মৌলবাদী অর্থনীতি বনাম নির্মূল কোম্পানীর অর্থনীতি পর্ব - ২
লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ১২ জুন, ২০১৩, ০৭:২৮:২৬ সন্ধ্যা
তিন
আবার এমন কয়জন সাংবাদিক বা কলামিষ্ট রয়েছেন, যারা নির্মূল কমিটি ইতকিথা,দৈনন্দিন সমাচারের বিরুদ্ধে কলম ধরার সাহস করবেন।[b]এই নির্মুল কমিটি ৭১ এর না শোনা সকল চেতনার পাইকারী বিক্রেতা।তাদেরকে ঘাটালে নিশ্চিত আর নির্মূল সমিতির হয়ে অর্থ, যশ, খ্যাতি,বিদেশ সফরের সুযোগ হবে না।তাই কেউ তলিয়ে ও দেখে না এই অর্থের যোগানটা কারা করে। কোথা থেকে এত শানশওকতের লাইফ মেইন্টেইন করেন।
তহলে কি তারা শুধু কামলা খাটে।এমন বিষয় নয়।
বরং তা ইসলাম ও মুসলিম আইকনদের বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি বড় প্রকল্পের তারা হলেন দেশীয় সাবএজেন্ট।এখানে অতি উর্বর মাথাওয়ালাদের জায়গা হয়। তারা চলনে বলনে বাংলাদেশী হলেও মননে হবেন খাটি বাঙ্গালী।আর বাঙ্গালী বলতে দক্ষিন ভারতের সাংস্কৃতির পুঁজা।এই বলয়ে রবীন্দ্রনাথের বাহিরে কিছু বলা,চিন্তা করা সবই পাপ।সাংস্কৃতি, আর সাহিত্যের জগতে শুধূ সেবাদাস করার প্রয়াস নয় বরং সম্পুর্ণ বিপরীত সাংস্কৃতির নির্বোধ আজ্ঞাবহ প্রাণী করার রাষ্ট্রীয় আয়োজন।
বাংলাদেশ বলতে যে অংশটুকুন বর্তমান আছে।তার নিজস্ব যে কোন চর্চিত আচার আচরণকে ৭১ এর চেতনার বিপরীত তকমা দেবার জন্য নানান দালাল তৈরী আছেই।চোঙ্গা হিসাবে আছেইতো আমাদের প্রিন্ট মিডিয়া আর স্যাটালাইট মিডিয়া।
বাংলাদেশ আক্ষরিক অর্থে সংখ্যাগরিষ্টরা আজ সমাজের সকল ক্ষেত্রে নিন্দিত,অবহেলিত সংখ্যালুঘুতে পরিণত হয়ে আছে। এই বাস্তবতার জন্য দায়ী কারা? কাদেরকে আমরা কাঠগড়ায় দাঁড় করাবো।যারা মোয়াজ্জিনের ভুমিকায় দেখা যায় তাদের পাশে দাড়াবার হিম্মত করছি না।
সুবিধা পাওয়া আর না পাওয়ার কঠিন অবস্থা, সবাই একই খোয়াড়ে আবদ্ধ হয়ে আছি। প্রেরণার বাতিঘর যারা তারা সবাই আজ বড়ই অসহায় এবং সমাজ তাদরেকে বেকুবদের তালিকাভুক্ত করে রেখেছে।
এমন বেকুব মানুষ একজন আছেন আমাদের মিডিয়া জগতে, যিনি ইতিমধ্যে আদালত থেকে ডিগ্রি পেয়েছেন বাইচান্স এডিটর।মাহমুদুর রহমানের মত বেকুব আর প্রতিষ্ঠিত রাজদন্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে সাংবাদিকতা করা আমাদের মিডিয়া জগতে আর কেউ নেই।
ত্রিকাল দর্শী সাংবাদিক থেকে শুরু করে, নব্য অতি চেতনাধারী সাংবাদিক মহাজনরা সবাই সময়ের সাথেই চলেন,বলেন এবং লিখেন। আবার সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশ্য দুশমনদের হেরেমে গর্বের সাথে সহঅবস্থান করেন। মহা দুর্নিতিবাজ,ভুমিদুস্যু,শেয়ার বাজারের দরবেশদের প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতে কোন বাধা নেই।কেননা তারা বাঙ্গালী চেতনার কান্ডারী।
এই অতি দুর্লভ চারিত্রিক বৈশিষ্টের অধিকারী হতে পারেননি জনাব মাহমুদুর রহমান।প্রতিষ্ঠান হিসাবে দিগন্ত আর ইসলামিক টিভি।এরা জতীয় বেকুব হিসাবে পদক দেয়া যেতে পারে।
এরা সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে গিয়ে যে অপরাধ করেছে, তার শাস্তি অবশ্যই পেতে হবে। এই ধারাবাহিকতা চলছে। ১৫ জন সম্পাদক যে বিবৃতি দিয়েছেন তা ডেকোরাম ছাড়া আর কিছু ই নয়। ইতিমধ্যে প্রথম আলো পত্রিকা সরকারকে বাতলিয়ে দিয়েছে কিভাবে এবং কেন মাহমুদুর রহমানকে এবং বন্ধ মিডিয়াকে আরো শাস্তি দেয়া যায়। শুনেছি জিন্দা কাক (কাউয়া) মরা কাকের গোশত খায় না। বাংলাদেশের বাঙ্গালী চেতনার সাংবাদিক জগতটা সেই কর্মটি করে দেখিয়েছেন। দিগন্ত আর ইসলামিক টিভি এই দৌড়ে পিছনে পড়ে গেল। জাতীয়তাবাদী অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকই ম্যানেজ করেছে।
আমার দেশ,দিগন্ত পরিবার এনটিভি বা বাংলাভিশনের মত সময়ের সাথে, সময় আসার পূর্বে ই রং বদলাতে পারেনি। পার্থক্যটা এই জায়গায়।
দিগন্ত টিভি যে কমিটমেন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, সেই জায়গায় তারা থাকতে চেয়েছে।বলা যায় আন্তরিক চেষ্টা করেছে। জাতীর কাছে যে ওয়াদা করেছিল যাত্রা সময়।বলা যায় জাতীর মৌলিক বোধ বিশ্বাসের জায়গা থেকে তারা পিছু হঠেনি।বর্তমান থিক থিকে অন্ধকার সময়ে হয়তো এদের মূল্যায়ন হবেনা তবে আমি বিশ্বাস করি আগামীর ইতিহাস তাদের পক্ষে কথা বলবে।
চার
অধ্যাপক আবুল বারাকাত মৌলবাদী অর্থনীতিবীদ হিসাবে পরিচিত।অধ্যাপক মুনতাসির মামুন তিনি ও মৌলবাদী ইতিহাস লেখক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত।আবার সাংবাদিক শাহরিয়ার কবীর তিনি ১৯৭১ সালের বাঙ্গালী চেতনার কলিকাতা ভিত্তিক পাইকারী এবং খুছরা মহাজন। বৃহত্তর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কামান্ডার বাচ্চু সাহেব হলেন বাঙ্গালী সাস্কৃতির প্রধান আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের সিও।
মোটামোটি এই চারজনই হলেন বাংলাদেশের বর্তমান মিডিয়ার খুছরা মালামাল সাপ্লাইর বড় আড়তদার।তারা সমুজদার ও বটে।
জনাব আবুল বারাকাত সাহেবের গবেষনার বিষয় হল জামায়াত এবং শিবিরের অর্থনীতি।তার গবেষনার থিম,সোর্স,ম্যাথোড ইত্যাদি জানার অধিকার বাঙ্গালের নেই।তিনি কখনো তা প্রকাশ করেননি।এই বিষয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন তাদেরকে ঠান্ডা করার জন্য রয়েছেন কিছু শেওলা পড়া সাংবাদিক। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা হলে ও তিনি রাজাকার,মৌলবাদের সীল লাগিয়ে দেয়া হয় সাথে সাথে। কেল্লা ফতেহ।
তাই দেখা যায় বারাকাত সাহেব যা সাপ্লাই করেছেন তা সফলতার সাথে বাজারজাত করেছে আমাদের প্রিয় গণমাধ্যম নামের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া।এভাবেই তো চলছে। এ বিষয়ে আরেকটি চমৎকার উদাহারণ দেয়া যায়।
২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে হঠাৎ করে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ঘোষণা দিলেন (গবেষণা করে) বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে ৩৫ ভাগ কওমী মাদ্রাসার ছাত্র অনুপ্রবেশ ঘটেছে।প্রতিকার কি? তার নসিহত ও দিলেন।
জয় হলেন শেখ মুজিবের নাতি।তিনি স্বাধীনতার পক্ষের প্রধাননেত্রীর আগাম হাইব্রিড নেতা। তাই তিনি যাহা বলিবেন তাহা সঠিক না হয়ে কি পারে।যেমন আমাদের জাতীয় নেতা শেখ মুজিবের তিন লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ বানিয়েছিলেন।৩ থেকে ৩০ পর্যন্ত গণনার এই মেজিক চলছে বিগত ৪২ বছর থেকে।
জয়ের ব্যাপারটা আরো স্পর্শকাতর।কেননা জয় যাকে নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি ইরাকে আবুগারীব কারাগারে মুসলিম নির্যাতন ও নিধনের অন্যতম নায়ক ছিলেন।ইরাকে গণহত্যার নায়ক কার্লোসকে (কার্ল সিওভাক্কো) সাথে নিয়ে সজিব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ বাস্তাবায়ন গবেষণা কর্ম।তাই .
তিনি যা বলেছেন তা সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন তুলবেন! এটা কি করে হয়।
নির্বাচন পূর্ব প্রকাশিত এই জয়ের গবেষণা মিডিয়া কবারেজ পেল সঙ্গত কারনেই। কিন্তু কেউ এই প্রশ্ন করলো না। এই গবেষণা কোথায় করা হয়েছে।এর সোর্স কি? এই গবেষণার ম্যাথোডগুলো কি? বিশ্বব্যাপি অনুসৃত কোন নীতিমালাটি ব্যবহার করা হয়েছে ইত্যাদি?
জাতীয় একটি বিষয়ে গবেষণা করা হল বিদেশে বসে। এর ফাইন্ডিং করেছে কারা?
আরো প্রশ্ন ছিল জয়ের বিতর্কিত সেই গবেষণা প্রবন্ধে।,যা করতে পারতো আমাদের সুশীল মিডিয়া।
কিন্তু ঐ যে নির্মূল কোম্পানীর অর্থনীতি।সেই অর্থনীতি নামক নগদ নারায়নের কারনে আমাদের মিডিয়া বিবেক বন্ধী।
যে প্রশ্ন করা যেত - ক) যাদেরকে অনুপ্রবেশকারী বলা হল তারা কি বাংলাদেশী নয়। মাদ্রাসায় যারা পড়েন তারা কি নুন্যতম নাগরিক অধিকার রাখেন না। খ) হাসপাতাল স্কুল গুলোকে কিভাবে স্যেকুলার করা হবে। গ) পার্বত্য চট্রগ্রামের খৃ্ষ্টান এনজিওদের বিষয়ে কোন সুপারিশ না থাকলে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক এনজিও বন্ধের যথারিতি সুপারিশ করা হয়েছে।এরকম আরো বেশ কিছু বিষয় যা সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহী।এই কাজ জামায়াত শিবিরের কোন নেতা করলে খবর ছিল।সব মিডিয়া একসাথে হামলে পড়তো। শেখ মুজিবের বড় কন্যার বিদেশী পুত্রের গবেষণা ঠিকই বাস্তবায়ন হয়েছে।
২০০৮ সালে সজিব ওয়জেদ জয় যে সুপারিশ করেছিলেন ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেগুলো বাস্তবায়ন করেছেন। সেই বিডিআর ট্রাজেডি থেকে শুরু করে ৬ তারিখের হেফাজতে ইসলামের গণহত্যা পর্যন্ত সবই ছিল এক পরিকল্পনার অংশ।
চলবে ..
বিষয়: রাজনীতি
১৩১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন