গাছ লাগায় দাদা, ফল খায় নাতি এবং নিবন্ধন বাতিল প্রসঙ্গ

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ০২ আগস্ট, ২০১৩, ০৪:৪২:৩৪ বিকাল

এক)

বলা যায় বাংলাদেশে বামপন্থীরা আওয়ামীলীগের উপর সওয়ার হয়ে দেশের পুরাতন এই দলটির বারোটা বাজালো। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে আওয়ামীলীগ তার ভোট ব্যংকে আবার লাথি মারলো। হেফাজতের গণহত্যায় যে ক্ষতি হয়েছিল তার চাইতে বেশী হল এই রায়ে। জনগনের কাছে মেসেজ চলে গেছে শেখ মুজিবের দল আওয়ামীলীগের হাতে তাদের ঈমান,আমাল,কুরান হাদীস নিরাপদ নয়।আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের বাস্তবতাটা প্রায় এরকম দাড়াবে।বর্তমান সরকারে ৫ জন পাগলমন্ত্রী,১৩ জন নাস্তিক মুরতাদ মন্ত্রী এবং ১৮ জন রামপন্থী হাইব্রিড মন্ত্রী ও উপদেষ্টা নিয়ে ডিজিটাল সরকার চলছে।

কালো বিড়ালখ্যাত উজিরে খামোখা (অপ্রয়োজনীয় মন্ত্রী) এ সরকারের শুরুতে বলেছিলেন ‌এটা খুকুমনিদের মন্ত্রীসভা। আবার দেশের ত্রিকালদর্শী সাংবাদিক (হাসিনার ভাষায় নব্য রাজাকার) মুসা সাহেব বলেছিলেন এটা কচিকাচার মন্ত্রীসভা।
এ নিয়ে ই চলছিল ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে স্বাধীন দেশে মহাজটের (মহাজোটের) সরকার।

বিগত দিনে আওয়ামীলীগের একটি বড় বদনাম ছিল তারা ভারত প্রেমিক। এটা জনগনের বিরাট অংশের কাছে প্রতিষ্ঠিত সত্য পারসেপশান ছিল।কিন্তু বর্তমানে ক্ষমতায় এসে তারা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে খাটি ভারতীয় দালালে। এই পাবলিক পারসেপশান এখন আরো শক্ত হয়েছে। আমি নিশ্চিত সিকিমের লেন্দুপদর্জী আজ বেঁচে থাকলে, ভারত রত্ম উপাধীটা নিজের খরছে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে উপহার স্বরুপ দিয়ে যেতেন। কারন লেন্দুপদর্জী তার জাতির সাথে যে মিরজাফরী করে ভারত রত্ম পেয়েছিলেন। তার চাইতে অনেক গুন বেশী ভারত মাতার খেদমত! ইতিমধ্যে করেছেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা। আওয়ামীলীগের রাজনীতির বৈশিষ্ট হল এই জায়গায়।

দেশ, জাতী, জনগন, দেশের সার্বভৌমত্ব ইত্যাদি এই দলটির কাছে মোটেই বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের রাজনীতির মুল প্রতিপাদ্য বিষয় হল দেশের বৃহত জনগোষ্ঠীর চিন্তা চেতনার বিপরীত রাজনীতি করা।এবং তা করে আসছে সেই ৭২ থেকে। কিন্তু এবারের বিষয়টা একেবারে উলঙ্গ হয়ে গেছে। আওয়ামীলীগ ইসলাম,মুসলমান,কুরআন,সুন্নাহ বিদ্ধেষী একটি দল এটা সফলতার সাথে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।আদালত দিয়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলটা আওয়ামী সফলতার শেষ পেরেক বা চিহৃ।

যে দেশের শতকরা ৮৮% মানুষ এখনো আল্লাহতে বিশ্বাস করেন,রাসূলকে (সঃ) নিজের জীবন দিয়ে মহব্বত করেন,কোরআন হাদীসের প্রতি তাদের শেষ আস্থা। সেই দেশের মানুষের বিশ্বাসের রাজনীতি করা যাবে না। আল্লাহর,রাসুলের রাজনীতি করা যাবে না। দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর বোধ বিশ্বাসের প্রতিফলণ দেখাতে পারবেনা রাজনীতিতে। এই সেলূকাস রায়,মত প্রকাশের উপর আইনি হত্যাযজ্ঞ চালানো অতি স্বাধীন আদালত দ্বারা সম্ভব।ডিজিটাল জমানার ডিজিটাল বিচারপতি।

দুই)

এদেশের মানুষ এখনো আযান শুনে সকাল বেলা কাজে যায়। আবার দিনের শেষে আযান শুনে ঘুমাতে যায়।

এখনো এদেশের মানুষ পারিবারিক বিপদ আপদে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়।

এখনো এদেশের অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ, রাসূল, কোরান হাদীসের কথা শুনে নিজেদেরকে ধন্য মনে করে।

এখনো এদেশের মানুষ নিজেদেরকে ওলী আউলিয়ার উত্তরসুরী মনে করে।

শহরের কিছু ব্যক্তি,কিছু বামপন্থী,কিছু বিদেশী সাংস্কৃতির পেইড দালালদের চিন্তা চেতনার সাথে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের যোজন যোজন দুরত্ব। আমাদের মহান আদালতের চার দেয়ালের ভিতরে থাকা মানুষগুলোর এই চেতনাবোধের অভাব থাকলে ও দেশের সাধারণ বা দেশের আসল মালিকদের কোন যায় আসে না। আদালতের রায় দিয়ে পৃথিবীতে কোথাও কখনো রাজনীতি দমন করা যায় নাই। তা সম্ভব ও নয়। এটাকে গনতান্ত্রীক এবং সভ্য সমাজের রুচি বিবর্জিত একটি সিদ্ধান্ত ও ভুল রায় বলা যায়।

তিন)

আওয়ামীলীগ কেন তার নিজের পায়ে কোড়াল মারলো। এক হেফাজতকে দানবীয় কায়দায় আক্রমন করার কারনে পাঁচটি সিটি নির্বাচনে গো হারা হারলো। তার পর কেন এই ধরনের মেনুফেক্সীং রায় দিতে গেল। পাগলেও তো তার নিজের ভালটা চায়। তাহলে কি আওয়ামীলীগের পাগল মন্ত্রীদের মাথা খারাপ হয়েছে গেছে।না মন্ত্রী সভায় পাগলের সংখ্যা বেশী বেড়ে গেছে। আসল কারন টা কি?

৮০ দশকে শেখ হাসিনা দেশে প্রত্যাবর্তনের দিন থেকে তিনি যে রাজনীতি করছেন তার চুড়ান্ত ফলাফল বলা যায় এই রায়। মোটা দাগে যদি আমরা শেখ হাসিনার রাজনীতির বৈশিষ্ট আলোচনা করি তা হলে এভাবে বলা যায়।

তিনি রাজনীতি করেন বদলা নেবার রাজনীতি।

প্রতিশোধের রাজনীতি।

হত্যা, ক্যু আর বিভাজনের রাজনীতি।

যাদের জন্য তার রাজনীতি, সেই তাদের নোসখার বাহিরে তিনি কখনো রাজনীতি করতে পারেননি। এবং তার দ্বারা তা সম্ভব ও নয়।

মীমাংশিত একটি ইস্যু দাঁড় করিয়ে দেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় আলেম ওলামা,ইসলামী ব্যক্তিত্বদেরকে কালিমা লিপ্ত করার মহা আয়োজন, সবই দিনের শেষে শেখ হাসিনার দিকেই বুমেরাং হয়েছে।

এত আয়োজন এত কিছু করার পর ও জামায়াতে নেতৃবৃন্দদেরকে জনগন থেকে আলাদা করা যায় নাই। একটি বিবৃতি দিয়ে গোটা দেশ অচল করা হরতাল পালন করতে পারে জামায়াত। দেশের সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা না থাকলে আজ জামায়াত জাদুঘরে থাকার কথা। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচার মহাজোটের মত মহা মিথ্যাচারে পরিণত হওয়াতে এখন আদালতের ঘাড়ে সওয়ার হয়েছেন। এটা আওয়ামী রাজনীতির নৈতিক পরাজয়।


এবারের ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার রাজনীতির ধারাবাহিকতা কি ছিল। শুধুমাত্র দেশের পররাষ্টনীতি নিয়ে আলোচনা করলে ই সেটা প্রতিভাত হয়। গত সাড়ে চার বছরের পররাষ্টনীতি কি ছিল?

চার)

সাম্রাজ্যবাদী দানব, মুশরিক ভারতের একনিষ্ট গোলামী করার নীতি। আকাশ আর সাগর কন্যা খ্যাত আমাদের খুকুমনি নামক উড়াল বিদেশ মন্ত্রী ইতিমধ্যে প্রমান করেছেন তিনি যাদের দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন তাদের জন্য ই গত সাড়ে চার বছর কাজ করেছেন।

হঠাৎ করে মন্ত্রী হওয়াতে আওয়ামীলীগের অনেক সিনিয়র নেতা প্রমাদ গুনেছিলেন। হয়েছে ও তাই। ৬০০ দিন নয় বরং ৫১৭ দিন তিনি উড়াল কুটনীতি করে দেশের জন্য অশ্বডিম কামিয়েছেন। কথার ফুল ঝুরি আর বাগাড়ম্বরতাই তার একমাত্র পারফরমেন্ছ। প্রধানমন্ত্রীর মত মিথ্যা,অসত্য তথ্য দিয়ে নিজেকে এখনো মন্ত্রীসভায় উজ্জল করে রেখেছেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিক জগতের বড় দ্বায়ভার রয়েছে।

নীতিহীন সাংবাদিকতাই যাদের একমাত্র পেশা এবং যোগ্যতা তাদের দ্বারা এরকম বিদেশী দালাল ও গনতন্ত্রের দুশমন মন্ত্রীদের প্রসংসা করা সাজে। দলকানা,দলবাজ সাংবাদিকরা যখন মন্ত্রীর মত করে সফলতার ডুগডুগি বাজান তখন আমাদের মিডিয়া জগতের কুৎসিত চেহারাটা সামনে ভেসে উঠে।

বর্তমান মন্ত্রী সভার সদস্যদের বড় গুন, আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর মত মিথ্যাকে সাজিয়ে বলার দক্ষতা ও যোগ্যতা। সাংবাদিক জগতের অল্প সংখ্যক ছাড়া অধিকাংশরা প্রধানমন্ত্রীর এই নীতি গ্রহন করেছেন।

তাই বলছি,ভারত যে গাছটি লাগিয়েছিল (শেখ মুজিব ও আওয়ামীলীগ) তার ফল ভোগ করতেছে এক জনম পরই। নাতি জয় বাবাজি নতুন করে আবার তিনি তথ্য দিয়েছেন। আবার নাকি ক্ষমতায় আসবেন। দেখা যাক আদালতের রায় দিয়ে তা সম্ভব কি না। আর মাত্র সময় ৯০ দিন আছে।

বিষয়: বিবিধ

১৫২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File