া করলেন আমাদের সকলের জন্য। এই একটি রাত ছিলাম মাওলানার সাথে। আগের দিন এবং পরের দিন মাওলানার সাথে ছিলাম বেশ কিছু প্রোগ্রামে। এই আমার শেষ দেখা। আর তিনি হয়তো সাউদি আরবে আসেন নি। দেখা ও হয়নি।
আরব বিশ্বে মাওলানার মর্যাদা ছিল তুলনাহীন। আমার মতে আল্লামা আব্দুর রহীম সাহেবের পর একে এম ইউসুফ সাহেব ছিলেন একমাত্র প্রকৃত আলেমে দ্বীন।
জামায়াতে ইসলামী করার কারনে তার ইলমি দিকটা আমাদের আলোচনায় ছিল না।বা তার চর্চাও আমাদের মধ্যে নেই। তিনি কত বড় মাপের মুহাদ্দীস ছিলেন তার কোন খবর কেই রাখেনি। সারাটি জীবন আন্দোলনে সময় দেয়ার কারনে কখনো নিজেকে নিজের অংগনে প্রকাশ করেতে পারেননি।যা হয়েছে তা শুধুমাত্র সংগঠনের স্বার্থে।
মাওলানা আমলি এবং আখলাকি এক পরিপূর্ণ দ্বীনের দায়ি ছিলেন। তিনি মাওলানা মরহুম (রঃ) (আল্লামা মওদুদীর) এর চিন্তা ধারার সঠিক রুপায়ন করতে পেরেছিলেন নিজের জীবনে।
ঐদিন রাতে আমাকে তিনটি কথা বলেছিলেন, যা আমার মনে হয় আমাদের সাবার জন্য উপকারী হবে।
এক) দাওয়াতি কাজ বেশি বেশি করলে তোমার ইলম (এযাফা) বাড়তে থাকবে। কেননা যত দাওয়াত দিবা ততই তোমাকে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
দুই) দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে তোমার আ'মাল হেফাজত হবে। কেননা যাকে যা দাওয়াত দিচ্ছ তা তোমাকে প্রথমে আ'মাল করতে হবে।
তিন) দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে তোমার সম্মান বৃদ্ধি হবে। তুমি নিজেকে সার্বক্ষনিক দায়ি করতে পারলে তোমার সব দায়িত্ব মহান আল্লাহ নিবেন। কারন তুমি নিজেকে পার্টটাইম মুসলিম হিসাবে রাখনি বরং আল্রাহর কাজের জন্য হোলটাইমার হয়েছ।তাই দায়িত্বটা তারই।
মাওলানা আমাকে সেই রাতে আরো দুটি কথা বলেছিলেন,
এক) তুমি এই আন্দোলনে যোগ্য (ব্যক্তির নাযাতের জন্য) ভুমিকা রাখতে হলে তোমাকে কোরআন ও সুন্নাহর সাথে সম্পর্ক বেশি বাড়াতে হবে। কোরআন সুন্নাহর জ্ঞান কম থাকলে মানসিক প্রসান্তি নিয়ে কখনো আন্দোলনে সময় দিতে পারবে না।হতাশা আসবে,অভিমান কাজ করবে,দুনিয়া তোমাকে পিছনে টানবে। এই সব কিছু থেকে তোমাকে রক্ষা করবে কোরআন ও সুন্নাহ মৌলিক জ্ঞান। চেষ্টা করবা সোর্স কিতাবগুলো পড়ার। অবশ্য যে দায়িত্ব ই পালন করনা কেন? কখনোই দাওয়াতি কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে না।
দুই) নিজের অবস্থানের বিপরীত এমন কিছু আশা করবা না যা তোমার বিবেচনায় প্রাপ্য নয়। তাহলে জিবনে কোন হতাশা স্থান পাবে না। নিজের অতীতকে সব সময় স্বরণে রাখবা তাতে আগামীর পথ চলা হবে সহজ। আন্দোলনে এমন লোকের সাথে সহবস্থান করবা না যারা নিজেদেরকে দুনিয়া পুজারী বানিয়েছে। বরং আল্লাহ ওয়ালা মুত্তাকী মানুষগুলোর সাথে সম্পর্ক রাখবা। পরকালে কাজে আসবে।
মাওলানা চলে গেলেন। বলা হয়ে থাকে মরহুম আল্লামা আজিজূল হক,ও মরহুম শামছুল হক ফরিদপুরীর মত মমতাজুল মুহাদ্দীস ছিলেন তিনি। কতই না ভাল হত - মাওলানা যদি বুখারীর শরাহ (ব্যাখ্যা) লিখতেন।হাদীসের ওপর কাজ করার সুযোগ যদি আমরা করে দিতাম তাহলে উম্মার কাজে লাগতো।
মাওলানার মৃত্যু হয়েছে কারাগারে না হাসপাতালে। নিচের ছবিটা কি বলে? কতই অযন্ত আর অবহেলায় জাতীর এই রাহবার চলে গেলেন।
আল্লাহর রাসূলের একটি হাদীসের ভাবার্থ এরকম - যখন কোন জনগোষ্ঠীর ভাল মানুষগুলোর মৃত্যু হয় তখন সেই সমাজ থেকে আল্লাহর রহমত বরকত উঠে যায়।
আইম্মায়ে মুজতাহিদীনদের মতই জেলের ভিতরই তিনি তার রবের কাছে চলে গেলেন। অসুস্থ হবার পর তাকে বর্তমান জালিম সরকার একটু অক্সিজেন দেবার প্রয়োজন মনে করে নাই।
এটাকে হত্যা বলবো না - স্বাভাবিক মৃত্যু বলবো?
হে আল্রাহ জাতির এই রাহবারকে তোমার উত্তম মেহমান হিসাবে গ্রহন কর। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৩ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিগত তিন চার বছরের ভিতর বেশ কয়েকজন রাহবার আমাদের এয়াতিম করে মাবুদের ডাকে চলে গেলেন। মাওয়ালা এ কে এম. ইউসুফের মত আরেকজন জিন্দা ওলী ছিলেন শায়খুল হাদিস আল্লামা শামসুদ্দিন (রাহ). তার মৃত্যুর প্রায় ১৬/১৮ বছর পূর্ব থেকে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু মাওলানার সময়জ্ঞান আমার কাছে আশ্চার্য্য মনে হতো। কোন প্রোগ্রাম বা কর্মসূচীতে তার উপস্থিতি দেখেই অনেকেই ঘরির টাইম ঠিক করে নিত। এই মহান বুজুর্গের নামাজে জানাজায় অধম (আহমদ মুসা)'র উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। জানাজার পূর্বে তার চেহারায় যে নুরানী তেজস্ক্রীয়তার আভা দেখতে পেয়েছি তাতে আমার শরীরের লোম খাড়া হয়ে গিয়েছিল! আমার একান্ত বিশ্বাস এসব বুজুর্গগন নিঃসন্দেহে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেছেন।
স্মৃতি-বর্ণনায় আমার স্মরণশক্তির উপর মোটেও আস্থা নেই বলে ওপথে হাঁটিনা- সামান্য বিচ্যূতিতে বড় অপরাধী হয়ে যাবার ভয় করি!
তবে একটা বিষয় বলতে পারি-
মাদ্রাসার বারান্দা মাড়ানোর সুযোগ না পাওয়া সত্বেও আমার দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা এবং আলিমদের সাহচর্যের লোভ সৃষ্টিতে কোন এক প্রোগ্রামের ফাঁকে ব্যক্তিগত আলাপকালে তাঁর পরামর্শ আমাকে উদ্যমী করেছিল- যদিও সে উদ্যম ধরে রাখতে পারিনি!!
আজ বলি- ইয়া রব, শুধুমাত্র তোমার কারণেই তাঁর সাথে সম্পর্ক, তাঁর প্রতি ভালোবাসা... অন্তরের সব দাবী-দাওয়া সব চাওয়া-ই তো তুমি জানো...
""স্মৃতি-বর্ণনায় আমার স্মরণশক্তির উপর মোটেও আস্থা নেই বলে ওপথে হাঁটিনা- সামান্য বিচ্যূতিতে বড় অপরাধী হয়ে যাবার ভয় করি!"
অনেকেই লিখবেন আশা করি- আর কটা দিন যাক..
লক্ষ অনুরাগীর ভীড়ে আমিও মাওলানাকে অনেক বার দেখেছি। আমার দেখার যে অনুভুতি তাই আমার জন্য ইতিহাস। এসব আলেমে দ্বীনের স্স্বার্থহীন কর্মময় জীবন অনুপ্রাণিত করে।
হে মাওলানা, তোমাকে সালাম। কাল হাশরের মাঠে আল্লাহর ট্রাইবুনালে তোমার অসমাপ্ত বিচার দেখার অপেক্ষায় রইলাম। সেদিন তোমার জন্য আমরা হব স্বাক্ষী।
সহমত এবং মোবারকবাদ।
আবুধাবীতে মাওলানাকে একরাত আমার বাসায় রাখার সৌভাগ্য হয়েছিল। খুব নিকট থেকে দেখেছি তাঁর ইবাদাত এবং স্বাস্থ্য সচেতনতাও। ফজরের সালাত আদায়ের পর প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার হাঁটতেন।
১৯৮৯ সালে আমি আমি প্রথম আবুধাবী আসার কয়েক মাস পর মাওলার আবুধাবী সফরের সময় এক আরব শেখ তাঁকে দাওয়াত করেছিলেন। আস্ত ছাগলের বিড়িয়ানী, মাথা সহ ছাগলের জিহ্ববাটা বের হয়ে আছে দেখে এমনিতেই তিনি একটু উশখুশ করছিলেন। তার উপর সাহেবে দাওয়াত এসে আস্ত মাথাটা ভেঙ্গে তার পাতে তুলে দিয়ে বললেন ‘রাস মিশন রইছ’ মানে নেতা বা বড় মেহমানের জন্যই মাথা। এর পর যতবারই আবুধাবী এসেছেন সেই স্মৃতিটি রোমন্থন করেছেন।
মাওলানার আরো অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। তাঁর এক মেয়ে থাকতেন দুবাই। আমার গাড়ীতে করে আবুধাবী থেকে দুবাই পৌঁছে দেয়ার পথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েতি কথা বলতেন আমার জন্য।
আজ মাওলানা আবুল কালাম মোহাম্মদ ইউসূফ আমাদের জন্য কেবল স্মৃতি। মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছি- আল্লাহ যেন তাঁর সকল নেক আমল কবুল করে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান বানিয়ে নেন। আমীন।
আমি প্রবাসে এবং দেশে যতটুকুন সঙ্গ পেয়েছিলাম মাওলানার তাতে আপনার এই মন্তব্যের সাথে একমত না হওয়া ছাড়া উপায় নাই।
আপনাকে মোবারকবাদ।
আল্লামা ইবনে আহমদ ভাই, আপনিই যেহেতু স্মৃতির সূত্রপাত করলেন, তাই আপনাকে ধন্যবাদ দিতে হয় ।
আমি তার দুই প্রজন্মেরও ছোট । তাকে নিয়ে আমার তেমন কোন স্মৃতি নেই । তবে তার প্রায় সব লেখাই আমি পড়তাম ।
তিনি একবার এক আলোচনা সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেছিলেন, তার বিবি সাহেবা সারাদিনের কর্ম শেষে ক্লান্ত । এমন সময় তার বাসায় মেহমান এলো । মেহমানদের জন্য খাবার রান্না করতে হবে । তার স্ত্রী রান্না করার জন্য উঠলেন । আগে থেকেই ক্লান্ত থাকায় চেহারায় কিছুটা অসন্তুষ্টির ছাপ । তখন একেএম ইউসুফ সাহেব মিষ্টি করে বললেন, রান্না করতে গিয়ে কষ্ট যখন করতেই হচ্ছে, তখন আর অসন্তুষ্ট হয়ো না । তাহলে তোমার কোন সওয়াব অর্জন হবে না । বরং খুশী মনে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কষ্টটুকু কর । তাহলে কষ্টের বিনিময় আল্লাহর কাছে পাবে ।
রাগ না-হয়ে, ছোট ছোট বাক্যে মন জয় করার মত কথা বলায় তার বেশ দক্ষতা ছিল । তার কথার ফাঁকে ফাঁকে যেন দাওয়াত আার নসিহত সাজানো থাকত ।
রাগ না-করা, মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা এক ধরণের দক্ষতা (skillness) । এ দক্ষতা তিনি খুব ভালভাবেই আয়ত্ব করেছিলেন । এমন দক্ষতা তার হবেই না কেন ?
তারাই তো এ দেশে ইসলামী আন্দোলনের বীজ রোপন করেছেন । তিনি এবং (মরহুম) শামসুর রহমান সাহেব ১৯৫৪-৬০ সালের দিকে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে দাওয়াতী কাজ করেছেন । হাতে একটি ছাতা এবং ছোট একটি ব্যাগ নিয়ে কোনদিন পনের মাইল, কোনদিন বিশ মাইল হেঁটেছেন । মাসের পর মাস ঘাসের তৃণমূল মাড়িয়ে জনগণের তৃণমূলে ইসলামী আন্দোলনের শক্ত ভিত গড়েছেন । সেই বাগেরহাট সাতক্ষীরার মাটি যেন আজো তাদের পারে ছাপ বহন করছে । Dr. Abdus Salam Azadi-র অশ্রু দেখলে বুঝতে পারবেন, '৭১-এর পর বাগেরহাট সাতক্ষীরা হয়েছিল 'বসনিয়া'; এখন হয়েছে কাশ্মীর বা ফিলিস্তিন ।
ভুলে একটি শব্দ লিখেছেন আমার নামের আগে। আমার ব্লগের নাম হল ইবনে আহমাদ।আল্রামা শব্দটা মনে করি ভুলে লিখা হয়েছে। আমি মাদ্রাসা পড়ুয়া ঠিক। কিন্তু মাওলানা নয়। নিজেকে আলেমদের ছাত্র হবার যোগ্য মনে করি না।
বিতর্ক এবং সমস্যা তৈরী হতে পারে এমন শব্দ আমি পরিহার করি।
আপনাকে আবারও মোবারকবাদ। প্রত্যাশায় রইলাম আপনার সুন্দর লিখার।
মন্তব্য করতে লগইন করুন