ভাসুর জামায়াত, ঘরজামাই বিএনপি - নতুন রুপের সেই বাকশাল
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:৩৭:৫৭ সন্ধ্যা
এক)
বেশ কিছুদিন ব্লগ দুনিয়া থেকে দুরে ছিলাম। শুধু রাতের বেলা একটু করে টু মারতাম। কিন্তু ব্লগ জগতের বাসিন্দাদের সাথে প্রেম,ভাব,অথবা ভালবাসা কিছু হত না।
আমাদের পারিবারিক এক নতুন সুখের অভিজ্ঞতা দুরে রেখেছিল। যাক ওগুলো নিজের প্যাচাল - অন্যদিন বলা যাবে।তবে সবাইকে স্বাগত নতুন ডিজিটাল বাকশালের তৃতীয় অধ্যায়ে।আমরা সবাই ঐ একই লাইনে আছি।হয়তো সময়ের ব্যাপার।নতুবা নতুন কিছূ - ঐ যে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে .............. দুর নিলিমায় সেই আলোর ........। এটা ভবিষ্যৎ।আমি আগামীর কথা বলছি। পথ থেকে থাকে না। থামানো যাবে না।
ভবিষ্যৎ নির্মাতাদের মধ্যে যারা জাতীর কাছে আস্থাশীল,তারা কিন্তু অনেকটা অন্ধকারে। অথবা - তারা নিজেদের বিবেকের কাছে নিজেরাই দ্বায়বদ্ধ এবং অতীত অপরাধী।।আবার এমন ও হতে পারে তাদের কোন যোগ্যতাই নাই।এটা সত্য ইতিহাস নির্মান করার বিষয় নয়। তবে ইতিহাস সৃষ্টি করার ক্ষমতা মহান আল্লাহ মানুষকেই দিয়েছেন।এই ক্ষমতা আবার মানুষের মালিকই দিয়ে থাকেন।আল্লাহর সাজানো বাগানের মালিক হওয়ার দুনিয়াবী কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত শরায়েত রয়েছে।
আমার মনে হয় - গত শতাব্দীর মুজাদ্দীদ আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) বাংলায় ভাংগা গড়া বইটাতে চমৎকার এ বিষয়ের সীমারেখা টেনেছেন।বর্তমান সময়ে যারা হতাশ তাদের জন্য বইটা টনিকে কাজ করবে আমি নিশ্চিত। বই টা মাত্র কয়েক পৃষ্টার। পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
দুই)
দেখতে দেখতে চলে আসলো সেই সময় যার সিগনাল দিয়েছিলেন জেলবন্ধী সম্পাদক - জনাব মাহমুদুর রহমান। তার প্রবন্ধের নাম ছিল নবরুপে বাকশাল
কেন এমন হল?
কেন আজ বাকশালের খোয়াড়ে আশ্রিত,পালিত মিডিয়া?
কেন আজ জাতীর বিবেক নামের মানুষগুলো ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিক্রিত পণ্য। (বিবেকের দাস)?
কেন আজ যুব সমাজ ইয়াবার নেশায় পড়ে আছে।এই রাষ্ট্র,জনতার প্রতি কি কোন দ্বায়বদ্ধতা নেই?
----------------------------------------------------------
তাহলে,সবাই কি চায় এ নব্য বাকশাল?
সবাই কি ডিজিটাল বাকশালের প্রেমিক হয়ে গেছে?
প্রিন্ট মিডিয়া বা টেলিভিশন মিডিয়া অথবা নতুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম - সবাই কেন একই সুরে গান গাইছে।তাল,লয় সবার একই? গানের লিরিকটাও একই মনে হচ্ছে। সূর সুরকার সবাই মনে হচ্ছে একই প্রজাতির।
আমরা কি তাহলে সবাই সেই অনিশ্চিত একটি অন্ধকারের দিকে ধাবমান।যে শাসনে রয়েছে থিক থিকে অন্ধকার। যে সমাজে ৭৪ এর ........। আবার কি লাল বাহিনী,কামাল জামাল বাহিনী অথবা রক্ষী .............। আদলটা (খোলস) কি হবে।বিদেশী জেনারেল ওভানের জায়গায় কি দেশীয় কম হাইটের মীরজাফর ?
তিন)
বাংলাদশে স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারী থেকে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত শেখ মুজিবের শাসন। তার পর দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ থেকে ২০০০ পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসন।তারপর এবারের ডিজিটাল শাসন।এইতো আওয়ামীলীগের শাসন আমল।
বিপরীতে জাতীয়তাবাদি শক্তি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ জেনারেল জিয়া।তার পর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬। তারপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকার।শেষ টার্মটি ছাড়া বিএনপি একক ভাবেই দেশ চালিয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দ্বায়টা কার?
বিএনপি নামক দলটি যার হাত দিয়ে তৈরি হয়েছে তার চিন্তা চেতনা, আদর্শ এবং সততা থেকে অনেক দুরে।
একজন জেনারেল হয়ে তিনি যেভাবে একটি বুদ্ধিভিত্তিক বলয় তৈরী করেছিলেন - এর পর আর কাজ হয় নাই।
খালেদা জিয়ার প্রথম টার্মে বা পরবর্তী টার্মে এই মূল জায়গাটাতে কোন কাজ হয় নাই।কারন আর যাই হউক মানতে হবে। বিএনপিতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তারা সবাই অন্যের জন্য কাজ করেছে।
মিডিয়ার আজকের যে রুল, তা বিএনপির জন্য প্রাপ্য ছিল।
বিএনপি নিয়ে গবেষনা করা প্রয়োজন যে, কেমন করে এই দলটি ঠিকে আছে।
না তাদের কোন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা,না তাদের ভীশন,না তাদের ঐকান্তিকতা সব কিছুতে একটা ভাওতাবাজি।সব কিছুতেই কেমন যেন দ্বিচারণনীতি।
বিএনপি করে এমন লোক, যারা সময়ের প্রয়োজনে নিজেদের চাহিদা পূরণে বিএনপি করা উচিত! তাই করে।
আজকের গার্মেন্টস শিল্পটা জিয়ার হাত ধরে এ দেশে এসেছিল। ৯১ আমলে তা আরো বিকশিত হয়েছে। কিন্তু এই গার্মেন্ট শিল্পের মালিকরা আজ বিএনপির বড় দুশমন।
আজ যে দশা হয়েছে বিএনপির। তার জন্য দায়ী এই দলটির নীতিনির্ধারকরা। আওয়ামীলীগ জামায়াতকে হ্যন্ডেল করতেই সময় পার করেছে। আওয়ামীলগ মনে করে তাদের প্রতিপক্ষ হল জামায়াত। বিএনপির জন্য বিএনফই যথেষ্ট।যা শেখ হাসিনা ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
খালেদা আর রিজভী ছাড়া কেউ আর এখন বিএনপি করে না। তারেক সাহেব ব্যরিষ্টারী করছেন।
ডিজিটাল এই বাকশালের বর্তমান রুপে আগমনের জন্য জাতি বিএপিকেই দ্বায়ী করবে? আগামীর ইতিহাস এভাবেই লিখা হবে আমার বিশ্বাস।কেননা বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই মাসিক হারে বেতন নিয়ে থাকেন সরকার থেকে।
তাহলে জামায়াত কি?
চার)
নিন্দুকেরা বলে ২১ বছর পর আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার পথটা সাফ করে দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই তথ্যটা যত না যৌক্তিক তার চাইতে বেশী হয়তো একপেশে। রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে জামায়াত বরাবরই ভুল করেছে।সেটা ৭১ যেমন - তেমন ১৯৯৬তে ও। এমন একটি মিথ আছে আমাদের সমাজের শিক্ষিতদের আন্দর মহলে।
যেহেতু জামায়াত বাহিরের (শুভাকাংখী সমালোচক) কোন সমালোচনাকে গায়ে মাখে না,তাই এ নিয়ে কখনো তাদের পলিসির কোন পরিবর্তন হয় না।হউক যতই বাস্তবতা ও চলমান প্রেক্ষাপটের আলোকে। সব কিছুই পরিত্যজ্য।
তারা তাদের নিজেদের বিবেচনা এবং সিন্ডিকেট লিডাররা যেভাবে মনে করেন,তাদের সুবিধাটা যেমন হবে - তেমনই সংস্কার বা সমাধান করেন।
জামায়াত এ পর্যন্ত যত সংস্কার করেছে (গঠতন্ত্রের) তা তাদের নিজেদের বিচার বিবেচনায় নয়। বা দলের তৃণমূলের দাবীতে নয়।অথবা দেশের মানুষের প্রয়োজনে নয়।
বরং সরকার কতৃক চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত রক্ষা করতে বার বার নিজেদের গঠতন্ত্রের সংস্কার করেছে।
আমরা জামায়াতের আন্দর মহলের কোন খবর রাখার অবস্থানে নেই। বাহিরের দশজনের মতামত।রাজনীতিতে পাবলিক পারসেপশন বলে তো একটা শক্তি আছে।সেই ভিত্তিটাই আমাদের হিসাবী মন্তব্য।কেননা সফল রাজনীতি করতে হলে গণমানুষের ধারণাকে বিবেচনায় নিতেই হবে।এ ক্ষেত্রে যারাই অগ্রসর হতে পেরেছে তারাই গণমানুষের রায় পেয়েছে। জামায়াত এ ক্ষেত্রে সফল না বিফল - না একেবারে অর্ন্তুমুখী, তা তারাই বলতে পারবেন যাদের বিবেচনাবোধ এখনো কিছুটা আছে।
কিন্তু আমরা একজন নির্মোহ পাঠক,জামায়াত গ্যলারীর সচেতন দর্শক হিসাবে এই অভিযোগগুলো খু্বই পীড়া দেয়।আজকাল আবার এই প্রশ্ন! অনেক নিজেদের! লোকেরাও করে।সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে।
অথচ জামায়াতের যে শক্তি (সাংগঠনিক মুজবুতি ও আনুগত্যের নান্দনিক উদাহারণ) আছে। তাতে এমন পাবলিক পারসেপশন হওয়া মোটেই কাম্য ছিল না।উচিত ও ছিল না। কিন্তু কেন? মিলিয়ন রিয়ালের এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে আমাদেরকে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
তবে আমাদের প্রত্যয়,প্রত্যাশা এবং ইয়াকিনের পর্যায় বিশ্বাসটা হল - জামায়াতের আসল অপরাধ হল - এটি একটি মকবুল ইসলামী আন্দোলন। গত চারবছর থেকে সেই পরীক্ষায় জামায়াত উত্তীর্ণ হয়েছে। আমাদের কষ্টটা বাড়ে এই কারনে।
ভাবি যে সংগঠনটা গোটা রাষ্ট্রশক্তিকে চ্যলেঞ্জ করতে পারে।
যে সংগঠনটি একটি সত্যিকার সহীহ ইসলামী আন্দোলনের মর্যাদা রাখে,
যে সংগঠনটির নেতা কর্মী তাদের নেতৃত্বের ও আদর্শের প্রতি চুড়ান্ত জানবাজ (ত্যাগী),
তাদের বিষয়ে এই পাবলিক পারসেপশান কেন হবে?
বাংলাদেশের অন্য যে কোন দল জামায়াতের সাথে তুলনীয় হতে পারে না। নীতি নৈতিকতার যে পরাকাষ্টা দেখিয়েছে বিগত দিন জামায়াতের নেতৃত্ব এবং তার জনশক্তি। তা সত্যি ভাববার বিষয় এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মিরাকল।
যে দেশে নীতিহীন এবং মিথ্যার বেসাতি করার মত চরিত্র হল রাজনৈতিক আদর্শ।বাংলাদেশের মন্ত্রী হবেন আর তিনি দুর্নিতি করবেন না। এটা ছিল বাংলাদেশের মানুষের চিন্তার বাহিরে। জামায়াত ৪২বছরে এই প্রথমবার গনমানুষের আস্থা ফিরাবার মত কাজ করেছিল।
৬০ জাতীয়তাবাদি সোনামনিকের মধ্যে মন্ত্রীত্ব করলো মাত্র দুই জন। তাও জীবনে প্রথমবারের মত। আগের কোন অভিজ্ঞতা ছিলনা। কিন্তু তারা আবার সফল মন্ত্রী হিসাবে প্রসাশন জানলো।
এটা ছিল দেশ জাতির জন্য চিন্তা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনের একটি টার্নিং পয়েন্ট।গনরায়ের সম্মিলণটা হত এই জায়গায়।
বাংলাদেশের গণ মানুষের জন্য এটা সত্যি একটি সুখবর ছিল।আগামীতে এরাই পারবে .... । এর রকম একটি আস্থার পরিবেশ তৈরী হল। তার পর আইএমএফ এর সরকার। পচা গলা বাকশালের লাশ তুলা হল - পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য সামনে আনা হল যুদ্ধাপরাধ বা বানানো এক গল্পের সাজানো নাটক।
পাঠক মনে থাকার কথা - আমাদের কম হাইটের জেনারেল মঈন বলেছিলেন, ৭১ এর বিচার করার সকল সক্ষমতা যেন হয় তার ব্যবস্থা করে দিয়ে যাবেন নির্বাচনে।দিল্লি থেকে ঘোড়া আনতে মীরজাফর সাহেব জাতীর জন্য এই পয়গাম নিয়ে এসেছিলেন। আজ সেই দিল্লি .....। আলোচনা ..।
এই জায়গাটাতে আমাদের দায়িত্ব এবং দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়া উচিত।প্রবাস এবং দেশের সবার জন্য বার্তা একটি।
আমরা কি দিল্লির নিগড়ে আবার চলে যাবো।৪৭ এর আযাদি ৭১ এর দেশ ভাগ (স্বাধিকার অর্থে) সব কিছুই কি তাহলে মিথ্যা ছিল।সব কিছুই কি ভূল ছিল? সবাই কি তাহলে অন্যের ক্রিড়নক ছিল। যেমন বলা হয়, শেখ মুজিব ছিলেন ভারতের বাছাইকরা দালাল।আমাদের লজ্জা হয়।শেখ হাসিনা কি!নিজেকে ইতিহাসের কাছে সিকিমের লেন্দুপ দর্জি হিসাবে চিত্রিত হবেন।
এই সব যদির উত্তর কি হবে?
যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে কেন আবার বাকশালের পুরুনো পাপ করতে যাবো ডিজিটাল নামে। জনগনের কি কিছুই করার নেই?
আমার আপনার কি কিছুই করার নেই?
বিষয়: বিবিধ
১৪১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন