মিডিয়া যখন গণ দুশমনে পরিণত হয় - লাভ কার বেশী ===== সাংবাদিকতার - না - গণমানুষের?
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:২০:০৫ সন্ধ্যা
এক)
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে?
শেখ মুজিবের শাসন ব্যবস্থা এবং শেখ হাসিনার শাসন ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কী?
বাকশাল আর ডিজিটাল শাসন ব্যবস্থার মধ্যে ফারাক টা আসলে কী
বলা হচ্ছে ১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের পর থেকে বাংলাদেশ এভাবে তার গন্তব্য হারায়নি।এভাবে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে আর কখনো বিপদে পড়েনি।
ভারতের দাদা সুলভ ক্ষমতার দাপট অতীতে অনেক বার দেখিয়েছে, তবে প্রকাশ্যে খবরদারী করার সাহস কখনো করেনি।সেই সুযোগ ও দেয় নাই রণাঙ্গনে যুদ্ধ করা এদেশের মানুষ।তবে বরাবরই এদেশের কিছু মুক্তিযুদ্ধা নামের নকল কিছু চেতনার ব্যবসায়ী ভারতের দালালী করেছে।
কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতে যেভাবে আমাদের অভ্যান্তরীন বিষয়ে মাতব্বরী করছে, তার ইতিহাস আমাদের জানা নেই।এক সময় তা সিকিমের নির্বাচন নিয়ে করেছিল। তাহলে প্রশ্ন -
ভারত কেন - কাদের স্বার্থে? এভাবে জেনেভা কনভেনশনের বাহিরে গিয়ে একটি স্বাধীন দেশের প্রতি এই আচরণ?
বৃহৎ গনতান্ত্রিক দেশ হয়ে এভাবে কেন বানরের পীঠা ভাগের নির্বাচনে দেশের গণমানুষের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহন করলো?
কেন স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর ভারতীয় দালাল এবং দেশীয় মীরজাফর আর ঘষেটি বেগমদের এত প্রতিপত্তি বা ক্ষমতার দাপট?
আজ কেন বিজয়ের মাসে জাতির কাঁধে লাশের মিছিল? কেন আজ জনগনের পয়সায় পালিত নিরাপত্তা বাহিনী গণদুশমন ডিজিটাল বাকশাল বাহিনীতে পরিণত হল?
দুই)
কেন গণবান্ধব মিডিয়ার পরিবর্তে ফ্যাসিষ্ট সরকার বান্ধব হল? মিডিয়াকে যেখানে বলা হয়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় চতুর্থ স্তম্ভ। আজ সেই মিডিয়াকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের তারানকো কেন নসীহত! করতে হয়? আমাদের মিডিয়ার এই বিতর্কিত ও কদর্য চেহারা দেখে তারানকো অবশ্য খুবই পূলকিত হবার কথা................
এই মিডিয়া দেশ স্বাধীন হবার পর প্রথম আক্রমনের স্বীকার হয় শেখ মুজিবের বাকশাল আমলে। তখন যারা সাংবাদিকতায় অগ্রজ ছিলেন,আজ তারা প্রায় সবাই আমাদের আড়ালে।অর্থ্যাৎ ইন্তেকাল করেছেন। যে দু একজন আছেন তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর বিষমাখা ব্যক্তিগত আক্রমন মুখ বন্ধ করে দিয়েছে।এদের মধ্যে এমিএম মুসা একজন।
আর যারা বাকশাল আমলে বয়সে তরুন ছিলেন, আজ তারা বয়সে ও পেশায় বর্তমানের সাংবাদিক জগতের অগ্রজ।এদের কয়েকজন ছাড়া সবাই বর্তমান ডিজিটাল ফ্যাসিষ্ট সরকারের অনুগ্রহ প্রাপ্ত সাথে ভারতের মাসোহারা পেইড এজেন্ট।
কেন এমন হল? অথচ জাতীয়তাবাদী সরকার প্রায় ১৯ বছর ক্ষমতায় ছিল। বিএনপি ও জামায়াতের প্রতি আজকের ভারতবান্ধব মিডিয়ার এরুপ আচরণ কি? তাদের প্রাপ্য নয়? বিএনপি যাদেরকে মিডিয়ার রুই - কাতলা বানিয়েছে - আজ তারা কোথায়?
বেচারা ফালূ মিয়ার যে হাইট,এর চেয়ে বেশী আর কি খেদমত পাইতে পারে বিএনপি। একজন টোকাই - এর চেয়ে কম! দালালী করতে পারবে না। আর মজিদ মিয়ার বাংলাভিশনের কথা না বলা ই ভাল। মজিদ মিয়া - মোস্তফা ফিরোজের মত বড় সাংবাদিক হায়ার করার পর কেমন করে নাস্তিকদের প্রিয় হবে না চ্যানেলটি। আর বাকি চলমান ২১ টা চ্যানেলই - একই গোষ্ঠীর। তারাই পাত্রীর মা আবার তারাই পাত্রের বাপ। হারাধনের দিগন্ত আর ইসলামী টিভি এগুলো ৭১ এর চেতনায় বিলুপ্ত প্রায়। মিডিয়ার গলা চেপে হত্যা করতে আনন্দই আলাদা। এই আনন্দ টা সেই ৭১ এর চেতনা আর পিতার ২য় বিপ্লব তথা বাকশালের শুভ সুচনা।যা নতুন প্রজন্মের ডিজিটাল আর শাহবাগী চেতনা।
কলাম লেখকদের অবস্থা প্রায় একই । টকশোর - টকার যারা আছেন - তাদের অবস্থা আরো বেকায়দা। এক টিভিতে ১৮ দলের পক্ষে কিছু বললে, পরের দিন অন্য টিভিতে গণতান্ত্রিক! শেখ হাসিনার প্রসংসা করে পুষিয়ে দেন। আর যারা কিছুটা নিরপেক্ষ - তারা আবার টকশোতে ব্লাক লিষ্টেড। সরকারের বিশেষ বাহিনীর নেক নযর ফাঁকি দিয়ে টকশো করার সাহস কয় জনের আছে। এমন মেরুদন্ড সোজা মানুষের বেশী অভাব আমাদের মিডিয়াতে পল্লীতে।
আবার সুশীল বান্ধব মিডিয়াতে বেগম খালেদা জিয়াকে জামায়াতের আমীর বানাবার নানান সিন্ডিকেট রির্পোট।বাংলাদেশের সুশীল সমাজ আর তাদের স্নেহাশীষ মিডিয়ার প্রকাশ্য এজেন্ডা হল -
৫৬ হাজার বর্গমাইল কিভাবে রাবার দিয়ে মুছে দিয়ে মহান! ভারতের স্যাটালাইট কান্ট্রি বা সিকিম বানানো যায়। এর জন্য যা করা প্রয়োজন তার সবই করছে মহান সাংবাদিকতার নামে। মোটামোটি এই হল আমাদের উদীয়মান রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের স্বরুপ।যার স্বীকার হলেন সময়ের তীতুমীর জনাব মাহমুদুর রহমান।
তিন)
একটি স্বাধীন জাতীর মধ্যে - পরাধীন মানষিকতার মিডিয়া - কখনো গনমানুষের জন্য কল্যাণর কিছু করতে পারে না। এর প্রমান আজকের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে আমাদের হলুদ সাংবাদিকতাই। যাদের কাছে দেশের স্বার্থের চাইতে ভারতের স্বার্থই বড়।
উদাহরণ - গতকাল (১৯-১২-২০১৩) আর টিভির টকশোতে বৈশাখী টিভির সিও জনাব বূলবুল এসেছিলেন। সাথে আরো কয়েকজন। ডাকসুর মান্না ভাই ছিলেন। মুনজুরুল আহসান বুলবুল সাহেব মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নসীহত করলেন - সাতক্ষীরা স্বাধীন হলে এখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। রাষ্ট্র অবশ্যই তার সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর পর বললেন, যেন সবাই নৈতিকতার সাথে আলোচনা করেন।
সাতক্ষীরাতে গত কয়েকদিনে কি ঘটেছে।
বুলডোজার দিয়ে জামায়াতের আমীর এবং বিএনপির চেয়ারম্যানের বাড়ী শেষ করা হল। যৌথ বাহিনী, ছাত্রলীগ, যুবলীগের পান্ডারা লুটতরাজ করলো, ১২ বছরের মেয়েটাও রক্ষা পায় নাই এই নরপিচাশদের হাত থেকে।
এই কাজগুলোকে বুলবুল সাহেব বলছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি আবার একটি মিডিয়ার প্রধান এবং সাংবাদিক একাংশের নির্বাচিত নেতা।
এখন বলূন - এমন সাংবাদিক যে সামাজে রয়েছে, সেই সামাজে শেখ হাসিনার মত হিটলার লেডীর আস্ফালন না হয়ে কোন সমাজে হবে। এমন সমাজই তো ফ্যাসিষ্ট মানষিকতার নেতা নেত্রী তৈরীর উর্বর জায়গা। শেখ মুজিবকে এভাবে প্রতারিত করা হয়েছিল। যদিও শেখ মুজিব ব্যক্তি জীবনে ছিলেন চরম সুবিধাবাদি চরিত্রের।
এই সাংবাদিক নেতা নৈতিকতার যে নসীহত খয়রাত করেছেন -তা শুনে মাথাটা বিগড়ে যাবার দশা।
কোন ব্যক্তি (সাধু পূরুষ) বলছেন আমাদেরকে নৈতিকতার কথা। এথিক্সসের কথা। যে ব্যক্তি নিজে চাকুরী করেন একজন গণ দুশমনের মিডিয়া হাউসে। রফিকুল আমিন এবং এমএলএম জেনারেল হারুনের হায় হায় (ডেসটেনি) কোম্পানীতে চাকুরীরত কর্মচারী - জাতীকে নৈতিকতার নসীহত করেন।
আপনারা ই ঠিক করুন এমন মিডিয়া আরো শতটি হলেও দেশ ও জাতীর কি উপকার হতে হবে?
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন