লগি বৈঠার তান্ডব - ২৮ শে অক্টোবর এর দ্বায়
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১৩ অক্টোবর, ২০১৩, ০৩:১৯:৩৭ দুপুর
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় অফিস। আজকের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর প্রেস কনফারেন্স।প্রেস মিডিয়া ও স্যটালাইট মিডিয়ার সাংবাদিকরা অপেক্ষমান। নেত্রী নিজ আসনে বসেই চিরচেনা বাঁকা হাসিমুখে ঘোষনা করলেন - তখনকার চারদলীয় জোট সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচী।
দলীয় কর্মসূচী কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে,কি কি ব্যবহার করতে হবে, কোথায় কি করতে হবে সবই ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি কোন লুকোচুরির আশ্রয় নিলেন না। বরং ঘোষণা দিলেন দলীয় নেতা কর্মীদেরকে। আগামী ২৮ শে আক্টোবর সবাই লগি বৈঠা আর গজারী নিয়ে আসবেন। মিডিয়া সেটা প্রচার করলো।
বংশবদ সাংবাদিক সমাজ কেউ প্রশ্ন তুললো না গনতান্ত্রিক নেত্রীর মুখে এই সহিংস আন্দোলনের হুংকার কেন?
আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা লগি আর বৈঠার ব্যবহারের দিকটি আরো বিস্তারিত জানালেন। যেমন
রাজনৈতিক গণক (বর্তমানে পরলোকগত) আওয়ামীলীগের মহাসচিব আব্দুল জলীল একাধিকবার লগি আর বৈঠা দ্বারা গোটা বাংলাদেশকে অচল করে দেয়ার ঘোষণা দেন।
জনাব তোফায়েল সাহেব ৬৯ ও ৭০ এর অভিজ্ঞতা দিয়ে লগি বৈঠার চুড়ান্ত রুপ কি হতে পারে তার ব্যাখ্যা দিলেন।
আরেক প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক,বর্তমান কালো বিড়াল খ্যাত উজিরে খামাখা এবং নাসিম সাহেবরা লগি বৈঠা দিয়ে বাংলাদেশকে অকার্যকর এবং অচল করার ঘোষণা দেন।
একটি রাজনৈতিক দল যারা নিজেদেরকে গনতান্ত্রিক বলেন তার প্রধান নেতা ঘোষণা দিলেন প্রকাশ্য মিডিয়াতে। এবং তার ফলাফল হল ২৮ শে আক্টোবর। নিহত বনি আদমের লাশ নিয়ে এভাবে বিকৃত মানষিকতার পরিচয় কোন সভ্য রাজনৈতিক কর্মীর হতে পারে? অথচ শেখ হাসিনা ওয়াজেদ সেই দিনের এই গণহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন প্রকাশ্যে। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এই মানবতাবিরুধী অপরাধের বিচার কি হবে? শেখ হাসিনার অবস্থান থেকে এর দ্বায় থেকে কি তিনি মুক্ত? ২৮ শে অক্টোবরের শহীদদের সত্যিকার বিচার না করতে পারলে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্টা কি সম্ভব হবে? কারন এই ২৮ শে আক্টোবর দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ১/১১ এর মত আই এম এফ (উদ্দিনদের) সরকার প্রতিষ্ঠা পায়।তার পর ডিজিটাল বাকশাল কায়েম।
তাই বর্তমানে ভারতের সাজানো ও চরম বিতর্কিত বেশরম ট্রাইব্রুনালের প্রয়োজনটা আগামীতে পড়বে।ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি এই ট্রাইব্রুনালের প্রয়োজনটা রয়েছে। কারন - ২৮ শে আক্টোবরের গণহত্যা,পিলখানায় আর্মী অফিসারদেরকে পরিকল্পিত হত্যা,২৮ ফেব্রুয়ারীর থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ১৬৮ জন মানুষকে বাকশালী পুলিশ ও র্যব দিয়ে হত্যা করা (সাঈদি সাহেবের রায় হবার পর) তারপর শাপলা চত্তরের গণহত্যা-
এগুলোর জন্য প্রয়োজন হবে ট্রাইব্রুনালের। গত কাল (১২.১০.২০১৩) তারিখে শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সামনে বলেছেন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে- (নমরুদী ভাষায়) - ভুলে গেছেন মাত্র আধা ঘন্টায় সাফ করেছি শাপলা চত্তর।কি দাম্ভিক আর অহংকারী বক্তব্য।এরকম ই একটি বক্তব্য পাওয়া যায় পবিত্র কোরআনে। নমরুধ বলেছিল আমার চাইতে শক্তিধর কে আছে।অবশ্য এই ভয়ংকর দাম্ভিক তাগুত পরিনতি হয়েছিল খুবই করুণ।
নিজের অপরাধ স্বীকার করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আগামীতে ট্রাইব্রুনালে বিচারের কাঠগড়ায় নিজেকে দাড় করালেন।আগামীতে ইতিহাস এভাবে ই রচিত হবে।
২৮ শে অক্টোবর আজ ইতিহাস।বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বংশবদ আর ভারতের সেবাদাস মিডিয়া এই দিনটিকে ব্লাক আউট করবেই।
আমি নিশ্চিত বলতে পারি সরকার পন্থী মিডিয়া এবং কিছু মুখচেনা তথাকথিত জাতীয়তাবাদি মিডিয়া হাউস ২৮শে আক্টোবর নিয়ে কোন প্রোগ্রাম করবে না।বরং সে দিনের গণহত্যাকে ইসলামপন্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়ার কসরত করবেই।ফেব্রিক কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হবে।বলা হবে গনতন্ত্র সেদিন রক্ষা পেয়েছিল। দেখা যাবে টকশো গুলোতে বিএনপির নেতারা মিন মিন করে নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করছেন।
কারন এই সব অতি প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের চিন্তা চেতনায় - ইসলামপন্থীদের কোন মানবাধিকার নেই। এবং তাদেরকে হত্যা করা বা সাপের মত পিঠিয়ে লাশের উপর নৃত্য করা, এগুলো মুক্তিযোদ্ধের পক্ষ শক্তির জন্য সম্পুর্ণ গনতান্ত্রিক বিষয়।ইসলামপন্থীদের কচুকাঠা করা হল ৭১ এর চেতনার বাস্তবায়ন।বিষয়টা চরম অমানবিক,অসভ্য হউক না কেন? এক চিমটি ৭১ এর চেতনা তো আছেই।
সেদিন অবশ্য মানবতা কেঁদেছে এবং ফ্যাসিষ্ট তথা বাকশালের আসল চেহারা বিশ্ব দেখেছে।
আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতাম - ২৮ শে আক্টেবরের দৃশ্য টেলিভিশনে দেখে আমার এক নাইজেরিয়ান সহকর্মী বলেছিল - খামাখা আমাদেরকে বলা হয় অসভ্য আফ্রিকান। অথচ তোমার দেশে আজ যা দেখলাম তাতে আমাদের নাম্বার অনেক পিছনে।আমরা তোমাদের চাইতে অনেক সভ্য।
কার্যত ২৮ শে অক্টোবর ছিল গোটা জাতির জন্য এক অন্ধকার আর বিভিষিকাময় একটি কলঙ্কের দিন।
২৮ শে অক্টোবরে গনতান্ত্রিক মুল্যবোধকে বাকশালীরা পল্টনে বলৎকার করেছিল।
২৮ শে আক্টোবর দেশের নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা পরিবর্তনের সাংবিধানিক সিসটেমকে ন্যকড়ার মত করে ফেলেছিল।
২৮ শে আক্টোবর মানবতা, মানবিক মুল্যবোধের বিপরীতে হিংস্র পাশবিকতার চর্চা হয়েছিল।
যার প্রকাশ্য ঘোষণায় ২৮ শে আক্টোবর হয়েছিল - তিনি আজ আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
অতএব বিবেকের দাবী এবং ইনসাফের দাবী হল - আজ আমাদের কিছু মিডিয়া এবং মুক্তিযোদ্ধের চেতনার পাইকারী বিক্রেতার দল আওয়ামীলীগকে ২৮ শে আক্টোবরের দ্বায়টা নিতে ই হবে।
বর্তমানে এরা পার পেলেও আগামীর ইতিহাসের কাঠগড়ায় তাদেরকে দাড়াতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন